a
ফাইল ছবি
লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ষষ্ঠ ম্যাচে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। দশজনের ভেনেজুয়েলাকে তারা হারিয়েছে ৩-১ গোলে। এর মধ্য দিয়ে টানা ২১ ম্যাচে অপরাজিত থাকলো কোপা আমেরিকার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের জয়ের নায়ক লাউতারো মার্টিনেজ, জোয়াকুইন কোরেয়া ও আনহেল কোরেয়া।
ম্যাচের প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে আর্জেন্টিনার পক্ষে প্রথম গোল করেন লাউতারো মার্টিনেজ। ডি মারিয়ার বাড়ানো বল ধরে অফসাইডের ফাক গলে বেরিয়ে চমৎকার প্লেসিং শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। দ্বিতীয় গোলের দেখা পেতে আর্জেন্টিনাকে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে। ৭১ মিনিটে লিওনেল মেসি ও মার্টিনেজের পা ঘুরে বল পেয়ে জোয়াকুইন চমৎকার শটে বল জালে জড়ান।
তিন মিনিট পর তৃতীয় গোল পায় আর্জেন্টিনা। এবার স্কোরশিটে নাম তোলেন আনহেল কোরেয়া। লাউতারোর গোলমুখে নেওয়া জোরালো শট স্বাগতিক গোলকিপার ঠেকালেও নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হন। ফিরে আসা বল আনহেল কোরেয়া জালে জড়াতে ভুল করেননি।
ম্যাচের একেবারেই শেষ মুহূর্তের অতিরিক্ত সময়ে ভেনেজুয়েলা পেনাল্টি থেকে একটি গোল পায়। এর আগে ৩২ মিনিটে ডিফেন্ডার মান্টিনেজ লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দল নিয়ে খেলে ভেনেজুয়েলা।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে ৭ ম্যাচে ৪ জয় ও ৩ ড্রয়ে মোট ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে আর্জেন্টিনা। ৬ ম্যাচের সব কটি জিতে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ব্রাজিল।
গত জুলাইয়ে কোপা আমেরিকা কাপ জিতে বেশ ভালো অবস্থানে আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচে তার প্রতিফলন দেখা গেছে। সূত্র: সমকাল
ফাইল ছবি
টানা দ্বিতীয়বারের মতো উয়েফার বর্ষসেরা পুরস্কারের তালিকায় নেই সময়ের তিন সেরা ফুটবলার মেসি, রোনালদো, নেইমার। বর্ষসেরা ফুটবলারের জন্য মনোনীতদের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করেছে উয়েফা।
এবারের উয়েফার আয়োজিত দুই টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন্সলিগ ও ইউরোর প্রভাব পড়েছে এই তালিকায়। পিএসজির ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার এবার সেরা দশেও জায়গা পাননি।
ইউরোপের শীর্ষ ফুটবল সংস্থার প্রকাশিত তালিকায় প্রথম তিনজনের দু’জনই হলেন চেলসির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্সলিগ জেতা তারকা এনগোলো কান্তে,ইতালিয়ান ফুটবলার জর্জিনহো। অবশ্য কান্তে ইউরোতে তেমন কিছু করতে না পারলেও ইউরোর শিরোপা জিতেছেন জর্জিনহো।
তাদের সঙ্গে সেরা তিনে আছেন ম্যানচেস্টার সিটির তারকা মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনা। মজার ব্যাপার হলো এবারই প্রথম সেরা তিনজনই মিডফিল্ডার। তবে সবার সেরা কে, তা জানতে চোখ রাখতে হবে আগামী ২৬ আগস্ট তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বের ড্র অনুষ্ঠানের দিকে।
গত মৌসুমে চেলসির দুই মিডফিল্ডার জর্জিনহো ও কান্তে ছিলেন অবিশ্বাস্য। প্রিমিয়ার লিগের শিরোপাজয়ীদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হারিয়ে শিরোপা জেতাতে চেলসির হয়ে বড় অবদান রাখেন তারা। ম্যানসিটির বিপক্ষে ফাইনালে দুজনই ছিলেন প্রথম একাদশে। জার্মানির কাই হাভার্জের প্রথমার্ধের গোল গড়ে দেয় ম্যাচের পার্থক্য। সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে টানা ম্যাচসেরা হন কান্তে।
থমাস টুখেলের দল লিগ টেবিলের চতুর্থ স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করে আগামী চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলার টিকিটও পেয়ে গেছে। এছাড়া ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চেলসি।
অন্যদিকে প্রিমিয়ার লিগে ম্যান সিটির শিরোপা জয়ে বড় অবদান ডি ব্রুইনার। যদিও ইনজুরির কারণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল ও ইউরোতে তার পারফরম্যান্স চোখে পড়েনি খুব একটা।
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর শ্যামলী থেকে প্রতিদিন সাভারে অফিস করেন সোহানা। প্রতিদিন সকাল ৭টায় বাসা থেকে বের হয়ে অফিসে পৌঁছান ৯টায়। আবার অফিস থেকে বিকাল ৫টায় বের হয়ে বাসায় পৌঁছান সন্ধ্যা ৭টায়। বাসায় ফেরার পর তার আর কোনো কিছুই করতে ইচ্ছে করে না। বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েই ঘুমিয়ে পড়েন। বাসায় কেউ কোনো কথা বললেই চেঁচামেচি করেন। সোহানা বলেন, তার দিন দিন মেজাজ খিটখিটে হচ্ছিল। অফিসের কাজে মনোযোগ দিতে পারছিলেন না। বুঝতে পারছিলেন এই যাতায়াতটা তার জন্য ভীষণ চাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু চাকরিটা তার প্রয়োজন বলেই কাজ করছিলেন। একপর্যায়ে মাথাব্যথা এবং শ্বাসকষ্টের রোগী হয়ে যান। আর এখন তো বাইরে বের হতেই পারেন না বলে জানান সোহানা। একই ধরনের কথা শোনা যায় বিষণ্ণতায় আক্রান্ত রাফিয়া ও ফাহমিদার কণ্ঠে। রাফিয়া দেশের বাইরে থাকেন। তিনি তিন মাস বা ছয় মাস পরপরই দেশে আসেন। কিন্তু দেশের মাটিতে পা রেখেই হাঁচি, কাশি শুরু হয় তার। চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হলে তিনি সুস্থ হন না। তিনি বলেন, তিনি বুঝতে পারেন, প্রচণ্ড ধুলাবালির কারণে তার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। অস্থির লাগে, বিষণ্ণ লাগে। দেশে এসে কোনো আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে বা অন্য কোনো কাজ করতে ভালো লাগে না। কেমন যেন অস্থির লাগে।
বায়ুদূষণের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ায়। সায়েন্টিফিক জার্নালের ‘জেএএমএ’ নেটওয়ার্কে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বায়ুদূষণের উচ্চমাত্রার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে প্রবীণদের মধ্যে বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ায়। ‘জেএএমএ’ সাইকিয়াট্রিতে প্রকাশিত অন্য গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিম্নস্তরের বায়ুদূষণকারীর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগ বাড়ানোর জন্য দায়ী। মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল বলেন, বায়ুদূষণে কারণে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। মানুষ যে প্রকৃতি ও পরিবেশে বসবাস করছে তার ভারসাম্য না থাকলে মানসিক চাপ তৈরি হয়, যা মানুষের ভালো থাকাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
বায়ুদূষণের ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক। যার শিরোনাম—‘ব্রেদিং হেভি: নিউ এভিডেন্স অন এয়ার পলিউশন অ্যান্ড হেলথ ইন বাংলাদেশ’। এতে ঢাকা ও সিলেটের চার অঞ্চল থেকে ১২ হাজার ২৫০ জনের তথ্য ব্যবহার করে বায়ুদূষণের কারণে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর স্বল্পমেয়াদি প্রভাব মূল্যায়ন করা হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ঢাকায় সারা দিনে এক জন যে পরিমাণে দূষিত বায়ু গ্রহণ করে, তা প্রায় দুটি সিগারেট খাওয়ার সমান ক্ষতিকর। গবেষণায় দেখা গেছে যে, সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ হচ্ছে ঢাকায়। ঢাকায় যানজট ও নির্মাণাধীন প্রকল্পের কারণে যে পরিমাণ বায়ুদূষণ হয়, তা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার বায়ুমানের চেয়ে ১৫০ শতাংশ বেশি এবং ইটভাটার কারণে যে দূষণ হয় তা ১৩৬ শতাংশ বেশি। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রা থেকে ১ শতাংশ দূষণ বাড়লে বিষণ্নতায় ভোগা মানুষের সংখ্যা ২০ গুণ বেড়ে যেতে পারে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মেঘলা সরকার বলেন, শুধু বায়ুদূষণই যে বড় ধরনের মানসিক রোগ তৈরি করছে, বিষয়টা এমন নয়। তিনি বলেন, যারা অল্পতে উদ্বিগ্ন হন তাদের মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা বিষণ্ণতা বায়ুদূষণের ফলে তীব্র হয়ে ওঠে। যার কারণে মনোযোগে সমস্যা হতে পারে, মেজাজ খিটখিটে হতে পারে। উৎপাদনশীলতা কমে যেতে পারে বলে তিনি জানান।
বায়ুদূষণের মূল কারণ:গবেষণায় বায়ুদূষণের প্রধান তিনটি উৎসের কথা বলা হয়েছে সেগুলো হলো যানবাহনের ধোঁয়া, বিশেষ করে মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের ধোঁয়া, যা বেশ মারাত্মক। এরপরই রয়েছে শুষ্ক মৌসুমে নির্মাণকাজের কারণে সৃষ্ট ধুলা। তৃতীয় স্থানে আছে ইটভাটার ধোঁয়া। গত তিন বছর ধরে বায়ুর মান সূচকে ঢাকা সবচেয়ে দূষিত না হলেও দ্বিতীয় দুষিত শহর হিসেবে স্থান পাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বায়ুদূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি বিষণ্ণতায় ভুগছেন ৬৫ বছর কিংবা তার চেয়ে বেশি বয়সীরা। বায়ুদূষণের কারণে প্রভাব পড়ছে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের দূষণপ্রবণ এলাকাগুলোর প্রায় ১৪ শতাংশ বাসিন্দা বিষণ্ণতায় ভুগছেন, বলে যা কম দূষণ আক্রান্ত এলাকার চাইতে বেশি। গবেষণায় বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পরিমাপ করা হয়। সূত্র: ইত্তেফাক
কলাম লেখক: মোরশেদা ইয়াসমিন পিউ