a
করোনাভাইরাস
গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১৩৪ জন। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ হাজার ৯১২ জন।
এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে ৬২১৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা ৯ লাখ ৩৬ হাজার ২৫৬ জন।
আজ শনিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আরও জানানো হয়, গত ১ দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৩৭৭৭ জন করোনারোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ২৯ হাজার ১৯৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত করোনা শনাক্তের গড় হার ১৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ। সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। করোনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
সংগৃহীত ছবি
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিনের পূর্ণ শাটডাউন দেওয়ার সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
বৃহস্পতিবার কোভিড কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মােহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে কোভিড-১৯ রােগের বিশেষ ডেল্টা ধরনের সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। ইতােমধ্যে এর প্রকোপ অনেক বেড়েছে। এ প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে সারাদেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশাের্ধ্ব জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। এটি প্রতিরােধে খণ্ড-খণ্ডভাবে নেওয়া কর্মসূচির উপযােগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অন্যান্য দেশ, বিশেষত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতা হলো, কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরােধ করা সম্ভব নয়।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলােচনা হয়েছে। তাদের মতামত অনুযায়ী, যে সব স্থানে পূর্ণ ‘শাটডাউন’ প্রয়ােগ করা হয়েছে সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে রােগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া এবং জনগণের জীবনের ক্ষতি প্রতিরােধের জন্য কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সারাদেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ 'শাটডাউন' দেওয়ার সুপারিশ করছে।
জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়ােজন। এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নিয়েছেন। এজন্য সভায় তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। এ রােগ থেকে পূর্ণ মুক্তির জন্য ৮০ শতাংশের ঊর্ধ্বে মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া প্রয়ােজন।
বিদেশ থেকে টিকা সংগ্রহ, লাইসেন্সের মাধ্যমে দেশে টিকা উৎপাদন করা এবং নিজস্ব টিকা তৈরির জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গবেষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার প্রতি কমিটি পূর্ণ সমর্থন জানায়।
নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে (১৫) দিনের পর দিন সৎ ভাই মেহেদি হাসানের (২২) কাছে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছিল। এতে পর পর দুবার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে সে। ঘটনা কাউকে জানালে তাকে ও তার বাবাকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় এ ঘটনাটি ঘটেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সৎ ভাই মেহেদি হাসান (২২) ওই স্কুলছাত্রীকে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করে। এতে প্রথমেও একবার অন্তঃসত্ত্বা হয় সে। সন্তান প্রসবের পর মেহেদি তাকেও হত্যা করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী মেয়েটি সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, তাদের মা বিষয়টি জানার পর তার পায়ে পড়ে মাফ চেয়ে এমন কাজ দ্বিতীয়বার না করার কথা দেয় সে। কিন্তু দ্বিতীয়বারও বোনকে জোর করে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করে মেহেদি। এতে করে ফের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ভুক্তভোগী।
এমন ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ভুক্তভোগীর বাড়ি গিয়ে কথা হলে মেহেদির বাবা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ১২ বছর আগে পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে মারা যান তার স্ত্রী। পরে তিনি পাশের ইউনিয়নের এক বিধবা নারীকে বিয়ে করেন। সেই নারীর একটি মেয়ে (ভুক্তভোগী) থাকায় তাকেসহ বাড়িতে তোলেন তিনি।
ছেলেটির বাবা আরও জানান, পাঁচ মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। তারা শ্বশুরবাড়ি থাকেন। বড় ছেলে তাবলীগ জামায়াতে থাকায় দুটি ঘরের একটি বাড়ি বানিয়ে সেখানে বসবাস শুরু করেন তারা। একটি ঘরে স্ত্রীসহ তিনি এবং অন্য ঘরে থাকত মেহেদি ও তার এই বোন (ভুক্তভোগী)। দুজনই শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মেহেদি কলেজছাত্র ও ভুক্তভোগী নবম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী।
ভুক্তভোগী ওই মেয়ে জানিয়েছে, ইংরেজিতে পারদর্শী হওয়ায় বড় ভাইকে মাঝে মাঝে পড়াতো সে। একসাথে পড়তে বসায় মেহেদি তার দিকে কুনজর দিতো। পড়ার সময় মজার ছলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিতো। একদিন কুপ্রস্তাব দেয় সে। রাজি না হলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় মেহেদি।
ওই স্কুল ছাত্রী মেয়ে বলে, ‘একদিন মেহেদি আমাকে কু প্রস্তাব দেয়। রাজি না হলে বাবাকে মেরে ফেলে মায়ের কাঁধে দোষ চাপানোর কথা বলে। এই ভয়ে আমি কিছু বলতে পারতাম না। বিভিন্ন সময় শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতো মেহেদি। একদিন ঘরে কেউ না থাকায় জোর করে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করে আমাকে।’
ওই স্কুল ছাত্রী জানায়, এরপর থেকে লাগাতার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করত মেহেদি। বাবাকে হত্যা করা ছাড়াও বিভিন্ন হুমকি দেওয়ায় নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করত। এর মধ্যে একবার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে সে। মেহেদি তার পেটের বাচ্চা নষ্ট করার জন্য বিভিন্নরকম ওষুধ খাওয়াতো। একদিন তাদের মা বিষয়টি বুঝতে পেরে মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন সে মাকে পুরো বিষয়টি খুলে বলে। ছেলেকে প্রশ্ন করতেই মায়ের পা ধরে নিজের ভুল শিকার করে মেহেদি। তার মেয়েকে বিয়ে করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেয় মেহেদি।
ভুক্তভোগী ছাত্রী জানায়, বাচ্চা নষ্ট হয়েছে ধারণা ছিল মেহেদির। কিন্তু গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে প্রসব ব্যাথা ওঠে তার। রাতেই নিজের ঘরে একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেয় সে। এদিকে সন্তান জন্ম নেওয়ায় বিপাকে পড়ে মেহেদি। পরে মায়ের কোল থেকে সন্তানকে কেড়ে নিয়ে যায় সে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ‘তার সন্তানকে হত্যা করেছে মেহেদি।’
ওই ভুক্তভোগী আরও জানান, মাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মোতাবেক তাকে বিয়ে করবে দোহাই দেখিয়ে আবারও তার সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করে মেহেদি। বর্তমানে সে দুমাসের অন্তঃসত্ত্বা। এই খবর পেয়ে পালিয়ে যায় মেহেদি। অজ্ঞাত স্থান থেকে বিভিন্ন নম্বারের মাধ্যমে কল দিয়ে ঘটনা কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে ভুক্তভোগীকে হুমকি দিচ্ছে সে।
বিষয়টি নিয়ে মেহেদির বড় বোনের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে কল করা হলে রাগান্বিত হয়ে তিনি বলেন, ‘কে আপনি? আপনি এত কিছু জানেন কীভাবে?’ এরপর সাংবাদিক পরিচয় দিলে ফোন কেটে দেন তিনি।
এ বিষয়ে মেহেদির বাবা সংবাদ মাধ্যম জানান, তিনি ঘটনাটি জানেন। এ কারণে ছেলের সাথে তার তেমন সম্পর্ক নেই।
ছেলেটির বাবা বলেন, ‘এমন কুলাঙ্গার ছেলে যেন কারও ঘরে জন্ম না নেয়। সে আমাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমি আইনের আশ্রয় নেব।’
বিষয়টি নিয়ে রাজামেহার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমার ইউনিয়নে হচ্ছে আমার জানা নেই। আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীকে যেকোনো সহায়তা করা হবে।’
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল আনোয়ার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ভুক্তভোগীকে যেকোনো আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।’