a
ফাইল ছবি । পুতিন ও বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যেই জেনেভায় দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আজ বুধবার (১৬ জুন) গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জেনেভায় বাইডেন ও পুতিনের মধ্যকার বৈঠকে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তার কিছুটা আভাস পাওয়া গেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম থেকে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে দুই দেশের নেতার মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এসব আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর মধ্যে থাকবে সাইবার হামলা, মানবাধিকার, ইউক্রেন, বেলারুশসহ অন্যান্য প্রসঙ্গ।
ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উভয় দেশের প্রেসিডেন্ট আলোচনা করবেন। তারা কৌশলগত স্থিতিশীলতার বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন। বিভিন্ন আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনের উপায় নিয়ে তারা কথা বলবেন। করোনা মহামারি মোকাবিলাসহ আন্তর্জাতিক সমস্যা সংক্রান্ত নানান ইস্যু নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।
নির্বাচনে হস্তক্ষেপের শাস্তিস্বরূপ গত এপ্রিলে রাশিয়ার ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। মস্কোর বিরুদ্ধে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার অভিযোগ করে আসছে বর্তমান ওয়াশিংটন প্রশাসন। এছাড়া বর্তমানে দুই জন সাবেক মার্কিন মেরিন সেনা রুশ কারাগারে বন্দি আছে। এসব বিষয়ে সমাধান খুঁজতে দুই দেশের প্রেসিডেন্ট আজ প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হবেন।
ফাইল ছবি । ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কাসেম সোলেমানী
তুর্কি পার্লামেন্ট ২ জানুয়ারি লিবিয়ায় সৈন্য মোতায়েনের অনুমোদন দেওয়ায় ত্রিপোলিতে জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার টিকিয়ে রাখার লক্ষে তুর্কি সেনারা লিবিয়ার পথে রওয়ানা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। খবর এএফপি’র।
ন্যাটো সমর্থিত আন্দোলনে ২০১১ সালে স্বৈরশাসক মোয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হওয়ার পর থেকেই লিবিয়ায় বর্তমানে বিশৃংখলা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দেশটির পূর্ব ও পশ্চিমের প্রশাসন একক ক্ষমতা গ্রহণ করতে লড়াই চালিয়ে আসছে।
বর্তমানে ফয়েজ আল-সরাজের নেতৃত্বে ত্রিপোলি সরকার ক্ষমতা চালিয়ে আসলেও এপ্রিল মাস হতে সামরিকভাবে শক্তিশালী নেতা জেনারেল খলিফা হাফতার বাহিনীর ব্যাপক আক্রমণে শিকার হয়ে আসছেন। এদিকে তুরস্কের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ সৌদি আরব, মিশর, সংযোগ আমিরাত সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে খলিফার হাফতার বাহিনীকে সহযোগিতা করায় লিবিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রাণহানি ঘটছে।
প্রেসিডেন্ট এরদোগানের দাবি, ত্রিপোলির পক্ষ থেকে সাহায্য চাওয়ায় লিবিয়ার জাতিসংঘ সমর্থিত ন্যাশনাল অ্যাকর্ড সরকারের স্থিতিশীলতা আনতে সামরিক সহায়তা দিতে তাদের এ পদক্ষেপ।
অপরদিকে তুর্কি সেনা মোতায়েনের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি জানিয়েছে গ্রিস, সাইপ্রাস ও ইসরাইল। প্রথমদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প তুর্কি সেনা মোতায়েনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি জানালেও ৩ জানুয়ারি শুক্রবার বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রে ড্রোন হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার নির্দেশের পর থেকে নিজেকে ও নিজের দেশকে রক্ষায় বর্তমানে সবচেয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকায় তুর্কি সৈন্য লিবিয়ায় মোতায়েনের ব্যাপারে ঐ তিন দেশের সাথে আর কোন উচ্চবাচ্য করছেননা।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের আচরণ গ্রামের অসৎ মাতব্বরের সেই দুষ্টু ছেলেটির ন্যায়। যে পাশের ঘরে আগুন লাগিয়ে মাঁচার নীচে লুকিয়ে থাকার মতো। পাশের ঘর আগুন লাগালে সেই আগুন যে নিজের ঘরে লাগবেনা তা হলফ করে বলা যাবেনা। বর্তমানে ট্রাম্প ও তার প্রশাসন ইরানের জেনারেলকে হত্যার মধ্য দিয়ে শক্তি, সাহস ও নৈতিকতা সব থেকে নিজেকে আড়াল করতে বাধ্য হচ্ছেন। যেমন- লিবিয়ায় তুর্কি সেনারা অবস্থান নেওয়ায়, গ্রিস, সাইপ্রাস ও ইসরায়েলে হুশিয়ারি দিলেও আমেরিকা একেবারে নিরব।
অপরদিকে মার্কিন নাগরিকদের দ্রুত ইরাক ত্যাগের নির্দেশের পাশাপাশি কাশেম সোলামানিকে হত্যার পর পরই ভারত মহাসাগরে ও ওমান উপসাগরে যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করে ইরান, চীন ও রাশিয়া।
ইরাকের পার্লামেন্টে বিল পাস হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে তার সৈন্য প্রত্যাহার করে নিতে হবে। বিপরীতে ট্রাম্প ইরাককে অবরোধের হুমকি দিলেও জার্মানীর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা খুব একটা সহায়ক হবেনা। তিনি আরো উল্লেখ করেন, এই মুহুর্তে যুুক্তি বাদ দিয়ে হুমকি প্রদান করে কোন কাজ হবেনা।
এই মূহুর্তে ইঙ্গো-মার্কিন বলয়ের দেশগুলো বিশেষ করে উপসাগরীয় দেশগুলো ইরানের বিরাট হুমকির মধ্যে থাকলেও মার্কিনীদের সহযোগিতা আগের মতো আশা করা দূরুহ। ফলে উভয় সংকটের মাঝে তাদের বর্তমান অবস্থান পরিস্কার করাও খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।
ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাতের মাঝেই ভারতের নরেন্দ্র মোদি ট্রাম্পকে ফোন করেছেন। যদিও বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফোন করেছিলেন মোদি। পাকিস্তানও সতর্কতার সহিত তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। সৌদি আরব ও ওমান কাসেম সোলেমানিরক নিহতের ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে দ্বন্দ্ব মেটানোর আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে মালয়েশিার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মাহাথী ব্যতিক্রমধর্মী মন্তব্য করেছেন। তিনি সোলাইমানি হত্যাকে সৌদির সাংবাদিক খাসোগীর হত্যার মতোই বে-আইনী আখ্যা দিয়েছেন এবং সারা বিশ্বের মুসলমানকে এখন এক জোট হবার আহ্বান জানিয়েছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, ইরানের কুদস ফোর্সের জেনারেল কাসেম সোলাইমানি হত্যাকান্ডকে বিনা জবাবে ছেড়ে দেযা ঠিক হবেননা। ইরানের চারপাশে রয়েছে অজস্র মার্কিন লক্ষ্যবস্তু। ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, সৌদি আরব ও উপসাগরীয় দেশগুলোতে স্থাপিত যে কোন মার্কিন স্থাপনায়, সৈন্য, বিশেজ্ঞগণ ইরানের সহজ নিশানায়।
এসব দেশে ইরান হুকুম না দিলেও সেখানে উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভয়ানক হুমকি হিসেবেই কাজ করবে। ভীত সন্ত্রস্ত ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে নিরাপত্তা হুমকি মনে করে গ্রিস সফর সংক্ষিপ্ত করে তড়িঘড়ি দেশে ফিরে যান। উত্তর কোরিয়া, চীন, রাশিয়াসহ মার্কিনবিরোধী দেশগুলো তাদের অমীমাংসিত অ্যাসাইনমেন্টগুলো সম্পন্ন করার চেষ্টা করলেও পূর্বের ন্যায় অপরাধী বা অপবাদী খ্যাত ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধিতা করার সুযোগ কমই থাকবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
তারা আরও বলেন, লিবিয়ায় তুর্কি সেনাদের মোতায়েনে বর্তমানে আমেরিকার নিরবতা সেটাই প্রমাণ করে এবং অদূর ভবিষ্যতে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়তে পারে বিশ্বের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সামরিকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসসূহ।
খোরশেদ আলম: কলাম লেখক ও বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকানিউজ২৪/প্রকাশ: জানুয়ারি ৭, ২০২০
ফাইল ছবি
শেষ মুহূর্তে এসে প্রতিনিধি পরিষদ এবং সিনেট উভয়ই স্বল্পমেয়াদি তহবিল চুক্তিতে সম্মত হওয়ায় সরকার অচল (শাটডাউন) হওয়া থেকে রক্ষা পেল যুক্তরাষ্ট্র। এই চুক্তি না হলে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ সরকারি কর্মচারীকে বিনাবেতনে ছুটিতে পাঠাতে হতো এবং বন্ধ হয়ে যেতো সরকারের গুরত্বপূর্ণ বিভিন্ন সেবা।
বিবিসি জানায়, মার্কিন সরকারকে আগামী নভেম্বরের মধ্যভাগ পর্যন্ত অর্থায়ন সংক্রান্ত একটি বিল সিনেটে ৮৮-৯ ভোটে পাস হয়েছে। তবে এখানে ইউক্রেনের জন্য নতুন কোনো সহায়তার পরিকল্পনা রাখা হয়নি।
৪৫ দিনের এই পরিকল্পনা উত্থাপন করেন মার্কিন হাউজ স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি। এটি পাস হওয়ায় আপাতত স্বস্তি পেলো ডেমোক্র্যাট সরকার।
এর আগে, নতুন অর্থায়ন বিল নিয়ে কট্টর রিপাবলিকান সদস্যদের ঘোর আপত্তি থাকায় আংশিক অচল হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছিল বাইডেন প্রশাসন। সূত্র: বিডি প্রতিদিন