a আমেরিকার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আবারও ইরানে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে সৌদি আরব
ঢাকা রবিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

আমেরিকার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আবারও ইরানে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে সৌদি আরব


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৩, ০৯:৩২
আমেরিকার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আবারও ইরানে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে সৌদি আরব

ফাইল ছবি

সম্প্রতি আমেরিকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। এর অধীনে দেশ দুইটি আগামী দুই মাসের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সম্মত হয়। এ নিয়ে বিশ্ব জুড়ে শুরু হয় আলোচনা। এবার সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী জানালেন, শিগিগরই ইরানে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে তার দেশ।

সৌদির অর্থমন্ত্রী মোহাম্মাদ আল-জ্যাদান বলেন, ইরানে বিনিয়োগ করার জন্য ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে সৌদির। এক্ষেত্রে চুক্তির মেয়াদ কোনো বাধা হতে পারবে না বলে জানান।

আল-জ্যাদান বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দেশের জনগণের জন্য স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। ইরানে সৌদি আরবের সুবিধার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সৌদি আরবও দেশটিকে সুবিধা দেবে। প্রায় সাত বছর বন্ধ থাকার পর কয়েক দিন আগে আবারও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সম্মত হয়েছে সৌদি আরব ও ইরান।

চীনের মধ্যস্থতায় অতি গোপনে কয়েক দিনের আলোচনার পর অবশেষে দূতাবাস ফের চালু করতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। সৌদি ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে আমেরিকা ও ইসরাইল দুটি দেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিগত দিনে দুটি দেশের মধ্যে বৈরি সম্পর্কের পেছনে আমেরিকা-ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

পশ্চিমা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে একে অপরের সাথে যুদ্ধ লাগিয়ে প্রাকৃতিক সম্পদ পাচার করছিল। ইরান-সৌদির নতুন সম্পর্ক এসব দেশগুলোর অনৈতিক স্বার্থ হাসিল অনেকাংশে কমে আসবে। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমপ্রধান ও তেলসমৃদ্ধ দুই দেশের এই পুনর্মিলন বিশ্ব ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে তা বলাই বাহুল্য। সূত্র: ইত্তেফাক

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আরও পড়ুন

ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিশ্ব রাজনীতি


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০২২, ১২:১৫
ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিশ্ব রাজনীতি

ফাইল ছবি

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গত এক মাসে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং ইউক্রেন থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী ইউরোপীয় দেশগুলোয় আশ্রয় নিয়েছেন ত্রিশ লাখেরও বেশি মানুষ। দুই পক্ষের অনেক যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।

বিধ্বস্ত হয়েছে ইউক্রেনের কয়েকটি শহর, আবাসিক এলাকা, বিদ্যালয়, এমনকি হাসপাতালও। পশ্চিমারা এরপরও ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনমূলক আক্রমণকে সফল বলছে না! এর কারণ, এখনো ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পতন হয়নি। তার মানে আরও বেশি সাধারণ মানুষ এবং শহর, আবাসিক এলাকা, বিদ্যালয় ইত্যাদি ধ্বংসস্তূপে পতিত হলে সেটা পশ্চিমা চোখে বিজয় বলে পরিগণিত হবে (যেমনটি তারা বিভিন্ন দেশে করেছে)!

অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি সেদেশের ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি পুরুষদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, যাতে তারা দেশের পক্ষে লড়তে পারেন। কেউ কেউ এভাবে জোরপূর্বক আটকে রাখাকে নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করছেন। কারণ তাদের স্ত্রী-সন্তানরা আপনজনহীন অবস্থায় উদ্বাস্তু হয়ে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে প্রাণ নিয়ে ছুটছেন।

পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিয়ে রাশিয়া গত বিশ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোনো নেতা সেটা যৌক্তিক বলে স্বীকারও করেছেন। তারপরও আমেরিকার আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি বদলায়নি। রাশিয়া বলছে, এটাই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মূল কারণ। কিন্তু আমাদের আরও অতীতে যেতে হবে এ যুদ্ধের প্রেক্ষাপট বোঝার জন্য।

১৯১৭ সালে রাশিয়ায় সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে আরও ১৪টি সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র নিয়ে ১৯২২ সালে গঠিত হয় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। পুঁজিবাদ তথা বৈষম্যমূলক অর্থনীতির জায়গায় সমতাকেন্দ্রিক অর্থনীতিনির্ভর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও জোরদার হয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন সেসব আন্দোলনকে সমর্থন ও সহযোগিতা দেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাম্রাজ্যবাদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। দেশে দেশে সমাজতন্ত্রের বিজয়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ভীত হয়ে পড়ে। ফলস্বরূপ, সোভিয়েত ইউনিয়নবিরোধী ষড়যন্ত্র এবং বিভিন্ন দেশে সোভিয়েতপন্থি সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদান শুরু করে। সোভিয়েত ইউনিয়নবিরোধী কর্মকাণ্ডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৪৯ সালে ১২টি দেশ নিয়ে গঠন করে ন্যাটো সামরিক জোট। ১৯৫৪ সালে পশ্চিম জার্মানিকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় সোভিয়েত ইউনিয়ন সাতটি সমাজতান্ত্রিক দেশ নিয়ে ১৯৫৫ সালে ওয়ারশ সামরিক জোট গঠন করে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর এ জোটও বিলুপ্ত হয়। ওয়ারশ জোট বিলুপ্ত হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে তার একক কর্তৃত্ব বহাল রাখার উদ্দেশ্যে ন্যাটোকে আরও বিস্তৃত করে। বর্তমানে ৩০টি দেশ ন্যাটো জোটের অন্তর্ভুক্ত। ইউক্রেনকেও যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। যে ইউক্রেন একসময় ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রজাতন্ত্র, সেই ইউক্রেন এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লেজুড় হতে চায়!

লেজুড় কেন বললাম? এটি বোঝার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কর্মকাণ্ডে চোখ বুলানো যাক। আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া ইত্যাদি দেশে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো, সেসব দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠন, নিজেদের পছন্দের পুতুল সরকার বসানো বা বসানোর চেষ্টা ইত্যাদি অমানবিক কাজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করেছে গত কয়েক দশকে। ২০০৩ সালে মিথ্যা অভিযোগে ইরাক আক্রমণ, লাখ লাখ মানুষকে হত্যা এবং দেশটিকে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করার কাজে লিপ্ত থেকেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানে সোভিয়েতসমর্থিত সরকারকে হঠাতে জঙ্গিগোষ্ঠীকে সহযোগিতা, বিনিময়ে দশ বছরে (১৯৭৯-১৯৮৯) লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু, দেশান্তরি হওয়া-এসবের পেছনেও ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এরপর আবার ২০০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান দখলে রাখার চেষ্টা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জঙ্গি সৃষ্টি এবং স্বার্থ-সংঘাতে জঙ্গি দমনে নির্বিচারে কোনো দেশে আক্রমণ চালানো-এসব কর্মকাণ্ড মার্কিন অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখার জন্যই দরকার। কেন দরকার? কারণ, যুদ্ধ হলে প্রচুর অস্ত্র বিক্রি হয়, যা তার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে এবং আরও দেশ আক্রমণ করার সুযোগ দেয়।

তাই প্রশ্ন আসে, চার হাজার কিলোমিটার দূরের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে গিয়ে ইউরোপকে নিরাপত্তা দেবে-এটা কি বাস্তবসম্মত? নাকি, বিশ্বের দ্বিতীয় পরমাণু শক্তিধর রাশিয়াকে কোণঠাসা করা এবং নিজের সাম্রাজ্যবাদী কর্তৃত্ব বিস্তৃত করাই তার মূল লক্ষ্য? এখন সোভিয়েত ইউনিয়ন নেই, নেই ওয়ারশ জোটও। তাহলে কী প্রয়োজন ন্যাটোর? ইউরোপের দেশগুলোর নিজেদের স্বার্থ দেখার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি যথেষ্ট নয়? ইউরোপীয় ইউনিয়নে রাশিয়াকে যুক্ত না করার উদ্দেশ্য কী? ইউক্রেন যেটা করেছে-পাশের দেশের সঙ্গে শত্রুতা রেখে চার হাজার কিলোমিটার দূরের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লেজুড় হওয়া-এটা কি সম্মানের? নাকি প্রতিবেশী রাশিয়াকে নিয়ে নিজেদের মাঝে মৈত্রী গড়ে তোলা জরুরি?

এখানে বলা দরকার, ১৯৯১ সালের আগে বিশ্ব যখন দুই পরাশক্তির (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন) প্রভাব বলয়ে ছিল, তখন মূলত তৃতীয় বিশ্বের ১২০টি দেশ নিয়ে গঠিত হয় জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম), যাদের মূল লক্ষ্য ছিল সাম্রাজ্যবাদবিরোধী, উপনিবেশবিরোধী, বর্ণবাদবিরোধী ঐক্য। তারা কোনো পরাশক্তির জোটে ছিল না। আধুনিক ইউরোপ কি মতাদর্শগত দিক থেকে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর চেয়েও অনুন্নত? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশে যে অন্যায় আগ্রাসন চালিয়েছে, তার সহযোগী ছিল ন্যাটো এবং ন্যাটোভুক্ত কিছু দেশ! এসব কি লজ্জার নয়?

এ বাস্তবতায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তার ক্ষমতা ধরে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চান। চান অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং রাশিয়ার ওপর আরও অর্থনৈতিক অবরোধ। এসবের পরিণতি কী? ইউক্রেনে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ছে, এর প্রতিক্রিয়ায় বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়। এটা আমাদের আরেকটা শিক্ষাও দিচ্ছে। সেটা হলো, যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগী দেশগুলোর অর্থনৈতিক অবরোধে এবং আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা ‘সুইফট’ থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ডলারভিত্তিক বিশ্ববাণিজ্যও কিছুটা হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে রাশিয়া চীনের মুদ্রা লেনদেন ব্যবস্থা ব্যবহার করতে চাছে, ভারত রুপি দিয়ে রাশিয়া থেকে তেল কিনতে সম্মত হচ্ছে, সৌদি আরব রুবল দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করতে রাজি আছে। এমনকি যে ইউরোপ তেলের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল, সেখানে এবং খোদ যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম হুহু করে বেড়েছে।

তাহলে সমাধান কোথায়? জেলেনস্কি প্রথমে না চাইলেও রাশিয়ার প্রধান দাবি ইউক্রেনের ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার ব্যাপারে তিনি এখন নমনীয়। অন্যান্য দাবি (২০১৪ সালে রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়াকে স্বীকৃতিদান, রাশিয়া কর্তৃক স্বাধীন ঘোষিত ইউক্রেনের দুই এলাকা দোনেস্ক ও লোহান্সক বিষয়ক) নিয়েও তিনি আলোচনা করতে চান।

আমাদের এটিও বুঝতে হবে, আজকের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কোনো মার্কিনবিরোধী সমাজতান্ত্রিক যুদ্ধ নয়। কিংবা কোনো দেশে মার্কিন আগ্রাসনবিরোধী রাশিয়ার সহযোগিতা নয়। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনও একজন পুঁজিবাদী রাষ্ট্রনায়ক। আর পুঁজিবাদের লক্ষ্য হলো সাম্রাজ্যবাদী হওয়া। আজকের রাশিয়া নব্য-সাম্রাজ্যবাদী হতে চাচ্ছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের রাশিয়াবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে। যে কারণে জেলেনস্কির আলোচনা প্রস্তাবে পুতিন এখনো সাড়া দেননি। দুই দেশের অন্য প্রতিনিধিদের পাঁচ দফা আলোচনাও যুদ্ধ বন্ধে ভূমিকা রাখছে না।

আমরা ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের ওপর রাশিয়ার আক্রমণ ও ধ্বংসযজ্ঞের নিন্দা জানাই। একই সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এ অমানবিক যুদ্ধের পরিসমাপ্তি চাই। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাঝে আত্মসম্মান জাগ্রত হোক, সেই আশাবাদ ব্যক্ত করি। ইউক্রেনকে নিয়ে পশ্চিমাদের ন্যাটো-রাজনীতিরও তীব্র নিন্দা জানাই। ন্যাটোর বিলুপ্তি বৈশ্বিক দাবি হোক, যা বিশ্বে যুদ্ধ বন্ধ করার দাবিও। তা না হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর নব্য-সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়ার দ্বন্দ্বে পৃথিবীকে ভুগতে হবে অনেকদিন। সূত্র: যুগান্তর

অপূর্ব অনির্বাণ : সহকারী অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা; পিএইচডি গবেষক, কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়া

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

রাশিয়া ইউক্রেনে যে কোন সময়ে সামরিক অভিযান চালাতে পারে!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২২, ১২:৩৯
রাশিয়া ইউক্রেনে যে কোন সময়ে সামরিক অভিযান চালাতে পারে!

ফাইল ছবি

ইউক্রেনকে ঘিরে ফেলেছে রাশিয়া। সীমান্তের চারপাশে সেনা মোতায়েনের কাজও সম্পন্ন করেছে। এমনকি বেলারুশেও সেনা পাঠিয়েছে। এবার যেকোনো মুহূর্তে সামরিক হামলা চালাতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, এটা পুতিনের জন্য ‘চরম মূর্খতার কাজ’ হবে। কারণ এতে হাজার হাজার মানুষ মারা যাবে।

একই সতর্কবার্তা দিয়েছে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রও। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ­াদিমির পুতিন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছেন। এক ‘দুঃস্বপ্ন’র মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইউক্রেন।

মার্কিন কর্তারা বলছেন, পরিস্থিতি ‘প্রচণ্ড ভয়াবহ’। এমন খবরে ইউক্রেনের শহরগুলোতে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই আতঙ্কের মধ্যেই বুধবার কিয়েভ সফর করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। অভিযানে না চালিয়ে সমস্যা সমাধানে ‘শান্তিপূর্ণ পথ’ নিতে রুশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া। এরপর থেকেই প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা চলছে। গত বছরের শেষ দিকে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব ইউরোপ।

সেই সময় ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানায়, তাদের সীমান্তে ট্যাংক, মিসাইল ও অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জামসহ লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে মস্কো। তারা দাবি করে, চলতি বছরের জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারির মধ্যে রুশ সেনারা ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে।

রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পরিকল্পনা অস্বীকার করেছে। তবে তারা বলেছে, কিয়েভকে ন্যাটো জোটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না-এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া না হলে মস্কো সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে।

এরপর পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুশ কর্মকর্তাদের দফায় দফায় বৈঠক ও আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতির এতটুকু উন্নতি হয়নি। সম্প্রতি সপ্তাহখানেক আগেও তিন দফা কূটনৈতিক আলোচনা ব্যর্থ হয়। এরপর আবারও উত্তপ্ত হতে শুরু করে পরিস্থিতি।

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজ এক বার্তায় জানায়, ইউক্রেন পরিস্থিতি ‘খুবই ভয়ংকর’। মস্কো যেকেনো সময় হামলা চালাতে পারে। এদিনই ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া তাদের সীমান্তে ১ লাখ ২৭ হাজারের বেশি সশস্ত্র, নৌ এবং বিমানসেনা মোতায়েন করেছে। আরও বলা হয়, ইউক্রেনকে রাশিয়া দ্বিখণ্ডিত ও ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।

গোয়েন্দা ভয়, দক্ষিণ ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চলে সেনা ঢুকিয়ে দেবেন পুতিন। এরপর একে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করতে আলোচনার জন্য চাপ সৃষ্টি করবেন।

শেষ পর্যন্ত দোনবাস পশ্চিমাপন্থি ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি বাফার রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এরপরও ইউক্রেনকে সেনা ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে রীতিমতো ঘিরে ফেলেছেন পুতিন। রুশরা বড় ধরনের অভিযান চালাবে বলেই মনে করছেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।

সেই লক্ষ্যেই বেলারুশে পুরো এক ডিভিশন সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই বুধবার রাজধানী কিয়েভে এসে পৌঁছান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন।

প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জিলেনস্কি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবার সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর এক বিবৃতিতে ব্লিংকেন বলেন, ‘আমরা আশা করি, আমরা কূটনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ পথে সমস্যার সমাধান খুঁজতে পারি।’ সূত্র: যুগান্তর

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক