a
ফাইল ছবি
আলোচিত ধর্মীয় বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের নিখোঁজের ৫ দিন পার হলেও এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দিবাগত রাত থেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার।
এদিকে নিখোঁজ আবু ত্ব-হা আদনানের সন্ধান চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গতকাল সোমবার (১৪ জুন) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সাউথ এশিয়ার ভেরিফায়েড টুইটার থেকে এ বিবৃতি দেয়া হয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সাউথ এশিয়ার ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ত্ব-হা ‘নিখোঁজ’ সংক্রান্ত বাংলাদেশের একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদন শেয়ার করা হয়েছে। এর সাথে বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে যে, আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান ও তার তিন সঙ্গী গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন। আবু ত্ব-হা ও তার সঙ্গীদের অবস্থান শনাক্তে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে দ্রুত এবং নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার দাবি জানাচ্ছে অ্যামনেস্টি। আর তারা যদি রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকে, তাহলে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার রংপুর থেকে ঢাকায় রওনা হওয়ার পর থেকে আবু ত্ব-হার ‘খোঁজ মিলছে না’ বলে জানিয়েছে তার পরিবার। একই সাথে তার সাথে থাকা আব্দুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দীন ফয়েজেরও খোঁজ মিলছে না।
এ ঘটনায় রংপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। জিডির তথ্য ধরে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডের আহলে হাদিস মসজিদ-সংলগ্ন গলিতে তার পৈতৃক বাসা। বিয়ের পর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে শালবন এলাকার চেয়ারম্যানের গলিতে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। আদনানের স্ত্রীর নাম হাবিবা নূর। তিন বছরের একটি মেয়ে ও দেড় বছর বসয়ী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে তাদের।
আদনানের স্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা ৩৭ মিনিটে তার (আদনান) সঙ্গে শেষ কথা হয়। উনি তখন গাবতলী ছিলেন। এরপর রাত ৩টা থেকে তার ফোন বন্ধ পাই, এখন পর্যন্ত নম্বর বন্ধই পাচ্ছি।’ তিনি আরো জানান, নিখোঁজ হওয়ার সময় তার সঙ্গে গাড়িচালকসহ আরো তিনজন সহকর্মী ছিলেন।
সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ৪১তম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত শুক্রবার। যেখানে চার লাখের বেশি স্বপ্নবাজ লড়েছেন এমন অগ্নি পরীক্ষায়। তাদের মাঝেই উঠে এসেছে অন্যরকম এক স্বপ্নবাজ যুবকের নাম যিনি কিনা পরীক্ষা কেন্দ্রেই উপস্থিত হয়েছিলেন বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পোশাকে।
গত শুক্রবার(১৯ মার্চ)অনুষ্ঠিত বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আলোচিত হয়েছেন খাইরুল হাসান শিবলু (২৯)। ইতোমধ্যে তার ছবিটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, লুঙ্গি-গেঞ্জি ও গামছা পরা এক শিক্ষার্থী পরীক্ষার একটি কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তার হাতে পরীক্ষার প্রবেশপত্র।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, খায়রুল ময়মনসিংহের নান্দাইলের আতকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ডিপ্লোমা শেষে বিএসসি, একইসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় আইন বিষয়েও পড়েছেন দু’বছর। নানামুখী অবিজ্ঞতা সম্পন্ন শিবলু ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছেন। মজার ব্যাপার হলো এই শিবলুই করে বসেছেন সচরাচর এক নীতিবিরুদ্ধ কাজ। পরীক্ষার কেন্দ্রে গিয়েছেন লুঙ্গি, গেঞ্জি এবং গামছা পরেই। আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন অতি-আধুনিকতার চাপায় পিষ্ট সত্যিকার বাঙালি এখনও টিকে আছে।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর মহাখালী টিএন্ডটি মহিলা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটের সামনে লুঙ্গি, টি-শার্ট ও গলায় গামছা পরে একটি ছবি তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে শেয়ার করেন। ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন ‘তৃতীয় ও শেষ বিসিএস পরীক্ষা। তাই আজ লুঙ্গি পরেই পরীক্ষা দিলাম।’এ সময় তার সাথে ছিলেন তার বোন ও ভগ্নিপতি।
এ বিষয়ে শিবলু বলেন, লুঙ্গি বাংলাদেশের মানুষের বহুল ব্যবহৃত এক আরামদায়ক পোশাক। বাঙালির ঐতিহ্য। এমন আরামদায়ক পোশাক সারাবিশ্বে আর দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা তা সন্দেহ। দেশে বাস করেন কিন্তু কখনো লুঙ্গি পরেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মনে হয় অসম্ভব। আর সেই লুঙ্গি নিয়েই আমি ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা দিলাম।
তিনি আরো জানান, বাংলার সোনার সন্তানরা বিদেশি সংস্কৃতিকে লালন করে না। বরং দেশীয় ঐতিহ্যকে ধারণ করে নিজেকে পরিচয় দিলাম একজন কৃষক বাবার সন্তান হিসেবে। শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আমাকে প্রকৃত বাঙালি হিসেবে পরীক্ষার হলে ঢুকতে দেওয়ার জন্য টি অ্যান্ড টি মহিলা কলেজ, মহাখালী কর্তৃপক্ষের কাছে। তাদের জন্য শুভকামনা নিরন্তর। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি এড়িয়ে নিজেকে বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিয়ে পরীক্ষা দিলাম। একজন বাঙালির ঐতিহ্য প্রকাশ করায় আমাকে নিয়ে ট্রল করছেন, আসলে ট্রলের পাত্র আমি নই, যারা আমাকে করার চেষ্টা করছেন, তারাই ট্রলের পাত্র। বহুরূপীতা প্রকাশ করছেন। তাদের বাইরে-ভেতরে আরেক। প্যান্ট পরে নিজেকে শিক্ষিত প্রকাশ করতে চাইছেন। নিজেকে আধুনিক প্রকাশ করতে চাচ্ছেন। তবে আমি কাউকে ছোট করছি না, এটি বলে।
উল্লেখ্য, তুমি সফল হলে তোমার লুঙ্গি পরা ছবিটাই হবে ইতিহাস। শুধু বাংলাদেশ বা ভারতের সীমানায় নয়, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, জর্ডান, সোমালিয়া বা কেনিয়ার মতো দেশেও জনপ্রিয় পোশাক লুঙ্গি। সোনার বাংলার সন্তান হয়ে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে ৪১ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আলোচিত হয়েছেন খাইরুল হাসান শিবলু।
ফাইল ছবি
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি বাড়াতে ও পড়ার ঘাটতি পূরণ করতে শিক্ষকদের ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনা জারি করা হয়।
এদিকে নতুন নির্দেশনা ঠিকমত বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা নজরদারিতে রাখতে আলাদা আদেশ জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। এজন্য সকল বিভাগীয় উপপরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা ও থানা শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
১১ দফা নির্দেশনা:
অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের তথ্য রেজিস্ট্রারে সংরক্ষণ করতে হবে। তাতে শিক্ষার্থীর নাম, শ্রেণি, রোল, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, কী কারণে অনুপস্থিত, গৃহীত পদক্ষেপসহ অন্যান্য বিষয় উল্লেখ থাকবে।
অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করবেন শিক্ষকরা। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণে হোম ভিজিট করতে হবে। প্রতিটি বিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির (শ্রেণিভিত্তিক) হার নিয়মিতভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। উপস্থিতির ঘাটতি বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
কোভিড-১৯ প্রভাবজনিত শিখন ঘাটতি পূরণে শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষার্থীদের পারঙ্গমতা যাচাই করে বিভিন্ন দলে ভাগ করে শ্রেণিশিক্ষক ও বিষয় শিক্ষকদের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড নির্দেশিত পাঠ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। অনলাইন ক্লাস চলমান থাকবে। সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে সম্প্রচারিত 'ঘরে বসে শিখি’র পাঠদান কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা অংশ নেবে।
বিদ্যালয়ের বিষয় শিক্ষক ও শ্রেণি শিক্ষকরা শ্রেণিভিত্তিক প্রতিটি শিশুর শিখন যোগ্যতার প্রোফাইল (শিখন ঘাটতি পরিস্থিতি) প্রণয়ন করে এ সম্পর্কিত অগ্রগতির রেকর্ড সংরক্ষণ করবেন। শিক্ষার্থীর ধারাবাহিক মূল্যায়নে শ্রেণির কাজ, বাড়ির কাজ (ওয়ার্ক শিট) যাচাইকরণে একই শ্রেণির শিক্ষার্থীর ঘাটতি নিরূপণে শিক্ষকদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রধান শিক্ষক, শ্রেণি শিক্ষক, বিষয় শিক্ষক এবং কর্মচারীদেরকে শিক্ষার্থীদের মনো-সামাজিক স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্বারোপ করে সহনশীল ও মানবিক আচরণ করতে হবে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রতিদিন ২টি শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। রুটিন অনুযায়ী যেসকল শিক্ষকের পাঠদান কার্যক্রম থাকবে না তারা বিদ্যালয়ে বসে অবশিষ্ট ৩টি শ্রেণির জন্য গুগল মিট-এ (যেখানে সম্ভব) কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
মাঠপর্যায়ের প্রত্যেক মেন্টরকে পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ থেকে প্রেরিত মেন্টরিং গাইডলাইন (মেন্টরদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সংক্রান্ত) ও মেন্টরিং টুলস অনুসরণ করে নিজ দায়িত্ব পালনে সচেতন হতে হবে এবং সকল ক্ষেত্রে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সূত্র: বিডি প্রতিদিন