a
ফাইল ছবি
গ্রাহকদের টাকা ফেরত ও ই-অরেঞ্জের নামে প্রতারণার মূলহোতা সোহেলকে দেশে আনার দাবিতে সড়ক অবরোধ করায় পুলিশ লাঠিচার্জ করে করেছে। এতে কয়েকজন গ্রাহক আহত হয়েছেন এবং সেখান থেকে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হাইকোর্ট থেকে মৎস্য ভবনের দিকে যাওয়ার রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, বৃহস্পতিবার, সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস। এমনিতেই যানবাহনের চাপ বেশি থাকে, তারপর গ্রাহকরা সড়ক অবরোধ করেছিল। আমরা তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে রাস্তা পরিস্কার করে দেই।
আর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২/৩ জনকে থানায় নেওয়া হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
গ্রাহকরা সড়ক অবরোধ করার পাশাপাশি তারা পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা ও ক্রিকেটার মাশরাফির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-কমার্সের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন ই-অরেঞ্জ গ্রাহকরা।
এ বিষয়ে ই-অরেঞ্জ ভুক্তভোগী কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আফজাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করেছে। আমাদের ১০ জন এতে আহত হয়েছে। আটক করা হয়েছে কয়েকজনকে।
ফাইল ছবি
দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিরুদ্ধে আসা বিভিন্ন অভিযোগের জবাব দিতে প্রতিষ্ঠানটিকে ‘কারণ দর্শানোর সুযোগ’ দেয়া হবে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, ‘গ্রাহকদের কাছ থেকে তারা যেই টাকা নিয়েছে, তা তারা কীভাবে ফেরত দেবে সেই বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হবে।’ রবিবার বিকেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এছাড়া ইভ্যালি, আলেশা মার্টসহ দেশের প্রচলিত সকল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের ব্যবসা পরিকল্পনা চাইবে সরকার, বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য সচিব। দেশে ই-কমার্স সেক্টরের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ই-ক্যাব, বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার প্রতিনিধি ও ব্যবসা বিষয়ক আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে একথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হলে সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে সরকার। কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বাংলাদেশের প্রচলিত আইনসিদ্ধ না হলে সেসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হবে। বাণিজ্যসচিব আরও জানান, কোনো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নতুন গ্রাহকের টাকা দিয়ে পুরানো গ্রাহককে পরিশোধ করতে পারবে না।
বিবিসি বাংলাকে তপন কান্তি ঘোষ জানান, বৈঠকে ইভ্যালি সম্পর্কে যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাতে প্রতিষ্ঠানটিকে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে ‘কারণ দর্শানোর সুযোগ’ দেয়া হবে। ইভ্যালিকে তাদের বিজনেস প্ল্যান ব্যাখ্যা করার সুযোগ দেয়া হবে সংশ্লিষ্ট একটি কমিটির কাছে। কমিটি যাচাই করবে যে তারা আসলেই ভোক্তাদের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরত দিতে পারবে কিনা।
কমিটি যদি তাদের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয় তাহলে প্রয়োজনে তাদের সুযোগ দেবে। কমিটি চাইলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ারও সুপারিশ করতে পারে।” তবে এই প্রক্রিয়াগুলো সময় সাপেক্ষ হওয়ায় এগুলোর বাস্তবায়নে কিছুটা দেরি হতে পারে বলে মন্তব্য করেন মি. ঘোষ।
ফাইল ছবি: ম্যাথিউ মিলার
বাংলাদেশে যাঁরা দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেবে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে।
গতকাল মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই কথা বলে না।
ব্রিফিংয়ে মিলারের কাছে একজন জানতে চান, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতিবিরোধী সমন্বয়কারী রিচার্ড নেফিউ বাংলাদেশে তাঁর সফর মাত্র শেষ করেছেন। সফরকালে তিনি দেশটির বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বাংলাদেশে তাঁর সফরের সময়কালে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমের অর্থ পাচার নিয়ে একটি বোমা ফাটানোর মতো প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তিনি (এস আলম) বর্তমান শেখ হাসিনা সরকারের একজন সহযোগী।
তিনি (এস আলম) এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। বিদেশে একটি ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি। ব্যাপক দুর্নীতি, বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে স্টেটওয়াচ ডটনেট ও ওসিসিআরপি একই ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠককালে রিচার্ড নেফিউ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তাঁরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাকে একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। তাঁর প্রশ্ন হলো, বিশেষ করে যাঁরা দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকার কি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায়?
জবাবে মিলার বলেন, ‘আমি এর আগে অন্য একটি দেশের বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে যেমনটা বলেছি, নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে আমরা কখনোই কথা বলি না। সাধারণভাবে বলতে গেলে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি হাতিয়ার হতে পারে নিষেধাজ্ঞা। আমাদের আরও কিছু হাতিয়ার রয়েছে। যেমন সম্পদ জব্দ করা। অংশীদার দেশগুলোকে তথ্য দেওয়া, যাতে তারা মামলা করতে পারে।’
একই প্রশ্নের উত্তরে মিলার বলেন, দুর্নীতিবাজদের নির্মূলে ন্যায়সংগত ও নিরপেক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাঁরা বাংলাদেশকে উৎসাহিত করেন।
ব্রিফিংয়ে আরেক প্রশ্নে বলা হয়, বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আজ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে। এ বিষয়ে মুখপাত্রের কোনো মন্তব্য আছে?
জবাবে মিলার বলেন, এখান থেকে তিনি অনেকবার স্পষ্ট করেছেন, বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। তাঁরা বিষয়টি প্রকাশ্যে স্পষ্ট করেছেন। তাঁরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি অব্যাহত থাকবে জানান মিলার। সূত্র: প্রথম আলো