a
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তারা আগামী ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপি প্রদান করবে।
আজ বৃহস্পতিবার নীলক্ষেত মোড়ে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনকালে তারা এই ঘোষণা দেয়। এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। উল্লেখ্য, এর আগে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় নীলক্ষেত মোড়ে হল-ক্যাম্পাস খুলে দেয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।
সংগৃহীত ছবি
গতকাল ২৪.০৫.২০২১ সোমবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নীলদল এর ঈদ উত্তর সাধারণ সভা অনলাইন মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় "শক্তশালী ঐক্য গড়তে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও কর্ম: আমাদের করণীয়" শীর্ষক বিষয়ে নীলদলের সদস্যবৃন্দ আলোচনা করেন।
সভায় বক্তাগণ বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানান উদ্ধৃতি টেনে সংগঠন পরিচালনায় আদর্শ, ত্যাগ ও সততার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। কোন ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া, পদ-পদবীর প্রতি মোহাচ্ছন্ন না থেকে আদর্শ ভিত্তিক জনহিতৈষী কাজ করতে সবার মতামত গ্রহণের উপর জোর দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের চর্চায় শিক্ষকদের মধ্যে পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ ও বিশ্বাস বজায় রেখে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করার কথা বলা হয়।
ক্যাম্পাসে শিক্ষা সহায়ক পরিবেশ বজায় রাখতে সবাই একমত পোষণ করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চর্চার মাধ্যমে উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিতকল্পে শিক্ষকদের নিজ নিজ কর্মনিষ্ঠা অব্যাহত রাখার জন্য সবাই একমত পোষণ করেন। বিভিন্ন বিভাগে নতুন যোগদানকৃত শিক্ষকবৃন্দকে অভিনন্দন ও স্বাগত জানানো হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সমস্যাসমুহ দ্রুত নিরসনকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষকবৃন্দের মধ্য থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করা হয়।
যে সমস্ত সহকর্মী বা তাদের আত্মীয়স্বজন করোনা মহামারীতে অসুস্থ হয়েছেন বা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের জন্য সহমর্মীতা ও শোক প্রকাশ করা হয়। সভায় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সিন্ডিকেট সদস্য, চেয়ারম্যানসহ সব স্তরের শিক্ষকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নীলদলের সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া এর সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন নীলদলের সাধারণ সম্পাদক ড. মোস্তফা কামাল এবং অনলাইন জুম প্লাটফরম ব্যবস্থাপনায় ছিলেন নীলদলের দপ্তর সম্পাদক জনাব কাজী ফারুক হোসেন।
সংগৃহীত ছবি
সময়টা ২০১৯ এর শেষ। সবার মনে অজানা এক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বেশীরভাগ মানুষের মনোযোগের কেন্দ্র বিন্দু হয়ে উঠেছে চীনের উহান। সেই আতঙ্ক শুধু আতঙ্কের পর্যায়ে না থেকে কিছু দিনের মধ্যেই ইউরোপ, আমেরিকাসহ সারা পৃথিবীতে বাস্তব হয়ে দেখা দিল। অপ্রস্তুত পৃথিবীবাসী যেন হাঁটু গেড়ে আত্মসমর্পণ করল সেই অদেখা, অদ্ভুত শত্রুর কাছে। আর সাথে সাথে আমাদের জীবনে নেমে আসল ভয়ানক পরিবর্তন। লকডাউনের মত সিদ্ধান্ত নিতে হল সরকারগুলোকে। আমরা ঘরে আটকা পড়ে গেলাম। পরিশেষে আমরা কিছুটা পরিত্রান পেয়েছি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দয়ায় এবং কিছু মানুষের অক্লান্ত চেষ্টায়।
কিন্তু পরিবর্তন আসল আমাদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্যের। অনেকে মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্য কে একি সাথে আলোচনা করলেও আমরা এটাকে পৃথকভাবে আলোচনা করছি। করোনা পরবর্তী মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্য আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আসুন দেখি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কি বলছে, বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা কর্তৃক ১৯৪৮ ঘোষিত সংজ্ঞা হল,
“স্বাস্থ্য বলতে সম্পূর্ণ শারীরিক মানসিক এবং সামাজিক মঙ্গল বা কল্যাণবোধকে বোঝায়। শুধু রোগ বা দুর্বলতার অনুপস্থিতিকেই স্বাস্থ্য বলেনা। “বৃহত্তর সমাজে ব্যাক্তির অবস্থান অনেকটাই তার স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে।
তাই এখানে সামাজিক স্বাস্থ্যকে মানসিক স্বাস্থ্যের চেয়ে কম গুরুত্ব দেয়ার সুযোগ নেই। ব্যক্তি যেহেতু সমাজের সাথে যুক্ত তাই সামাজিক স্বাস্থ্য আলোচনার দাবি রাখে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের মতই।
করোনার সময় আমরা দেখেছি কিভাবে আত্মহত্যা, মাদকসহ নানারকম মানসিক সমস্যা বেড়ে গিয়েছিল। লম্বা সময় ঘরে বন্দী থাকলেও এখন স্কুল, কলেজ যাওয়াসহ নানা কাজে আমাদের বাইরের জগতে মিশতে হচ্ছে। আর এই জায়গাটাতেই হতে পারে সমস্যা। চলুন দেখি কোন জায়গা গুলোতে সমস্যা হতে পারে!!
১.সামাজিক অভিযোজনঃ করোনার পরবর্তী সময়ে সমাজের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে আমাদের সমস্যা হতে পারে। কেননা, দীর্ঘদিন ঘরে আটকা থেকে একা থাকার প্রবণতা দেখা দিতে পারে।
২.অল্পতেই রেগে যাওয়াঃ সিগমুন্ড ফ্রয়েডের তত্ত্বানুসারে কোন জিনিস অনবদমিত থাকলে সেটা অন্যভাবে প্রকাশ পায়। আমরা করোনার সময় ঘরে বন্দী থেকে যে বিষয়গুলো অবদমন করেছি আমাদের সচেতন মন থেকে অচেতন মনে, সেই জিনিস গুলো রাগ হিসেবে বেরিয়ে আসতে পারে।
৩.সম্পর্কের সমস্যাঃ করোনা পরবর্তী সময়ে আমাদের সম্পর্কগুলো করোনা পূর্ববর্তী সময়ের মত কাজ নাও করতে পারে। এটা হতে পারে সময় এবং ব্যক্তির নিজের মধ্যে পরিবর্তনের ফলে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় --
১.নেচার থেরাপিঃ এখন যেহেতু আমাদের বাইরে যাওয়ার সুযোগ তৈরী হয়েছে, তাই নেচারকে উপভোগ করা এবং এর সান্নিধ্যে গেলে আমরা আমাদেরকে নতুনভাবে খুঁজে পাব।
২.কৃতজ্ঞতা প্রকাশঃ সবসময় হা-হুতাশ না করে যা হয়েছে তাকে গ্রহণ করে নিতে হবে। যা আছে সেটার উপর সন্তুষ্ট এবং কৃতজ্ঞ থাকতে হবে।
৩.অন্যকে বোঝাঃ করোনার মধ্যে সবকিছুই পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবকিছু। সেই আমাদের ব্যক্তি মনন ও মানসিকতারও ঘটেছে আমূল পরিবর্তন। এই ক্ষেত্রে আমরা আগের মত করে আমার চারপাশের মানুষগুলোকে না বুঝে বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে বুঝতে হবে।
৪.সামাজিক কাজে সক্রিয় থাকাঃ অনেক বেশি মানুষ এখন সামাজিক সমস্যার মধ্যে পতিত হয়েছে। তাদের সাহায্য সহযোগীতায় এগিয়ে আসলে তাদের যেমন উপকার হবে ঠিক তেমনি আমাদের অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তাই নিজেকে উন্নয়নমূলক কাজে যুক্ত করতে হবে।
৫.ক্ষমা করাঃ ক্ষমা একটি মহৎ গুণ। বুঝতে হবে যে আমার যে সমস্যা গুলো হচ্ছে নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে, ঠিক তেমনি অন্য একজনেরও আমার সাথে একি রকম সমস্যা হতে পারে। তাই ওই ব্যক্তিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা।
উপরোক্ত বিষয়গুলো অনুসরণ করলে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনে সুন্দর একটি মানসিক অবস্থা নিয়ে জীবন যাপন করতে পারব।
সর্বোপরি আমরা যদি সমাজের জন্য এবং সমাজের মানুষের জন্য ভালো কিছু করার মানসিকতা রাখি তাহলে আমাদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সকল স্বাস্থ্যই ভালো থাকবে ইনশাআল্লাহ।
এইচ.এম তৌফিকুর রহমান
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট, সেন্টার ফর এডভান্স সোশ্যাল রিসার্চ।