a
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইংরেজি বিভাগের ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অংকন বিশ্বাসের রহস্যময় মৃত্যুর পিছনের রহস্য উন্মোচনের দাবি জানিয়ে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও প্লাকার্ড হাতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। কর্মসূচি পালনের মূল উদ্দেশ্য ছিল রহস্যজনক অকাল মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি। অংকনের মৃত্যুর সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও রহস্যময় মৃত্যুর কোন হদিস মিলল না। এতে ক্ষুব্ধ সহপাঠী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের সহপাঠী অংকন বিশ্বাসের রহস্যজনক এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না। এই মৃত্যুর পেছনে কী আছে তা খুজে বের করার জোর দাবি জানাচ্ছি। একমাত্র জবি প্রশাসনই আইনি ব্যবস্থা গ্ৰহন করে পলাতক শাকিলকে আটক করে মৃত্যুর পিছনের আসল রহস্য উন্মোচন করতে পারবে। অংকনের রহস্যজনক মৃত্যুর সাত দিন অতিবাহিত হাওয়ার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরব কেন? এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিকট সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি তুলে ধরেছিলেন।
অংকন বিশ্বাস ছিল ১২তম ব্যাচের শ্রেষ্ঠতম শিক্ষার্থী। ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট! অসাধারণ বিতার্কিক!টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করেছে একাধিক বার৷ তার হাত ধরে ইংরেজি বিভাগে এসেছে বেশ কিছু ট্রফি৷ নাচেও চমৎকার। মানুষ হিসেবে অনন্য, অতুল্য! এমন একজন শিক্ষার্থী মৃত্যুর রহস্য এখনো উদঘাটন করার কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এমতাবস্থায় প্রশাসন নিরব ভূমিকায় রয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
নাহিদ হাসান রবিন জানান, অংকনকে আমরা ফিরে পাবো না কখনোই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিকট আবেদন শীঘ্রই রহস্যজনক মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে কাজ করবে। অংকনের মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু ছিল না তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যুর পিছনে এক বা একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকলে শীঘ্রই শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
১২ তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, অংকনের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি জানাচ্ছি এমন মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে মেনে নিতে পারছি না। তার মানসিক যন্ত্রণাই মৃত্যুর অন্যতম কারণ ছিল।
উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে অংকনকে মুমূর্ষু অবস্থায় রেখে পালিয়ে গিয়েছিল তার স্বামী শাকিল আহমেদ। পরবর্তীতে স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৮ মে রাত ১১ঃ৩০ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন।
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্রে নতুন ভবনের ঠিক সামনে অবস্থান করছে "৭১ এর গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি "নামে যে ভাস্কর্যটি অবস্থান তা বাংলাদেশের একমাত্র গুচ্ছ ভাস্কর্য এটি। ভাস্কর্যটির সামনে পেছনে আছে দুইটি অংশ। অত্যন্ত সুনিপুণ হাতে ভাস্কর্যটি তৈরি করেছেন শিল্পী ভাস্কর রাসা।
এই শিল্পকর্মে তাঁকে সহযোগিতা করেছিলেন সহকারী ভাস্কর রাজীব সিদ্দিকী, রুমি সিদ্দিকী, ইব্রাহীম খলিলুর রহমান ও মিয়া মালেক রেদোয়ান। ভাস্কর্যের এক অংশে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ১৯৭১ সালে ২৫ এ মার্চ রাতে ঢাকায় পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরচিত গণহত্যার দৃশ্য। গণহত্যায় নিহত সে সমস্ত ব্যক্তিবর্গের স্মৃতি রক্ষার্থে ভাস্কর্যের এক অংশে নির্মাণ করা হয় ৭১ এর গণহত্যা।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জ্বালাময়ী ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’। তখন থেকে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে দা, ছুরি, বটি, বল্লমসহ নানা ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সজ্জিত হয় নারী-শিশুসহ বিভিন্ন শ্রেণীর পেশাজীবীরা।
২৫ মার্চ রাতে গণহত্যার প্রতিশোধ নিতে ও দেশকে শত্রুমুক্ত করতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। বর্তমান ভাস্কর্যটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোভা বর্ধনের এক অদ্বিতীয় শিল্পকর্ম। এর চারদিকে আছে পানির ফোয়ারা। পানির ফোয়ারা ছাড়লে নয়নাভিরাম এক দৃশ্যের অবতারণা হয়। রাতের বেলায় রঙ্গিন বাতির আলোয় এর রূপ যেন আরও চমৎকার হয়ে ওঠে। সাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম খান ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ এর শুভ উদ্বোধন করেন।
বর্তমানে ভার্স্কটিকে শান্ত চত্বর নামে অভিহিত করা হয়। শান্ত চত্বর নাম করার পিছনে রয়েছে বিশেষ এক অর্থ। কে এই শান্ত? যার নামানুসারে এই চত্বরের নামকরন করা হলো। মেহেদী আলম শান্ত যিনি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০০-২০০১ শিক্ষাবর্ষের ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক মেধাবী তরুণ শিক্ষার্থী। মেহেদী আলম শান্তর জন্ম ব্রাহ্মনবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটাইল গ্রামে। যিনি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী। যিনি ২০১০ সালে অকাল মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর নাম অনুসারেই এই ভাস্কর্য অঙ্গণ এর নামকরণ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালেয়র শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় সারাক্ষণ মুখরিত থাকে এই চত্বর। নানা ধরনের উৎব অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবেও কাজ করে চত্বরটি। মাঝে মাঝে পর্যটকদের পদাচরাণায় আরও বিকশিত হয় এর সোভা।
ভাস্কর্যটি ঘিরে আছে ২টি শিক্ষাভবনে প্রায় ১২টি বিভাগ। ক্লাসের ফাঁকে অবসর সময় কাটাতে এ সমস্ত বিভাগর শিক্ষার্থীরা এসে এখানে ভিড় জমায়। চলে আড্ডা গল্পও। কেউ আবার ফেসবুক চালাতে কিংবা বই পড়াতে মশগুল থাকে। জবি শান্ত চত্বর সত্যিই যেমনি ঐতিহ্যের ধারক বাহক তেমনি শিক্ষার্থীদের চেতনা ও প্রাণের তারুন্যের জায়গা।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশে যে নিস্তব্ধ নীরবতা বিরাজ করে চলেছে তার মাঝেই প্রাণের তারণায় স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে ভাস্কর্যটি যে এক অনন্য ভালোবাসার জায়গা। করোনা মহামারী পেরিয়ে আবারো মুখরিত হোক জবি, আবার জনসমাগমে উল্লাসিত হোক শান্ত চত্বর। সকল শিক্ষার্থীদের এই প্রত্যাশায়ই কেটে যাচ্ছে মহামারীর দিনগুলো।
ফাইল ছবি
আফগানিস্তানে এখনো কোনো সরকার গঠন করেনি তালেবান। সংগঠনটির নেতৃত্বে সেখানে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনে সহায়তা করে যাচ্ছে পাকিস্তান। এমনটাই জানিয়েছেন পাকিস্তান সেনবাহিনীর প্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
জানা যায়, গতকাল শনিবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের সঙ্গে এক বৈঠকে এ কথা বলেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান।
পাকিস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, আফগানিস্তানে সরকার গঠনে সহায়তার পাশাপাশি সেখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনতে পাকিস্তান কাজ করবে বলে ডমিনিক রাবের সঙ্গে বৈঠকে জানিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান।
এদিকে, পাকিস্তান সেনাপ্রধান সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ককে ‘খুবই শক্তিশালী’ বলে উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, ‘এ সম্পর্ককে পরবর্তী ধাপে নেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে যুক্তরাজ্যের। দুই দেশেরই আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। তবে আমরা তালেবানকে তাদের কাজের মাধ্যমে মূল্যায়ন করবো, মুখের কথায় নয়।’
তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার ইঙ্গিতও দিয়েছেন ডমিনিক রাব। তবে এখনই তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে হাঁটবে না যুক্তরাজ্য বলে জানান তিনি। পাশাপাশি আফগানিস্তানের শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।