a জবির বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠিত
ঢাকা রবিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

জবির বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠিত


সিয়াম, জবি প্রতিনিধি, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
বুধবার, ১৬ মার্চ, ২০২২, ০৯:৪৩
জবির বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠিত

ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রথম ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার(১৬ মার্চ) বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব  হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগমর সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে দুপুর ১:৩০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালিত হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানের  প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সদস্য বৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টার্স ইউনিটি, প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও হলে সিট প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা।

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্যায়ে প্রধান অতিথি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়েছিলেন । তিনি বলেন- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়টি দুরন্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য জমি বরাদ্দ দিয়েছে। আশাবাদী, শীঘ্রই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি আধুনিক ক্যাম্পাস ও রোল মডেল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে‌।

এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোঃ ইমদাদুল হক। তিনি বলেন- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো একটি ছাত্রী হলের উদ্বোধনের মাধ্যমে ছাত্রীদের আবাসিক সংকট দূর করতে পেরেছি। যদিও আমরা সব শিক্ষার্থীদের হলে থাকার সুযোগ দিতে পারেনি।

বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম বলেন- দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর শেষে আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শুভ দ্বারোদঘাটন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হল উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করেছি। এই হলের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয় ও কোষাধ্যক্ষ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, হলের পরিবেশ রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব তোমাদের। আমি তোমাদে হলে উঠাতে  পেরে খুবই আনন্দিত। আগামীকাল (১৭ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে শিক্ষার্থীরা ধাপে ধাপে হলে উঠতে পারবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাএলীগ শাখার সাধারণ সম্পাদক জনাব এস. এম. আকতার হোসাইন বলেন- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হল পাওয়ার পেছনে রয়েছে এক ইতিহাস। এই হল আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ পুলিশের লাঠিচার্জ উপেক্ষা করে কাঙ্খিত হল আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল। তৎকালীন হল আন্দোলনে সাবেক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্বরূপ আজকের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। একপর্যায়ে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ১৬ তলা বিশিষ্ট হলে নেই কোন প্রহরী, নেই কোনো রেজিস্ট্রার অফিস, নেই অফিস সহায়ক কর্মকর্তা এভাবে একটা বিশ্ববিদ্যালয় হল চলতে পারে না।

ছাত্রলীগ‌ শাখার সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম ফরাজী বলেন- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক যে কালিমালিপ্ত ছিল তা আজ থেকে আর থাকবে না। হল পাওয়ার পেছনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কর্মীদের অংশগ্রহণ ছিল অনবদ্য। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি রোল মডেল বিশ্ববিদ্যালয় পরিচিতি লাভ করবে। বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস দীর্ঘ বছর অতিক্রম হওয়ার পরও কোনো অগ্রগতি নেই। খুব শীঘ্রই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন ও হল নির্মাণের জন্য আবেদন প্রশাসনের নিকট।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

ইবিতে ছাত্রী নির্যাতিতদের পৈশাচিক উল্লাস! দেশের বাকি হলগুলো কি নিরাপদ?


মুক্তসংবাদ প্রতিদিন ডেস্ক
সোমবার, ২৭ ফেরুয়ারী, ২০২৩, ০৯:২৬
ইবিতে ছাত্রী নির্যাতিতদের পৈশাচিক উল্লাস দেশের বাকি হলগুলো কি নিরাপদ

ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি। এতে নবীন সেই ছাত্রীর ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের প্রমাণ পাওয়া যায়। মারধর-অত্যাচারের সময় ছাত্রীটি যখন আর্তনাদ করছিলেন তখন অট্টহাসি আর উল্লাসে মেতেছিল নির্যাতনকারীরা। এছাড়া চিৎকার করলে তার মুখে গামছা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে পিপাসায় কাতর হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী ছাত্রী। পানি চাইলেও তাকে দেওয়া হয়নি। উলটো ডাইনিংয়ে নিয়ে পরিত্যক্ত ময়লা গ্লাস চেঁটে পরিষ্কার করতে বাধ্য করা হয়। পুরো ঘটনায় সবচেয়ে উগ্র ভূমিকায় ছিলেন মীম ও ঊর্মি নামের দুই ছাত্রী। ১১ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের লিখিত তথ্য-প্রমাণসহ শতাধিক পৃষ্ঠার রিপোর্ট দিয়েছে তদন্ত কমিটি।

এসব ঘটনায় সচেতন অভিভাবকগণ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তারা তাদের ছেলেমেয়েদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য নিজ বাড়ি থেকে অনেক দূরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করান। ভর্তির পর ভাল পড়াশুনা ও নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত হোস্টেলগুলোই নিরাপদ মনে করেন। অথচ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র-জুনিয়র বন্ধু-বান্ধবদের দ্বারা অমানবিক নির্যাতনে শিকার হচ্ছে যা শুনলে গা শিউরে উঠে। মাঝে মধ্যে কিছু কিছু ঘটনা আমাদের সামনে উঠে আসলেও প্রায়ই ঘটনাগুলো আমাদের অগোচরেই থেকে যাচ্ছে। ইডেনসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে লোমহর্ষক ঘটনা ইতিমধ্যে সংঘটিত হলেও এবার কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটনাসমূহ অন্যসব ঘটনা ছাপিয়ে যায়। আজ সেদিনের ঘটে যাওয়া বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া সামান্য ঘটনাসমূহ তুলে ধরা হলো-

২৬ ফেব্রুয়ারি রোববার সকাল ১০টায় তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব আলীবদ্দীন খান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্ট ডিভিশনের নির্দেশনা মোতাবেক উপাচার্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। আমরা সেই কমিটির রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। প্রতিবেদনের কপি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর মহামান্য হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দেবেন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

বিভিন্ন সূত্র মতে, তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই রাতে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ৩০৬ নং কক্ষ থেকে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে গণরুমে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলার একই বর্ষের ছাত্রী হালিমা খাতুন ঊর্মি তাকে গণরুমে (দোয়েল ১) নিয়ে যান। এ সময় পাশের গণরুমের ছাত্রীদের কক্ষ থেকে বের না হতে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি তাদের ওয়াশরুমেও যেতে নিষেধ করা হয়। এরপর ভুক্তভোগী ছাত্রীর সিনিয়র, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মোয়াবিয়া জাহানকে তার কক্ষ থেকে ডেকে আনেন একই বিভাগ ও সেশনের তাবাসসুম ইসলাম। শুরুতে মোয়াবিয়াকে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে থাপ্পড় মারতে বাধ্য করা হয়। এরপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। চড়, থাপ্পড় ও গলায় ফাঁস দিয়ে নির্যাতন করা হয় এবং একপর্যায়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বিবস্ত্র করা হয়। এসময় বাধা দিলে নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

হালিমা খাতুন ঊর্মি তার ফোন দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করেন। এসময় প্রচণ্ড যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে ওঠেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। বারবার তাকে ছেড়ে দিতে আকুতি জানান। কিন্তু তাতেও তারা কর্নপাত করেনি, বরং অট্টহাসি আর উল্লাসে মেতে উঠে নির্যাতনকারীরা। পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করে বিকৃত মনের এসব হায়েনারুপী নরপিশাচ।

এক পর্যায়ে যন্ত্রনায় চিৎকার করলে তার মুখে গামছা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়। একইসঙ্গে তাকে বাজে অঙ্গভঙ্গি করে নাচতে বাধ্য করা হয়। নির্যাতনের একপর্যায়ে পিপাসায় কাতর হয়ে পড়লে, পানি চাইলেও না দিয়ে ডাইনিংয়ে নিয়ে পরিত্যক্ত ময়লা গ্লাস চেঁটে পরিষ্কার করিয়ে নেওয়া হয়। পুরো নির্যাতনে মীম ও ঊর্মি উগ্র ভূমিকায় ছিল। এ সময় গণরুমের সাধারণ ছাত্রীরা মুখ চেপে চেপে কাঁদছিল।

পরদিন সকালে আতঙ্কে ক্যাম্পাস ছেড়ে যায় অনেক ছাত্রী। এ ঘটনা প্রকাশ না করতে মীম ও ঊর্মি গণরুমের ছাত্রীদের ভয়ভীতি ও চাপ প্রয়োগ করে। পরবর্তীতে ঘটনা জানাজানি হলে ভিডিও ডিলিট করে নিজের অ্যান্ড্রয়েড ফোনটি ব্যবহার করা বন্ধ করে উর্মি।

তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, এমন বর্বর নির্যাতনের বর্ণনা শুনে বিব্রত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তদন্ত কমিটির সদস্যরাও। ভুক্তভোগীর নির্যাতনের বর্ণনার সময় কিছু ঘটনা এমন ছিল যে কমিটির পুুরুষ সদস্যদের বাইরে বের হওয়ার অনুরোধ করেছিলেন নারী সদস্য।

তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু জানতে চাইলে কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. রেবা মণ্ডল বলেন, আমি খুবই ব্যস্ত, খুব কাজের চাপে আছি। প্রতিবেদনের বিষয়ে এখন কিছুই বলার নেই বলে এড়িয়ে যান।

তদন্ত কমিটির সদস্য ও প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি প্রফেসর ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, এ বিষয়ে কিছু বলার অনুমতি আমাদের নেই। আমরা কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তারা চাইলে বলতে পারেন। অন্য সদস্যরাও কোনো প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, তদন্ত কমিটি আমাদের কাছে প্রতিবেদনের দুটি কপি জমা দিয়েছে। একটি কপি সিলগালা করে অলরেডি হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছুটিতে আছেন, তিনি ফিরলে তদন্ত প্রতিবেদন খোলা হবে। এর বাইরে আমি কিছুই বলতে পারছি না।

এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনে কোনো প্রকার নির্দেশনা বা সুপারিশ করেনি কমিটি। শুধু ঘটনার সত্যতার বিষয়ে তদন্ত এবং ওই রাতে কী ঘটেছিল সে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা ১০ দিনে প্রায় ৮৪ ঘণ্টা অভিযোগ গ্রহণ, শুনানি ও পর্যালোচনা করেন। তদন্তে ভুক্তভোগীর বড় বোনের বক্তব্যও শোনা হয়েছে। একইসঙ্গে এ ঘটনায় সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, প্রত্যক্ষদর্শীসহ গণরুমের অন্তত ২০ শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন কমিটির সদস্যরা।

১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারনের অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরার বিরুদ্ধে। ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ১৫ ফেব্রুয়ারি আইন বিভাগের প্রফেসর ড. রেবা মণ্ডলকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এদিকে হলের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. আহসানুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের প্রতিবেদন লেখার কাজ চলছে। কালকের (আজ) মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা করব।

ইবি শাখা ছাত্রলীগের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক কামরুল হাসান অনিক রোববার গণমাধ্যমকে বলেন, আজ (রোববার) রাতেই আমরা কমিটির চারজন বসে অলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। রাতেই অনলাইনে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে আমরা প্রতিবেদন সাবমিট করব। সোমবার (আজ) কুরিয়ারের মাধ্যমেও প্রতিবেদনের হার্ড কপি কেন্দ্রে পাঠানো হবে।

সিসিটিভি ফুটেজ ছাড়াই তদন্ত প্রতিবেদন : হলের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১২টি সিসিটিভি রয়েছে বলে জানিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে হল ডাইনিং ও গণরুমে প্রবেশপথে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। তথ্য অনুযায়ী ওই ক্যামেরার ফুটেজ খুঁজে পেলে ওই রাতের ঘটনায় কারা কারা জড়িত ছিল তা আরও স্পষ্টত ধারণা পাওয়া যেতো। কিন্তু ঘটনার ১৫ দিনেও সিসি ফুটেজ উদ্ধার করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটি থেকে ফুটেজ চাওয়া হলেও হল কর্তৃপক্ষ তা দিতে পারেনি। এ ঘটনায় হল কর্তৃপক্ষ আইসিটি সেলকে দায়ী করছে।

হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. শামসুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, বায়োসের ব্যাটারি নষ্ট থাকায় সিসি ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমি আইসিটি সেলকে উদ্ধার করতে নির্দেশ দিয়েছি। তারা এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। তবে আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. আহসানুল আম্বিয়া বলেন, বাইরে থেকে এক্সপার্ট আনা হলে তা উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

সচেতন অভিভাবক মহলের আরজি, মাঝে মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র‌্যাগিং ও হল বাণিজ্যের নামে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে আসা ছাত্র/ছাত্রীদের উপর আর কোন অমানবিক ও হিংস্র আচরণ পূণরাবৃত্তি না হয়। ভবিষ্যতে এসব ঘটনা ঘটতেই থাকলে এর দায়-দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনসহ অন্য সকলকে দায়ভার গ্রহণ করতে হবে। উচ্চ শিক্ষা নাম করে অন্যের ছেলেমেয়েদের নিয়ে খেলাধুলা করার অধিকার কারও নেই। সূত্র: যুগান্তর

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

‘কার নিন্দা করো তুমি’-নাদিরা মজুমদার


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বুধবার, ৩১ মার্চ, ২০২১, ০৩:৫০
‘কার নিন্দা করো তুমি’

ছবি সংগৃহীত: জো বাইডেন ও ভ্লাদিমির পুতিন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার ক্ষমতা গ্রহণের শতদিন পূর্তির প্রাক্কালে, বার্ধক্যজনিত শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতাকে পাত্তা না দিয়েই তিনটি লাগসই পদক্ষেপ নেন। কারণ, বিশ্বে এখন ‘আমেরিকা ফার্স্ব’ নয়, ‘আমেরিকা ইজ ব্যাক’। কোভিডের ছত্রছায়ায়, ‘দি গ্রেট-রিসেট’ তথা ‘আমাদের গণতন্ত্র’কে বহাল করার একমাত্র আন্তর্জাতিক বাধা অথবা কানাগলি তৈরি করে রেখেছে ‘চীন-রাশিয়া-ইরান’ মৈত্রীবন্ধন।

উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের ফ্রিডম অব্যাহত রাখার তাগিদে তাই ১২ মার্চ স্বয়ং বাইডেন ‘কোয়াড’-এর বাকি তিন শরিক জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সঙ্গে ভার্চুয়াল সামিট করেন। ‘কোয়াডে’র চার দেশের রাষ্ট্রীয় প্রধানরা প্রতিশ্রুতি দেন যে, ইন্দো-প্যাসিফিকের দেশগুলোকে ২০২২ সালের শেষের দিকে এক বিলিয়ন ডোজ কোভিড টিকা সরবরাহ করা হবে; টিকা তৈরি হবে ভারতে, অর্থায়নের দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের, বিতরণে থাকবে অস্ট্রেলিয়া। এটি একটি খুশির খবর হতে পারে; কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন জাগছে—‘কোভিড’কে টেনে লম্বা করে ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখা কেন! বিশেষ করে যখন দিনকে দিন ইউরোপসহ সর্বত্র স্পুতনিক-ভি ও সিনোফার্মের টিকার ডিমান্ড বাড়ছে! ‘কোয়াড’ থেকে কি বহু জল্পনাকল্পনার ‘এশিয়া ন্যাটো’র আবির্ভাব হবে! দেখা যাক। তবে ‘কোয়াডে’র শরিক ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির উচ্ছ্বসিত মন্তব্য যে, কোয়াড হবে গ্লোবাল-সাউথের (উন্নয়নশীল দেশসমূহ) শক্তি বাহিনী!

কথা প্রসঙ্গে বলছি যে, ভারতের রুশ এস-৪০০ কেনার বিষয়টি সিনেট ফরেন পলিসি কমিটি এখন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে এবং কিনলে ‘স্যাংকশনে’র ভীতি দেখানো হয়েছে; দিন কয় পূর্বে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন নয়া দিল্লিতে বলেছেনও। কৃষক আন্দোলনের বিষয়টি নিয়েও ওয়াশিংটনে বিষমভাবে কুমিরের কান্নাকাটি চলছে; কিন্তু যদিও তা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ‘কোয়াড’ থেকে ‘এশিয়া ন্যাটো’ নয়—গ্লোবাল সাউথ বরং ভারতের স্ট্র্যাটেজিক অটোনমি সংরক্ষণের প্রত্যাশায় রয়েছে।

পুতিনের প্রসঙ্গ এবার। তবে তার আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রফেশনাল ’সিভি’তে দ্রুত চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। বাইডেনের রাজনৈতিক কেরিয়ারের বয়স মোটামুটি অর্ধশতাব্দী। কাজেই, বয়সে ও রাজনীতিতে জো ‘ঝানু’ ব্যক্তি। দীর্ঘ অনেক বছর ছিলেন সিনেটর হিসেবে, তারপরে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভিপি ছিলেন আট বছর ধরে, মাধ্যখানে চার বছর ফাঁকা গেছে; বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট তিনি। কর্মজীবনে সিনেট বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির জ্যেষ্ঠ সিনেটর হিসেবে ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণে কংগ্রেসের অনুমতি আদায়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

ইরাক আক্রমণ, সাদ্দাম হোসেনের উচ্ছেদ ইত্যাদির অজুহাত ছিল গণবিধ্বংসী অস্ত্র এবং ছিল তো নির্জলা মিথ্যা বানোয়াট নৃশংস ‘ফেয়ারিটেল’। এই অন্যায় আক্রমণে কম করে এক মিলিয়ন মানুষ মারা যায় এবং মধ্যপ্রাচ্যে ও আশপাশের অন্যত্র সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কিংবা প্রেসিডেন্ট ওবামার ভিপি থাকাকালে, প্রেসিডেন্টের ‘ওভারসিজ কনটিনজেন্সি অপারেশনস’ এবং ৮০টি দেশের ওপর রাতের অন্ধকারে নাইট ড্রোন হামলা চালানোর অংশীদার তিনি। লিবিয়া ও লিবিয়ার গাদ্দাফির নৃশংস পরিণতি, যুগোস্লাভ ফেডারেশনের আকাশ থেকে বিরামহীন ৭৮ দিনরাত্রি বোমাবর্ষণ ইত্যাদিও রয়েছে।

কিছুদিন আগে, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে প্রেসিডেন্ট বাইডেন সিরিয়ায় বোমাবর্ষণের হুকুম দেন। কিছু লোক মারা যায়। ১৭ মার্চ ‘ডিক্লাসিফাই’কৃত একটি মার্কিন ‘ইনটেল’ প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে, প্রেসিডেন্ট পুতিন ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের সময় ডেমোক্রেটিক প্রার্থী বাইডেনের বিরুদ্ধে ‘প্রভাব/ইনফ্লুয়েন্স অপারেশন’ পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ঘটনাক্রমে এই একই তারিখে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন ‘এবিসি নিউজে’ তার প্রথম সাংবাদিক সাক্ষাত্কার দেন।

এই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে সাংবাদিক জর্জ স্টেফানোপউলস প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে প্রশ্ন করেন, ‘নির্বাচনের সময় ভ্লাদিমির পুতিন আপনার মানহানি করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন, আমাদের নির্বাচনের ভিত্তিকে দুর্বল করেছেন, আমাদের সমাজকে বিভক্ত করেছেন। কী মূল্য তাকে দিতে হবে?’ বাইডেন বলেন, মূল্য তাকে দিতে হবে। ... তার সঙ্গে ফোনে দীর্ঘ কথোপকথন হয়েছে; বলেছি, ‘আমি আপনাকে জানি, আপনিও আমাকে জানেন। যদি প্রমাণিত হয় তো ফলভোগের জন্য প্রস্তুত থাকুন।’ ... স্টেফানোপউলস বলেন, ‘আপনি বলছিলেন যে, উনি হূদয়শূন্য ব্যক্তি!’ বাইডেন বলেন, ‘ও হ্যাঁ, আমি তাকে বলেছি বটে, তার উত্তর ছিল যে—আমরা একে অপরকে বুঝতে পারছি, ....বলেছি, আপনার চোখের ভেতরে তাকালাম কিন্তু আমার মনে হয় না যে আপনার হূদয় বলে কিছু আছে।’ স্টেফানোপউলস বলেন, ‘অতএব, ভ্লাদিমির পুতিনকে আপনি চেনেন।’...এক অর্থে, এটিকে ঐতিহাসিক ইন্টারভিউ বলা চলে, মার্কিন-রুশ সম্পর্কের ‘ওয়াটারশেড-মুহূর্ত’ বা ‘আজ...দুজনার দুটি পথ গেছে বেঁকে-মুহূর্ত’। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের ‘এলিট’দের অনেকেরই কূটনৈতিক কম্পিটেন্স বা যোগ্যতা, ঔচিত্যবোধ, শিষ্টতার অভাব নতুন কিছু নয়। যেমন, বছর দুই আগে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ‘ঠগ’ বলতে আটকায়নি। বা ভেনিজুয়েলার মাদুরো’কে অবলীলায় ‘সন্ত্রাসী’র লেবেল দেওয়া হয়।

প্রশ্ন হলো—মস্কো এখন কী করবে? রাশিয়ার উত্তর ছিল তাত্ক্ষণিক এবং সুস্পষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূতকে শলাপরামর্শের জন্য মস্কোতে ডেকে পাঠানো হয়। এটি একটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ। সুস্পষ্ট ইঙ্গিত যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে রাশিয়া পুনর্বিবেচনা করতে চায়। বাইডেনের অপমানের জবাব দিতে পুতিন রুশ টেলিভিশনে আসেন, ধীরস্থির শান্ত গলায় বলেন যে, বাইডেন স্টেটমেন্টে যা বলেছেন, আমরা পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত। অতঃপর, বাইডেনকে তিনি সুস্বাস্থ্য কামনা করেন এবং বলেন যে, ঠাট্টা নয়, তিনি বাস্তবিকই তার সুস্বাস্থ্য কামনা করছেন। অবশ্য পুতিন প্রচলিত বচন বা লোককথা ব্যবহার করেন, বলেন যে, ‘যে যেমন, সে ভাবে যে অন্যলোকেও ঠিক তারই মতো; বা ‘অন্য লোকের সম্বন্ধে যা-ই বলো না কেন তুমি আসলে তা-ই’।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের মতে, ইউরোপিয়ানরা যখন সামরিক শক্তি নিয়ে (আমেরিকা) মহাদেশ বিজয়ে মত্ত, সেই সময়ে আমেরিকান প্রশাসনিক শ্রেণি সংগঠিত হতে থাকে। পুতিন জাপানের বিরুদ্ধে দুটো পারমাণবিক বোমা ফেলা এবং কালো মানুষ নিয়ে দাসপ্রথা চালুর ইতিহাস ইত্যাদি—সবই অন্যায়-অবিচারভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব নিপীড়নের ইতিহাস। বাইডেনের বক্তব্যের জবাব হিসেবে পুতিন একটি চমকপ্রদ প্রস্তাব করেন। অনুবাদ করলে দাঁড়ায়: এসো আমরা ‘ভারবাল শুটআউটে’ নামি। লাইভ চ্যাট কাম ডুয়েল; বিষয়বস্তু: প্যান্ডেমিক, আঞ্চলিক কনফ্লিক্ট রিজোলিয়োশন এবং স্ট্র্যাটেজিক স্থিততা/স্ট্যাবিলিটি। অডিয়েন্স: মার্কিন ও রুশ পাবলিক; শর্ত: স্বতঃস্ফূর্ত, লিখিত স্ক্রিপ্ট ব্যবহার অবৈধ। পুতিনের সময় বাইডেনের ফুল প্রোগ্রাম, সময় কবে হবে, অনিশ্চিত। অর্থাত্, ‘টাফ টকিং আমেরিকান ওয়েস্টার্ন’-এর ছোঁয়া মেশানো কোনো ঐতিহাসিক শোউডাউন হবে না, হচ্ছে না!

তবে উভয়ের ক্ষেত্রেই অনেকের মনে রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতার লাইন ঘুরতে পারে—‘ওরে ভাই, কার নিন্দা করো তুমি। মাথা করো নত। / এ আমার এ তোমার পাপ।’  সূত্র:ইত্তেফাক

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

সর্বশেষ - আমার ক্যাম্পাস