a
ফাইল ছবি
ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেশের চলমান পরিস্থিতি বিষয়ে ব্রিফ করবে সরকার।
আজ সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই ব্রিফিং হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আমন্ত্রিতদের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাবেন। এ সময় ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য উপস্থিত থাকবেন।
গতকাল রোববার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশি কূটনীতিকসহ জাতিসংঘের এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, মূলত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে সরকারি ভাষ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা হবে। জানা গেছে, আজকের ব্রিফিংয়ে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির তাণ্ডব এবং তা প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পদক্ষেপ তুলে ধরা হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিদেশিদের নানা প্রশ্নের জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিএনপিসহ বিরোধীরা অনড় রয়েছে। অন্যদিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত করে রেখেছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা অব্যাহতভাবে বলে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলো।
জানা গেছে, সংবিধানের অধীন থেকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতায় সরকারের অঙ্গীকার ব্রিফিংয়ে পুনর্ব্যক্ত করা হবে।
সংবিধানবহির্ভূত নিরপেক্ষ বা নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার যে দাবি নিয়ে বিরোধীরা মাঠে নেমেছে, তা কোনো অবস্থাতেই সরকারের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। তা ছাড়া তাদের দাবিগুলোর পেছনে নাগরিক সমাজ বা বিদেশি কেউ কেউ যেসব ‘যুক্তি’ তুলে ধরছেন, তা-ও খণ্ডনের চেষ্টা করা হবে ব্রিফিংয়ে। সূত্র: প্রথম আলো
ছবি সংগৃহীত
নিউজ ডেস্ক: প্রতিটি মুহূর্ত এখন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি জাতি এই সত্যটি বুঝতে ব্যর্থ হয়, তবে এমন দুর্ভোগ পোহাতে হবে যা আমাদের কাছে অজানা। সম্প্রতি আমরা বাংলাদেশিরা শুধু ফ্যাসিস্ট হাসিনা শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নয়, তার প্রভু ভারতের বিরুদ্ধেও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে এক ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছি।
১৯৭৫ সালের নভেম্বরে এমন একটি বিপ্লবের অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছিল, যেখানে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত শত্রুদের সম্মিলিত শক্তির বিরুদ্ধে বিজয় অর্জিত হয়। তবে এইবারের বিজয় নিঃসন্দেহে ভারত-হাসিনা যৌথ শক্তির বিরুদ্ধে একটি ইতিহাস গড়া অর্জন।
১৯৭৫ সালের নভেম্বরে বিপ্লব এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। ১৯৭৫ সালের বিপ্লবের পরবর্তী পরিস্থিতি এতটা কঠিন ছিল না, যতটা কঠিন বর্তমান বিপ্লবের পরবর্তী সময়। তখন ভারত এতটা শক্তিশালী ছিল না এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের এত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু এখন ভারত যথেষ্ট শক্তিশালী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক দৃঢ়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হলো নেতৃত্ব। ১৯৭৫ সালে আমরা জিয়াউর রহমানের মতো একজন মহানায়ক পেয়েছিলাম, যিনি সেই বিপ্লবের ফসল। বর্তমানে ড. ইউনুসের মতো বিশ্ববিখ্যাত নেতা থাকলেও তিনি জিয়াউর রহমানের মতো নায়কোচিত গুণাবলী বহন করেন না। তাছাড়া তিনি বিপ্লবের ফসল নন; বরং একজন পছন্দের নেতা।
বর্তমান বিপ্লবের পরবর্তী সময় জাতির জন্য এক বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এমন এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছি, যা এক প্রকার যুদ্ধাবস্থার মতো। এই পরিস্থিতির মাঝে থেকে বিজয় অর্জনের কোনো বিকল্প নেই।
প্রতিভার সন্ধান এখন জরুরি:
বর্তমানে দেশে প্রচুর সৎ, অভিজ্ঞ, প্রতিভাবান বিভিন্ন পেশাজীবির পাশাপাশি উদ্যমী অবসরপ্রাপ্ত বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা রয়েছেন, যারা দেশসেবার জন্য সদা প্রস্তুত। তাদের পেশাগত দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কাজে নিয়োগ করা গেলে প্রশাসনে অনেকটা গতিশীলতা আনা সম্ভব।
একজন অভিভাবক নেতার প্রয়োজন:
এই সংকটময় সময়ে জাতির অভিভাবক হিসেবে একজন অভিজ্ঞ যুদ্ধনায়ক প্রয়োজন, এবং ড. কর্নেল অলি আহমদ হতে পারেন সেই নেতৃত্বের সঠিক ব্যক্ত। তিনি একমাত্র জীবিত মুক্তিযোদ্ধা নায়ক, যিনি জাতির রক্ষাকর্তা জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন।
বিপ্লবী সরকার গঠন:
বিপ্লবের পরে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার জন্য এবং পরাজিত বাহিনীর সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য বিপ্লবী সরকার গঠন একটি ঐতিহাসিক ঐতিহ্য। বর্তমান সরকার নিজেদের বিপ্লবী সরকার হিসেবে ঘোষণা করতে পারে। এটি তাদের কাজে আরও গতিশীলতা আনবে এবং জনগণও বিপ্লবের সাফল্যের জন্য আরও উৎসাহিত হবে।
সংস্কার ও ঐক্যের গুরুত্ব:
শিক্ষা ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার এখন অপরিহার্য, যা সময়ের সঙ্গে করা যেতে পারে। সংবিধান সংস্কারও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদসহ প্রেসিডেন্সিয়াল শাসনব্যবস্থায় যেতে পারি। জনগণের অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন নতুন আইন প্রণয়নে বিচার বিভাগের মতামত থাকা উচিত। প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরে যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।
জাতীয় ঐক্য এখন সবচেয়ে জরুরি। যদি জাতি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী শক্তির অধীনে ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন ইসলামী শক্তির ঐক্যও সময়ের দাবি।
জনগণের সম্প্রীতি রক্ষা:
দেশে যে কোনো সময় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাধানোর প্রচেষ্টা হতে পারে। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা যে কোনো মূল্যে নিশ্চিত করতে হবে। জাতি যেন জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকে। শান্তি বজায় রাখতে দেশের প্রতিটি এলাকায় নাগরিক কমিটি গঠন করা যেতে পারে।
মিডিয়ার ভূমিকা:
বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে মিডিয়াকে সঠিক পথে চলতে উৎসাহিত করা জরুরি। বিপ্লবের আগে যারা জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করেছে, তাদের ছাড়া বাকিদের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করতে হবে। মিডিয়াকে জনগণ ও দেশমুখী হতে হবে এবং জাতীয় ঐক্যের জন্য কাজ করতে হবে।
কূটনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক:
বহিরাগত হুমকি মোকাবিলায় কূটনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। চীনের মতো আন্তর্জাতিক শক্তি এবং পাকিস্তানের মতো আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করা এখন সময়ের দাবি। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া উচিত।
এখনই সময় একটি নিরাপদ এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার। যদি আমরা এখন এটি করতে ব্যর্থ হই, ভবিষ্যতে আর কখনোই তা সম্ভব হবে না। দয়া করে জেগে উঠুন, ঐক্যবদ্ধ হোন এবং সরকারের হাত শক্তিশালী করুন। জনগণের ঐক্যই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। বিজয় আমাদের হবেই, ইনশাআল্লাহ।
ফাইল ফটো
সাময়িক ভাবে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও অবৈধ অভিবাসীদের আটক করতে মালয়েশিয়া সরকার হঠাৎ অভিযান শুরু করায় দেশটিতে থাকা বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বহু বাংলাদেশি গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। দেশটির রাজধানী শহর কুয়ালালামপুরের জালান ইম্বির নামক একটি নির্মাণস্থলে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ৩২৮ জন বিদেশিকে গ্রেফতার করেছে দেশটির অভিবাসন পুলিশ।
স্থানীয় সময় শনিবার (২০ মার্চ) ভোরে অভিযান চালিয়ে আটক করে দেশটির অভিবাসন পুলিশ।
আটককৃতদের মধ্যে বাংলাদেশি ২০৪ জন, ইন্দোনেশিয়ান ১০৮ জন, মিয়ানমারের ৯ জন, ভারতের ৪ জন এবং অন্যান্য দেশের ৩ জন নাগরিক রয়েছে। তাদের সবার বয়স ২২ থেকে ৬৩ বছরের মধ্যে এবং বেশির ভাগই আশপাশের নির্মাণস্থলে কর্মরত ছিলেন।
দেশটির উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি ইসমাইল মোহাম্মদ সাইদ জানান, আটকদের বেশির ভাগই আগে অবৈধ বসবাসের অভিযোগে ধরা পড়েন এবং অনেকেই এক কোম্পানির ভিসা দিয়ে অন্য কোম্পানিতে কাজ করছেন। এই বিষয়টি অবিলম্বে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
এ ছাড়াও যদি তদন্তে দেখা যায় যে বিদেশি শ্রমিকরা তাদের নথিতে নিবন্ধিত কাজের বিপরীতে বিভিন্ন খাতে কাজ করছে, তাহলে নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।