a
গুরুতর চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রার অনুমতি মিলছে না। অথচ দণ্ডিত আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য হাজি মো. সেলিমের বিদেশে চলে গেলেন। এই বিদেশ যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আইন যদি সবার জন্য সমান হয়, তাহলে কোন আইনে সাজাপ্রাপ্ত হাজি সেলিম চিকিৎসার জন্য বিদেশ গেলেন? এখানে খালেদা জিয়ার জন্য এক আইন, আর হাজি সেলিমের জন্য অন্য আইন কোন সংবিধানে, কোন গ্রন্থে আছে? আহারে আইনের শাসন!'
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছর দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বারবার বিদেশ যেতে চাইলেও সরকারের অনুমতি পাননি। তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে দুই বছর আগে মুক্ত হলেও দেশেই রয়েছেন। আইনি কারণে তাকে বিদেশযাত্রার অনুমতি দেওয়া সম্ভবপর হচ্ছে না বলে আইনমন্ত্রীর ভাষ্য।
অন্যদিকে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হাজি সেলিমকে হাইকোর্ট আত্মসমর্পণের আদেশ দিলেও তার মধ্যেই তিনি চিকিৎসার জন্য গত শনিবার থাইল্যান্ড রওনা হন।
এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, হাজি সেলিম আত্মসমর্পণ না করেই দেশ ছেড়েছেন। নির্বিঘ্নে তার বিদেশ পাড়ি দেওয়ার ঘটনায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-মন্ত্রীদের কাছে আদালত অসহায়। নিশিরাতের মাফিয়া সরকার দেশের আইন-আদালত-বিচার-প্রশাসন সব কিছু দলীয়করণের ঘনকালো আলখেল্লায় ঢেকে দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম, আবদুস সালাম আজাদ, তারিকুল ইসলাম তেনজিং, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের জাহিদুল কবির উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ফটো:
গণফোরাম মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে দেশের গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।সভায় সভাপতিত্ব করেন গণফোরামের জাতীয় নির্বাহী কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ।
লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন গণফোরামের মুখপাত্র ও সদস্য সচিব এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছি। লাখো শহীদের রক্তদান ও বাঙালি জাতির সীমাহীন আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র। লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রের উপর জনগণের নিরঙ্কুশ মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা। জনগণই হবে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার উৎস। দেশের মানুষ অন্ন, বস্ত্র, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা পাবে। অঙ্গিকার ছিল গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত অসাম্প্রদায়িক একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, স্বাধীনতার পঁঞ্চাশ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্খিত লক্ষ্য পূরণ হয়নি। রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়ে তাদের গোলাম করে রাখা হয়েছে। ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। আর্থিক খাতে বেপরোয়া লুটপাট চলছে। জনগণের কষ্টার্জিত টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। জনগণের নিকট জবাবদিহিতার পরিবর্তে কর্তৃত্ববাদী শাসন ও শোষণ ব্যবস্থা কায়েম রাখা হয়েছে। দেশের আইনের শাসন ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ নেই।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ বলেন, আজকে দেশে যারা নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে দাবী করছে, তারা তাদের কাজ-কর্মের মাধ্যমে তার প্রমাণ দিচ্ছে না। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে না। অর্থ লুটপাট, গণতন্ত্র ধ্বংস, নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস এবং মানুষের মত ও বাক-স্বাধীনতা হরণ করে দেশে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে রেখেছে। এরা এখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি না। এই প্রেক্ষাপটে গণফোরাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।
তিনি বলেন, দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করে গড়ে তোলা হয়নি। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু সারা জীবন লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। অথচ তাঁর দল আজ বিচার বিভাগ ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এই ধ্বংস স্তুপের উপর দাঁড়িয়েই আমরা আমাদের রক্তে গড়া বাংলাদেশকে সমুন্নত রাখবো। ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঝুঁকিতে পড়া বাংলদেশকে আমরা রক্ষা করবো।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা হিসেবে দেখতে চাই না। বঙ্গবন্ধু আমাদের সবার নেতা। আমরা জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দেখতে চাই। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো দল বা সরকারের সাথে গণফোরাম ঐক্য করবে না।
মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, দেশ এখন লুটপাটের স্বর্গরাজ্য। আইনের শাসন বলে কিছু নেই। নির্বাচন ব্যবস্থাকে তামাশায় পরিণত করা হয়েছে। দেশের মালিক জনগণের কোনো অধিকার নেই। সব মিলিয়ে আমরা গভীর জাতীয় সংকটের মধ্যে আছি। এই সংকট থেকে উত্তরণে জাতীয় ঐক্যমতের সরকারের বিকল্প নেই। তাই গণফোরাম জাতীয় ঐক্যমতের সরকার চাই। সে লক্ষ্যেই গণফোরাম কাজ করছে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি ও গণফোরাম নেতা জামাল উদ্দিন আহমেদ, এডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, এডভোকেট মোহসীন রশীদ, এডভোকেট মোঃ মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের, মেজর আসাদুজ্জামান বীর প্রতীক, এডভোকেট হেলাল উদ্দিন, লতিফুল বারী হামিম, খান সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
ছবি সংগৃহীত
সৌদি আরবে ২০ হাজারের বেশি অবৈধ বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বাসস্থান, শ্রম এবং সীমান্ত নিরাপত্তা আইন মেনে চলা নিশ্চিত করতে সৌদিব্যাপী এক অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর আরব নিউজের।
জানা গেছে, গত ১২-১৮ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সহযোগিতায় নিরাপত্তা বাহিনী পরিচালিত যৌথ অভিযানের সময় ২০ হাজার ১৫৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ হাজার ৩০২ জনকে আবাসিক আইন লঙ্ঘনের জন্য, পাঁচ হাজার ৬৫২ জনকে সীমান্ত নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের জন্য এবং তিন হাজার ২০৫ জনকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া সৌদির সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টাকালে এক হাজার ৮৬১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ ইয়েমেনি নাগরিক, ৬৫ শতাংশ ইথিওপিয়ান নাগরিক এবং দুই শতাংশ অন্যান্য জাতীয়তার অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি অবৈধভাবে রাজ্য ত্যাগের চেষ্টা করার সময় মোট ১১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে আইন লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন, আশ্রয় এবং নিয়োগের সাথে জড়িত ১৭ জনকেও গ্রেফতার করেছে দেশটি। এছাড়া সৌদি আরবে বর্তমানে ২৬ হাজার ৪১১ জন পুরুষ এবং দুই হাজার ৬১৯ জন নারীসহ মোট ২৯ হাজার ৫৪০ জন প্রবাসীকে বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপের মধ্যে রয়েছেন। সূত্র: বিডি প্রতিদিন