a বিএনপি নতুন ষড়যন্ত্রে মেতেছে: ওবায়দুল কাদের
ঢাকা শুক্রবার, ১১ পৌষ ১৪৩২, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

বিএনপি নতুন ষড়যন্ত্রে মেতেছে: ওবায়দুল কাদের


এমএস.প্রতিদিন ডেস্ক:
বৃহস্পতিবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৬:০২
বিএনপি নতুন ষড়যন্ত্রে মেতেছে: ওবায়দুল কাদের

ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক উপায়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে মরিয়া বিএনপি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।

আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে তিনি এই বিবৃতি প্রদান করেন।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে নতুন নির্বাচন কমিশন। একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ‘সার্চ কমিটি’র মাধ্যমে বাছাই করে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়।

গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও চেতনায় বিশ্বাসী সকল মানুষকে বিএনপি নেতৃবৃন্দের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার এবং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে নির্বাচন কমিশনের গঠন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক উপায়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতে মরিয়া বিএনপি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। 

তাই বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিনিয়ত মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বক্তব্য-বিবৃতির মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজ যখন দেশে গণতান্ত্রিক কৃষ্টি ও সংস্কৃতির ভিত্তি সুসংহত তখন গণতন্ত্র হত্যাকারী বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুখে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি অত্যন্ত লজ্জাকর।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত হওয়া ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের কারণে বিএনপি জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখাত হয়ে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি জনগণের ওপর দায় চাপায়। নিজেদের পরাজয় আড়াল করার লক্ষ্যে নির্লজ্জভাবে তারা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিষোদগার করে আসছে।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

রাজনীতিতে অন্তর্ভূক্তিমূলক নীতি গ্রহনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান দলিত জনগোষ্ঠীর


সাইফুল আল, বিশেষ প্রতিনিধি, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:০১
রাজনীতিতে অন্তর্ভূক্তিমূলক নীতি গ্রহনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান দলিত জনগোষ্ঠীর

ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন

সাইফুল আলম, ঢাকা: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে সুনির্দিষ্টভাবে দলিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের বিষয়গুলো অন্তর্ভূক্ত করা এবং তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কী ভূমিকা রাখতে পারেন সে বিষয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে আজ ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বুধবার), শফিকুল কবির মিলনায়তন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ঢাকা-এ বিডিইআরএম এবং নাগরিক উদ্যোগ এর আয়োজনে ‘দলিত জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন: চ্যালেঞ্জ ও উত্তরনের উপায় শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।  সভায় বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ, দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিবৃন্দ এবং গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নাজমুল হক প্রধান, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল; খালেকুজ্জামান লিপন, সহ সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ); আব্দুল্লাহ আল ক্বাফি রতন, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি); তৌফিক উজ জামান, যুগ্ম সদস্য সচিব, জাতীয় শ্রমিক শক্তি; জাসেম আলম, সদস্য, বাংলাদেশ যুব ফেডারেশন; সীমা দত্ত, সভাপতি, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র; সুকৃতি কুমার মন্ডল, সভাপতি, বাংলাদেশ মাইনোরিটি জনতা পার্টি; এডভোকেট উৎপল বিশ্বাস, সদস্য সচিব, জাত-পাত বিলোপ জোট; দিদারুল ভূইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন; এবং মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম, নাগরিক ঐক্য।

দলিত প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ রবিদাস ফোরাম (বিআরএফ) এর সভাপতি চাঁনমোহন রবিদাস, বিডিইআরএম-ঢাকা জেলা শাখার সভাপতি গগণ লাল, নারায়নগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি রাজেন্দ্র কুমার দাস, বিডিইআরএম ফেনী জেলা শাখার সভাপতি বলরাম দেবনাথ, দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি সবুজ রবিদাস, সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি দুলাল দাস, বাগেরহাট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাজেন্দ্র নাথ রায়, যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বাবলু দাস, নওগাঁ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বিরেন রবিদাস, ফরিদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাম চন্দ্র মালো, পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ বিশ্বাস, বগুড়া জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় চন্দ্র রবিদাস, গবেষক এবং উন্নয়নকর্মী মাজহারুল ইসলাম, নারীপক্ষের প্রতিনিধি জাহানারা খাতুন, নাগরিক উদ্যোগ এর অ্যাডভোকেসি অফিসার মোহন রবিদাস, কাউন্সিল অব মাইনোরিটি এর নির্বাহী পরিচালক খালিদ হোসেন।

বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম) এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিপন কুমার রবিদাস মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে দলিত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহনের জায়গায় একটি বিশাল শুন্যতা রয়ে গেছে। বর্তমানে আমরা আরেকটি জাতীয় নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে। আগামী নির্বাচনকে ঘিরে আমাদের প্রত্যাশা অনেক।  আমরা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করছি দলিত জনগোষ্ঠীর অনেক প্রতিনিধি রাজনীতিতে সক্রিয় হতে শুরু করেছেন।  বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের মনোনয়ন প্রদানের কথা ভাবছেন।  জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে দলিত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ বাড়তে শুরু করেছে। আমরা প্রত্যাশা করছি বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে থেকে প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রদানের মাধ্যমে দলিতদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবেন।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

‘কার নিন্দা করো তুমি’-নাদিরা মজুমদার


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বুধবার, ৩১ মার্চ, ২০২১, ০৩:৫০
‘কার নিন্দা করো তুমি’

ছবি সংগৃহীত: জো বাইডেন ও ভ্লাদিমির পুতিন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার ক্ষমতা গ্রহণের শতদিন পূর্তির প্রাক্কালে, বার্ধক্যজনিত শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতাকে পাত্তা না দিয়েই তিনটি লাগসই পদক্ষেপ নেন। কারণ, বিশ্বে এখন ‘আমেরিকা ফার্স্ব’ নয়, ‘আমেরিকা ইজ ব্যাক’। কোভিডের ছত্রছায়ায়, ‘দি গ্রেট-রিসেট’ তথা ‘আমাদের গণতন্ত্র’কে বহাল করার একমাত্র আন্তর্জাতিক বাধা অথবা কানাগলি তৈরি করে রেখেছে ‘চীন-রাশিয়া-ইরান’ মৈত্রীবন্ধন।

উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের ফ্রিডম অব্যাহত রাখার তাগিদে তাই ১২ মার্চ স্বয়ং বাইডেন ‘কোয়াড’-এর বাকি তিন শরিক জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সঙ্গে ভার্চুয়াল সামিট করেন। ‘কোয়াডে’র চার দেশের রাষ্ট্রীয় প্রধানরা প্রতিশ্রুতি দেন যে, ইন্দো-প্যাসিফিকের দেশগুলোকে ২০২২ সালের শেষের দিকে এক বিলিয়ন ডোজ কোভিড টিকা সরবরাহ করা হবে; টিকা তৈরি হবে ভারতে, অর্থায়নের দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের, বিতরণে থাকবে অস্ট্রেলিয়া। এটি একটি খুশির খবর হতে পারে; কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন জাগছে—‘কোভিড’কে টেনে লম্বা করে ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখা কেন! বিশেষ করে যখন দিনকে দিন ইউরোপসহ সর্বত্র স্পুতনিক-ভি ও সিনোফার্মের টিকার ডিমান্ড বাড়ছে! ‘কোয়াড’ থেকে কি বহু জল্পনাকল্পনার ‘এশিয়া ন্যাটো’র আবির্ভাব হবে! দেখা যাক। তবে ‘কোয়াডে’র শরিক ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির উচ্ছ্বসিত মন্তব্য যে, কোয়াড হবে গ্লোবাল-সাউথের (উন্নয়নশীল দেশসমূহ) শক্তি বাহিনী!

কথা প্রসঙ্গে বলছি যে, ভারতের রুশ এস-৪০০ কেনার বিষয়টি সিনেট ফরেন পলিসি কমিটি এখন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে এবং কিনলে ‘স্যাংকশনে’র ভীতি দেখানো হয়েছে; দিন কয় পূর্বে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন নয়া দিল্লিতে বলেছেনও। কৃষক আন্দোলনের বিষয়টি নিয়েও ওয়াশিংটনে বিষমভাবে কুমিরের কান্নাকাটি চলছে; কিন্তু যদিও তা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ‘কোয়াড’ থেকে ‘এশিয়া ন্যাটো’ নয়—গ্লোবাল সাউথ বরং ভারতের স্ট্র্যাটেজিক অটোনমি সংরক্ষণের প্রত্যাশায় রয়েছে।

পুতিনের প্রসঙ্গ এবার। তবে তার আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রফেশনাল ’সিভি’তে দ্রুত চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। বাইডেনের রাজনৈতিক কেরিয়ারের বয়স মোটামুটি অর্ধশতাব্দী। কাজেই, বয়সে ও রাজনীতিতে জো ‘ঝানু’ ব্যক্তি। দীর্ঘ অনেক বছর ছিলেন সিনেটর হিসেবে, তারপরে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভিপি ছিলেন আট বছর ধরে, মাধ্যখানে চার বছর ফাঁকা গেছে; বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট তিনি। কর্মজীবনে সিনেট বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির জ্যেষ্ঠ সিনেটর হিসেবে ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণে কংগ্রেসের অনুমতি আদায়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

ইরাক আক্রমণ, সাদ্দাম হোসেনের উচ্ছেদ ইত্যাদির অজুহাত ছিল গণবিধ্বংসী অস্ত্র এবং ছিল তো নির্জলা মিথ্যা বানোয়াট নৃশংস ‘ফেয়ারিটেল’। এই অন্যায় আক্রমণে কম করে এক মিলিয়ন মানুষ মারা যায় এবং মধ্যপ্রাচ্যে ও আশপাশের অন্যত্র সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দেওয়া হয়। কিংবা প্রেসিডেন্ট ওবামার ভিপি থাকাকালে, প্রেসিডেন্টের ‘ওভারসিজ কনটিনজেন্সি অপারেশনস’ এবং ৮০টি দেশের ওপর রাতের অন্ধকারে নাইট ড্রোন হামলা চালানোর অংশীদার তিনি। লিবিয়া ও লিবিয়ার গাদ্দাফির নৃশংস পরিণতি, যুগোস্লাভ ফেডারেশনের আকাশ থেকে বিরামহীন ৭৮ দিনরাত্রি বোমাবর্ষণ ইত্যাদিও রয়েছে।

কিছুদিন আগে, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে প্রেসিডেন্ট বাইডেন সিরিয়ায় বোমাবর্ষণের হুকুম দেন। কিছু লোক মারা যায়। ১৭ মার্চ ‘ডিক্লাসিফাই’কৃত একটি মার্কিন ‘ইনটেল’ প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে, প্রেসিডেন্ট পুতিন ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের সময় ডেমোক্রেটিক প্রার্থী বাইডেনের বিরুদ্ধে ‘প্রভাব/ইনফ্লুয়েন্স অপারেশন’ পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ঘটনাক্রমে এই একই তারিখে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন ‘এবিসি নিউজে’ তার প্রথম সাংবাদিক সাক্ষাত্কার দেন।

এই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে সাংবাদিক জর্জ স্টেফানোপউলস প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে প্রশ্ন করেন, ‘নির্বাচনের সময় ভ্লাদিমির পুতিন আপনার মানহানি করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন, আমাদের নির্বাচনের ভিত্তিকে দুর্বল করেছেন, আমাদের সমাজকে বিভক্ত করেছেন। কী মূল্য তাকে দিতে হবে?’ বাইডেন বলেন, মূল্য তাকে দিতে হবে। ... তার সঙ্গে ফোনে দীর্ঘ কথোপকথন হয়েছে; বলেছি, ‘আমি আপনাকে জানি, আপনিও আমাকে জানেন। যদি প্রমাণিত হয় তো ফলভোগের জন্য প্রস্তুত থাকুন।’ ... স্টেফানোপউলস বলেন, ‘আপনি বলছিলেন যে, উনি হূদয়শূন্য ব্যক্তি!’ বাইডেন বলেন, ‘ও হ্যাঁ, আমি তাকে বলেছি বটে, তার উত্তর ছিল যে—আমরা একে অপরকে বুঝতে পারছি, ....বলেছি, আপনার চোখের ভেতরে তাকালাম কিন্তু আমার মনে হয় না যে আপনার হূদয় বলে কিছু আছে।’ স্টেফানোপউলস বলেন, ‘অতএব, ভ্লাদিমির পুতিনকে আপনি চেনেন।’...এক অর্থে, এটিকে ঐতিহাসিক ইন্টারভিউ বলা চলে, মার্কিন-রুশ সম্পর্কের ‘ওয়াটারশেড-মুহূর্ত’ বা ‘আজ...দুজনার দুটি পথ গেছে বেঁকে-মুহূর্ত’। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের ‘এলিট’দের অনেকেরই কূটনৈতিক কম্পিটেন্স বা যোগ্যতা, ঔচিত্যবোধ, শিষ্টতার অভাব নতুন কিছু নয়। যেমন, বছর দুই আগে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ‘ঠগ’ বলতে আটকায়নি। বা ভেনিজুয়েলার মাদুরো’কে অবলীলায় ‘সন্ত্রাসী’র লেবেল দেওয়া হয়।

প্রশ্ন হলো—মস্কো এখন কী করবে? রাশিয়ার উত্তর ছিল তাত্ক্ষণিক এবং সুস্পষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূতকে শলাপরামর্শের জন্য মস্কোতে ডেকে পাঠানো হয়। এটি একটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ। সুস্পষ্ট ইঙ্গিত যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে রাশিয়া পুনর্বিবেচনা করতে চায়। বাইডেনের অপমানের জবাব দিতে পুতিন রুশ টেলিভিশনে আসেন, ধীরস্থির শান্ত গলায় বলেন যে, বাইডেন স্টেটমেন্টে যা বলেছেন, আমরা পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত। অতঃপর, বাইডেনকে তিনি সুস্বাস্থ্য কামনা করেন এবং বলেন যে, ঠাট্টা নয়, তিনি বাস্তবিকই তার সুস্বাস্থ্য কামনা করছেন। অবশ্য পুতিন প্রচলিত বচন বা লোককথা ব্যবহার করেন, বলেন যে, ‘যে যেমন, সে ভাবে যে অন্যলোকেও ঠিক তারই মতো; বা ‘অন্য লোকের সম্বন্ধে যা-ই বলো না কেন তুমি আসলে তা-ই’।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের মতে, ইউরোপিয়ানরা যখন সামরিক শক্তি নিয়ে (আমেরিকা) মহাদেশ বিজয়ে মত্ত, সেই সময়ে আমেরিকান প্রশাসনিক শ্রেণি সংগঠিত হতে থাকে। পুতিন জাপানের বিরুদ্ধে দুটো পারমাণবিক বোমা ফেলা এবং কালো মানুষ নিয়ে দাসপ্রথা চালুর ইতিহাস ইত্যাদি—সবই অন্যায়-অবিচারভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব নিপীড়নের ইতিহাস। বাইডেনের বক্তব্যের জবাব হিসেবে পুতিন একটি চমকপ্রদ প্রস্তাব করেন। অনুবাদ করলে দাঁড়ায়: এসো আমরা ‘ভারবাল শুটআউটে’ নামি। লাইভ চ্যাট কাম ডুয়েল; বিষয়বস্তু: প্যান্ডেমিক, আঞ্চলিক কনফ্লিক্ট রিজোলিয়োশন এবং স্ট্র্যাটেজিক স্থিততা/স্ট্যাবিলিটি। অডিয়েন্স: মার্কিন ও রুশ পাবলিক; শর্ত: স্বতঃস্ফূর্ত, লিখিত স্ক্রিপ্ট ব্যবহার অবৈধ। পুতিনের সময় বাইডেনের ফুল প্রোগ্রাম, সময় কবে হবে, অনিশ্চিত। অর্থাত্, ‘টাফ টকিং আমেরিকান ওয়েস্টার্ন’-এর ছোঁয়া মেশানো কোনো ঐতিহাসিক শোউডাউন হবে না, হচ্ছে না!

তবে উভয়ের ক্ষেত্রেই অনেকের মনে রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতার লাইন ঘুরতে পারে—‘ওরে ভাই, কার নিন্দা করো তুমি। মাথা করো নত। / এ আমার এ তোমার পাপ।’  সূত্র:ইত্তেফাক

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

সর্বশেষ - রাজনীতি