a
সংগৃহীত ছবি
আজ পবিত্র হজ। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।’ অর্থাৎ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার’-এ ধ্বনিতে আজ মুখর থাকবে আরাফাতের ময়দান।
প্রায় ৬০ হাজার মুসল্লি স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করে সেখানে খুতবা শুনবেন, আল্লাহর দরবারে রোনাজারি করবেন, কেঁদে ভাসাবেন বুক।
ময়দানে সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশে এবার খুতবা দেবেন মসজিদুল হারামের অন্যতম ইমাম ও তাইফ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শায়খ ড. বানদার বিন আবদুল আজিজ বালিলাহ। মক্কার উম আল-কুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি ও মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্নকারী এ আলেমকে এ বছরের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ।
করোনা মহামারির কারণে গেল বছর মাত্র ১০ হাজার মুসল্লিকে হজ পালনের অনুমতি দিয়েছিল সৌদি আরব-আগের বছর যেখানে প্রায় ২৫ লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছিলেন। এবার সৌদি আরবে বসবাসরত ১৫০ দেশের ৬০ হাজার নাগরিক হজের অনুমতি পেয়েছেন। ৫ লাখ ৫৮ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে ভাগ্যবান এসব মানুষ হজের সুযোগ পেয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত।
১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সি-যাদের কোনো দীর্ঘমেয়াদি অসুখ নেই; অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্না বা জনসনের দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন-এমন ব্যক্তিদেরই হজ পালনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে সহায়তায় ২৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন।
রিয়াদের উম্মে আজম (৫৩) এবার স্বামীসহ হজের অনুমতি পেয়েছেন। তিনি আরব নিউজকে বলেন, যখন মেসেজটি (অনুমতি পাওয়ার খুদেবার্তা) পেলাম, আমার চেয়ে সুখী আর কেউ ছিল না। যেন বিশেষ অনুগ্রহই আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন।
তিনি বলেন, মহামারিতে এত ভয় কেন, যখন আমরা আল্লাহর মেহমান। আমার মনে হয়, আরও বেশি মানুষকে হজের সুযোগ দেওয়া উচিত। সৌদিতে বসবাসকারী মার্কিন নাগরিক মরিয়ম মুহাম্মদ (২৪) বলেন, আমি অভিভূত। অনেকদিন আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি। অবশেষে আল্লাহ তা কবুল করলেন।
হজের অনুমতি পাওয়া মুসল্লিরা রোববার পবিত্র হারাম শরিফে তাওয়াফ আল-কদম (সূচনা তাওয়াফ) করে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনায় যান। তাদের আনা-নেওয়ায় প্রায় তিন হাজার বাস ব্যবহার করা হয়, প্রতিটি বাসে মাত্র ২০ জন যাত্রী ছিলেন। হজের অন্যতম সুন্নত রাতটি মিনায় কাটানো। এ সুন্নত পালন করে আজ ভোরে তারা এসেছেন ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে। এ ময়দানে অবস্থান হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা (ফরজ)।
আজ হাজিরা সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত দুই মাইল দৈর্ঘ্য ও দুই মাইল প্রস্থের এ ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকবেন। ময়দানের তিনদিক পাহাড়বেষ্টিত। জাবালে রহমত হলো রহমতের পাহাড়। বলা হয়ে থাকে, এ পাহাড়ে হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.)-এর দেখা হয়েছিল। হজরত মুহাম্মদ (সা.) এ আরাফাতের ময়দানেই জাবালে রহমত পাহাড়ের কাছে দাঁড়িয়ে বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।
আজ আরাফাতের ময়দানে খুতবার পর এক আজানে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন হাজিরা। তারা সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে মুজদালিফায় গিয়ে আবারও এক আজানে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন। রাতে সেখানে অবস্থান করবেন খোলা মাঠে। শয়তানের প্রতিকৃতিতে পাথর নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ৭০টি পাথর সংগ্রহ করবেন সেখান থেকে। মুজদালিফায় কাল ফজরের নামাজ আদায় করে মিনায় নিজ তাঁবুতে ফিরবেন।
মিনায় ফিরে কাল বড় শয়তানের উদ্দেশে সাতটি পাথর ছুড়বেন হাজিরা। এরপর তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় পশু কুরবানি দেবেন। মাথার চুল ছেঁটে (ন্যাড়া করে) গোসল করে ইহরাম (সেলাইবিহীন দুই টুকরা কাপড়) বদলে স্বাভাবিক পোশাক পরবেন। এরপর মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে পবিত্র কাবা শরিফ সাতবার তাওয়াফ করবেন। কাবার সামনে দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় ‘সায়ি’ (সাতবার দৌড়) করবেন। সেখান থেকে তারা আবার মিনায় যাবেন। মিনায় যতদিন থাকবেন, ততদিন তিনটি (বড়, মধ্যম, ছোট) শয়তানকে ২১টি পাথর মারবেন। এরপর মক্কায় বিদায়ি তাওয়াফ করবেন তারা।
আজ কাবা শরিফে গিলাফ পরানো হবে: আজ পবিত্র কাবা শরিফে পরানো হবে নতুন গিলাফ। প্রতিবছর (৯ জিলহজ) হজের দিন হাজিরা সব আরাফাতের ময়দানে থাকেন এবং মসজিদে হারামে মুসল্লির সংখ্যাও থাকে কম। হাজিরা আরাফাত থেকে ফিরে এসে কাবা শরিফের গায়ে নতুন গিলাফ দেখতে পান। নতুন গিলাফ পরানোর সময় পুরোনো গিলাফটি সরিয়ে ফেলা হয়। পুরোনো গিলাফ কেটে মুসলিম দেশের সরকারপ্রধানদের উপহার দেওয়া হয়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ভেতরেও কাবা শরিফের গিলাফের অংশ টানানো আছে। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ফটো:
ভারতে কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে রাজধানীর কুড়িলে বিশাল এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় প্রগতি সরণির বসুন্ধরা গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
সেখানে তারা সংক্ষিপ্ত একটি সমাবেশে বলেন, ভারতের সুপ্রিমকোর্টে পবিত্র কোরআন শরিফ সংশোধনের দাবিতে মামলা দায়েরকারী ওয়াসিম রিজভিকে গ্রেফতার করা হোক। ওয়াসিম রিজভির ছবি পদদলিত করার পাশাপাশি পোস্টারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মতো বাংলাদেশেও বিক্ষোভ চলছে।
ভারতের উত্তরপ্রদেশ শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান রিজভির অভিযোগ করে বলেন, কোরআন শরিফের ২৬টি আয়াতে নাকি সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করা হয়েছে। তাই সেগুলোকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।
ওয়াসিম রিজভির ওই আবেদন বাতিল চেয়েছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা মাহমুদ দরিয়াবাদী।
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৪০০ বছর ধরে পবিত্র কোরআন শরিফ অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে। এই ঐশী গ্রন্থের একটি শব্দও পরিবর্তন করার অপচেষ্টা কেউ করেনি। কোরআন শরিফের কোনো আয়াতেই সহিংসতাকে সমর্থন করা না।
ভারতের শিয়া পার্সোনাল ল’ বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— কোরআনের প্রত্যেকটি আয়াত চিরন্তন সত্য। এর সত্যতা নিয়ে কোনো বিতর্ক চলতে পারে না। প্রখ্যাত শিয়া আলেম মাওলানা কালবে জাওয়াদ তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘ভারতের আইনশৃঙ্খলা খারাপ করার জন্য এবং মুসলিমদের মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য ওই চেষ্টা নিন্দনীয়।
ওয়াসিম রিজভির বিরুদ্ধে অন্যসব বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি এই পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।
ফাইল ফটো:ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি
ইরানের পরমাণু স্থাপনায় সম্ভাব্য সামরিক হামলার জন্য তেল আবিব তার পরিকল্পনা হালনাগাদ করছে বলে ইসরায়েলের যুদ্ধমন্ত্রী বেনি গান্তজ যে মন্তব্য করেছেন তার কড়া হুঁশিয়ারী দিয়েছে তেহরান।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামি বলেছেন, দখলদার ইসরায়েলের শাসক গোষ্ঠী ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার কোনো চিন্তা করলে তেল আবিব এবং হাইফা শহরকে গুঁড়িয়ে দেয়া হবে।
জেনারেল হাতামি আজ রবিবার ইসরায়েলকে উদ্দেশ্যে বলেন, মাঝেমাঝে তারা এমন কিছু বলে যা বাস্তবায়ন করা তাদের জন্য কঠিন এবং এসব হুমকি ধামকির মাধ্যমে এটা স্পষ্ট যে তারা চরম হতাশাগ্রস্ত। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনি অনেক বছর আগে ইহুদিবাদীদের সমুচিত জবাব দিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন ইসলায়েল আমাদের প্রধান শত্রু নয় এমনকি ইরানের সঙ্গে শত্রুতা বজায় রাখার নূন্যতম যোগ্যতাও তাদের নেই। ইহুদিবাদী শাষক গোষ্ঠীর ভালো করেই জানা আছে এবং তারা যদি না জেনে থাকে তাহলে তাদের জেনে রাখা উচিত, যে তারা সামান্যতম ভুল করলে ইরান তেল আবিব এবং হাইফা শহর মাটির সঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়ার সক্ষমতা রাখে।
জেনারেল হাতামি আরও বলেন, ইরানের সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়কের আদেশ অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে কার্যকর করা হয়েছে এবং এটি একটি নীলকশায় রূপান্তরিত হয়েছে। সর্বোচ্চ নেতার সামান্য ইঙ্গিতেই তা বাস্তবায়ন করা হবে। তাই আমি তাদের উপদেশ দেবো, তারা যেনো কখনই এ ধরণের ভুল না করে।
ইরান তার পরমাণু কর্মসূচী বাড়াবাড়ি পর্যায়ে নিয়ে গেলে ইসরায়েল তাতে হামলা চালাবে বলে বেনি গান্তজ হুমকি দেয়ার পর জেনারেল হাতামি এসব মন্তব্য করেন।