a
ফাইল ছবি
মাদারীপুরের শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ-রুটে কাঁঠালবাড়ি ঘাট (পুরাতন ফেরিঘাট) এলাকায় বালু বোঝায় কার্গোর সাথে স্পিডবোটের সংঘর্ষের হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরো বেশ কয়েকজন। নৌ পুলিশের টিম উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
কাঁঠালবাড়ি ঘাট নৌপুলিশের বরাতে জানা গেছে, আজ (সোমবার) সকাল পৌনে ৭টায় শিমুলিয়া ঘাট থেকে যাত্রী বোঝাই করে একটি স্পিডবোট বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসছিল। সে সময় কাঁঠালবাড়ি ঘাট সংলগ্ন নদীতে নোঙর করে রাখা একটি বালুবোঝাই বাল্কহেডের সাথে দ্রুতগামী স্পিডবোটের সংঘর্ষ হয়।
খবর পাওয়ার সাথে সাথেই কাঁঠালবাড়ি নৌপুলিশ সেখানে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরো বেশ কয়েকজন নিখোঁজ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে তাই এখনও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।
ছবি-মুক্তসংবাদ প্রতিদিনঃ ৪ নং আওনা ইউনিয়ন পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান মিনারা আশরাফ
বিশেষ প্রতিনিধি, সরিষাবাড়িঃ আজ ১০ নভেম্বর ২০২৪ ইং সরিষাবাড়ি ৪ নং আওনা ইউনিয়ন পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বায়িত্ব ভার গ্রহন করেন জনাবা মিনারা আশরাফ। ৪ নং ইউনিয়নের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে আলোচনা পর্বের পর অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং তিনি সর্বদায় তার নির্বাচনী এলাকার মানুষের পাশে থেকে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অত্র ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সুরুজ মিয়া, সিনিয়র সহ সভাপতি কামাল মাহামুদ তরফদার, সহ সভাপতি মনিরুজ্জামান মাছুম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুঞ্জরুল মোর্শেদ শিমুল, যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম হাই, যুবদলের সভাপতি আল আমিনসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন যুবদলের সহ সভাপতি আব্দুল খালেক।
বক্তারা অত্র ইউনিয়ন পরিষদ যাতে মনোনীত চেয়ারম্যান ভালোভাবে এলাকায় সেবামুলক কাজ করতে পারে, সকলে সহযোগিতা হাত বাড়ানোর গুরুত্ব আরোপ করেন।
নিজ দ্বায়িত্ব গ্রহনের আগে নতুন চেয়ারম্যান জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি জনাব ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীম সাহেবের কাছে দোয়া চান এবং সততা ও নিষ্ঠার সাথে দুর্নীতির উর্দ্ধে উঠে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
ছবি সংগৃহীত
কুমির দেখলে, সে শিয়ালের সঙ্গে কিছুতেই পেরে উঠছে না। তখন সে ভাবলে, 'ও ঢের লেখাপড়া জানে, তাতেই খালি আমাকে ফাঁকি দেয়। আমি মূর্খ লোক, তাই তাকে আঁটতে পারি না।' অনেকক্ষণ ভেবে কুমির এই ঠিক করল যে, নিজের সাতটা ছেলেকে শিয়ালের কাছে দিয়ে খুব করে লেখাপড়া শেখাতে হবে। তার পরের দিনই সে ছানা সাতটাকে সঙ্গে করে শিয়ালের বাড়ি গিয়ে উপস্থিত হল। শিয়াল তখন তার গর্তের ভিতরে বসে কাঁকড়া খাচ্ছিল। কুমির এসে ডাকলে,
'শিয়াল পণ্ডিত, শিয়াল পণ্ডিত, বাড়ি আছ?' শিয়াল বাইরে এসে বললে, 'কী ভাই, কী মনে করে?'
কুমির বললে, 'ভাই, এই আমার ছেলে সাতটাকে তোমার কাছে এনেছি। মূর্খ হলে করে খেতে পারবে না। ভাই, তুমি যদি এদের একটু লেখাপড়া শিখিয়ে দাও।' শিয়াল বললে, 'সে আর বলতে? আমি সাতদিনে সাতজনকে পড়িয়ে পণ্ডিত করে দেব।' শুনে কুমির তো খুব খুশি হয়ে ছানা সাতটাকে রেখে চলে গেল। তখন শিয়াল তাদের একটাকে আড়ালে নিয়ে বললে—
'পড় তো বাপু— কানা খানা গানা ঘানা,
কেমন লাগে কুমির ছানা?'
এই কথা বলে, সেটার ঘাড় ভেঙে, খেয়ে ফেললে।
পরদিন যখন কুমির তার ছানা দেখতে এল, তখন শিয়াল তাদের একেকটি করে গর্তের বাইরে এনে দেখাতে লাগল। ছয়টিকে ছয়বার দেখালে, শেষেরটা দেখালে দুবার। বোকা কুমির তা বুঝতে না পেরে ভাবলে, সাতটাই দেখানো হয়েছে। তখন সে চলে গেল, আর অমনি শিয়াল ছানাগুলোর একটাকে আড়ালে নিয়ে বললে—
'পড় তো বাপু— কানা খানা গানা ঘানা, কেমন লাগে কুমির ছানা?'
এই কথা বলে, সেটার ঘাড় ভেঙে, খেয়ে ফেলল। পরদিন কুমির তো ছানা দেখতে এল। শিয়াল একেকটি করে গর্তের বাইরে এনে, পাঁচবার পাঁচটাকে দেখাল, শেষেরটিকে দেখাল তিনবার। তাতেই কুমির খুশি হয়ে চলে গেল। তখন শিয়াল ঠিক আগের মতো করে আর একটা ছানাকে খেল।
এমনি করে সে রোজ একটি ছানা খায়, আর কুমির এলে তাকে ফাঁকি দিয়ে ভোলায়। শেষে যখন একটি ছানা বই আর রইল না, তখন সেই একটিকেই সাতবার দেখিয়ে সে কুমিরকে বোঝাল। তারপর কুমির চলে গেলে সেটিকেও খেয়ে ফেলল। তারপর আর একটিও রইল না।
তখন শিয়ালনী বললে, 'এখন উপায়? কুমির এলে দেখাবে কি? ছানা না দেখতে পেলে তো অমনি আমাদের ধরে খাবে!'
শিয়াল বললে, 'আমাদের পেলে তো ধরে খাবে। নদীর ওপারের বনটা খুব বড়, চল আমরা সেইখানে যাই। তা হলে কুমির আর আমাদের খুঁজে বার করতেই পারবে না।'
এই বলে শিয়াল শিয়ালনীকে নিয়ে তাদের পুরনো গর্ত ছেড়ে চলে গেল। এর খানিক বাদেই কুমির এসেছে। সে এসে 'শিয়াল পণ্ডিত, শিয়াল পণ্ডিত' বলে কত ডাকল, কেউ তার কথার উত্তর দিল না। তখন সে গর্তের ভিতর-বার খুঁজে দেখল—শিয়ালও নেই শিয়ালনীও নেই! খালি তার ছানাদের হাড়গুলো পড়ে আছে।
তখন তার খুব রাগ হল, আর সে চারদিকে ছুটাছুটি করে শিয়ালকে খুঁজতে লাগল। খুঁজতে-খুঁজতে নদীর ধারে গিয়ে দেখল, শিয়াল আর শিয়ালনী সাঁতরে নদী পার হচ্ছে।
অমনি 'দাঁড়া হতভাগা।' বলে সে জলে ঝাঁপ দিয়ে পড়ল। জলের নীচে ছুটতে কুমিরের মতো আর কেউ পারে না, দেখতে দেখতে সে গিয়ে শিয়ালের পিছনের একটা পা কামড়ে ধরল।
শিয়াল সবে তার সামনের দু-পা ডাঙায় তুলেছিল, শিয়ালনী তার আগেই উঠে গিয়েছিল। কুমির এসে শিয়ালের পা ধরতেই সে শিয়ালনীকে ডেকে বললে, 'শিয়ালনী, শিয়ালনী, আমার লাঠিগাছা ধরে কে টানাটানি করছে। লাঠিটা বা নিয়েই যায়।'
একথা শুনে কুমির ভাবলে, 'তাই তো, পা ধরতে গিয়ে লাঠি ধরে ফেলেছি। শিগগির লাঠি ছেড়ে পা ধরি।'
এই ভেবে যেই সে শিয়ালের পা ছেড়ে দিয়েছে, অমনি শিয়াল একলাফে ডাঙায় উঠে গিয়েছে। উঠেই বোঁ করে দে ছুট। তারপর বনের ভিতরে ঢুকে পড়লে আর কার সাধ্য তাকে ধরে।
তারপর থেকে কুমির কেবলই শিয়ালকে খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু শিয়াল বড্ড চালাক, তাই তাকে ধরতে পারে না। তখন সে অনেক ভেবে এক ফন্দি করল। কুমির একদিন চড়ায় গিয়ে হাত পা ছড়িয়ে মড়ার মতো পড়ে রইল। তারপর শিয়াল আর শিয়ালনী কচ্ছপ খেতে এসে দেখল, কুমির কেমন হয়ে পড়ে আছে। তখন শিয়ালনী বললে, 'মরে গেছে। চল খাইগে!' শিয়াল বললে, 'রোস, একটু দেখে নিই।' এই বলে সে কুমিরের আর-একটু কাছে গিয়ে বলতে লাগল, 'না। এটা দেখছি বড্ড বেশি মরে গেছে। অত বেশি মরাটা আমরা খাই না। যেগুলো একটু-একটু নড়ে-চড়ে, আমরা সেগুলো খাই।' তা শুনে কুমির ভাবলে, 'একটু নড়ি-চড়ি, নইলে খেতে আসবে না।' এই মনে করে কুমির তার লেজের আগাটুকু নাড়তে লাগল। তা দেখে শিয়াল হেসে বললে, ঐ দেখ, লেজ নাড়ছে! তুমি তো বলেছিলে মরে গেছে!' তারপর আর কি তারা সেখানে দাঁড়ায়! তখন কুমির বললে, 'বড্ড ফাঁকি দিলে তো! আচ্ছা এবারে দেখাব!'
একটা জায়গায় শিয়াল রোজ জল খেতে আসত। কুমির তা দেখতে পেয়ে সেখানে গিয়ে লুকিয়ে রইল। ভাবল শিয়াল জল খেতে এলেই ধরে খাবে। সেদিন শিয়াল এসে দেখল সেখানে একটাও মাছ নেই! অন্য দিন ঢের মাছ চলা-ফেরা করে। শিয়াল ভাবল, 'ভালো রে ভালো আজ সব মাছ গেল কোথায়? বুঝেছি, এখানে কুমির আছে!' তখন সে বললে, 'এখানকার জল বেজায় পরিষ্কার। একটু ঘোলা না হলে কি খাওয়া যায়? চল শিয়ালনী, আর-এক জায়গায় যাই।' এ কথা শুনেই কুমির তাড়াতাড়ি সেখানকার জল ঘোলা করতে আরম্ভ করলে। তা দেখে শিয়াল হাসতে-হাসতে ছুটে পালিয়েছে!
আর একদিন শিয়াল এসেছে কাঁকড়া খেতে। কুমির তার আগেই সেখানে চুপ করে বসে আছে। শিয়াল তা টের পেয়ে বললে, 'এখানে কাঁকড়া নেই, থাকলে দু-একটা ভাসত।'
অমনি কুমির তার লেজের আগাটুকু ভাসিয়ে দিল। কাজেই শিয়াল আর জলে নামল না। এমনি করে বারবার শিয়ালের কাছে ঠকে গিয়ে, শেষে কুমিরের ভারি লজ্জা হল। তখন সে আর কী করে মুখ দেখাবে? কাজেই সে তার ঘরের ভিতরে গিয়ে বসে রইল।
....ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
শিয়াল পণ্ডিত, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী