a
ফাইল ছবি
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় প্রতিবাদে নেমেছে পরিবহন সেক্টরগুলো। ফলে বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরি পর্যন্ত চলেনি রাজধানীসহ সারাদেশে। এতে জনজীবনে অসহনীয় ভোগান্তি ও দুর্দশা নেমে আসে।
বাস মিনিবাস না চলার কারণে সারাদেশ অচল হয়ে পড়ে। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ট্রাক ভ্যানের দেখাদেখি সারাদেশে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় এদিন কার্যত হরতালের রূপ নেয়। শুধু বাস বন্ধ থাকার খেসারত দিতে হয়েছে লাখ লাখ বেকার শিক্ষার্থীকে।
শুক্রবার বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারী নিয়োগ পরীক্ষা থাকায় তাদের দুর্বিষহ ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। অনেকেই ঢাকায় আসতে না পারায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। এ ধরনের ধর্মঘটে জনজীবনে ভোগান্তির পাশাপাশি কাঁচাবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
গতকাল শুক্রবার যেই চিত্র দেখা গেছে- আজ শনিবার তা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে অনেকে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা আঁচ করে শুক্রবারেই সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে আগামীকাল রবিবার পরিবহন নেতাদের সঙ্গে জরুরী বৈঠকের ডাক দিয়েছেন। তিনি পরীক্ষার্থী ও জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে সকল স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বাস্তবভিত্তিক মূল্য সমন্বয়ের মাধ্যমে জনগণের ওপর বাড়তি চাপ সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বাসও দেন।
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতিও জানিয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের ডাকা যে কোন বৈঠকে বসতে প্রস্তুত। সংগঠনের সভাপতি এনায়েত উল্লাহ খন্দকার বলেছেন, সরকারের ডাকের অপেক্ষায় রয়েছি। তেলের দাম না কমানো পর্যন্ত মালিকরা গাড়ি চালাবেন না। তবে এই ধর্মঘট কাল রবিবার পর্যন্ত চলবে।
যদিও আমরা কোন ধর্মঘটের ঘোষণা দেইনি-কিন্তু মালিকদের সেন্টিমেন্টের সঙ্গে আমরা একমত ও সংহতি প্রকাশ করছি।
এদিকে সাধারণ নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্ত নাগরিকদের ভোগান্তি তৈরি ছাড়া আর কিছুই না। তেলের মূল্য প্রত্যাহার বা স্থগিত করার কথা বললেও অন্তরালে আছে ভাড়া সমন্বয় করার কৌশল। পরিবহন মালিকদের উদ্দেশ্য ও স্বার্থ হয়তো রক্ষা হবে কিন্তু সাধারণ নাগরিকদের জীবনযাত্রা ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। আমরা তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল এবং পণ্য পরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এদিন সকাল থেকেই দেখা যায়, রাজধানীসহ সারাদেশে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখেন মালিক-শ্রমিকরা। দিনের শুরুতেই সড়কে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। অথচ পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কোন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়নি। অর্থাৎ ঘোষণা ছাড়াই শুক্রবার সকাল থেকে চলছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট।
তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে শুধু ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। গন্তব্যের উদ্দেশে সড়কের বিভিন্ন মোড়গুলোতে অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। কিন্তু কোন বাস না পেয়ে রিক্সা-সিএনজি কিংবা প্রাইভেটকার ভাড়া করে বাড়তি টাকা খরচ করে ছুটছেন অনেকে।
ফাইল ছবি
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় এক পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন ভাতা না দিয়ে আত্নগোপন করেছে কটন পাওয়ার এক্সেল নিট নামে এক পোশাক কারখানার মালিক। এ অভিযোগে শ্রমিকরা অনেকদিন যাবৎ বিভিন্নভাবে আন্দোলন করেও সুফল পাচ্ছিল না।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) কে শ্রমিকরা এ বিষয়টি অবগত করলে এগিয়ে আসেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।
আজ ১২মে বুধবার সকালে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ নিজ সম্মেলন কক্ষে নিজ থেকে ওই কারখানার ২৯ জন নারী ও পুরুষ শ্রমিককে ডেকে এনে নগদ অর্থসহ খাদ্য সামগ্রী দিয়ে মানবিক সহায়তা করেছেন।
সহায়তা পেয়ে শ্রমিকরা জেলা প্রশাসকের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এসময় শ্রমিকরা বলেন,সামনে ঈদ আমাদের হাতে কোন আর উপায় ছিল না নিরুপায় হয়ে জেলা প্রশাসকের দ্বারস্থ হয়েছি। আমাদের পাওনা বুঝে পেয়ে আমরা সকলেই আনন্দিত।
একইসাথে আত্মগোপন করা গার্মেন্টস মালিককে খুঁজে বের করে বাকি শ্রমিকদের পাওনা আদায় করে দেয়ার জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করেছেন।
জানা যায় লোকমান মিয়ার মালিকানাধীন কটন পাওয়ার এক্সেল নিট নামে পোশাক কারখানাটি নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইনের সামনে ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় অবস্থিত।
ছবি সংগৃহীত
নির্বিচার হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার প্রায় ৩০,০০০ নিরীহ ও নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করেছে ইসরায়েলের বাহিনী এবং দিনকে দিন এই সংখ্যা বেড়েই চলছে। অথচ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা গাজার জনগণের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ করছে না।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি ওয়ার্ল্ড জায়নিস্ট অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউজেডও) জরুরি সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেছেন, ‘‘ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, গাজার জনগণের বিরুদ্ধে নয়।’’
ড্যানিয়েল হ্যাগারি আরও বলেন, ‘‘এই যুদ্ধে আমাদের লক্ষ্য, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হল জিম্মিদের উদ্ধার করা। একই সঙ্গে গাজার নাগরিকদের হামাসের হাত থেকে মুক্তি নিশ্চিত করাও আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা উত্তর থেকে দক্ষিণে হামাসের সামরিক কাঠামো গুঁড়িয়ে দিয়েছি। আমরা ইতিমধ্যে হামাসের ২৪টির মধ্যে অন্তত ১৮টি ব্যাটালিয়ন ধ্বংস করেছি। বাকিগুলো ধ্বংস করার কাজ চলছে। এর মধ্যে অন্তত চারটি ব্যাটালিয়ন রাফাহতে রয়েছে।’’
হ্যাগারি বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রাফাহর ১৪ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে পারে না। একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য সেখানকার লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হবে।
অথচ ইসরায়েল হামাসকে নির্মুলের নামে গাজার স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল এমনকি জাতিসংঘ কর্তৃক বিভিন্ন শরণার্থ শিবিরে বোমা মেরে শত শত নারী-শিশুকে হত্যা করেছে এবং বাড়ি-ঘর সব ধ্বংস করেছে। আর ইসরায়েলের এই সামরিক মুখপাত্র বর্তমানে তাদের নিজেদের অবস্থা বেগুতিক দেখে বলছে রাফাহর ১৪ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে পারে না। ৩০ হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যার আগে এসব তত্ত্বকথা তাদের মনে ছিলো না?
ইসরায়েল-আমেরিকার এসব ভন্ডামী দু’মুখো কথা বিশ্বের সকলে কম-বেশি জানে বলেই আস্তে আস্তে আমেরিকামুখী ছোট-বড় দেশগুলোর জনগণ ও সরকার আমেরিকা থেকে মুখ ফিরিয়ে তারা রাশিয়া তথা অন্য বৃহৎ দেশগুলোর সাথে জোটবদ্ধ হয়ে সামনে দিনগুলোতে চলার পথ খুঁচছে!
আমেরিকা আফগানিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশগুলো থেকে তাদের সেনাবাহিনী নিজ দেশে আনতে বাধ্য হয়েছে। নিকট অতীতে ইউক্রেনকে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়ে বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলকে সাহায্যের নামে ইউক্রেন থেকে তাদের মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। হয়তো নিকট ভবিষ্যতে আমেরিকা অন্য দেশের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে ইসরায়েল তথা মধ্যপ্রাচ্য থেকেও তাদের গুটিয়ে নিয়ে নিজেদের দেশ রক্ষায় ব্যস্ত থাকতে বাধ্য হবে, এই সময় খুব একটা দূরে নয়!
লেখক: কলাম লেখক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক
এবং নির্বাহী পরিচালক, হিউম্যানরাইটস এন্ড এনভায়রমেন্ট ডেভোলপমেন্ট সোসাইটি(হিডস)