a
ফাইল ছবি
আবারো পদ্মা সেতুর স্প্যানে ফেরি ‘বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের’ ধাক্কা লাগার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এলাকায় ২ ও ৩ নম্বর খুঁটির মাঝখানে ১-বি স্প্যানে এ ধাক্কা লাগে। এতে ফেরির মাস্তুল ভেঙে গেছে। যায়। তবে সেতুর কোনো ক্ষতি হয়েছে কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা জায়নি।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বিআইডিব্লউটিসির মেরিন অফিসার আহম্মদ আলী। তিনি বলেন, "সকালে নারায়ণগঞ্জ থেকে পাটুরিয়া যাচ্ছিল ফেরি ‘বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর’। এসময় পদ্মা সেতুর ২ ও ৩ নম্বর খুঁটির মাঝখানে ১-বি স্প্যানের সঙ্গে ওই ফেরির মাস্তুলের ধাক্কা লাগে। এতে ফেরির মাস্তুল ভেঙে গেছে।"
এর আগে গত ১৩ আগস্ট মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে আসছিল ফেরি কাকলি। সকাল ৮টার দিকে প্রবল স্রোতের কারণে ফেরিটি সেতুর ১০ নং পিলারে আঘাত হানে। এতে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় ১০ নম্বর পিলারে আঘাত হানে ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর। এ সময় ২০ যাত্রী আহত হন। ২৩ জুলাই সকাল ১০টার দিকে পদ্মা সেতুর ৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায় রো রো ফেরি শাহ জালাল। এতে ২০ জন যাত্রী আহত হন।
এসব ঘটনায় থানায় জিডি, তদন্ত কমিটি গঠন ও ফেরি চালকদের সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে ওই দিনই চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিআইডব্লিউটিসি। তাদের দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিলারের সঙ্গে সংঘর্ষের পেছনে রো রো ফেরিটির ইনচার্জ মাস্টার আব্দুর রহমান খান ও সুকানির সাইফুল ইসলামের দায়িত্বহীনতা রয়েছে। ফেরি বা অন্য কোনো জলযানের সংঘর্ষ থেকে নিরাপদে রাখতে পদ্মা সেতুর পিলারগুলো রাবার দিয়ে মোড়ানোর পরামর্শও দিয়েছে ওই কমিটি।
সংগৃহীত ছবি
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারি বৃষ্টিপাত, পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে প্লাবিত হয়েছে নদীর তীরবর্তী কয়েক'শ গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সহস্রাধিক পরিবার।
এদিকে আগামী পাঁচ দিন সারাদেশে বৃষ্টিপাত ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে জানানো হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবারের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী সাত দিন দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকা অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায় ভারি বর্ষণের কারণে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করে আগামী তিন থেকে সাত দিন দেশের উত্তরাঞ্চলে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্রসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মেঘনা অববাহিকায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। ভারি বর্ষণের ফলে আকস্মিক বন্যা হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরো জানায়, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। আজ শুক্রবার ময়মনসিংহ, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় এবং রংপুর ও খুলনা বিভাগের অনেক স্থানে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। পাঁচ দিন আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকবে। আজ ও আগামীকাল শনিবার দেশজুড়ে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
ফাইল ছবি: মেসি
কী জানি কী হয়! উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠা লিওনেল মেসির চোখে মুখে। পারবেন কি ইন্টার মায়ামিকে প্রথম শিরোপাটা এনে দিতে? কিছুই তখন তাঁর হাতে ছিল না। নিজের কাজটা আগেই সেরে রেখেছিলেন। নির্ধারিত সময়ে করেছেন নান্দনিক এক গোল। টাইব্রেকারে দলের প্রথম শটটি নিয়েও করেছেন গোল।
এরপরই শুরু টেনশন! তবে মেসিকে নিরাশ করেননি তাঁর সতীর্থরা। ম্যারাথন পেনাল্টি শুটআউটে দুই দল ১০টি করে শট নিয়ে ফেলেছে, টাইব্রেকারে তখন ৯-৯ এ সমতায়। শট নিতে এলেন গোলরক্ষকেরা। দারুণ শটে গোল করলেন ইন্টার মায়ামির গোলরক্ষক ড্রেক ক্যালেন্ডার। এরপর প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের শট ঠেকিয়ে দলকে এনে দেন শিরোপাও। ১-১ গোলে সমতায় থাকার পর ইন্টার মায়ামি টাইব্রেকারে ম্যাচ জিতে নেয় ১০-৯ গোলে।
গত বছরের ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ জিতে সপ্তম স্বর্গে আরোহণ করেছিলেন মেসি। ফুটবল থেকে নিজের আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই বলে নিজেই একাধিকবার বলেছেন। কিন্তু নিজের জন্য নয়, যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন তলানিতে থাকা ইন্টার মায়ামিকে ভালো কিছু উপহার দেবেন বলে। সেই লক্ষ্যে প্রথম ধাপেই সফল আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। লিগস কাপের মধ্য দিয়ে মায়ামিকে এনে দিলেন প্রথম শিরোপা।
এদিন ন্যাশভিলের মাঠ জিওডিস পার্কে শুরু থেকেই বল পায়ে রেখে আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করে ইন্টার মায়ামি। ৪ মিনিটের মাথায় লং বলে সুযোগ তৈরির চেষ্টা করেছিলেন মেসি। যদিও সেই সুযোগ পরিণতি পায়নি। ইন্টার মায়ামি বলের দখল রেখে খেলায় ন্যাশভিলে এ সময় চেষ্টা করছিল প্রতি-আক্রমণ থেকে সুযোগ তৈরির।
দুই-একবার ওপরেও ওঠে এসেছিল তারা। যদিও তা গোল আদায়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। বিপরীতে ইন্টার মায়ামিও অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে খুব একটা জায়গা পাচ্ছিল না। কড়া পাহারার কারণে হতাশ হতে হচ্ছিল তাদের। কিন্তু কড়া পাহারায় কি আর মেসিকে আটকে রাখা যায়! ন্যাশভিলেও পারেনি।
২৩ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে ইন্টার মায়ামিকে এগিয়ে দেন মেসিই। ন্যাশভিলের ডি-বক্সের কাছাকাছি জায়গায় রবার্ত টেলরের বাড়ানো বল প্রতিপক্ষ খেলোয়াড় ঠিকভাবে বিপদমুক্ত করতে পারেননি। বল চলে আসে বক্সের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা মেসির কাছে। কয়েক পা এগিয়ে শরীরের ঝাঁকুনিতে দুজন ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে বাঁ পায়ের জোরাল শটে গোল করেন মেসি। মেসির সেই গোল তাঁর আশপাশে থাকা ন্যাশভিলের ৫ খেলোয়াড়ের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। এ নিয়ে ইন্টার মায়ামির হয়ে টানা ৭ ম্যাচে ১০ গোল করলেন মেসি।
বিরতির পরও ন্যাশভিলে চেষ্টা করে ম্যাচে ফেরার। অন্যদিকে ইন্টার মায়ামির চোখ ছিল ব্যবধান বাড়ানোয়। একাধিক আক্রমণ থেকে মেসিরা ব্যবধান বাড়াতে ব্যর্থ হন। ৫৭ মিনিটে সমতা ফেরায় ন্যাশভিলে। দলকে গোল এনে দেন ফাফা পিকাল্ট। কর্নার থেকে আসা বলে নিচু করে হেড নেন ফাফা। বল লাইনে দাঁড়ানো বেঞ্জামিন ক্রেমাশ্চির গায়ে লেগে ফিরে আসছিল। সেই সময় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গোলরক্ষকের গায়ে লেগে আবার জালে জড়ায় বল।
ম্যাচে সমতা ফেরার পর দুই পক্ষই এগিয়ে যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। ৭০ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে আরেকটি ট্রেডমার্ক শটে দলকে প্রায়ই এগিয়েই দিয়েছিলেন মেসি! কিন্তু এবার মেসির মাটি কামড়ানো শটে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় গোল পোস্ট। ৭৭ মিনিটে স্যাম সারিডগে ইন্টার মায়ামি গোলরক্ষক ড্রেক ক্যালেন্ডারকে ফাঁকি দিতে পারলে ব্যবধান বাড়াতে পারত ন্যাশভিলে।
শেষ দিকে আরও দুটি দারুণ সেভ করে ইন্টার মায়ামিকে বাঁচান ক্যালেন্ডার। যোগ করা সময়ে গোল পেতে পারত মায়ামিও। কিন্তু তারাও পারেনি বল জালে জড়াতে। এরপর নির্ধারিত সময়ে দুই দলই চেষ্টা করেছিল গোল আদায়ের। কিন্তু পায়নি কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা। ম্যাচ চলে যায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারের প্রথম শটটি নিতে আসেন মেসিই। ঠান্ডা মাথায় গোলরক্ষককে উল্টো দিকে পাঠিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তবে এরপর দুই দলই একটি করে পেনাল্টি মিস করে। ৫ শটের পর সমতা থাকে ৪-৪ এ। এরপর ম্যারাথন পেনাল্টি শুটআউটে জয় পায় মায়ামি। সূত্র: প্রথম আলো