a
ফাইল ছবি
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নভেম্বরের শেষে অথবা ডিসেম্বরের শুরুতে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। আজ সোমবার সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘শুরুতে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির একদিন করে ক্লাস নেয়া হবে, পঞ্চম শ্রেণির সপ্তাহের ছয়দিন ক্লাস হবে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে আগামী নভেম্বরের শেষে অথবা ডিসেম্বরের শুরুতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার আয়োজন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নিলেও কতটি বিষয় পরীক্ষা নেয়া হবে সেটি পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরিস্থিতি ভালো থাকলে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে ৬টি বিষয়ে পরীক্ষার আয়োজন করা হতে পারে। যদি তা সম্ভব না হয় তবে বিষয় কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।’
জাকির হোসেন বলেন, কাস্টমাইজ সিলেবাসে হবে। আমরা সিলেবাস দিয়ে দিয়েছি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা নভেম্বরের শেষে বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পরীক্ষা নেব। পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে যদি ছয়টি বিষয়ে নিতে পারি তাহলে নেব। আমাদের রিকভারি পরিকল্পনা করা আছে। আমরা আগে স্কুলগুলো খুলে দেই। দেখি কি হয় না হয়।
জাকির হোসেন আরও বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের সব বার্ষিক পরীক্ষাও এ বছর নেওয়া হবে। আজ সোমবার মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
ফাইল ছবি
বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল পরীক্ষায় নতুন ভর্তি পদ্ধতি চালু হওয়ায় সংকটে পড়েছে বেসরকারি খাতের মেডিক্যাল শিক্ষা। জানা গেছে, এবার ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ৪৯ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৬ হাজার ৬০০ জন মেডিক্যালে পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নতুন ভর্তি পদ্ধতির কারণে অসচ্ছল ও মেধাবীদের জন্য সংরক্ষিত ৮১ আসন এখন শূন্য। অর্থাৎ বিনা খরচায় পড়ার আসনও শূন্য পড়ে আছে।
ডেন্টালের অবস্থা আরও ভয়াবহ, যেখানে ১ হাজার ৫০০ সিটের বিপরীতে পড়ার জন্য মাত্র ৫০০ জন আবেদন করেছেন।
উল্লেখ্য, আগে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো বাছাই করে পছন্দের মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতেন। কিন্তু চলতি বছর এ সুযোগ রহিত করে নতুন অটোমেশন পদ্ধতি চালু করা হয়। এবার প্রথমে শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য পাঁচটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পছন্দক্রম রাখা হয়। পরে এই নিয়মও বদলে ফেলে ছাত্রদের জন্য ৬০টি এবং ছাত্রীদের জন্য ৬৬টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের তালিকা করা হয়। নতুন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী আবেদনের পর একটি নির্দিষ্ট মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি এসএমএসের মাধ্যমে তাকে জানানো হয়। এ কারণে অনেক শিক্ষার্থী পছন্দের প্রতিষ্ঠান পাননি। কারণ ব্যয়ের ব্যাপারটি মেডিক্যাল কলেজ ভেদে তারতম্য থাকায় শিক্ষার্থীরা সামর্থ্য অনুযায়ী কলেজ নির্বাচন করেন। তাই নতুন নিয়মে শিক্ষার্থীদের যে কলেজে সুযোগ দেওয়া হয়েছে সেখানকার শিক্ষাব্যয় শিক্ষার্থীর পরিবারের সামর্থ্যের বাইরে হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ভর্তি হতে পারেননি।
চট্টগ্রাম হালিশহরের মুহাম্মদ আবু সুফিয়ানের মেয়ে সানজিদা আকতারের স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবেন। কিন্তু দূরবর্তী পটুয়াখালী সরকারি মেডিক্যালে চান্স পাওয়ায় মেয়েকে নিজ এলাকার কোনো প্রাইভেট মেডিক্যালে পড়াবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন সুফিয়ান। কিন্তু তিনি জানতে পারলেন এবার ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির নতুন অটোমেশন পদ্ধতি চালুর কারণে তাদের এই সিদ্ধান্ত আর কাজে আসবে না। অধিদপ্তর খুদে বার্তার মাধ্যমে নিশ্চিত করবে তার মেয়ে কোথায় পড়বে।
অনুরূপ ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া কিশোরগঞ্জের এক শিক্ষার্থী বলেন, তার পছন্দ ছিল নিজ জেলার একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ। কিন্তু তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিক্যালে ভর্তির জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। কিন্তু এখানকার ব্যয় বহন করা তাদের পক্ষে কঠিন। এ কারণে তিনি মেডিক্যালে না পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কাঙ্ক্ষিত মেডিক্যাল কলেজ না পেয়ে ভর্তিতে অনীহা, আবার ভর্তি হলেও মাইগ্রেশন পদ্ধতিতে কলেজ বদল করায় আসন পূরণ হয়নি বেশির ভাগ বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের। বেশ কিছু আসন শূন্য রেখে ক্লাসও শুরু করতে হয়েছে কোনো কোনো বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজকে। এমনকি অসচ্ছল ও মেধাবী কোটাও পূরণ হয়নি তড়িঘড়ি করে নেওয়া এই নতুন সিদ্ধান্তের কারণে।
প্রসঙ্গত, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত ১০ মার্চ। ফলাফল প্রকাশিত হয় ১২ মার্চ। সরকারি-বেসরকারি সব মেডিক্যাল কলেজে ক্লাস শুরু হয়েছে ২৪ জুলাই। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেসরকারি বেশ কিছু মেডিক্যাল কলেজে আসন পূরণ হয়নি। ভর্তি কার্যক্রমও শেষ হয়নি। কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দায়ী করছেন বিএমডিসির অদূরদর্শী নীতিমালা ও ডিজি হেলথের সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতি না নিয়েই অটোমেশন পদ্ধতি চালু করাকে।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, গত ২৫ বছরে এই প্রথম বিএমডিসির অদূরদর্শী ও হুট করে চাপিয়ে দেওয়া নতুন অটোমেশন পদ্ধতির ফলে ৭৩১ আসন এখনো পূর্ণ হয়নি। নতুন এই ভর্তি পদ্ধতি যে চরম ভ্রান্ত ও নৈরাজ্যকর তা প্রমাণিত হয়েছে।
এ বছর ৩০০-এর অধিক মেডিক্যাল শিক্ষার্থী বিএমডিসির অনুমোদন নিয়ে বিদেশে পড়তে চলে গেছেন। এত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা চলে গেছে দেশের বাইরে।
ক্লাস শুরুর আগে অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা বলেন, যেসব বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ এখনো নির্ধারিত আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারেনি, সেখানে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এক মাসের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান করা হবে। কিন্ত এক মাস পেরিয়ে গেলেও সংকট নিরসনে কার্যত কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উলটো কলেজগুলোকে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে ক্লাস শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মুবিন খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, অটোমেশন প্রক্রিয়ায় বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তিতে সংকট তৈরি হয়েছে। কোনো কোনো কলেজ শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। সবার মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। এ জন্য পুরোটাই বিএমডিসি ও ডিজি হেলথ দায়ী। সূত্র: ইত্তেফাক
ফাইল ছবি
ইসরায়েলের পার্লামেন্টে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলো ফিলিস্তিনের গাজায় হামাস যোদ্ধাদের হাতে আটক ইসরায়েলের স্বজনরা।
দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও জিম্মিদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে না পারায় ইসরায়েল সরকারের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিলেন স্বজনরা। আর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জিম্মিদের উদ্ধারের নামে হামাস নির্মূলের অজুহাতে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে অব্যাহতভাবে আগ্রাসন চালিয়ে গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে ইহুদিবাদী দেশটি।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার জেরুজালেমে নেসেটে সংসদীয় একটি কমিটির অধিবেশন চলাকালে জিম্মিদের স্বজনদের একটি দল সেখানে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করেন। এ সময় তারা আইনপ্রণেতাদের প্রতি প্রিয়জনদের মুক্ত করার প্রচেষ্টা জোরদার করার দাবি জানান।
সোমবার সংসদে বিক্ষোভ প্রতিবাদের সময় এক নারীর হাতে গাজায় জিম্মি তার তিন স্বজনের ছবি দেখা যায়। জিম্মি স্বজনদের দ্রুত উদ্ধারের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন তিনি। নভেম্বরে দফায় দফায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়িয়ে কিছু জিম্মিকে মুক্ত করে ইসরায়েল। তবে হামাসের হাতে এখনও গাজায় প্রায় ১৩০ জিম্মি বন্দি রয়েছেন।
নেসেটে ফাইন্যান্স কমিটির আলোচনার সময় সেখানে ঢুকে স্বজনদের মুক্তির ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান ওই নারী। এ সময় কান্না করতে দেখা যায় তাকে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমি কেবল তাদেরকে জীবিত ফিরে পেতে চাই।”
কালো টি-শার্ট পরা অন্য বিক্ষোভকারীদের হাতেও বিভিন্ন দাবি সংবলিত পোস্টার দেখা যায়। একজনের হাতে ‘‘তারা সেখানে মারা গেলে আপনি এখানে বসতে পারবেন না’’ লেখা পোস্টার দেখা যায়। ‘‘তাদের এখনই, এখনই, এখনই মুক্ত করুন’’ স্লোগান দেন তারা। এ সময় কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও আড়াই শতাধিক ব্যক্তিকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রাখে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা।
এদিকে, হামাসের সাথে ইসরায়েলের নতুন জিম্মি মুক্তি নিয়ে চুক্তির ব্যাপারে মিশর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ করা হয়। তবে সেই চুক্তি কতটুকু আলোর মুখ দেখবে তা সন্দিহান। কারণ ইসরায়েল গাজা উপত্যকা থেকে হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প করেছে।
আর হামাস ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি জ্যেষ্ঠ সব ফিলিস্তিনি নাগরিককে মুক্তি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার না করলে জিম্মিদের জীবিত বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা প্রত্যাক্ষান করেছে। এরই মধ্যে হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিদের মধ্যে অন্তত ২৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, স্কাই নিউজ, বিবিসি, রয়টার্স, এনবিসি নিউজ