a
ফাইল ছবি : কৃষ্ণকুমার কুনাথ কেকে
কলকাতায় নজরুল মঞ্চে গান গাইতে গাইতে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলিউড তারকা গায়ক কৃষ্ণকুমার কুনাথ। এর কিছুক্ষণ পর হোটেলেই ফিরেই মারা যান তিনি। বলিউডে তিনি কেকে নামেই পরিচিত ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর।
মঙ্গলবার কলকাতায় নজরুল মঞ্চে কনসার্টে যোগ দেন তিনি। হোটেলে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়তেই দ্রুততার সাথে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় শহরের প্রথম সারির এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই মৃত ঘোষণা করা হয় তাকে। চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে এই সংগীতশিল্পীর।
মৃত্যুর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কেকে’র সবশেষ স্ট্যাটাস ছিল, “আজ রাতে নজরুল মঞ্চে বিবেকানন্দ কলেজের উত্তেজনাপূর্ণ কনসার্ট!! সবাইকে ভালোবাসা।”
কলকাতার নজরুল মঞ্চ ভিড়ে ঠাসা। দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা, কখন আসবেন গায়ক? কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ, যিনি কেকে নামেই সুপরিচিত, তিনি এলেন। কণ্ঠে সুরের ঝাঁপি আর হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে। হাততালিতে ফেটে পড়ল গোটা হল।
হাম, রাহে ইয়া না রাহে কাল.... মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাইক্রোফোন হাতে গান ধরেছিলেন কেকে। উপলক্ষ গুরুদাস কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এর আগের রাতেই ছিল বিবেকানন্দ কলেজের অনুষ্ঠান।
গান শুরু হতেই উৎসাহ-উত্তেজনায় দর্শকদের গলা ফাটিয়ে চিৎকার। হবে না-ই বা কেন! মঞ্চে যিনি গান গাইতে উঠেছেন, তিনি তো আর সাধারণ কেউ না। বলিউডের তারকা নেপথ্যগায়ক কেকে।
মঞ্চে উঠে দর্শকদের মাতোয়ার করতে পারা সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে অন্যতম কেকে। মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানেও তার ব্যত্যয় হয়নি। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত বাড়ার পাশাপাশি গাইতে থাকেন একের পর এক গান। বাড়তে থাকে দর্শকেদের উত্তেজনাও।
নজরুল মঞ্চে হাজির দর্শক-শ্রোতারা দেখলেন, ৫৪ বছর বয়সী একজন গায়ক কতটা তরতাজা। গান গাইতে গাইতে মঞ্চের এ পাশ থেকে অন্য পাশে দাপিয়ে বেড়াতেও দেখা গেল কেকে-কে। কখনও দর্শকদের উদ্দেশে ‘ফ্লাইং কিস’ ছুড়ে দিচ্ছেন, তো কখনও আবার গান গাইতে গাইতে নিজের মনেই লাফাচ্ছেন। দর্শকদের অনেকেই কেকে-কে দেখার জন্য, তার গান শোনার জন্য বহু দিন ধরেই অপেক্ষা করেছিলেন।
গান গাওয়ার ফাঁকে কেকে মঞ্চের স্পটলাইটগুলো নিভিয়ে দেওয়ার অনুরোধও করেন। যার গানের সুরে ভারতীয় উপমহাদেশের আপামর শ্রোতা মুগ্ধ, তার আবার স্পটলাইটের দরকারই বা কী! স্পটলাইট নেভাতেই শতাধিক ফোনের ফ্ল্যাশলাইটের ঝলকানি গানের পরিবেশে অন্য এক মাত্রা যোগ করে মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে।
কেকে’র অনুষ্ঠানের সময় নজরুল মঞ্চে শীতাতপ যন্ত্র ঠিকঠাক কাজ করছিল না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। গান গাইতে গায়ককে দরদর করে ঘামতেও দেখা গেছে। মাঝে মাঝে সাদা তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে নিচ্ছিলেন। তবে চোখে মুখে বিরক্তির লেশমাত্র নেই।
শেষের দিকে বেশ খানিকটা ক্লান্তই লাগছিল গায়ককে। ভিতরে কষ্ট হচ্ছিল কি? কষ্ট হলেও বুঝতে দেননি। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যন্ত দর্শকদের আবদার মিটিয়েছেন মুখের মিষ্টি হাসি ধরে রেখেই।
অনুষ্ঠান শেষ হতেই চলে যান স্থানীয় ধর্মতলা এলাকার বিলাসবহুল হোটেলে। সেখানে পৌঁছে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
তবে ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, মৃত্যু হয়েছে কেকে’র। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে তার। নিজে বুঝে থাকলেও, শারীরিক অসুবিধার কথা বুঝতে দেননি দর্শকদের। দক্ষ জাদুকরের মতো সুরের জাদু দেখিয়েছেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত।
‘আলবিদা’। ‘লাইফ ইন আ মেট্রো’ সিনেমায় তার গাওয়া বিখ্যাত গান। সুরের শহরকে সেই কথাই হয়তো জানাতে এসেছিলেন তিনি। আর এই অনুভবের শেষ সাক্ষী কলকাতা। সূ্ত্র: বিডি প্রতিদিন
সংগৃহীত ছবি
বিয়ে করলেন ওমর সানী-মৌসুমী দম্পতির একমাত্র ছেলে ছেলে ফারদীন এহসান স্বাধীন। গত ২৬ মার্চ বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। স্বাধীনের স্ত্রী সাদিয়া রহমান আয়েশা। ছেলের বিয়ে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ওমর সানী। তিনি বলেন, ২৬ মার্চ আমার ছেলের আকদ সম্পন্ন হয়েছে। আকদ করে আমরা বউ নিয়ে এসেছি। ওদের জন্য দোয়া করবেন।
এর আগে মৌসুমী তার ছেলে বউ সর্ম্পকে গণমাধ্যমে বলেছিলেন, স্বাধীনের বউয়ের নাম সাদিয়া রহমান আয়েশা। সে কানাডা প্রবাসী হলেও জন্মসূত্রে বাংলাদেশি। বাড়ি কুমিল্লায়, তবে পড়াশোনা আর বেড়ে ওঠা কানাডায়।
কয়েক মাস আগে স্বাধীনের সঙ্গে পরিচয় আয়েশার। পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব, ভালো লাগা। সেই ভালো লাগার সূত্র ধরেই দুই পরিবারের অলোচনায় ঠিক হয় বিয়ের দিনক্ষণ।
ফাইল ছবি
বছর তিনেক আগে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোকে 'মৃতপ্রায়' বলে মন্তব্য করেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ওই সময় দ্য ইকোনমিস্ট সাময়িকীকে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ইউরোপ নিজের নিরাপত্তার জন্য আর ন্যাটোর ওপর নির্ভর করে না। তার এ মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে হইচই পড়ে গিয়েছিল।
এরপর একে একে বেশকিছু বৈশ্বিক সংকট দেখা দেয়। এর মধ্যে আছে- করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ ও জ্বালানি সংকট।
বিশেষ করে এক বছর আগে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে রুশ জ্বালানির ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপে জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। মহাদেশটি এ সংকট মোকাবিলায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে দ্রুত ঝুঁকে পড়ে। কিন্তু নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়ে মৌলিক প্রশ্নে ইউরোপ এখনো দ্বিধা-বিভক্ত।
হেলেনিক ফাউন্ডেশন ফর ইউরোপিয়ান অ্যান্ড ফরেন পলিসির পরিচালক জর্জ পাগুলাতোস আলজাজিরাকে বলেন, 'আমি মনে করি, ইউরোপের ঐক্য দুর্বল হয়ে গেছে। ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘির ইতালি মিলে তাদের পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করতেন। তারা ইউরোপের একতা তৈরিতে চালকের ভূমিকা পালন করেছিলেন।'
কিন্তু গত জুলাইয়ে আস্থা ভোটে হেরে যান দ্রাঘি। তার পরিবর্তে ক্ষমতায় আসেন চরম ডানপন্থি ও জর্জিয়া মেলোনি।
গত এপ্রিলের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ফ্রান্সে ম্যাক্রোঁবিরোধীরা জয়লাভ করেন। ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা দিতে অনীহা প্রকাশ করায় জার্মানিকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
জর্জ পাগুলাতোস মনে করেন, ইউরোপের মনোবল এর কেন্দ্র থেকে সরে মহাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলে সরে গেছে। সেখানকার দেশগুলো চায় যেকোনো মূল্যে ইউক্রেন জয়ী হোক এবং রাশিয়া পরাজিত হোক।
ফিনিশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের রিসার্চ ফেলো মিনা অলান্দার আলজাজিরাকে বলেন, 'বাল্টিক, নর্ডিক ও মধ্য ইউরোপের দেশগুলো এখন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে আগের চেয়ে বেশি ন্যাটোমুখী। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তাদের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অংশীদার। ফ্রান্স ও জার্মানি এ বিষয়ে নীরব।'
গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পোল্যান্ডে এসে সেই দেশের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, 'বৈশ্বিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষমতা আমেরিকার আছে।'
প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর থেকে পূর্ব ইউরোপের সদস্য দেশগুলোতে সেনা সংখ্যা ৪ গুণ বাড়িয়েছে। পাশাপাশি আরও ৩ লাখ সেনাকে প্রস্তুত রাখার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
তবে ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ইউরোপ নিজেদের প্রতিরক্ষা নিয়ে একতা দেখাতে পারেনি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেফ বোরেল বলেছিলেন, 'যারা আমাদের হুমকি দেয় তাদের ওপর চাপ সৃষ্টির ক্ষমতা আমরা রাখি। আমরা শক্তিশালী হচ্ছি।'
তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সর্বসম্মতভাবে নিষেধাজ্ঞা দিতে ইইউকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। এমনকি ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা পাঠনোর বিষয়েও এই মহাদেশীয় জোটে বিভেদ দেখা গেছে।
গত জানুয়ারিতে জরিপ সংস্থা ইউরোস্কোপিয়া জানিয়েছে, অস্ট্রিয়ায় ৬৪ শতাংশ, জার্মানির ৬০ শতাংশ, গ্রিসের ৫৪ শতাংশ, ইতালি ও স্পেনের ৫০ শতাংশ মানুষ ভূমির বিনিময়ে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিতে পৌঁছানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। সূত্র: যুগান্তর