a কুমির-শিয়ালের গল্প
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২, ০৯ মে, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

কুমির-শিয়ালের গল্প


আরাফাত আলম, বিশেষ প্রতিনিধি, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সোমবার, ০৫ মে, ২০২৫, ০৫:৩৪
কুমির-শিয়ালের গল্প

ছবি সংগৃহীত

কুমির দেখলে, সে শিয়ালের সঙ্গে কিছুতেই পেরে উঠছে না। তখন সে ভাবলে, 'ও ঢের লেখাপড়া জানে, তাতেই খালি আমাকে ফাঁকি দেয়। আমি মূর্খ লোক, তাই তাকে আঁটতে পারি না।' অনেকক্ষণ ভেবে কুমির এই ঠিক করল যে, নিজের সাতটা ছেলেকে শিয়ালের কাছে দিয়ে খুব করে লেখাপড়া শেখাতে হবে। তার পরের দিনই সে ছানা সাতটাকে সঙ্গে করে শিয়ালের বাড়ি গিয়ে উপস্থিত হল। শিয়াল তখন তার গর্তের ভিতরে বসে কাঁকড়া খাচ্ছিল। কুমির এসে ডাকলে,

'শিয়াল পণ্ডিত, শিয়াল পণ্ডিত, বাড়ি আছ?' শিয়াল বাইরে এসে বললে, 'কী ভাই, কী মনে করে?'

কুমির বললে, 'ভাই, এই আমার ছেলে সাতটাকে তোমার কাছে এনেছি। মূর্খ হলে করে খেতে পারবে না। ভাই, তুমি যদি এদের একটু লেখাপড়া শিখিয়ে দাও।' শিয়াল বললে, 'সে আর বলতে? আমি সাতদিনে সাতজনকে পড়িয়ে পণ্ডিত করে দেব।' শুনে কুমির তো খুব খুশি হয়ে ছানা সাতটাকে রেখে চলে গেল। তখন শিয়াল তাদের একটাকে আড়ালে নিয়ে বললে—
'পড় তো বাপু— কানা খানা গানা ঘানা,
কেমন লাগে কুমির ছানা?'

এই কথা বলে, সেটার ঘাড় ভেঙে, খেয়ে ফেললে।
পরদিন যখন কুমির তার ছানা দেখতে এল, তখন শিয়াল তাদের একেকটি করে গর্তের বাইরে এনে দেখাতে লাগল। ছয়টিকে ছয়বার দেখালে, শেষেরটা দেখালে দুবার। বোকা কুমির তা বুঝতে না পেরে ভাবলে, সাতটাই দেখানো হয়েছে। তখন সে চলে গেল, আর অমনি শিয়াল ছানাগুলোর একটাকে আড়ালে নিয়ে বললে—
'পড় তো বাপু— কানা খানা গানা ঘানা, কেমন লাগে কুমির ছানা?'

এই কথা বলে, সেটার ঘাড় ভেঙে, খেয়ে ফেলল। পরদিন কুমির তো ছানা দেখতে এল। শিয়াল একেকটি করে গর্তের বাইরে এনে, পাঁচবার পাঁচটাকে দেখাল, শেষেরটিকে দেখাল তিনবার। তাতেই কুমির খুশি হয়ে চলে গেল। তখন শিয়াল ঠিক আগের মতো করে আর একটা ছানাকে খেল।

এমনি করে সে রোজ একটি ছানা খায়, আর কুমির এলে তাকে ফাঁকি দিয়ে ভোলায়। শেষে যখন একটি ছানা বই আর রইল না, তখন সেই একটিকেই সাতবার দেখিয়ে সে কুমিরকে বোঝাল। তারপর কুমির চলে গেলে সেটিকেও খেয়ে ফেলল। তারপর আর একটিও রইল না।

তখন শিয়ালনী বললে, 'এখন উপায়? কুমির এলে দেখাবে কি? ছানা না দেখতে পেলে তো অমনি আমাদের ধরে খাবে!'
শিয়াল বললে, 'আমাদের পেলে তো ধরে খাবে। নদীর ওপারের বনটা খুব বড়, চল আমরা সেইখানে যাই। তা হলে কুমির আর আমাদের খুঁজে বার করতেই পারবে না।'

এই বলে শিয়াল শিয়ালনীকে নিয়ে তাদের পুরনো গর্ত ছেড়ে চলে গেল। এর খানিক বাদেই কুমির এসেছে। সে এসে 'শিয়াল পণ্ডিত, শিয়াল পণ্ডিত' বলে কত ডাকল, কেউ তার কথার উত্তর দিল না। তখন সে গর্তের ভিতর-বার খুঁজে দেখল—শিয়ালও নেই শিয়ালনীও নেই! খালি তার ছানাদের হাড়গুলো পড়ে আছে।
তখন তার খুব রাগ হল, আর সে চারদিকে ছুটাছুটি করে শিয়ালকে খুঁজতে লাগল। খুঁজতে-খুঁজতে নদীর ধারে গিয়ে দেখল, শিয়াল আর শিয়ালনী সাঁতরে নদী পার হচ্ছে।

অমনি 'দাঁড়া হতভাগা।' বলে সে জলে ঝাঁপ দিয়ে পড়ল। জলের নীচে ছুটতে কুমিরের মতো আর কেউ পারে না, দেখতে দেখতে সে গিয়ে শিয়ালের পিছনের একটা পা কামড়ে ধরল।

শিয়াল সবে তার সামনের দু-পা ডাঙায় তুলেছিল, শিয়ালনী তার আগেই উঠে গিয়েছিল। কুমির এসে শিয়ালের পা ধরতেই সে শিয়ালনীকে ডেকে বললে, 'শিয়ালনী, শিয়ালনী, আমার লাঠিগাছা ধরে কে টানাটানি করছে। লাঠিটা বা নিয়েই যায়।'
একথা শুনে কুমির ভাবলে, 'তাই তো, পা ধরতে গিয়ে লাঠি ধরে ফেলেছি। শিগগির লাঠি ছেড়ে পা ধরি।'

এই ভেবে যেই সে শিয়ালের পা ছেড়ে দিয়েছে, অমনি শিয়াল একলাফে ডাঙায় উঠে গিয়েছে। উঠেই বোঁ করে দে ছুট। তারপর বনের ভিতরে ঢুকে পড়লে আর কার সাধ্য তাকে ধরে।

তারপর থেকে কুমির কেবলই শিয়ালকে খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু শিয়াল বড্ড চালাক, তাই তাকে ধরতে পারে না। তখন সে অনেক ভেবে এক ফন্দি করল। কুমির একদিন চড়ায় গিয়ে হাত পা ছড়িয়ে মড়ার মতো পড়ে রইল। তারপর শিয়াল আর শিয়ালনী কচ্ছপ খেতে এসে দেখল, কুমির কেমন হয়ে পড়ে আছে। তখন শিয়ালনী বললে, 'মরে গেছে। চল খাইগে!' শিয়াল বললে, 'রোস, একটু দেখে নিই।' এই বলে সে কুমিরের আর-একটু কাছে গিয়ে বলতে লাগল, 'না। এটা দেখছি বড্ড বেশি মরে গেছে। অত বেশি মরাটা আমরা খাই না। যেগুলো একটু-একটু নড়ে-চড়ে, আমরা সেগুলো খাই।' তা শুনে কুমির ভাবলে, 'একটু নড়ি-চড়ি, নইলে খেতে আসবে না।' এই মনে করে কুমির তার লেজের আগাটুকু নাড়তে লাগল। তা দেখে শিয়াল হেসে বললে, ঐ দেখ, লেজ নাড়ছে! তুমি তো বলেছিলে মরে গেছে!' তারপর আর কি তারা সেখানে দাঁড়ায়! তখন কুমির বললে, 'বড্ড ফাঁকি দিলে তো! আচ্ছা এবারে দেখাব!'

একটা জায়গায় শিয়াল রোজ জল খেতে আসত। কুমির তা দেখতে পেয়ে সেখানে গিয়ে লুকিয়ে রইল। ভাবল শিয়াল জল খেতে এলেই ধরে খাবে। সেদিন শিয়াল এসে দেখল সেখানে একটাও মাছ নেই! অন্য দিন ঢের মাছ চলা-ফেরা করে। শিয়াল ভাবল, 'ভালো রে ভালো আজ সব মাছ গেল কোথায়? বুঝেছি, এখানে কুমির আছে!' তখন সে বললে, 'এখানকার জল বেজায় পরিষ্কার। একটু ঘোলা না হলে কি খাওয়া যায়? চল শিয়ালনী, আর-এক জায়গায় যাই।' এ কথা শুনেই কুমির তাড়াতাড়ি সেখানকার জল ঘোলা করতে আরম্ভ করলে। তা দেখে শিয়াল হাসতে-হাসতে ছুটে পালিয়েছে!

আর একদিন শিয়াল এসেছে কাঁকড়া খেতে। কুমির তার আগেই সেখানে চুপ করে বসে আছে। শিয়াল তা টের পেয়ে বললে, 'এখানে কাঁকড়া নেই, থাকলে দু-একটা ভাসত।'

অমনি কুমির তার লেজের আগাটুকু ভাসিয়ে দিল। কাজেই শিয়াল আর জলে নামল না। এমনি করে বারবার শিয়ালের কাছে ঠকে গিয়ে, শেষে কুমিরের ভারি লজ্জা হল। তখন সে আর কী করে মুখ দেখাবে? কাজেই সে তার ঘরের ভিতরে গিয়ে বসে রইল।

 

....ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

শিয়াল পণ্ডিত, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু


বিনোদন ডেস্ক:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২২, ১১:৫৫
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ভোটগ্রহণ শুরু হয় এবং তা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

চলচ্চিত্র পর্দার মতো এবারেও চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে নায়ক-ভিলেনের মুখোমুখি ভোটযুদ্ধ শুরু হয়েছে।

এবারের নির্বাচনে দুটি প্যানেল থেকে তারকারা অংশ নিচ্ছেন। একটি প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন, অন্যটির নেতৃত্বে আছেন মিশা সওদাগর।

ইলিয়াস কাঞ্চনের প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন চিত্রনায়িকা নিপুন এবং মিশা সওদাগরের প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। নির্বাচনে দুটি প্যানেলই নিজেদের জয় নিয়ে আশাবাদী।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আইসিজে গণহত্যা প্রতিরোধে সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলকে


আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৭:২২
আইসিজে গণহত্যা প্রতিরোধে সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলকে

ফাইল ছবি

গাজায় সামরিক তৎপরতা বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রায় দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)। দক্ষিণ আফ্রিকার করা মামলায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এই রায় দিয়েছে নেদারল্যান্ডসের হেগ ভিত্তিক জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠানটি।

ইসরায়েলকে গণহত্যা প্রতিরোধে সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে আইসিজে। পাশাপাশি ধ্বংসযজ্ঞ থামাতে ও নিজেদের পক্ষে প্রমাণ সংরক্ষণ করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

এই আদেশে গাজায় ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন, আন্তর্জাতিক ম্যান্ডেট ও অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে সমস্ত প্রমাণের নির্ভরযোগ্যতা স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

আদালতের অস্থায়ী ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে—
১. ইসরায়েলকে অবশ্যই গণহত্যামূলক বলে বিবেচিত হতে পারে এমন যে কোন কাজ প্রতিরোধ করার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে—একটি গোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা করা, শারীরিক ক্ষতি ঘটানো, একটি গোষ্ঠীর ধ্বংস ঘটাতে পরিকল্পিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, জন্ম রোধ করা ইত্যাদি।

২. ইসরায়েলকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে তার সামরিক বাহিনী কোনো গণহত্যামূলক কাজ করবে না।

৩. ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজায় গণহত্যার জন্য উস্কানি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে এমন কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য প্রতিরোধ ও শাস্তি দিতে হবে।

৪. মানবিক প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে ইসরাইলকে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।

৫. ইসরায়েলকে অবশ্যই গণহত্যার মামলায় ব্যবহার করা যেতে পারে এমন প্রমাণ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

৬. ইসরায়েলকে এই আদেশের এক মাসের মধ্যে আদালতে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

আদালত হামাসের হাতে জিম্মিদের ভাগ্য নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি এবং তাদের অবিলম্বে মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। সূত্র: ই্ত্তেফাক

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

সর্বশেষ - বিনোদন