a
করোনাভাইরাস
গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জন। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১২ হাজার ৪৫৮ জন।
এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে ১৪৯৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা ৭ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯৩ জন।
আজ বুধবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আরও জানানো হয়, গত ১ দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১০৫৬ জন করোনারোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৩৩ হাজার ৮৬৬ জন।
ফাইল ছবি
ভারতে টিকা দেওয়ার পরও করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়া নিয়ে দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা এই ভাইরাসের শরীরে প্রবেশ ঠেকাতে পারে না, এটি শুধু আক্রান্ত রোগীর মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি এবং মৃত্যুহার কমায়। শুধু মাস্কই এই ভাইরাস নাক-মুখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ ঠেকাতে পারে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা করোনায় একবার আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠেছেন তাদের জন্য টিকার একটি ডোজই যথেষ্ট। খবর হিন্দুস্তান টাইমসসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের
ভারতের পাটনা, দিল্লি, চেন্নাইসহ কয়েকটি শহরে গত কয়েক মাসে টিকা গ্রহণের পরও আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। দিল্লির শ্রী গঙ্গারাম হাসপাতালের ৩৭ জন ডাক্তার সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, এদের মধ্যে ৫ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। যাদের প্রায় সবাই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার দুই ডোজ টিকাই গ্রহণ করেছিলেন।
হায়দরাবাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক লক্ষ্মী লাবণ্য আলাপাটি বলেন, দুই ডোজ টিকা দেওয়ার পর শরীরে অ্যান্টিবডিগুলো উন্নত হয় এবং এটি সংক্রমণের জটিলতা এবং মৃত্যুহার হ্রাস করে। টিকা গ্রহণের পর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি ৮৫ ভাগ কমে। কিন্তু টিকা ভাইরাসকে শরীরে প্রবেশ করা ঠেকায় না। শুধু মাস্কই এটি করতে সক্ষম।
দিল্লি সরকারি হাসপাতালের এক জ্যেষ্ঠ ডাক্তার বলেন, টিকা করোনার বিরুদ্ধে পূর্ণ নিরাপত্তা সুরক্ষা দেয় না। মাস্ক না-পরলে টিকা গ্রহণকারীর নাক ও মুখের মাধ্যমে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে। ফলে অনেকেই টিকা গ্রহণের পর মাস্ক না-পরায় আক্রান্ত হয়েছেন।
মনে রাখতে হবে, আমাদের সবচেয়ে বড় টিকা হচ্ছে মাস্ক। দিল্লিতে ৫৪ বছরের একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ২২ ফেব্রুয়ারি করোনায় স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগে মারা যান। তার ছেলে ধীরাজ বলেন, আমার বাবা ১৭ ফেব্রুয়ারি টিকা নেন। বাসায় আসার পর থেকেই তিনি অসুস্থ বোধ করেন, তার তাপমাত্রা বেড়ে যায়, দু-তিন দিন পরই তিনি মারা যান। চেন্নাইতে ১৫ মার্চ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী এক ব্যক্তির ২৯ মার্চ করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় এবং ৩০ মার্চ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ৪ এপ্রিল মারা যান।
সেরে উঠলে এক ডোজ টিকাই যথেষ্ট: করোনায় যারা একবার আক্রান্ত হয়েছেন এবং পরে সেরেও উঠেছেন-কোভিড টিকার একটি ডোজই তাদের জন্য যথেষ্ট। টিকার একটি ডোজ নিলেই করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য তাদের দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থা যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে ওঠে। গবেষণাটি চালিয়েছে আমেরিকার পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পেরেলম্যান স্কুল অব মেডিসিনের পেন ইনস্টিটিউট অব ইমিউনোলজির বিজ্ঞানীরা। শুক্রবার আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘সায়েন্স ইমিউনোলজি’তে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকরা পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৪ জন সুস্থ মানুষকে বায়োএনটেক-ফাইজার ও মডার্নার তৈরি ‘মেসেঞ্জার আরএনএ (এমআরএনএ)’ কোভিড টিকা দিয়েছিলেন। ৪৪ জনের মধ্যে ১১ জন আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে তারা সবাই সেরে ওঠেন। কীভাবে তাদের শরীরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়ে উঠছে, তা বুঝতে গবেষকরা টিকা নেওয়ার আগে ও পরে দুবার করে মোট চারবার ৪৪ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করেন।
টিকাও যাদের সুরক্ষা দিতে পারবে না: এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ডা. অ্যান্ড্রু ওলোউইৎজ নিজেকে নিউইয়র্কের মামারোনেকে বাড়ির ভেতর বন্দি করে রেখেছেন। ৬৩ বছর বয়সি এ চিকিৎসক সম্প্রতি করোনার টিকা নিয়েছেন। অবশ্য তাতে ওলোউইৎজের শরীরে কোনো অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে না। তিনি হচ্ছেন লাখ লাখ আমেরিকানের একজন, যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কাজ করে না। এদের অনেকে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা ছাড়া কিংবা ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে জন্মেছেন। অন্যরা হয় কোনো রোগে ভুগে কিংবা থেরাপির কারণে তাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করেছেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় ঘাটতি নিয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা এ ব্যক্তিদের অধিকাংশই তাদের ঝুঁকি সম্পর্কে অবগত নন। লিউকেমিয়া অ্যান্ড লিম্ফোমা সোসাইটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. লি গ্রিনবার্গার বলেন, তারা বাইরে হেঁটে বেড়ান, মনে করেন যে তারা নিরাপদ, কিন্তু তেমনটা না-ও হতে পারে। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি
বাংলাদেশে চীনা টিকার যৌথ উৎপাদন শুরু করতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন উজবেকিস্তান সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে যৌথভাবে কাজ করতেও একমত হয়েছেন ভারত ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
একে আব্দুল মোমেন একই দিনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং তাজিকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিরোজিদ্দিন মুহরিদ্দিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন।
তাসখন্দে ‘মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া: আঞ্চলিক যোগাযোগ-চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এসব বৈঠক করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এসব বৈঠকের বিষয়ে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক যোগাযোগ, উভয় দেশের করোনা মহামারি এবং টিকাদান পরিস্থিতি, অস্থায়ীভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের নাগরিকদের স্বদেশ প্রত্যাবাসন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে একমত হন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বাংলাদেশে টিকা সরবরাহের বিষয়ে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তারা উভয় দেশের কোভিড পরিস্থিতির উন্নতির পরেই বিভিন্ন যৌথ কার্যক্রম শুরুর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এ সময় কোভ্যাক্সসহ বহুমুখী উৎস থেকে টিকা পেয়ে বাংলাদেশের টিকা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসায় খুশির কথা জানান জয়শঙ্কর।
এরপর একে আব্দুল মোমেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছয় জাতির কোভিড ভ্যাকসিন সংরক্ষণ জোট বা সিওআইডি উদ্যোগ গ্রহণের জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি টিকা সংকটের কঠিন সময়ে চীন সরকারের দেওয়া উপহার ও বাণিজ্যিক সরবরাহের লাইন চালু করায় কৃতজ্ঞতা জানান। এ সময় তিনি দ্রুত বাংলাদেশে করোনা টিকার যৌথ উৎপাদন শুরুর অনুরোধ করেন। এ বিষয়ে চীন সরকার সহযেগিতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ওয়াং ই।
এদিকে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে যৌথ কমিশন চালুর প্রস্তাব করেন তাজিকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুহরিদ্দিন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে সমর্থন দেবে তার দেশ।