a
ফাইল ছবি
সুস্থ-সবল থাকার জন্য প্রতিদিন ১০ হাজার কদম হাঁটতে হবে, দীর্ঘদিন ধরে এমনটি বলা হয়ে আসছে; তবে নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যের উপকারের জন্য ৫ হাজার পথ হাঁটলেও চলবে।
বিবিসি জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে ২ লাখ ২৬ হাজার মানুষের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন ৪ হাজার কদম হাঁটলেও তা অকালে মৃত্যুর ঝুঁকি কমানোর জন্য যথেষ্ট। আর হৃদপিণ্ড ও রক্তনালীর উপকারিতার জন্য ২ হাজার ৩০০ কদম হাঁটতে হবে।
সুস্থ থাকার জন্য মানুষের হাঁটার পরিমাণকে সংখ্যার গণ্ডির মধ্যে ফেললেও গবেষকরা বলছেন, যত বেশি কেউ হাঁটবে, তত বেশি উপকার পাবে।
৪ হাজার কদম হাঁটার পর ২০ হাজার পর্যন্ত প্রত্যেক অতিরিক্ত ১ হাজার কদম হাঁটলে অকালে মৃত্যুঝুঁকি ১৫ শতাংশ কমে যায়।
পোল্যান্ডের মেডিকেল ইউনিভার্সিটি অব লজ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের একটি দল তাদের গবেষণায় হাঁটার এই উপকারিতা খুঁজে পেয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ৬০ বছরের নিচে যাদের বয়স, প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ হাঁটেন, তারাই সবচেয়ে বেশি উপকার পেয়েছেন।
লজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ম্যাকিয়েজ বানাশ বলেন, চিকিৎসার জন্য উন্নত ওষুধের সংখ্যা বাড়লেও সুস্থতার জন্য সেগুলোই একমাত্র সমাধান নয়।
“আমি বিশ্বাস করি, ডায়েট ও অনুশীলসহ জীবনধারার পরিবর্তনগুলোর ওপর আমাদের সর্বদা জোর দেওয়া উচিত, এটা আমাদের সমীক্ষার একটি প্রধান দিক ছিল। জীবনধারার পরিবর্তনই হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দীর্ঘায়ু হওয়ার জন্য সহায়ক হতে পারে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অপর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ বা নিস্ক্রিয়তার ফলে প্রতি বছর ৩২ লাখ মানুষ মারা যায়।
অনেক বেশি বসে থাকার ফলে মানুষের যে সমস্যাগুলো হয়, সেগুলোর ওপর জোর দিয়েছেন বৈশ্বিক ফিটনেস কোম্পানি ব্যারিসের প্রশিক্ষক হানি ফাইন।
তার মতে, দৈহিক নিষ্ক্রিয়তা বিপাক প্রক্রিয়াকে শ্লথ করে দিতে পারে এবং পেশীর সম্প্রসারণ ও শক্তিকে কমিয়ে দিতে পারে, যার ফলে ব্যথা হতে পারে।
“অনেক বেশি বসে থাকার ফলে পিঠের সবরকমের সমস্যা হতে পারে। অফিসে চাকরি করা লোকেদের ক্ষেত্রে এটি আমরা বেশি দেখতে পাই। তাদের পিঠ ক্রমাগত চাপে সংকুচিত অবস্থায় থাকে, যা পরবর্তীতে আরও অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে।”
শারীরিক অনুশীলন বা ব্যয়ামহীন কার্যক্রম ‘থার্মোজেনেসিস’ এর গুরুত্ব তুলে ধরেন হানি ফাইন, যেটি ‘নিট’ নামেও পরিচিত। সহজ কথায়, মানুষের কাজকর্মের মধ্যেই শক্তি আর ক্যালোরি পোড়ানোর প্রক্রিয়া এটি।
“দাঁড়িয়ে থাকা, বাজার-সদাই বহন করা, মেঝে পরিষ্কার, হুভার দিয়ে ধুলাবালি পরিষ্কার করা ও ফোনে কথা বলার সময় পায়চারি করা…এসব ছোটখাটো জিনিসগুলো আমাদের আরও সক্রিয় করে তোলে এবং আরও কার্যকর উপায়ে ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে।”
হানি ফাইন বলেন, নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা কারও কারও জন্য কঠিন হতে পারে। তবে হাঁটার অভ্যাসের ফলাফল অসাধারণ।
“এটি আপনার রক্তচাপ কমাতে পারে, হাড়কে রক্ষায় পেশীগুলো শক্তিশালী করতে পারে এবং শক্তির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। সেইসঙ্গে এটি আপনার এন্ডোরফিন (হরমোন) তৈরি করতে পারে এবং এর ফলে আপনার ভারসাম্যপূর্ণ ওজন ধরে রাখা সহায়ক হতে পারে।”
মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ, বলেন তিনি। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ফাইল ছবি
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মেডিক্যাল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস’ (ইসিফোরজে) প্রকল্পের আওতায় সহায়তা দেওয়া হবে ১৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এ অনুদান পাবে মেডিক্যাল অ্যান্ড পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (এমপিপিই) পণ্য সামগ্রী উৎপাদনে সক্ষম প্রতিষ্ঠানগুলো। এ অনুদানের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৫ লাখ মার্কিন ডলার এবং সর্বনিম্ন ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রকল্পটিতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করছে।
রবিবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অনলাইনে বলেন, মানুষের জীবন বাঁচাতে মেডিক্যাল পণ্যের এখন খুবই প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংক এগিয়ে এসেছে মেডিক্যাল পণ্য উৎপাদনে সহযোগিতা দিতে। এ অনুদানের মাধ্যমে উৎসাহিত হবে মেডিক্যাল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
তিনি বলেন, কেবল স্থানীয় বাজারের জন্য নয়, বৈদেশিক বাজারে রফতানির সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তারাও সুবিধা পাবেন এ কর্মসূচির মাধ্যমে। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) উৎপাদন, ডায়াগনস্টিক ইক্যুইপমেন্ট ও ক্লিনিক্যাল ইকুইপমেন্ট তৈরিতে যুক্ত উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প এবং বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেমপন।
গতকাল শুক্রবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিভাবকবিহীন অবস্থায় ৮ মাস বয়সের এক শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ। বিমানবন্দরে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার সকাল আটটার পরে বিমানবন্দরের ভেতরে একটি চেয়ারে বসে ফিডারে দুধ খাচ্ছিল শিশুটি। তখন বিষয়টি পুলিশর নজরে আসে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির কোনো অভিভাবককে পায়নি বিমানবন্দরে দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন।
আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন এ বিষয়ে জানান, রাত দুইটার দিকে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে এক নারী যাত্রী আসেন এবং এরপর তিনি ৫ নম্বর বেল্ট থেকে মালামাল সংগ্রহ করেন। সেই নারীর সঙ্গে এই শিশুটি ছিল। শিশুটিকে নিয়ে সে নারী সকাল পর্যন্ত অ্যারাইভাল বেল্টের পাশেই শিশুটিকে নিয়ে বসে ছিলেন।
মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘সকাল পর্যন্ত ওই নারী বিমানবন্দরেই ছিলেন। আটাটার দিকে শিশুটিকে ফেলে তিনি চলে যান। এরপর আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করি।’
এদিকে এ বিষয়ে ওই শিশুটির মায়ের সাথে আসা এক সহযাত্রী বলেন, ‘আমি চারটার দিকে নামছি। তখন থেকে ঐ বাচ্চাকে ওখানে ঘুমিয়ে আছে। আর ওর মা ওখানে দাঁড়ায়ে আছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘শিশুর মা তাকে বলেছেন, আপা সৌদি আরবে আমি বিয়ে করছি। আমি বলছি আপনার এটা করা উচিত হয়নি। বলতে-বলতে কেঁদে দিছে।’
এদিকে পুলিশের ধারণা হয়তো লোকলজ্জার ভয়ে শিশুটিকে সঙ্গে না নিয়ে এয়ারপোর্টে রেখেই চলে যান সে নারী।
এদিকে যে নারী এই শিশুটিকে বিমানবন্দরে রেখে চলে গেছেন তাকে এরইমধ্যে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। শিশুটি এখন পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে।
এ বিষয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর জানিয়েছেন, এখন শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, ‘দত্তক নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যাচাই-বাছাই করে ভালো একটি জায়গায় দত্তক দেওয়ার কথা আমরা চিন্তা করছি।’ পুলিশ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে সে নারীর নাম, ঠিকানা এবং অবস্থান জানা গেছে। কিন্তু সেটি প্রকাশ করা হবে না।