a ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সমন জারি
ঢাকা শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২, ২২ নভেম্বর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সমন জারি


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
বুধবার, ০৫ জানুয়ারী, ২০২২, ১২:১৯
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সমন জারি

ফাইল ছবি : ডোনাল্ড ট্রাম্প

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার ছেলে ট্রাম্প জুনিয়র এবং ইভাঙ্কা ট্রাম্পকে তদন্তের অধীনে আনার জন্য সমন জারি করা হয়েছে। ট্রাম্পের আইনজীবীরা এই সমন এড়াতে সর্বাত্বক চেষ্টা করছেন। নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল সোমবার এই সমন জারি করেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমসের অফিস জানায়, ট্রাম্প ও তার সন্তানদের মালিকানাধীন কোম্পানির সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ সম্পর্কিত তদন্তের জন্য জবানবন্দি নিতে ও সংশ্লিষ্ট দলিলপত্র খতিয়ে দেখতে এই সমন জারি করা হয়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার কোম্পানির সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণে ইচ্ছাকৃতভাবে কম-বেশি দেখানো হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। তাই এই বিষয়ে ফৌজদারি তদন্ত চলছে। খবর: এএফপি, সূত্র: যুগান্তর

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আরও পড়ুন

ঝড়ের গতিতে গোটা আফগানিস্তান দখল করতে চলছে তালেবান!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
শুক্রবার, ১৩ আগষ্ট, ২০২১, ০৩:৫৩
ঝড়ের গতিতে গোটা আফগানিস্তান দখল করতে চলছে তালেবান!

ফাইল ছবি

আফগানিস্তানে তালেবানের অবিশ্বাস্য সামরিক সাফল্যের দিকে আফগান সরকার তো বটেই, পুরো বিশ্বই এখন হা হয়ে তাকিয়ে রয়েছে, কারণ গত ৭ দিনে ডজন-খানেকের বেশি প্রাদেশিক রাজধানী শহর তাদের দখলে চলে গেছে।

এক্ষেত্রে আরও যা বিস্ময়কর তা হলো, এগুলোর মধ্যে সাতটিই হলো আফগানিস্তানের উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমের প্রদেশ, যেখানে তালেবান অতীতে কখনই তেমন কর্তৃত্ব করতে পারেনি।

আমেরিকান অস্ত্রে সজ্জিত আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা তিন লাখের মতো। বিমান বাহিনীও রয়েছে তাদের। অন্যদিকে তালেবানে যোদ্ধার সংখ্যা ৬০ থেকে ৮০ হাজারের মতো। কোনও ইউনিফর্ম নেই, সিংহভাগ যোদ্ধার পায়ে জুতা পর্যন্ত নেই। কিন্তু তাদের চাপে তাসের ঘরের মত ধসে পড়ছে আফগান বাহিনীর প্রতিরোধ। তালেবানের এই সামরিক সাফল্যে হতচকিত হয়ে পড়েছে খোদ আমেরিকাও।

অধিকাংশ পশ্চিমা সামরিক বিশ্লেষক এখন বলছেন, ন্যাটো বাহিনী তালেবানের কোনও ক্ষতি তো করতে পারেইনি, বরঞ্চ গত ২০ বছরের মধ্যে তালেবান এখন সবচেয়ে শক্তিধর।

প্রভাবশালী সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্ট এবং বার্তা সংস্থা রয়টার্স মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের নির্ভরযোগ্য সূত্র উদ্ধৃত করে খবর দিয়েছে যে, আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করছে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে অবরুদ্ধ হতে পারে কাবুল, আর তিন মাসের মধ্যে আফগান সরকারের পতন হতে পারে।

“আমি বলবো আরও দ্রুত কাবুলের পতন হতে পারে,” বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের শিক্ষক এবং আফগান রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড. আসিম ইউসুফজাই।

“উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে তালেবান যেভাবে এগুচ্ছে তা সত্যিই বিস্ময়কর,” যোগ করেন তিনি।

কীভাবে জিতছে তালেবান?
প্রশ্ন উঠছে, ২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে গত ২০ বছর ধরে ক্রমাগত আমেরিকা এবং ন্যাটো বাহিনীর তাড়া খেয়ে বেড়ানোর পরও তালেবান কীভাবে এই সামরিক শক্তি দেখাতে পারছে?

ড. ইউসুফজাই বলেন, গত ১০ বছর ধরে এই কৌশল নিয়েই ধীরে ধীরে এগিয়েছে তালেবান। “তারা জানতো আমেরিকা এক সময় আফগানিস্তান ছাড়বেই। শুধু সময়ের অপেক্ষা করছিল তারা।”

তিনি আরও বলেন, আমেরিকানদের কৌশল ছিল আফগানিস্তানের প্রধান শহরগুলোকে কব্জায় রাখা। কিন্তু শহরের বাইরে গ্রাম-গঞ্জ তালেবানের নিয়ন্ত্রণে থেকে গিয়েছিল। তারপর এক সময় যখন আমেরিকা আফগান সেনাবাহিনীর ওপর নিরাপত্তার দায়িত্ব ছেড়ে দিতে শুরু করলো, তালেবান তখন আস্তে আস্তে শহরগুলো নিশানা করতে শুরু করে।

এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন যখন হঠাৎ ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমস্ত আমেরিকান সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানান, তখন থেকে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর ঘুম হারাম করে দিয়েছে তালেবান।

গত দুই মাসে ঝড়ের গতিতে দেশের অর্ধেকেরও বেশি জেলা দখলের পর গত এক সপ্তাহ ধরে পতন হচ্ছে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ প্রাদেশিক রাজধানী শহর।

ড. ইউসুফজাই মনে করছেন যে রণকৌশলে খুবই বিচক্ষণতার পরিচয় দিচ্ছে তালেবান। জাতিগত পশতুন অধ্যুষিত দক্ষিণ এবং পূর্বের বদলে তারা শক্তি নিয়োগ করেছে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমের প্রদেশগুলোতে, যেখানে সরকারি বাহিনী এবং সরকার সমর্থিত মিলিশিয়াদের শক্তি বেশি।

“তালেবান জানে দক্ষিণ এবং পূর্বের এলাকাগুলো থেকে তারা যে কোনও সময় সহজে সরকারি সৈন্যদের তাড়াতে পারবে। সুতরাং তাদের টার্গেট এখন এমন এমন জায়গা যেখানে কাবুল সরকারের শক্তি বেশি।”

যেভাবে আফগান সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ দ্রুত ভেঙ্গে পড়ছে, তাতে হাজার হাজার কোটি ডলার ব্যয়ে প্রতিষ্ঠিত এই বাহিনীর শক্তি, প্রশিক্ষণ এবং এর ভবিষ্যৎ অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

গত দু’মাস ধরে হাজার হাজার আফগান সৈনিক লড়াই না করেই তালেবানের হাতে অস্ত্র, যানবাহন, রসদ তুলে দিয়ে ইউনিফর্ম খুলে চলে যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেক ভিডিও পোস্টে দেখা গেছে, আত্মসমর্পণের পর অনেক সৈনিক তালেবান যোদ্ধাদের আলিঙ্গন করছে। তালেবান তাদের পকেটে কিছু টাকা গুজে দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে বলছে।

মাস-খানেক আগে এক হাজারেরও বেশি সরকারি সৈন্য দলত্যাগ করে প্রতিবেশী তাজিকিস্তানে পালিয়ে যায়।

তাজিক, উজবেকও এখন তালেবানে। তালেবান যখন ক্ষমতায় ছিল তখনও তাজিকিস্তানের সীমান্তবর্তী বাদাখশানে তারা ঢুকতে পারেনি। অথচ সেই প্রদেশ এখন তাদের দখলে।

এছাড়া, তাখার, কুন্দুজ এবং জারাঞ্জের মত প্রদেশ, যেখানে পশতুনরা সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়, সেগুলোও যেভাবে তেমন বড় কোনও প্রতিরোধ ছাড়াই তালেবান দখল করেছে, তা বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

ড. ইউসুফজাই বলছেন, তালেবান মূলত জাতিগত পশতুন এবং কট্টর সুন্নী ওয়াহাবী ভাবধারার একটি গোষ্ঠী হিসাবে পরিচিত হলেও গত কয়েকবছর ধরে তারা আফগানিস্তানের অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীকে কাছে টানার চেষ্টা করছে।

তালেবানের সেই চেষ্টা যে ফল দিচ্ছে, বাদাখশানের মত তাজিক অধ্যুষিত প্রদেশ কব্জা করার ঘটনা তারই্ ইঙ্গিত।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক গবেষণাধর্মী মার্কিন সাময়িকী ফরেন পলিসিতে সম্প্রতি প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী রিপোর্ট বলছে, হতাশ তাজিক, তুর্কমেন এবং উজবেক গোষ্ঠী নেতাদের অনেকেই তালেবানে যোগ দিচ্ছে। যার ফলে, তালেবান তাদের চিরাচরিত প্রভাব বলয়ের বাইরেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারছে।

উত্তর-পূর্বের প্রদেশ বাদাখশানে অনেক তাজিক যোদ্ধা এখন তালেবান। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পয়সায় পরিচালিত মিডিয়া ‘রেডিও ফ্রি ইউরোপ’ তাদের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে লিখেছে, জুন মাসে তালেবান প্রথম যখন বাদাখশান প্রদেশের একটি চেক পয়েণ্টের নিয়ন্ত্রণ নেয়, তখন সেখানে তালেবানের পতাকা ওড়ায় মাহদী আরসালোন নামে একজন তাজিক যোদ্ধা। তালেবান তাকে বাদাখশানের পাঁচটি জেলার দায়িত্ব দিয়েছে।

একইভাবে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ফারিয়াব প্রদেশে অনেক তুর্কমেন যোদ্ধা এখন তালেবান। উত্তরের যোজযান প্রদেশে উজবেক অনেক যোদ্ধাকেও দলে ঢোকাতে সমর্থ হয়েছে তালেবান।

ইসলামাবাদে সিনিয়র সাংবাদিক এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষক জাহিদ হোসেন বলেন, শুধু সাধারণ যোদ্ধাই নয়, বর্তমানে তালেবানের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রায় এক-চতুর্থাংশই তাজিক, উজবেক, তুর্কমেন এবং হাজারা সম্প্রদায়ের।

এ বছর জানুয়ারিতে তালেবানের শীর্ষ নীতি-নির্ধারণী পরিষদ, যেটি রাহবারি শুরা বা কোয়েটা শুরা নামে পরিচিত, তাতে কমপক্ষে তিনজনকে নেয়া হয়েছে যারা জাতিগত পশতুন নন। সাম্প্রতিক সময়ে অনেকগুলো প্রদেশে তালেবানের নিয়োগ দেওয়া ছায়া গভর্নররা জাতিগত পশতুন নন।

বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর এসব যোদ্ধা এবং গোষ্ঠী নেতাদের অনেকেই কাবুল সরকারের ওপর বিভিন্ন কারণে নাখোশ, যেটাকে কাজে লাগিয়েছে তালেবান। তারা এসব অসন্তুষ্ট গোষ্ঠী নেতাদের ভরসা দিচ্ছে যে তাদের সাথে যোগ দিলে নিরাপত্তা এবং মর্যাদা মিলবে।

একইসাথে তালেবান তাদের বলছে, কাবুল সরকারের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ শুধু পশতুনদের যুদ্ধ নয় বরঞ্চ ‘ইসলামী আমিরাত‘ সৃষ্টির যুদ্ধ।

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর সাম্প্রতিক এক প্রকাশনায় গবেষক জাইলস দোরোনসোরো ‘তালেবানের যুদ্ধ জয়ের কৌশল‘ শিরোনামে এক গবেষণা রিপোর্টে লিখেছেন, তালেবানের বুদ্ধিমত্তা এবং সক্ষমতাকে খাটো করে দেখেছে ন্যাটো জোট।

“তালেবানকে নিয়ে ভ্রান্ত কিছু ধারণা আন্তর্জাতিক বাহিনীর সবচেয়ে বড় ভুল ছিল। তারা ভেবেছিল তালেবান অনেকগুলো গোষ্ঠীর একটি নড়বড়ে কোয়ালিশন, যারা শুধুই স্থানীয়ভাবে শক্তিধর।”

কিন্তু বাস্তবে, জাইলস দোরোনসোরো বলেন, তালেবান খুবই শক্তিধর একটি সংগঠন যাদের জুতসই কৌশল রয়েছে, পরিকল্পনা রয়েছে এবং সমন্বয় রয়েছে। “তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা এবং প্রোপাগান্ডা খুবই কার্যকরী। স্থানীয় কমান্ডারদের যথেষ্ট স্বাধীনতা রয়েছে, ফলে পরিস্থিতি বুঝে তারা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।”

তালেবানকে সাধারণ আফগানরা শুধুই কি ভয় পায়, নাকি পছন্দও করে?

ড. ইউসুফজাই বলেন, আফগানিস্তানে আনুগত্যের সাথে জাতিগত পরিচয়ের সম্পর্ক খুবই স্পষ্ট। তালেবান পশতুন ছাড়া আফগানিস্তানের অন্য জাতিগোষ্ঠীর আস্থা অর্জনের যত চেষ্টাই হালে করুক না কেন, তাদের সমর্থনের মূল ভিত্তি এখনও মূলত পশতুন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে। বিশেষ করে দক্ষিণ ও পূর্বের গ্রাম এবং ছোট শহরগুলোতে।

মার্কিন এনজিও এশিয়া ফাউন্ডেশনের চালানো ২০০৯ সালের এক জরীপের ফলাফলে দেখা যায়, প্রায় ৫০ শতাংশ আফগান - যারা প্রধানত পশতুন - তালেবানের প্রতি সহমর্মী। প্রশাসন এবং সরকারের প্রতি বিরূপ মনোভাব এই সমর্থনের প্রধান কারণ।

দ্রুত বিচার সাধারণ আফগানদের মধ্যে তালেবানের গ্রহণযোগ্যতার অন্যতম একটি কারণ। শরিয়াহ মতে তারা অনেক অপরাধের মুহূর্তে বিচার করে দেয়। গত ক’মাসে আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জনসমক্ষে বেত মারা, এমনকি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা বেড়েছে।

“তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় চুরি-চামারির মত অপরাধ বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ, যাদের সমাজে কোনও প্রভাব প্রতিপত্তি নেই, তারা এগুলো পছন্দ করে,”  বলেন ড. ইউসুফজাই।

পাশাপাশি, বিদেশিদের শাসনের ব্যাপারে আফগানদের মধ্যে যে সহজাত ঘৃণা তাকে কাজে লাগিয়েছে তালেবান।

সেই সাথে, স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি প্রশাসনের দুর্বলতা, দুর্নীতি নিয়ে মানুষের ক্ষোভকে তারা কাজে লাগিয়েছে। পুলিশ এবং সরকার সমর্থিত উপজাতীয় মিলিশিয়াদের বাড়াবাড়ি, নির্যাতন এবং বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে অনেক মানুষের ক্ষোভ রয়েছে, এবং তালেবান সেখানে গিয়ে নিজেদের রক্ষাকবচ হিসাবে দাঁড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

পশতুন বাদে অন্য জাতিগোষ্ঠীর অনেককে দলে টানতে পারার পেছনেও তালেবানের এসব কৌশল কাজ করেছে।

তালেবানকে টাকা-অস্ত্র কে দেয়? টানা ২০ বছর আমেরিকান এবং ন্যাটো বাহিনীর সাথে লড়াই করে টিকে থাকার মত টাকা-পয়সা, অস্ত্র, প্রশিক্ষণ, বুদ্ধি কে জুগিয়েছে তালেবানকে? এ ব্যাপারে আফগান সরকার খোলাখুলি দায়ী করে পাকিস্তানকে, যদিও পাকিস্তান সবসময় তা অস্বীকার করে।

ইসলামাবাদে সাংবাদিক জাহিদ হোসেন বলেন, তালেবান এখন পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে কতটা সমর্থন পায় তা নিয়ে বিস্তর সন্দেহ আছে।

“পাকিস্তানে পশতুনদের মধ্যে তালেবানের বেশ সমর্থন রয়েছে, ধর্মীয় অনেক গোষ্ঠী তাদের সমর্থক। টাকা পয়সাও হয়তো তারা দেয়। পাকিস্তানের ভেতর আফগান শরণার্থী শিবির এবং পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে অনেক মাদ্রাসা থেকে তালেবান যোদ্ধা নিয়োগ করে।

“কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্রের ভেতর তালেবানকে নিয়ে এখন দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে। সরকারের একাংশ মনে করে তালেবান এককভাবে কাবুলের ক্ষমতায় বসলে পাকিস্তানে তৎপর উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো উজ্জীবিত হতে পারে।”

তবে, ড ইউসুফজাই বলেন, কাবুলে পাকিস্তান-বান্ধব একটি সরকার প্রতিষ্ঠা এবং আফগানিন্তানে ভারতের প্রভাব খর্ব করা পাকিস্তানের বহুদিনের কৌশলগত একটি নীতি, যা থেকে পাকিস্তান কখনোই সরেনি।

“পাকিস্তান মনে করে তালেবান তাদের সেই উদ্দেশ্য সাধনে প্রধান সহযোগী। এবং আমি মনে করি তালেবান আবার ক্ষমতায় গেলে প্রথম যে দেশটি তাদের স্বীকৃতি দেবে সেটি পাকিস্তান।”

তিনি বলেন, পাকিস্তানের সাবেক সেনা গোয়েন্দাদের কয়েকজনের লেখা বই এবং সাক্ষাৎকারে তালেবানের সাথে পাকিস্তান সেনা গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সম্পর্ক নিয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে।

তবে, ড. ইউসুফজাই মনে করেন, টাকা-পয়সা বা অস্ত্রের জন্য তালেবানের অন্যের মুখোমুখি হওয়ার প্রয়োজন নেই, কারণ মাদকের ব্যবসা থেকে তালেবান প্রচুর পয়সা পায়।

“আমেরিকা এবং ইউরোপে হেরোইনের যে বাজার, তার ৯০ শতাংশ আসে আফগানিস্তান থেকে। দেশের দক্ষিণে আফিমের চাষ থেকে শুরু করে হেরোইন তৈরি এবং এর চোরাচালানের ওপর কর্তৃত্ব ধরে রেখেছে তালেবান।”

জাতিসংঘের যে কমিটি তালেবানের ওপর নিয়মিত নজরদারি করে, তাদের দেওয়া এক হিসাব বলছে যে আফিম চাষ, চাঁদা এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কর বসিয়ে তালেবান বছরে ৩০ কোটি ডলার থেকে ১৬০ কোটি ডলার ডলার পর্যন্ত আয় করে। এক হিসাবে, ২০২০ সালে শুধু আফিম চাষ থেকেই তালেবানের আয় ছিল ৪৬ কোটি ডলার।

আর তালেবান যে অস্ত্র দিয়ে এখন লড়াই করছে, তার একটি বড় অংশ আফগান সেনাবাহিনীর কাছ থেকে নেওয়া অথবা পালানোর সময় তাদের ফেলে যাওয়া অস্ত্র-সরঞ্জাম।

বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে আফগান সেনাবাহিনীকে দেওয়া আমেরিকান হামভি সাঁজোয়া যান এবং ভারি মেশিনগান নিয়ে তালেবানকে লড়াই করতে দেখা গেছে।

ড. ইউসুফজাই বলেন, “একই ধরনের অস্ত্র দিয়ে তালেবান এবং আফগান সেনারা লড়াই করছে। এগুলো আমেরিকান এবং ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া অস্ত্র।”

তবে অনেক পশ্চিমা বিশ্লেষকের মতো ড. ইউসুফজাইও মনে করেন, তালেবান মুখে যতই প্রতিশ্রুতি দিক না কেন, আল-কায়েদার সাথে তাদের সম্পর্ক এখনও অটুট এবং আফগান বাহিনীর সাথে লড়াইতে আল-কায়েদাও তালেবানের সাথে যুদ্ধ করছে।

আমেরিকান গোয়েন্দাদের বিশ্বাস, এখনও আফগান-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় আল-কায়েদার কয়েক’' যোদ্ধা তালেবানের আশ্রয়ে রয়েছে।

চীন, রাশিয়া এবং ইরান সম্প্রতি তালেবানকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে গিয়ে কার্যত তাদের বৈধতা দিয়েছে, কিন্তু একইসাথে তালেবানকে তারা স্পষ্ট বলেছ দিয়েছে যে আল-কায়েদা বা অন্য সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সাথে তাদের সম্পর্ক রাখা চলবে না।

কিন্তু ড. ইউসুফজাই মনে করেন, তালেবানের মূল লক্ষ্য এখন ক্ষমতা দখল, প্রতিশ্রুতি রক্ষা নয়। তাছাড়া, তিনি বলেন, তালেবান ছাড়া এখন আঞ্চলিক দেশগুলোর সামনে বিকল্প কিছু নেই।

“তালেবান যদি পাশের দেশগুলোকে ভরসা দিতে পারে যে তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হবে না, তাহলে অন্য কার সাথে তালেবান সম্পর্ক রাখছে বা রাখছে না, এসব দেশ তা অবজ্ঞা করবে বলে আমি মনে করি। এ ছাড়া তাদের উপায়ও নেই।”
সূত্র: বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন/বিডি প্রতিদিন

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আরও পড়ুন

নতুন দল, ১০ মাসও হয়নি বয়স, টানাপোড়েন থাকবেই


শাহেদ আলম, প্রবাসী
বুধবার, ২১ মে, ২০২৫, ০৬:৩৬
নতুন দল ১০ মাসও হয়নি বয়স টানাপোড়েন থাকবেই

ছবি সংগৃহীত


নিউজ ডেস্ক: স্বরণ করি, ৫ আগস্টের অল্প কিছুদিন পরেই আমি আলোচনা করেছিলাম, রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দলগঠনই ছাত্রদের নিয়তি। খুব খুশি আমি হয়েছিলাম যে তারা বিপ্লবের রাস্তা ছেড়ে গনতন্ত্রের চর্চায় মনোযোগী হয়েছে। আওয়ামীলীগ যেহেতু দৃশ‍্যপটে নেই সেহেতু বিএনপি যদি সরকার গঠন করেও , বাইরে এক ঝাক তরুন নেতৃত্ব বিএনপি সরকারকে সমালোচনা করছে, তাদের কে চাপে রেখেছে, সংসদে বিরোধী দলের আসন অলংকৃত করেছে অল্প সিট হলেও। বিএনপিও জামায়াতকে মোকাবেলার চেয়ে ছাত্রদের মধ‍্যপন্থার আরেকটি দলকে সন্মানজনক প্রতিপক্ষ হিসেবে পাবে, সেটাই হবে সুখকর রাজনীতি । 

কেননা, জামায়াত যদি প্রধান বিরোধী দল হয়, তার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাবার পথ সুগম হবে ১০ বছর পরে হলেও। বিরোধী প্রধান হওয়ার অর্থই হলো, সরকারীদলের রাস্তা সুপ্রস্থ হওয়া। ‍যেটা আমি অন্তত চাইনি। সে কারনে আমি এই দলটির নেতানেত্রীদের সমালোচনা করা থেকে দীর্ঘদিন বিরত থেকেছি, আপন চোখে দেখেছি। কেন দেখেছি? 

দেখেছি, কারন আমরা যদি আওয়ামীবিহীন রাজনীতি কল্পনা করতে চাই, গনতন্ত্রে আমার বিরোধী পক্ষ লাগবে। বিএনপি তো ২ টার্মের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবে না, তো তৃতীয়বার কি ক্ষমতা আওয়ামীলীগের হাতে যাক এইটা চান? নাকি জামায়াতের হাতে যাক এইটা চান? নাকি ২৪ এর অর্জনের অগ্রনায়ক হিসেবে এই ছেলেগুলোর হাতে দেশের ভার যাক সেইটা চান? 

যদি জামায়াত-লীগের হাতে ক্ষমতা দেখতে চান, আপনাদের হিসেবে ভিন্ন । আমি চেয়েছি ১০ বছর পরে ক্ষমতা যাক এনসিপির হাতে। এই ১০ বছর তারা মাঠে ঘাটে চষে বেড়াক, মাটি মানুষের সাথে তাদের পরিচিত বাড়াক, একটা অংশ সংসদে থাকুক, বিএনপি সম্মানজনক প্রতিপক্ষ পাক সংসদে, নির্বাচনটা ‘জান্নাতের টিকেট বনাম চান্দাবাজের দল’ এই ন‍্যারেটিভে না হোক। 

মানুষের সব চাওয়া পুরণ হয়না। এনসিপির মধ‍্যপন্থী ও উদারপন্থীরা দৃশ‍্যপট থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে। এটা এখন জামায়াতের বি টিম একটি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম । জামাত শিবির ভাড়ায় খাটে, তাদের প্রোগ্রামে যায়, ভোটের সময় দাড়িপাল্লায় দেবে ভোট। এখন যতটা পানি ঘোলা রাখা যায়। তো, বিএনপি ভাবছে রাজনীতি যদি করতেই হয়, সরাসরি জামায়াতের সাথে না গিয়ে কেন বিটিমের সাথে খেলবো! সংঘাতের সুচনা সেখান থেকেই! 

আমি ছেলেগুলোকে যখন বুঝিয়েছি, তোমরা ১০ বছর পরে ক্ষমতায় যাবার প্রস্ততি নাও। ওরা বলল, আমরা যদি এবারই ক্ষমতায় যেতে পারি, ১০ বছর কেন অপেক্ষা করবো! মাথায় ওদের রাস্ট্রের ক্ষমতা দখল রাখার কুটবুদ্ধি। এক বছর আগেও সারজিসরা ক্ষমতার রাজনীতিই করেছে, ক্ষমতা ছাড়া তাদের আর কোন চাওয়া পাওয়া নেই। ওরা আমার পথে হাটলো না। 

লেন্দুপ দর্জিকে ক্ষমতায় এখনই বসাবো, আজীবন ক্ষমতায় রাখবো-এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে সিকিম দখল করে নিয়েছিল ভারত, ৭৫ সালে। পরে লেন্দুপক ছুড়ে ফেলে দেয় ভারত, না খেয়ে মরতে হয়েছে অবহেলায়। ওরা পড়লো বাংলার লেন্দুপ দর্জির খপ্পরে। যে রাজনীতি তারা বেছে নিল, সেখানে আলুপোড়া খাবে অন‍্যেরা। যার রাজনৈতিক অবস্থান পাল্টাতে ৩ মাস/৩দিন সময় লাগে না, তার রাজনীতিই বেছে নিল এনসিপি। ওরা রিয়েলিটি মেনে নিল না, ওরা বেছে নিল, সংঘাতের পথ! 

আমার দেশ কি লিখেছে পড়িনি। আমি পড়ছি, ২ মাসের মধ‍্যে হাসনাত যোগ দেবে আপ বাংলাদেশে, ওটাই ওর যায়গা। সারজিস রিফাইন্ড আওয়ামীলীগ গঠনে মনোযোগ দেবে, কারণ সে পল্টিতে পারঙ্গম । হান্নান, পদত্যাগ করবে , কোথায় যাবে জানি না। বাকীদের দ্বারা চলবে একটি প্লাটফর্ম বাংলাদেশের ৪২ নম্বর দল -এনসিপি! আওয়ামিলীগ রাস্তায় পেলে পিষে মারতে চাইবে ওদের, বিএনপি না দেখার ভান করে থাকবে। 

১৭ বছরে আর যাই হোক, পথ চলায় যারা প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে, তাদের বন্ধু হিসেবে রাখার কোন যুক্তি আমরা বিএনপিকে দিতে কুন্ঠিত হব। আমি চাই, আমার ভাবনাটা বাস্তবে রুপ না নিক। 

ওরা ১০ বছরের তরিকায় ফিরে আসুক। সংসদে বিরোধী দল হউক। আমরা ঝলমলে একটা ভবিষ্যত বানাই আমরা। সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি। আসলেই ফুরিয়ে যায়নি। কেউ না কেউ শুধু এগিয়ে আসুক। বিএনপি অথবা এনসিপি!

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক