a
ফাইল ছবি
আফগানিস্তানের পাঞ্জশির প্রদেশ সম্পূর্ণ দখলে নেওয়ার পর সরকার গঠনের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে তালেবান বাহিনী। সরকার গঠনের অনুষ্ঠানে পাকিস্তানসহ ছয়টি দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। অন্য দেশগুলো হলো- তুরস্ক, কাতার, রাশিয়া, চীন ও ইরান। ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, আফগানিস্তানে সরকার গঠন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। নতুন সরকার গঠনের অনুষ্ঠানে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া, কাতার, তুরস্ক ও ইরানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত তালেবানের আমন্ত্রণ তালিকায় নাম নেই ভারতের। যদিও কিছু দিন আগেই তালেবান সরকারের সম্ভাব্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী শের মুহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই জানিয়েছিলেন, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখতে চান তারা।
আফগানিস্তানের মাটি জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করা যাবে না বলেছিলেন তিনি। তালেবান সরকারকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি ভারত। নয়াদিল্লিকে সেই অবস্থান বদলের আর্জিও জানিয়েছিল তালেবান।
আজ সোমবার সকালে জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেন, আফগানিস্তানের শেষ প্রদেশ হিসাবে পাঞ্জশির এখন আমাদের দখলে। গোটা আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালেবান।’ পাঞ্জশিরের সরকারি ভবনে তালেবানের পতাকা উড়তে দেখা গেছে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।
ফাইল ছবি
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার পরেই দীর্ঘ দিন পর আফগানিস্তানের ক্ষমতায় এসেছে তালেবানরা। গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মাধ্যমে পুরো আফগানিস্তান নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবি করে তারা। কিন্তু দেশটির পাঞ্জশির উপত্যকা এখনও নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি তালেবান। ওই এলাকা দখল করতে গিয়ে গত কয়েক দিনে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঞ্জশির দখলের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছে তালেবান। জানা গেছে, পাঞ্জশির দখল করতে ইতোমধ্যে রওনা হয়েছেন শতাধিক তালেবান যোদ্ধারা।
আফগানিস্তানে একের পর এক প্রদেশ বিনাযুদ্ধে আত্মসমর্পণ করলেও সে পথে হাঁটেনি হিন্দুকুশ পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত পাঞ্জশির উপত্যকা। ১৫ আগস্টের পরও তালেবানের দখলের বাইরে ছিল এই এলাকার বেশ কয়েকটি প্রদেশ। আহমদ মাসউদের নেতৃত্বে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে সেখানে।
আশরাফ গনির শাসনামলের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহও রয়েছেন তার সঙ্গে। আফগান বাহিনীর একটি অংশও যোগ দিয়েছে তাদের সঙ্গে। এই বাহিনীর সামনে পড়ে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকবার পিছু হটেছে তালেবান। সেই পাঞ্জশির দখলে এবার সর্বশক্তি দিয়ে নামতে চাইছেন তারা। সম্প্রতি তালেবানের পক্ষে এক টুইটার অ্যাকাউন্টে লেখা হয়েছে-স্থানীয় প্রশাসন শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজি হয়নি। তাই ইসলামিক আমির শাহির শতাধিক মুজাহিদীন পাঞ্জশির দখলের জন্য যাচ্ছে। এদিকে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বিরোধী জোটরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাঞ্জশিরে জড়ো হচ্ছেন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।
মাসউদও এক সংবাদমাধ্যমকে গত রবিবার বলেছেন, আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে সাবেক আফগান সরকারের বহু সেনা পাঞ্জশিরে এসেছেন। ফলে তালেবান বাহিনীকে রুখতে প্রস্তুত পাঞ্জশির। সেই প্রতিরোধ ভাঙতে এগোচ্ছেন তালেবান যোদ্ধারাও। এক সপ্তাহ আগে তালেবান কাবুল দখল করার পর দেশটির সাবেক সরকারি বাহিনীর সেনারা জড়ো হন কাবুলের উত্তরে অবস্থিত পাঞ্জশির উপত্যকায়। সেখান থেকেই তালেবানকে প্রতিরোধের সুর ওঠে। তবে ঐতিহ্যগতভাবেই ওই এলাকাটি তালেবান-বিরোধী হিসেবে পরিচিত।
কাবুলের উত্তর-পশ্চিমে পার্বত্য পাঞ্জশির উপত্যকায় মাসউদের শক্ত ঘাঁটি। এর আগে আফগানিস্তানের তালেবান বিরোধী প্রতিরোধের প্রধান আউটপোস্টের নেতা আহমাদ মাসউদ জানিয়েছিলেন, তিনি আশা করছেন এক সপ্তাহ আগে কাবুলে ক্ষমতা দখলকারীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনা হবে। তবে, তার বাহিনী লড়াই করতে প্রস্তুত। সূত্র : আলজাজিরা
ফাইল ছবি
তামিম ইকবালের সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১২ বছর পর বিদেশের মাটিতে হোয়াইটওয়াশের কীর্তি গড়লেন টাইগাররা। বিদেশের মাটিতে সর্বশেষ ২০০৯ সালে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে তিন ম্যাচের প্রতিটি জিতে নেয় টাইগাররা। এর আগে ২০০৬ সালে কেনিয়ার মাঠে তাদেরকে বাংলাওয়াশ করেছিল লাল-সবুজের পতাকাধারীরা। আর এবার তৃতীয় দল হিসেবে বাইরে গিয়ে সবকটি ম্যাজ জিতল সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে থাকা দলটি।
স্বাগতিকদের ছুড়ে দেয়া ২৯৯ রানের টার্গেট তাড়া করে ৫ উইকেটে ৩০২ রান করে সফরকারিরা। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে ১২ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে টাইগাররা। আগামী ২২ জুলাই থেকে শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। দ্বিতীয় ম্যাচ হবে ২৩ জুলাই এবং একদিন করে বিরতি দিয়ে সিরিজের শেষ ম্যাচটি হবে ২৫ জুলাই। সবগুলো ম্যাচই হবে হারারে স্পোর্টস ক্লাবে।
সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত পঞ্চমবার টাইগারদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো জিম্বাবুয়ে। এর আগে ২০১৫ সালের নভেম্বরে ঢাকায় তিন মাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিম্বাবুয়েকে পরাজিত করে বাংলাদেশ। তার আগে ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়েকে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৫-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছিল বাংলাদেশ দল। ২০১৮ সালে ৩-০ ব্যবধানে জিম্বাবুয়েকে পরাজিত করে বাংলাদেশ। এরপর ২০১৯ সালেও জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দেয় টাইগাররা।
হারারে ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ওয়ানডেতে টস জিতে প্রথমে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সাবধানী শুরু করেছে জিম্বাবুয়ে। রেগিস চাকাবা ও তাদিওয়ানাশে মারুমানির ব্যাটিংয়ে দলের রান বাড়াচ্ছেন। দুই ওপেনারের জুটি বড় হতে থাকলতে সাকিবকে বোলিংয়ে নিয়ে আসেন তামিম। নবম ওভারে বোলিংয়ে এসেই ব্রেক থ্রু দিলেন সাকিব। তার বল সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন ৮ রান করা তাদিওয়ানাশে মারুমানি।
চাকাভাকে সঙ্গ দিয়ে দলীয় স্কোর বড় করছিলেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক্ক টেইলর। জুটি ভাঙতে দীর্ঘদিন পর মাহমুদউল্লাহকে বোলিংয়ে নিয়ে আসলেন তামিম। এসেই অধিয়ায়কের আস্থার প্রতিদান দিলেন রিয়াদ। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ককে তামিমের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠিয়েছিয়েন টাইগার এই অলরাউন্ডার। ৩৯ বলে ২৮ রান করেই ফিরলেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। ২০১৯ সালের পর ফেব্রুয়ারির পর এই প্রথম এ সংস্করণে কোন উইকেট পেলেন মাহমুদউল্লাহ!
দীর্ঘদিন পর বোলিংয়ে এসে জোড়া শিকার করলেন মাহমুদউল্লাহ। টেইলরের পর মায়ার্সকেও ফেরালেন তিনি। ৩৮ বলে ৩৪ রান করে ফিরেছেন মায়ার্স। এর আগে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলেছেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার রেজিস চাকাভা। চাকাভার ফিফটির আগেই ১০০ রান পেরিয়ে গেছে জিম্বাবুয়ে।
মাহমুদউল্লাহর পর জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত হেনেছেন মোস্তাফিজ। মাধেভেরেকে সাকিবের তালুবন্দী করে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়েছেন কাটার মাস্টার। ৪ বলে ৩ রান করে ফিরেছেন মাধেভেরে।
সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন রেগিস চাকাভা। কিন্তু তাসকিনের গতিতে পরাস্ত হয়ে সাজঘরে ফিরলেন। তাসকিন পেলেন ম্যাচের প্রথম উইকেট। ৯১ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৮৪ রান করে বিদায় নেন চাকাভা চাকাবা ফেরেন সাজঘরে।
চাকাভার বিদায়ের পর স্বাগতিকদের হাল ধরেছেন সিকান্দার রাজা। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৪৯ বলে ১৭তম হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। ষষ্ঠ উইকেটে ১১২ রানের জুটি গড়লে বড় ইনিংসের দিকেই এগোতে থাকে জিম্বাবুয়ে। রাজার পর বার্লও অর্ধশতক পূর্ণ করেন। ৫৪ বলে ৫৭ রানে ফেরেন রাজা। জিম্বাবুয়ের এই ব্যাটসম্যান ফিরেছেন মোস্তাফিজুরের বলে মোসাদ্দেকের ক্যাচ হয়ে।
এরপর এক ওভারেই তিন উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন। দলীয় ২৯৪ রানে বার্লকে থামান টাইগার এই অলরাউন্ডার। আউট হওয়ার আগে বার্ল করেছেন ৪৩ বলে ৫৯ রান। পরের বলে ডোনাল্ড তিরিপানোকে করেন বোল্ড। তেন্দাই চাতারা হ্যাটট্রিক হতে দেননি। দুই বল পরই বোল্ড হন ১ রানে।
শেষ ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানিকে শূন্য রানে বোল্ড করেন মোস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এছাড়া দুটি উইকেট নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
২৯৯ রানের বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং লিটন দাসের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা করেছে বাংলাদেশ। দুজনের জুটিতে ৮৮ রান উঠতেই তামিমের সঙ্গ ছাড়লেন লিটন। মাধেভেরের স্পিনে মারুমানির ক্যাচে বন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই টাইগার ওপেনার। আউট হবার আগে ৩৭ বলে ৩২ রান তুলেছেন লিটন।
তামিমের সঙ্গে ৫৯ রানেই জুটি থামলো সাকিবের। পেসার লুক জংওয়ের অফস্টাম্পের বাইরের লেন্থ বল কাট করতে গিয়েছিলেন সাকিব। টাইমিং মেলাতে পারেননি। ক্যাচ ধরে ফেললেন চাকাভা। তবে আম্পায়ারের আউটের সিদ্ধান্তের পর এটি মানতে পারেননি সাকিব। যদিও এতে কোন প্রতিক্রিয়া দেখাননি বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। ৪২ বলে সাকিবের রান ৩০।
টেন্ডাই চাতারাকে চার মেরে ক্যারিয়ারের ১৪তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি পূর্ণ করলেন তামিম ইকবাল, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যা চতুর্থ। মাত্র ৮৭ বলেই মাইলফলকে গেলেন তিনি। ওয়ানডেতে এটি তার দ্রুততম সেঞ্চুরি। এর আগে ২০১০ সালে ৯৪ বলে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন তিনি। গত বছর মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ওয়ানডেতে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম।
ড্রিঙ্কস বিরতির পরই ফিরে গেছেন তামিম। ডোনাল্ড তিরিপানোর খোঁচা দিয়ে ধরা পড়েছেন উইকেটের পেছনে চাকাভার হাতে। ৯৭ বলে ১১২ রান করে ফিরতে হলো তাকে। এর ঠিক পরের বলেই ক্যাচ আউট মাহমুদউল্লাহ। তিরিপানোর বলে ইনসাইড এজড হয়ে চাকাভার হাতেই পড়লো সেই বল।
গেল দুই ম্যাচের ব্যর্থতার পর শেষ ম্যাচে ব্যাট হাতে রান পেয়েছেন মিঠুন। তবে ইনিংস বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি। মাধেভেরেকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছেন তিনি। সীমানার ওপর সেটি নিয়েছেন টেন্ডাই চাতারা। ৫৭ বলে ৩০ রান করে ফিরেছেন মিঠুন। ভেঙেছে নুরুলের সঙ্গে তার ৬৪ রানের জুটি। শেষ ৬ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩০ রান। ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম অর্ধশতক তুলে পূর্ণ করে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন নুরুল হাসান সোহান। ৩৯ বলে ৪৫ রান অপরাজিত থাকেন তিনি। এদিকে আফিফ অপরাজিত ছিলেন ১৭ বলে ২৬ রানে। সূত্র: সমকাল