a
ফাইল ছবি
সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট সফলতার সাথে ইসরায়েলের দুটি গাইডেড মিসাইল প্রতিহত ও সেগুলোকে ধ্বংস করেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রবিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রাশিয়ান রিকনসিলিয়েশন সেন্টার ফর সিরিয়া’র প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল ভাদিম কুলিত এ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ইসরায়েলের দুটি এফ-১৬ বিমান থেকে গাইডেড মিসাইল ছোঁড়া হয়, তাৎক্ষণিকভাবে সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী পাল্টা ব্যবস্থা নেয় এবং ক্ষেপণাস্ত্র দুটি মধ্য আকাশে ধ্বংস করে দেয়। রাজধানী দামেস্কের দক্ষিণে সাইয়্যেদা জয়নাব শহরের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র দুটির ধ্বংসাবশেষ পড়ে।
সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটি ইসরায়েলের গাইডেড মিসাইল ধ্বংস করার কাজে রাশিয়ার দেওয়া বাক-এমটুই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করেছে।
এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে ইসরায়েল সিরিয়ার ওপর তিন দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো। এর আগে গত বুধবার ও সোমবার দখলদার বাহিনী সিরিয়ার ওপর দুই দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তবে প্রতিবারই সিরিয়ার সামরিক বাহিনী ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে।
ফাইল ছবি
রাশিয়া ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের অতিগুরুত্বপূর্ণ একটি বাঁধ উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে দাবি করেছে কিয়েভ। এরই মধ্যে বাঁধটির গায়ে বিস্ফোরক বসানো হয়েছে বলে দাবি তাদের। এই বাঁধ ধ্বংস করা হলে ইউক্রেনের বিশাল এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাবে। তাতে অগণিত মানুষের প্রাণহানিরও আশঙ্কা রয়েছে। বাঁধটিকে রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
এছাড়া প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করে বলেছেন, শস্যের চালান বিলম্বিত করে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ঘাটতিকে প্রকট করে তুলছে মস্কো। শত্রুরা আমাদের খাদ্য রপ্তানি কমিয়ে আনতে সব চেষ্টায় করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, নোভা কাখোভকা বাঁধে বিস্ফোরক বসিয়েছে রুশ বাহিনী এবং সেটি উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেন, এখন রাশিয়ার একটি নতুন ‘সন্ত্রাসী হামলা’ ঠেকাতে বিশ্বের সবাইকে শক্তিশালীভাবে এবং দ্রুত কাজ করতে হবে। বাঁধটি ধ্বংস করার মানে হবে বড় মাত্রার বিপর্যয়। সুদীর্ঘ দিনিপ্রো নদী ইউক্রেনকে দুইভাগে বিভক্ত করেছে এবং কিছু কিছু জায়গায় এটি কয়েক কিলোমিটার প্রশস্ত। এই নদীর ওপর তৈরি বাঁধটি ধ্বংস হয়ে গেলে আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে। এতে ইউক্রেনের দক্ষিণাংশে সেচ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়বে।
রাশিয়া সম্প্রতি জাপোরিঝিয়া, খেরসন, লুহানস্ক ও দোনেত্স্ককে নিজেদের অংশ ঘোষণা করেছে। তবে খেরসনে এখনো তীব্র লড়াই চলছে দাবি করছে ইউক্রেন। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর কমান্ডার সের্গেই সুরোভিকিন গত মঙ্গলবার দাবি করেন, তার কাছে তথ্য রয়েছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী বাঁধের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা এরই মধ্যে একটি বড় হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা হিমার্স ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। সুরোভিকিন বলেন, কিয়েভ সরকার খেরসনে যুদ্ধে নিষিদ্ধ পদ্ধতি ব্যবহার এবং কাখোভকা বাঁধে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রস্তুতির বিষয়ে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।
তবে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, বাঁধটি মস্কো নিজেই উড়িয়ে দিয়ে এর দায়ভার কিয়েভের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করতে পারে। জেলেনস্কি বলেছেন, আমি ইউরোপীয় কাউন্সিলের বৈঠকে পরবর্তী সন্ত্রাসী হামলা সম্পর্কে জানিয়েছি। রাশিয়া কাখোভকা জলবিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে খেরসন অঞ্চলের রুশপন্থি উপপ্রধান কিরিল স্ট্রেমাসভ বলেছেন, বাঁধটিতে রাশিয়া বিস্ফোরক বসিয়েছে বলে কিয়েভ যে অভিযোগ করেছে, তা মিথ্যা। সূত্র: ইত্তেফাক
ফাইল ছবি
ইউক্রেনকে ঘিরে ফেলেছে রাশিয়া। সীমান্তের চারপাশে সেনা মোতায়েনের কাজও সম্পন্ন করেছে। এমনকি বেলারুশেও সেনা পাঠিয়েছে। এবার যেকোনো মুহূর্তে সামরিক হামলা চালাতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, এটা পুতিনের জন্য ‘চরম মূর্খতার কাজ’ হবে। কারণ এতে হাজার হাজার মানুষ মারা যাবে।
একই সতর্কবার্তা দিয়েছে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রও। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছেন। এক ‘দুঃস্বপ্ন’র মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইউক্রেন।
মার্কিন কর্তারা বলছেন, পরিস্থিতি ‘প্রচণ্ড ভয়াবহ’। এমন খবরে ইউক্রেনের শহরগুলোতে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই আতঙ্কের মধ্যেই বুধবার কিয়েভ সফর করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। অভিযানে না চালিয়ে সমস্যা সমাধানে ‘শান্তিপূর্ণ পথ’ নিতে রুশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া। এরপর থেকেই প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা চলছে। গত বছরের শেষ দিকে আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পূর্ব ইউরোপ।
সেই সময় ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানায়, তাদের সীমান্তে ট্যাংক, মিসাইল ও অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জামসহ লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে মস্কো। তারা দাবি করে, চলতি বছরের জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারির মধ্যে রুশ সেনারা ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে।
রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পরিকল্পনা অস্বীকার করেছে। তবে তারা বলেছে, কিয়েভকে ন্যাটো জোটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না-এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া না হলে মস্কো সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে।
এরপর পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে রুশ কর্মকর্তাদের দফায় দফায় বৈঠক ও আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতির এতটুকু উন্নতি হয়নি। সম্প্রতি সপ্তাহখানেক আগেও তিন দফা কূটনৈতিক আলোচনা ব্যর্থ হয়। এরপর আবারও উত্তপ্ত হতে শুরু করে পরিস্থিতি।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজ এক বার্তায় জানায়, ইউক্রেন পরিস্থিতি ‘খুবই ভয়ংকর’। মস্কো যেকেনো সময় হামলা চালাতে পারে। এদিনই ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া তাদের সীমান্তে ১ লাখ ২৭ হাজারের বেশি সশস্ত্র, নৌ এবং বিমানসেনা মোতায়েন করেছে। আরও বলা হয়, ইউক্রেনকে রাশিয়া দ্বিখণ্ডিত ও ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।
গোয়েন্দা ভয়, দক্ষিণ ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চলে সেনা ঢুকিয়ে দেবেন পুতিন। এরপর একে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করতে আলোচনার জন্য চাপ সৃষ্টি করবেন।
শেষ পর্যন্ত দোনবাস পশ্চিমাপন্থি ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি বাফার রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এরপরও ইউক্রেনকে সেনা ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে রীতিমতো ঘিরে ফেলেছেন পুতিন। রুশরা বড় ধরনের অভিযান চালাবে বলেই মনে করছেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।
সেই লক্ষ্যেই বেলারুশে পুরো এক ডিভিশন সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই বুধবার রাজধানী কিয়েভে এসে পৌঁছান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জিলেনস্কি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবার সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর এক বিবৃতিতে ব্লিংকেন বলেন, ‘আমরা আশা করি, আমরা কূটনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ পথে সমস্যার সমাধান খুঁজতে পারি।’ সূত্র: যুগান্তর