a
ফাইল ছবি
তিন পুরুষাঙ্গ নিয়ে এক শিশুর জন্ম নিয়েছে ইরাকের দুহোকে। শিশুটি জন্মের সময় স্বাভাবিক থাকলেও, তিনমাস পর শিশুটির অস্বাভাবিকত্ব লক্ষ্য করেন হাসপাতালে নিয়ে আসেন মা-বাবা।
হাসপাতালে চিকিৎসক দলের প্রধান শাকির সালিম জাবালি বলেন, এক রাতে শিশুটির মা ও বাবার নজরে আসে মূল পুরুষাঙ্গে পাশে রয়েছে দুটি অতিরিক্ত মাংশপিণ্ড। তারপরই ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসেন অভিভাবকরা। যার একটি স্বাভাবিক পুরুষাঙ্গের ঠিক পাশ দিয়ে গজিয়ে উঠেছিল এবং অপরটি অণ্ডকোষের নিচ থেকে তৈরি হয়েছিল। ক্রমশ ফুলে উঠছিল সেই মাংসপিণ্ড।
ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখেন, মূল অঙ্গটি কাজ করছে, বাকি দুটির সেরকম কোনো কার্যক্ষমতা নেই। তখনই বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত শিশুটির শরীরে কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নতুন দুটি জননাঙ্গ বাদ দিতে হবে কারণ, সেখানে কোনো মূত্রনালি জন্মায়নি।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘ট্রাইফিলিয়া’। চলতি সপ্তাহে ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব সার্জারি কেস রিপোর্টে ডা. শাকির সালিমের নিবন্ধের পরই এ নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
প্রায় ৬০ লাখের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এখন পর্যন্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমন কোনো ঘটনা আগে ঘটেনি। সূত্র: নিউজ২৪
ফাইল ছবি
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডোনেটস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর রুশ ভাষাভাষী অধ্যুষিত দুটি অঞ্চল একত্রে ‘ডোনবাস’ নামে পরিচিত। স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পর অঞ্চল দুটিকে বেসামরিকীকরণের লক্ষ্যে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহর দখলে নিয়েছে রুশ বাহিনী। তবে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী নিজেদের সাধ্যমতো প্রতিরোধী গড়ে তোলারও চেষ্টা করছে। এদিকে, আমেরিকা ও ইউরোপী ইউনিয়নের দেশগুলো এই অভিযানকে ‘পুতিনের ভূমি জবরদখল’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে যারা ভাবছেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাবপুষ্ট যে বিশ্বব্যবস্থা ছিল, তা আবার ফিরে আসবে— তারা ভ্রান্তির মধ্যে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। তার মতে এই যুদ্ধ এক সময় থেমে যাবে ঠিকই, তবে আগের সেই বিশ্বব্যবস্থা আর ফিরে আসবেনা।
রাশিয়ার রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ও বন্দর নগর সেন্ট পিটার্সবার্গে শুরু হয়েছে সেন্ট পিটার্সবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামের (এসপিআইইএফ) সম্মেলন। শুক্রবার সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘পশ্চিমা অভিজাতরা ভাবছে (যুদ্ধের আগ পর্যন্ত) তাদের শাসিত ও প্রভাবপুষ্ট বিশ্ব ব্যবস্থা ছিল, তা চিরস্থায়ী এবং যুদ্ধ শেষ হলে তা ফের ফিরে আসবে; কিন্তু তারা আসলে এখনও অতীতের স্মৃতিতে ঝুলে আছে।’
‘কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। কেউ যদি ভেবে থাকেন যে অশান্ত এই সময়ের শেষে সবকিছু আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে, তাহলে তিনি ভ্রান্তির মধ্যে রয়েছেন; এমন হওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এই মুহূর্তে বিশ্ব যে পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে—তা মৌলিক, গভীর ও অপরিবর্তনীয়।’
‘১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন ও শীতল যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে ঈশ্বরের বার্তাবাহক ভাবা শুরু করল; এমন এক বার্তাবাহক, যার কোনো বাধা নেই, বাধ্যবাধকতা নেই— কেবল আছে স্বার্থ; আর সেসব স্বার্থ তারা উচ্চারণ করত ধর্মীয় শ্লোকের মতো।’
‘কিন্তু তাদের এই উত্থানের ভেতরেই সুপ্ত ছিল ভবিষ্যৎ পতনের সম্ভাবনা। কারণ, আন্তর্জাতিক রাজনীতি কেবল একটি জাতির স্বার্থে পরিচালিত হতে পারে না। এমনকি, সেই দেশ যদি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হয়, তবুও নয়।’
‘গত কয়েক দশকে বিশ্ব জুড়েই শক্তির নতুন নতুন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে এবং নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার পূর্ণ অধিকার তাদের রয়েছে। এটা অবশ্যই স্বীকার করে নিতে হবে।’ সূত্র: আরটি
ছবি সংগৃহীত
নিউজ ডেস্কঃ রাজধানী ঢাকায় ও আশপাশের এলাকায় মাত্র ৩১ ঘণ্টার মধ্যে চারবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু করে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ধারাবাহিক কম্পন ভূতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞদের কাছে নতুন সতর্কবার্তা যে, বাংলাদেশ বড় ধরনের ভূমিকম্পের উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে।
দুই সেকেন্ডে রাজধানীতে দুটি ভূমিকম্পঃ
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকায় পরপর দুটি ভূমিকম্প হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, প্রথমটি অনুভূত হয় সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডে, যার মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৭। এর এক সেকেন্ড পর—৬টা ৬ মিনিট ৫ সেকেন্ডে—আরও একটি ভূমিকম্প হয়, যার মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ৩ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল বাড্ডায়। আর ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীতে।
এর আগে একইদিন সকালে নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে ৩ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
গতকাল ২১ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ঢাকা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা। এতে শিশুসহ ১০ জন নিহত এবং ছয় শতাধিক মানুষ আহত হন। আতঙ্কে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়া, ভবন হেলে যাওয়া ও ফাটল সৃষ্টি হওয়ার মতো অনেক ঘটনা ঘটে। সবচেয়ে বেশি—৫ জনের মৃত্যু হয় নরসিংদীতে; ঢাকায় মারা যায় ৪ জন এবং নারায়ণগঞ্জে ১ জন।
পরপর ৪ বার ভূমিকম্প হওয়ার যেসব ইঙ্গিত দিচ্ছেঃ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ছোট ও মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পগুলো একটি বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস। ভূতাত্ত্বিকরা দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন যে বাংলাদেশ একটি সক্রিয় প্লেট সীমান্তে অবস্থান করছে, যেখানে যেকোনো সময় বড় ধরনের কম্পন ঘটতে পারে।
বিশেষজ্ঞ মত অনুযায়ী, বাংলাদেশে বড় ধরনের ভূমিকম্পের প্রধান উৎস দুটো। এর একটি হলো ‘ডাউকি ফল্ট’, যা ভারতের শিলং মালভূমির পাদদেশে বাংলাদেশের ময়মনসিংহ-জামালগঞ্জ-সিলেট অঞ্চলে বিস্তৃত যা প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ।
আরেকটি হলো- সিলেট থেকে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, টেকনাফ পর্যন্ত যা সব মিলিয়ে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই উৎসটিকে খুব ভয়ংকর বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
টেকটনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে- পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তরদিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ সৈয়দ হুমায়ুন আখতার গণমাধ্যমে বলেন, ‘ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশান জোনের তৈরি হয়েছে। আর নটরিয়াস (ভয়ংকর অর্থে) এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফে বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’
তার মতে, নরসিংদীর মাধবদীতে যে ভূমিকম্পের উৎস ছিলো সেই এই সেগমেন্টেরই এবং নরসিংদীতে দুই প্লেটের যেখানে সংযোগস্থল, সেখানেই ভূমিকম্প হয়েছে।
অধ্যাপক হুমায়ুন আরও বলেন, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল ফলে অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলার কারণে শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয়, সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই যে বড় একটি প্লেট বাউন্ডারির খুব ক্ষুদ্র শক্তি খুলে গেলো তার মানে হলো সামনে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। কারণ একটু খুলে যাওয়া কিছু শক্তি বের হওয়ায় সামনে এই শক্তির বের হওয়া আরও সহজ হয়ে গেছে।’
আগের বড় ভূমিকম্পের নজিরঃ বাংলাদেশ ও আশপাশের এই অঞ্চলে আগেও ৮ মাত্রার ওপরে বড় ভূমিকম্প হয়েছে—
* ১৮৯৭ সালে ডাউকি ফল্টে ৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্প
* ১৭৬২ সালে টেকনাফ-মিয়ানমার অঞ্চলে ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্প
* ১৭৯৭ সালে ভূমিকম্পে ব্রহ্মপুত্র নদীর গতিপথ বদলে যাওয়া
* ১৮৬৮ ও ১৯২২ সালে সিলেট–মৌলভীবাজার অঞ্চলে ৭.৫ ও ৭.৬ মাত্রার বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। এই ইতিহাস ইঙ্গিত দেয়—অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরে ভূমিকম্পপ্রবণ।
কেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে ঢাকা?
বিশেষজ্ঞদের মতে— ঢাকার অধিকাংশ ভবন বিল্ডিং কোড মেনে নির্মিত নয়। অতিরিক্ত ঘনবসতি ও সংকীর্ণ রাস্তার পাশাপাশি উদ্ধার ও দ্রুত প্রতিক্রিয়ার পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই। তাই বড় ভূমিকম্প হলে সবচেয়ে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা এই ঢাকা শহরেই।
অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার বলেন, ‘মাধবদীর ভূমিকম্প দেখাচ্ছে বড় শক্তি বেরিয়ে আসার পথ খুলছে। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ঢাকা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হতে পারে।’
ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের ভবনগুলোর জরুরি অডিট, বিল্ডিং কোড প্রয়োগ, উদ্ধার সক্ষমতা বাড়ানো, জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি—সবই এখন সময়ের দাবি।
সতর্কবার্তাঃ ৩১ ঘণ্টায় ৪ দফা কম্পন জানান দিচ্ছে, ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ছে এবং বড় কম্পনের সম্ভাবনাকে আর হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। --তথ্য সূত্র যুগান্তর