a
ফাইল ছবি
নতুন শিক্ষা কারিকুলামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সপ্তাহে ২দিন ছুটি থাকবে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সাপ্তাহিক ছুটি ২দিন উপভোগ করতে পারবেন। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির নতুন কারিকুলামে পাইলটিং (পরীক্ষামূলক) ক্লাস শুরু হবে। উল্লেখ্য, প্রাথমিক পর্যায়ের ক্লাস শুরুর কথা রয়েছে মার্চ মাস থেকে।
সচিবালয়ে স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়ে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি এ তথ্য জানান।
ডা: দীপু মনি জানান, স্কুল-কলেজ খোলায় ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস নতুন কারিকুলামে নিতে আর কোনো বাধা নেই। নতুন কারিকুলাম ট্রাইআউট ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে। প্রাথমিকে মার্চ থেকে শুরু হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং করার কথা। ২০২৩ সাল থেকে পরিমার্জিত নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের কারিকুলাম বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে। এছাড়া, ২০২৬ ও ২০২৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
নতুন কারিকুলামে দু’দিন সাপ্তাহিক ছুটির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিকে শনিবার ছুটি না রাখা হলেও এখন থেকে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা মনে করি, একজন শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর সপ্তাহে দুটো দিন..., একটু যদি ব্রেক না হয়। এখন তো কম সময় ক্লাস করছিল, তারপরও একটু ব্রেক দরকার আছে। সেটাকে যদি বাদ দিয়ে দিতে পারতাম, তাহলে কয়েকটা দিন বেশি পেতাম। মাসে চারটা দিন বেশি পেতাম, সেটা ঠিক। আবার ধর্মীয় কিছু ছুটি আছে, নানা রকম বিষয় আছে।’
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো: জাকির হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো: আবু বকর ছিদ্দিকী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
ফাইল ছবি
দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা টানা তৃতীয় দিনের মতো সর্বোচ্চ ১০২ গিয়ে পৌঁছল। গতকাল রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এই ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটিই এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগের দুই দিন ১০১ জন করে মৃত্যুবরণ করে। চলতি এপ্রিল মাসের এ পর্যন্ত দেশে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৩৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত তিন দিনে মৃত্যু হলো মোট ৩০৪ জনের।
গত তিন দিনের মৃত্যুহার বিবেচনা করলে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে প্রতি ১৫ মিনিটে এক জনের মৃত্যু হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকেরা বলেন, করোনার ভ্যারিয়েন্টের কাছে চিকিত্সাবিজ্ঞান অসহায়।
ভাইরাসটি বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন রূপ পরিবর্তন করেছে, শক্তিশালী হয়েছে। ভাইরাসটি যে দ্রুতগতিতে পরিবর্তন হয়, গবেষণা সেই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারছে না, পিছিয়ে পড়ছে গবেষণা। সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকেরা আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানুন, নিজেকে বাঁচান। এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে এখনো কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হয়নি। তাই নিজেকেই নিজে রক্ষা করতে হবে। টিকা গ্রহণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই করোনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তরা আগের চেয়ে দ্রুত মারা যাচ্ছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর হারও বেড়েছে গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি তীব্রতা নিয়ে। মহামারির প্রভাব পড়ছে মানসিক স্বাস্থ্যেও। ঐ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এ বছরের মার্চে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৬৩৮ জন। এপ্রিলের ১৫ তারিখ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯৪১ জনের। সে অনুযায়ী দুই সপ্তাহেই মৃত্যুর হার এক লাফে ৪৭ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এ বছরের এপ্রিলে আগের বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যুহারের চেয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি মৃত্যু হয়েছে। সামনে দেশে মৃত্যু ১০ গুণ বাড়তে পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকেরা বলেন, করোনার সঠিক কার্যকর ওষুধ ও টিকা নেই। তাই ভাইরাসটি কোন দিকে মোড় নেয়, তা বলা মুশকিল। বাতাসের মাধ্যমেও করোনা ছড়াচ্ছে। এই অবস্থায় সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। একমাত্র মাস্ক পরলেই ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ নিরাপদ থাকা যায়। অথচ অনেকে মাস্ক পরে না, স্বাস্থ্যবিধি মানে না। করোনার বর্তমান ভ্যারিয়েন্ট বেশি ছড়ায় আক্রান্ত উপসর্গবিহীন মানুষের মাধ্যমে। সে যে আক্রান্ত, সেটি বুঝতে পারে না, আর ঘুরে বেড়ায়। তার মাধ্যমে অনেকে আক্রান্ত হয়। আর যখন বুঝতে পারে আক্রান্ত, তখন তার ফুসফুসের অধিকাংশ ড্যামেজ হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, করোনার টিকাদান কার্যক্রম সারা দেশে চলছে। আরো টিকা আনার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে সরকার। কিন্তু টিকা যদি আর সময়মতো না আসে, তখন কী হবে? আরো টিকা আসার বিষয়টি অনিশ্চিত। তাই সবাইকে মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘যেহেতু করোনা ভাইরাসের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট আসছে, তাই এটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চিকিত্সাসেবা চালিয়ে যাওয়া কঠিন। বিশ্বের অনেক দেশ করোনা রোগীদের চিকিত্সাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশে করোনা রোগীদের সুচিকিত্সা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সব জেলায় সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা চালু করেছি।’ তিনি বলেন, করোনার টিকা গ্রহণ করে শতভাগ নিরাপদ থাকা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে। অনেকে আইসিইউর জন্য চিত্কার করছেন। হাসপাতাল কিংবা আইসিইউতে যাতে যেতে না হয়, সেই কাজটি করতে হবে। এক্ষেত্রে সঠিকভাবে মাস্ক পরতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নিজের রক্ষা নিজেকেই করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিত্সক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, করোনার ভ্যাকসিন কতটুকু কাজ করে, সেটা এখনো গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে। তাই টিকা গ্রহণের পাশাপাশি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কেউ কথা শোনে না। তবে এমন এক সময় শুনবে, তখন তার পাশে কেউ থাকবে না। নতুন নতুন টিকা আবিষ্কারে গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সদস্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, করোনা রোগীরা হাসপাতালে বেড পাচ্ছে না। সুচিকিত্সার অভাবে অনেক রোগী মারা যাচ্ছে। বিশ্বের কোথাও করোনা রোগীদের চিকিত্সাসেবার কাজটি সঠিকভাবে সামাল দিতে পারেনি। ইতালিতে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল যে, সবকিছু আল্লাহর ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার একমপাত্র উপায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। এটা নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, ‘শুধু মাস্ক পরলেই করোনা থেকে ৮০-৯০ শতাংশ নিরাপদ থাকা যায়। কিন্তু এই সহজ কাজটি অনেকেই করছি না। অনেকে বলছে, মরলে মরব। মনে রাখতে হবে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট খুবই শক্তিশালী। তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে। নিজেদের মরণ নিজেরা ডেকে আনবেন না।’
মুগদা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, করোনা ভাইরাস যে গতিতে পরিবর্তন হচ্ছে, চিকিত্সাবিজ্ঞান তার কাছাকাছিও যেতে পারছে না। করোনার শক্তিশালী ধরনের আক্রমণ অব্যাহত থাকলে পৃথিবীকে মানুষশূন্য করে ফেলবে ভাইরাসটি। এটা রোধ করতে হলে বিশ্বব্যাপী সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশে চায়নার মডেল বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রসঙ্গত, চায়নার মডেলটি বাস্তবায়িত হলে টানা ছয় সপ্তাহ লকডাউন দিতে হবে। এরপর যেসব এলাকা আক্রান্ত হবে, তাদের আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে।
অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, সারা দেশে ৬৪ জেলায় কোভিড রোগীদের জন্য আলাদা চিকিত্সার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে নন-কোভিড রোগীদের পূর্বের মতো চিকিত্সাব্যবস্থা উন্মুক্ত করে দিতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে করোনা উপসর্গবিহীন মানুষের মাধ্যমে করোনা বেশি ছড়াচ্ছে। অর্থাত্, যাদের কোনো উপসর্গ নেই কিন্তু করোনায় আক্রান্ত, তারা বেশি করে অন্যদের সংক্রমিত করছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে সামনে আরো ভয়াবহ বিপদ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ হাজার ৬৯৮ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ জনে দাঁড়াল। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০২ জন নিয়ে ১০ হাজার ৩৮৫ জনের মৃত্যু হলো। গত ২৪ ঘণ্টায় সেরে উঠেছেন ৬ হাজার ১২১ জন। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৫৯ জন পুরুষ আর নারী ৪৩ জন। তাদের ৯৭ জন হাসপাতালে এবং পাঁচ জন বাড়িতে মারা গেছেন। সূত্র:ইত্তেফাক
প্রতিকী ছবি
ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ানোয় পবিত্র নগরী জেরুজালেমে এক মুসলিম কিশোরকে গাড়িচাপা দিয়েছে ইসরাইলের পুলিশ। গতকাল রবিবার (৩১ মে) সন্ধ্যায় আল-আকসা মসজিদের দক্ষিণে সিলওয়ান জেলার একটি রাস্তায় শিশুর ওপর ওই বর্বর হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী।
জাওয়াদ আব্বাসি (১৫) নামে ওই ফিলিস্তিনি কিশোর তার বাইসাইকেলে নিজ দেশের পতাকা উড়িয়ে রুটি কিনতে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। খবর আরব নিউজের।
রাস আলমন্ড নামে এলাকায় আসার পর দখলদার ইসরাইলি পুলিশ ওই ফিলিস্তিনি কিশোরকে গাড়ি নিয়ে ধাওয়া করে।
একপর্যায়ে ইসরাইলি পুলিশ তার ওপর গাড়ি তুলে দিতে গেলে গাড়ির ধাক্কায় সাইকেল থেকে পড়ে হাত, পা ও মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়। পরে গুরুতর আহতাবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ইসরাইলি পুলিশের এ বর্বরোচিত হামলার ঘটনা সোস্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
সেখানে ইসরাইল পুলিশকে বলতে শোনা যায়, ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়ানোর দায়ে তাকে গাড়িচাপা দেওয়া হয়েছে।