a ফেরাউনি জমানার পাপাচার এবং মহামারীর ইতিবৃত্ত!
ঢাকা মঙ্গলবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২, ২৪ জুন, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

ফেরাউনি জমানার পাপাচার এবং মহামারীর ইতিবৃত্ত!


মুক্তসংবাদ প্রতিদিন ডেস্ক
বুধবার, ১৪ আগষ্ট, ২০২৪, ০৫:৫৮
ফেরাউনি জমানার পাপাচার এবং মহামারীর ইতিবৃত্ত!

ছবি: সংগৃহীত

 

মিসর দেশের হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে শত শত ফেরাউনের কাহিনী রয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন সত্যিকার অর্থেই প্রজারঞ্জক মহান শাসক। কেউ কেউ ছিলেন বহু দোষে দুষ্ট শাসক নামের কলঙ্ক। কারো কারো মধ্যে আবার বিপরীতমুখী দ্বৈত সত্তা ছিল। অর্থাৎ রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য জমিনে যা কিছু করা দরকার তা তারা করেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রের প্রধান নিয়ামক জনগণের মনমানসিকতা, বিশ্বাস, ভালোবাসা এবং বোধবুদ্ধিকে অপমান করার জন্য যত নিকৃষ্ট ছলচাতুরী করা দরকার তার প্রায় সবই তারা করেছেন। ফলে মানুষের অন্তরলোক এবং জমিনের ঊর্ধ্বলোক অর্থাৎ আসমানের মধ্যে যে মহাজাগতিক শক্তি রয়েছে যা কিনা এই পৃথিবীর সব কিছুর ভারসাম্য রক্ষা করে, প্রাকৃতিক আইন বলবৎ রাখে এবং সব সাক্ষীকে নিরাপত্তা দান করে সেগুলোর প্রায় সব কিছুই লানত হিসেবে এই শ্রেণীর শাসকের তকদির তছনছ করে দেয়।

মিসরীয় ফেরাউনদের মধ্যে যিনি অন্যতম শ্রেষ্ঠ শাসক হিসেবে পরিচিত তার নাম ছিল প্রথম সেটি। তার স্ত্রী তুইয়াও অত্যন্ত মহীয়সী রমণী ছিলেন। ধারণা করা হয়, এই মহান শাসকের জমানাতেই শিশু হজরত মুসা আ: মিসরের রাজপ্রাসাদে অলৌকিকভাবে আশ্রয় লাভ করেন এবং একজন রাজপুত্ররূপে লালিত পালিত হতে থাকেন। পরে তিনি যৌবনপ্রাপ্ত হলে তার নেতৃত্বগুণ, প্রজাদের প্রতি মমত্ব, সাহস শক্তি এবং বুদ্ধিমত্তা দেখে ফেরাউন প্রথম সেটি এতটাই মুগ্ধ হয়ে পড়েন যে, তাকে ভবিষ্যৎ শাসকরূপে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু একটি দুর্ঘটনার কারণে মুসা আ: ফেরারি আসামিরূপে রাজপ্রাসাদ থেকে পালিয়ে মাদায়েনের দিকে চলে যান। ফলে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়। এই ঘটনার কয়েক বছর পর সম্রাট সেটির মৃত্যু হয় এবং তার একমাত্র পুত্রসন্তানরূপে রামসিস দ্য সেকেন্ড অর্থাৎ দ্বিতীয় রামসিস সিংহাসনে আসীন হন।

বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ, লৌকিক উপকথা এবং সাহিত্য উপন্যাসে যে অভিশপ্ত ফেরাউনের কথা বলা হয় তিনি যে দ্বিতীয় রামসিস তা বেশির ভাগ ঐতিহাসিক বিশ্বাস করেন। দ্বিতীয় রামসিসের রাজত্বকাল, তার জ্ঞান গরিমা এবং সমসাময়িক দুনিয়াতে তার ইতিবাচক প্রভাব প্রতিপত্তির যে ইতিহাস লিখিত রয়েছে সেগুলোর সাথে তার পতনের কাহিনী মেলানো সত্যিকার অর্থেই কঠিন একটি বিষয়। মিসরের হাজার বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে তিনিই হলেন সর্বকালের সেরা জনপ্রিয় শাসক এবং কিংবদন্তির সম্রাট। তার রাজত্বকালকে বলা হয় উনিশতম ডাইনেস্টি। তিনি ক্ষমতায় ছিলেন ১২৭৯ খ্রিষ্ট পূর্বাঙ্গ থেকে ১২১৩ খ্রিষ্ট পূর্বাঙ্গ পর্যন্ত। অন্য দিকে তার জীবৎকাল ছিল নব্বই বছর। অর্থাৎ নব্বই বছর জীবৎকালের ৪২ বছরই তিনি মিসর শাসন করেছেন। ১৮৮১ সালে যখন তার মৃতদেহ আবিষ্কৃত হয় তখন তা রাজকীয় মর্যাদায় প্রাচীন রাজধানী লুক্সরের রয়্যাল ফ্যাসি থেকে কায়রোতে আনা হয়। একটি ঐতিহ্যবাহী ইঞ্জিনবিহীন ফেরাউন জমানার ধাঁচে তৈরি জাহাজে করে দ্বিতীয় রামসিসের মৃতদেহ যখন নীল নদ দিয়ে আনা হচ্ছিল তখন লাখ লাখ মিসরবাসী বন্দুকের গুলি ছুড়ে, আতশবাজি ফুটিয়ে এবং নেচেগেয়ে তাদের সম্রাটকে স্বাগত জানাতে থাকে।

তাবৎ দুনিয়ার ইতিহাসবিদেরা গবেষণা করে রীতিমতো গলদঘর্ম হচ্ছেন দ্বিতীয় রামসিস জমানার রাজনৈতিক সফলতা, রাজ্য বিস্তার, সমগ্র সাম্রাজ্যে সরকারি কাজকর্ম, রাজকীয় স্থাপনা, জনস্বার্থে নির্মিত রাস্তাঘাট, সরাইখানা, সেচব্যবস্থা, খাল খনন, প্রাচীন সুয়েজ খাল পুনঃখনন, জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, মিসরকে সামরিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে পৃথিবীর একনম্বর পরাশক্তিতে পরিণত করা ইত্যাদি শুভ কর্মের সাথে তার জমানার শেষের দিকে সাত সাতটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মহামারী যা কিনা গ্রেট প্লেগ হিসেবে চিহ্নত সেগুলোর ভয়াবহ পরিণতির সমন্বয় ঘটাতে গিয়ে তারা ভেবে পাচ্ছেন না কেন মিসরীয় জনগণ তাকে এত ভালোবাসে।

অন্য দিকে বাইরের দুনিয়ার অনাদিকালের লোকজন তাকে অভিশাপ দেয়। অথবা কেনো মহাকালের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা কিনা অল্প কয়েক মাসের ব্যবধানে পরপর সাতবার সাতটিরূপে তার রাজধানীকে আক্রমণ করেছিল, কেন তার রাজধানী সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছিল, পরবর্তীতে বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছিল এবং কালের গর্ভে সেটি কেন প্রায় ১৫ মিটার মাটির নিচে চাপা পড়ল।

আধুনিককালের বিজ্ঞানীরা দ্বিতীয় রামসিসের রাজধানীর সন্ধান পেয়েছেন। প্রযুক্তির কল্যাণে তারা মাটির নিচে চাপা পড়া রাজধানীর মানচিত্রটি পর্যন্ত বানিয়ে ফেলেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, রামসিসের রাজধানী যা কিনা সিটি অব রামসিস নামে পরিচিত ছিল তা লম্বায় ছিল ১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থেও ১৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ ২২৫ বর্গকিলোমিটারের প্রাচীন সেই মহানগরীর মতো সৌন্দর্যমণ্ডিত, আধুনিক, পরিকল্পিত, নিরাপদ এবং সুখসম্পদে পরিপূর্ণ কোনো রাজধানীর জন্ম পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি হয়নি। তার জমানায় পরিচিত দুনিয়ার জ্ঞানী গুণী, ব্যবসায়ী, কবি-সাহিত্যিক থেকে শুরু করে শান্তিপ্রিয় সচেতন নাগরিকদের স্বপ্নময় সাধ ছিল দ্বিতীয় রামসিসের রাজধানীর নাগরিক হওয়ার বাসনা। নীল নদের চমৎকার একটি বাঁকে গড়ে ওঠা রাজধানীটি তার মৃত্যুর পরে যখন বিরানভূমিতে পরিণত হচ্ছিল, তখন অলৌকিকভাবে নীল নদ তার গতিপথ পরিবর্তন করে সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে বহু যোজন দূরে চলে আসে। ফলে পানির অভাবে সেখানে কোনো পাখ-পাখালিও টিকতে পারেনি।

দ্বিতীয় রামসিসের পতন নিয়ে প্রাচীন তাওরাত-ওল্ড টেস্টামেন্ট এবং পবিত্র কালামে রব্বানী আল কুরআনে যে কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে তা প্রায় একই রকমের। ফলে ঐতিহাসিকরা তার পতনের কার্যকারণের সমীকরণ করতে না পারলেও ধর্মবেত্তারা ঠিকই গাণিতিক হিসাবে অনেক কিছু বের করে ফেলেছেন। তাদের মতে, ফেরাউন রামসিসের পতনের প্রধান কারণ হলো তিনি নিজের প্রতি মস্তবড় জুলুম করেছেন। তার রাষ্ট্রক্ষমতা লাভ, রাজ্য জয় এবং সর্বক্ষেত্রের সফলতায় তিনি নিজের প্রকৃতি গঠন এবং পরিণতি সম্পর্কে উদাসীন হয়ে পড়েছিলেন। তার মেধা, মননশীলতা, ঐতিহ্যবাহী রাজকীয় পারিবারিক শিক্ষা ইত্যাদি সব কিছু ভুলে গিয়ে তিনি ফটকাবাজ দালাল, চাটুকার কবি, ধড়িবাজ অসৎ ব্যবসায়ী এবং ফুর্তিবাজ মেধাবী চরিত্রহীন লোকদের সংস্পর্শে এসে নিজেকে প্রথমে মহামানব, তারপর অতি মানব, তারপর দেবতাদের প্রতিনিধি ভাবতে শুরু করেন। পরে তিনি নিজেকে দেবতা বলে ঘোষণা করেন এবং সর্বশেষে দেবতাদের প্রধান অর্থাৎ ঈশ্বর বলে ঘোষণা করতে থাকেন।

তার রাজনৈতিক সফলতা ও ক্ষমতা, সামরিক প্রতিভা, জনকল্যাণ, গণমুখী আচরণ তথা রাজনৈতিক চরিত্র এবং অঢেল অর্থের সাথে সাথে চরিত্রহীন মেধাবী আমির ওমরা, সেনাপতি, পুলিশ, বেসামরিক আমলা, ধড়িবাজ পুরোহিত কবি এবং জাদুকরদের সম্মিলিত প্রচার প্রপাগান্ডার কারণে তার জমানার বেশির ভাগ লোকজন বিশ্বাস করতে শুরু করে যে, তিনি সত্যিকার অর্থেই ঈশ্বর, যা কিনা আসমানের মালিককে বিক্ষুব্ধ করে তোলে।

দ্বিতীয়ত, তিনি জনগণের মধ্যে স্পষ্টত তিনটি পরস্পরবিরোধী সম্প্রদায় তৈরি করে সমাজে মারাত্মক ফ্যাতনা জুলুম নির্যাতন শোষণ বঞ্চনার এক নবতর অধ্যায় রচনা করেন, যা তার পূর্বসূরিরা কোনো দিন করেনি। তিনি তার বংশীয় বা দলীয় লোক, যারা পরিচিত ছিল কিবতি নামে, তাদের নাগরিকদের মর্যাদা দান করেন এবং রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সুযোগ-সুবিধায় তাদের ঈশ্বরের প্রতিনিধিরূপে সব অপকর্ম করার লাইসেন্স দেন। তিনি বনি ইসরাইল নামক সুবিখ্যাত জাতিগোষ্ঠী যাদের প্রায় কারো লাখ লোক তার রাজধানী এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় বসবাস করতেন, তাদের সব নাগরিক অধিকার হরণ করেন। ফলে এসব হতভাগ্য লোকজন সহায় সম্পতি হারিয়ে ক্রীতদাসে পরিণত হন। যারা স্বাধীন থাকতে পেরেছিলেন তারাও কিবতিদের দ্বারা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হতে থাকেন।

রামসিসের ঈশ্বর হওয়ার বাসনা যারা সৃষ্টি করেছিল, তারা সারা সাম্রাজ্যে বিরাট এক শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করে ফেলেছিল। এই সিন্ডিকেট সব ব্যবসা-বাণিজ্য, নিয়োগ-বদলি ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে রাষ্ট্রের মধ্যে আলাদা একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল। রামসিস যখন বুঝতে পারলেন তিনি ঈশ্বর নন বা কোনো মানুষের পক্ষে ঈশ্বর হওয়া অসম্ভব তখন তিনি আল্লাহর নবী হজরত মুসা আ:-এর প্রস্তাব মতো বনি ইসরাইলিদের মুক্তি দিতে রাজি হলেন। কিন্তু তার তৈরি বশংবদ কুখ্যাত সিন্ডিকেটটি বারবার তাকে প্ররোচিত করে তার দেয়া প্রতিশ্রুতি থেকে তাকে পাপের পথে ফিরিয়ে আনতে থাকে। এমন একটা সময় আসে যখন তিনি রীতিমতো অসহায় হয়ে পড়েন। কিন্তু দাম্ভিকতা, লোকলজ্জা এবং তাকে ঘিরে থাকা স্বার্থান্বেষী পাপিষ্ঠের দলের প্ররোচনায় তিনি বারবার অপরাধ করতে থাকেন।

মিসরীয় ফেরাউনদের কতগুলো সাধারণ বৈশিষ্ট্য ছিল। তারা বিচারক হিসেবে নিরপেক্ষ এবং সর্বদা ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতেন। তারা কথা দিলে তা রক্ষা করতেন এবং রাজ্যে সুশাসন নিশ্চিত করতেন। ফলে হাজার হাজার বছর ধরে তারা বংশপরম্পরায় মিসরকেন্দ্রিক বিস্তীর্ণ এলাকা অর্থাৎ উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ব্যাবিলন, সিরিয়া প্রভৃতি অঞ্চল শাসন করতে পেরেছিলেন। দ্বিতীয় রামসিসের জমানায় ফেরাউনদের অধিকৃত রাজ্যের পরিধি ছিল সবচেয়ে বড়। অন্য দিকে, রাজকোষে অঢেল অর্থের পাহাড় এবং সামরিক বাহিনীর শক্তিমত্তার কারণে তার সাথে টক্কর দেয়ার মতো কোনো রাজশক্তি দেশে বিদেশে ছিল না। এ অবস্থায় যুদ্ধ বিগ্রহের ঝক্কি ঝামেলা থেকে তিনি মুক্ত ছিলেন এবং সাম্রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে গিয়ে জনগণের একাংশের শ্রদ্ধা ভালোবাসা পেতে শুরু করেন। ফলে তার মধ্যে আত্মতৃপ্তি, অহংবোধ, ভোগবিলাস, রাগ-ক্ষোভ প্রদর্শন এবং অন্যদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার মানবিক রোগগুলো প্রবল থেকে প্রবলতর হতে থাকে। তিনি চাটুকারদের খপ্পরে পড়ে এমন সব কা- শুরু করেন, যা মহান স্রষ্টা আল্লাহকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে।

ঐতিহাসিকদের বর্ণনা মতে, ফেরাউন দ্বিতীয় রামসিসের বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রীয় নীতি, তার নিয়োগকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি এবং বহুমুখী পাপাচারে সমগ্র রাজ্যের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ, দাসদাসী শ্রেণী এবং বিবেকবান ভালো মানুষগুলোর জীবনে জাহান্নামের বিভীষিকা নেমে আসে। অন্য দিকে, সুবিধাবাদী লোকজনের আনন্দ উল্লাস, ধনীদের প্রাসাদসমূহে আয়োজিত জলসা, রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের সীমাহীন বিলাসিতা, রাজকোষের অর্থে নির্মিত শত শত মূর্তি, পিরামিড ইত্যাদি স্থাপনা এবং রাজপরিবারের সব সদস্য এবং তাদের সেবক চাপরাসিদের ভোগবিলাস ও অপব্যয়ের কারণে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল, যেখান থেকে দরিদ্র অসহায় ও আর্তমানবতার অভাব অভিযোগ দেখা যেত না এবং তাদের কান্নার আওয়াজ শোনা যেত না।

সামাজিক বৈষম্য মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। ধনী ও দরিদ্রের মধ্যকার বৈষম্য জঘন্য পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। ক্ষমতাশালী এবং বিত্তশালীরা ভিখিরির উপার্জন ছিনিয়ে নিতে গিয়ে কোনো রকম লজ্জা বা বিবেক দ্বারা তাড়িত হতো না। কারো মুখের অন্ন কেড়ে নেয়া, দরিদ্র ও দুর্বলদের কাছে যদি কোনো আকর্ষণীয় বস্তু থাকত তা সে নারী শিশু বা সোনা রুপা মণি মাণিক্য কিংবা জমি, যা-ই হোক সেগুলো প্রকাশ্যে কেড়ে নেয়ার মধ্যে ক্ষমতাশালীরা একধরনের পাশবিক তৃপ্তি অনুভব করত। বিচারব্যবস্থা সর্বদা ধনী ও ক্ষমতাবানদের পক্ষে ছিল। কিবতি জনগোষ্ঠীর লোক না হলে কেউ বিচারক, সেনাপতি, জায়গিরদার বা গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মচারী হতে পারত না। এ অবস্থায় নির্যাতিত লোকেরা এতটাই নির্বোধ, বাকরুদ্ধ, বধির বা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিল, যাদেরকে দেখলে গৃহপালিত ও অবহেলিত গরু ঘোড়া দুম্বা উট ইত্যাদি প্রাণী পর্যন্ত করুণা করত।

উল্লেখিত অবস্থায় লাখ লাখ মানুষকে যারা পশুর চেয়েও অধম বানিয়ে ফেলেছিল তাদের কুকর্মে মানুষের স্রষ্টার নিদারুণ গোসসা হয়। তিনি অপরাধীদের সতর্ক করার জন্য পরপর সাতবার সাত প্রকৃতির মহামারী দিয়ে মিসর সাম্রাজ্যে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। কিন্তু কোনো মহামারী যখন পাপিষ্ঠদের পাপকার্য থেকে বিরত রাখতে পারল না, তখন চূড়ান্তভাবে যে গজব ফেরাউন ও তার সাঙ্গোপাঙ্গদের ওপর নেমে এলো তাতে করে নিরীহ মিসরবাসী রাহুগ্রাস থেকে রক্ষা পেল। সূত্র: নয়াদিগন্ত

লেখক : গোলাম মাওলা রনি, সাবেক সংসদ সদস্য

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কূটনীতিকদের ব্রিফ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী


মুক্তসংবাদ প্রতিদিন ডেস্ক
সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩, ১১:১২
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কূটনীতিকদের ব্রিফ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ফাইল ছবি

ঢাকায় বিদেশি কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেশের চলমান পরিস্থিতি বিষয়ে ব্রিফ করবে সরকার।

আজ সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই ব্রিফিং হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আমন্ত্রিতদের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাবেন। এ সময় ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য উপস্থিত থাকবেন।

গতকাল রোববার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশি কূটনীতিকসহ জাতিসংঘের এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, মূলত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে সরকারি ভাষ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা হবে। জানা গেছে, আজকের ব্রিফিংয়ে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির তাণ্ডব এবং তা প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পদক্ষেপ তুলে ধরা হবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিদেশিদের নানা প্রশ্নের জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিএনপিসহ বিরোধীরা অনড় রয়েছে। অন্যদিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত করে রেখেছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা অব্যাহতভাবে বলে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলো।
জানা গেছে, সংবিধানের অধীন থেকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতায় সরকারের অঙ্গীকার ব্রিফিংয়ে পুনর্ব্যক্ত করা হবে।

সংবিধানবহির্ভূত নিরপেক্ষ বা নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার যে দাবি নিয়ে বিরোধীরা মাঠে নেমেছে, তা কোনো অবস্থাতেই সরকারের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। তা ছাড়া তাদের দাবিগুলোর পেছনে নাগরিক সমাজ বা বিদেশি কেউ কেউ যেসব ‘যুক্তি’ তুলে ধরছেন, তা-ও খণ্ডনের চেষ্টা করা হবে ব্রিফিংয়ে। সূত্র: প্রথম আলো

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আরও পড়ুন

তালেবান পাঞ্জশির ‌‘দখলে নিয়েছে’


আন্তর্জাতিক ডেস্ক:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
শনিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ০৯:২৯
তালেবান পাঞ্জশির ‌‘দখলে নিয়েছে’

ফাইল ছবি

ব্যাপক সংঘর্ষের পর আফগানিস্তানের পাঞ্জশির উপত্যকা নিজেদের দখলে নিয়েছে তালেবান। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভির।

তালেবানের এক কমান্ডার বলেছেন, পুরেরা আফগানিস্তান এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে। সমস্যা সৃষ্টিকারীরা পরাজিত হয়েছে এবং পাঞ্জশির এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে পাঞ্জশির উপত্যকা। এলাকাটি উঁচু-নিচু পাহাড়ি ও দুর্গম হওয়ায় অনেকটা সুবিধাজনক স্থানে ছিল তালেবান প্রতিরোধ গোষ্ঠী। উপত্যকাটিতে ঢোকার রাস্তা খুবই সরু। সেখানে কয়েক হাজার তালেবান বিরোধী যোদ্ধা অবস্থান করছিল। 

প্রসঙ্গত, এখনো এই অঞ্চলটি এনআরএফের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এই গোষ্ঠীটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আফগান প্রতিরোধের নায়ক বলে পরিচিত আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমদ মাসুদ।

আহমদ শাহ মাসুদ ছিলেন একজন শক্তিশালী গেরিলা কমান্ডার।  যিনি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এরপর তিনি ১৯৯০ -এর দশকে বিদ্রোহী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আফগান সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

তালেবান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরও ২০০১ সালে তাকে হত্যার আগ পর্যন্ত তালেবান শাসনের বিরুদ্ধে তিনিই ছিলেন প্রধান বিরোধী কমান্ডার।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর জনপ্রিয়

সর্বশেষ - মতামত