a
ফাইল ছবি
বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলন সঠিক পথে রয়েছে বলে মনে করেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দলটির নেতাদের তিনি বলেছেন, আন্দোলন চালিয়ে যান, এবার ফলাফল আসবে। ঠিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারলে সরকার দাবি মানতে বাধ্য হবে।
ঈদুল আজহার দিন বৃহস্পতিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের বাসা ফিরোজায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এক নেতার কথা প্রসঙ্গ টেনে তিনি এই মন্তব্য করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফিরোজায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান। রাত ১০টার দিকে তারা বেরিয়ে আসেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, এ সময় চেয়ারপারসনের সঙ্গে নেতাদের দেশের রাজনীতি নিয়ে তেমন কোনো কথাবার্তা হয়নি। তবে স্থায়ী কমিটির একজন নেতা চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গ তুললে চেয়ারপারসন বলেন, আন্দোলন চালিয়ে যাও, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনে ফলাফল আসবে।
আরেকজন নেতা বলেন, ম্যাডাম আগামী দিনে আপনাকে দেশের প্রধান হিসাবে দেখতে চাই। জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জনসম্পৃক্ত আন্দোলনে এই সরকারকে বিদায় করতে পারলে সেটাই হবে বড় অর্জন। কে কী হবে, পরেরটা পরে। আপনারা আন্দোলন চালিয়ে যান।’
খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে ফিরোজার গেটের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে এটা একটা সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ ছিল। আমরা ওনার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি, উনি কেমন আছেন জানতে চেয়েছি। উনিও আমাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরে সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন বলেন, শারীরিকভাবে ওনার উন্নতি হয়েছে, এটা বলা যায় না। ওনার চিকিৎসা বাইরে অ্যাডভান্স সেন্টারে একান্তভাবে প্রয়োজন। সূত্র: যুগান্তর
সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেছেন, একজন মানুষ তার বউ, গার্লফ্রেন্ড নিয়ে রিসোর্টে যাবে নাকি হোটেলে যাবে সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়।
তিনি সরকারকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরিহার করে গণতন্ত্রের পথে আসার অনুরোধ জানান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে এসব বিষয়ে মন্তব্য করেছেন তিনি।
তিনি লিখেছেন, একজন মানুষ তার বউ, গার্লফ্রেন্ড নিয়ে রিসোর্টে যাবে নাকি হোটেলে যাবে সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। সেটা নিয়ে সরকারি দলের এতো মাথা ব্যথার কারণ কী? একেবারে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, প্রশাসন, মিডিয়া সব রিসোর্টে হাজির,সংসদেও আলোচনার ঝড়!
একজন ব্যক্তির মোবাইলে পর্ণ ভিডিও থাকবে নাকি নাচ, গানের ভিডিও থাকবে সেটা তার বিষয়। সেগুলোকে রং চং মাখিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার।
এগুলো কি প্রমাণ করে না ওগুলো প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে সরকারি দলের স্ক্রিপ্টের নাটক! যা এই সরকার তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও ভিন্নমত দমনে অহরহ করছে। জনসমর্থনহীন সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন ঘটিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে দেশে এখন এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এরা আজ এতোটাই নিচে নেমেছে যে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নারী কেলেঙ্কারির গল্প সাজাতে হচ্ছে, ব্যক্তিগত ফোনালাপ, মোবাইলে কি আছে সেগুলো মিডিয়ায় প্রচার করছে।
সরকারের প্রতি অনুরোধ এসব রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরিহার করে গণতন্ত্রের পথে আসুন, সহনশীল রাজনীতি করুন। চলমান মহামারী পরিস্থিতিতে ভিন্নমত ও বিরোধীদের উপর দমন-পীড়ন বন্ধ করুন। অনতিবিলম্বে মোদিবিরোধী আন্দোলনসহ গ্রেফতারকৃত সকল রাজবন্দীদের মুক্তি দিন।
ছবি সংগৃহীত: অমিত শাহ
কানাডার মাটিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যা বা হত্যাচেষ্টা চালানোর পেছনে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাত আছে বলে অভিযোগ করেছে কানাডীয় সরকার। গতকাল মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ হিন্দুত্ববাদী নেতা অমিত শাহের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।
কানাডার আগের অভিযোগগুলোকেও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করে ভারত সরকার তা বাতিল করে দিয়েছিল। খালিস্তানপন্থী আন্দোলনের শিখ নেতাকে হত্যা বা তাদের হত্যাচেষ্টায় কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তারা।
কানাডার কর্মকর্তারা যে খালিস্তানপন্থী আন্দোলনকারীদের হত্যাচেষ্টায় অমিত শাহের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন, সে খবরটি প্রথম প্রকাশিত হয় প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টে। এতে বলা হয়, কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের ওপর সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের পেছনে অমিত শাহের হাত রয়েছে।
কানাডার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মরিসন গতকাল (২৯.১০.২০২৪) মঙ্গলবার এক সংসদীয় প্যানেলকে জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওই সংবাদমাধ্যমটিকে অমিত শাহের জড়িত থাকার বিষয়ে বলেছেন।
কমিটিকে মরিসন বলেন, ‘সাংবাদিক আমাকে ফোন দিয়ে জানতে চেয়েছিলেন, এ ব্যক্তি সেই ব্যক্তি কিনা। আমি নিশ্চিত করেছি, এই সেই ব্যক্তি।’ তবে মরিসন এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি। এ–সংক্রান্ত কোনো প্রমাণও উপস্থাপন করেননি তিনি।
অটোয়ায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত কোনো বক্তব্য দেয়নি।
খালিস্তানপন্থীদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে ভারত সরকার। দেশটি তার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে খালিস্তানপন্থীদের ‘হুমকি’ বলে মনে করে। শিখ আন্দোলনকারীরা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে খালিস্তান নামে স্বাধীন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে বিদ্রোহ চলাকালে শিখ সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৮৪ সালে শিখবিরোধী দাঙ্গার ঘটনাও ঘটে।
ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তাঁর শিখ দেহরক্ষীর হাতে খুন হওয়ার পর সেই দাঙ্গা হয়েছিল। খালিস্তানপন্থী শিখ আন্দোলনকারীদের উৎখাত করতে পবিত্র শিখ মন্দিরে অভিযান চালানোর জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়ার পরই ইন্দিরা গান্ধী হত্যার শিকার হন।
গত অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে কানাডা ভারতীয় কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে। ২০২৩ সালে কানাডার মাটিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে তাঁদের বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
ভারতের বিরুদ্ধে বিদেশের মাটিতে খালিস্তানপন্থী শিখ নেতাদের হত্যার লক্ষ্য বানানোর অভিযোগ ওঠার এই ঘটনাটি একমাত্র নজির নয়। অর্থাৎ এরকম আরও ঘটনা আছে।
নিউইয়র্কে খালিস্তানপন্থী শিখ নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক এক ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ওই কর্মকর্তার নাম বিকাশ যাদব। গুরপতবন্ত সিং পান্নুন যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার দ্বৈত নাগরিক এবং ভারতীয় সমালোচক। ওই ঘটনায় ইতিমধ্যে নিখিল গুপ্ত নামে এক ভারতীয়কে চেকপ্রজাতন্ত্র থেকে গ্রেপ্তার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বাসিন্দার ওপর এ ধরনের হত্যাচেষ্টা নিয়ে সতর্ক করেছিল মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ভারত ঘোষণা দিয়েছিল, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের তদন্ত করবে। তবে এ ঘোষণার পর এ নিয়ে ভারত এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে খুব কম কথাই বলেছে।
এই দুই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অনেকটা খারাপ। সূত্র: প্রথম আলো