a পবিত্র কাবা শরীফ আগামীকাল থেকে মুসল্লিতে মুখরিত হবে
ঢাকা শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

পবিত্র কাবা শরীফ আগামীকাল থেকে মুসল্লিতে মুখরিত হবে


আন্তর্জাতিক সংবাদ:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
শনিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২১, ০৭:৩৯
পবিত্র কাবা শরীফ আগামীকাল থেকে মুসল্লিতে মুখরিত হবে

ফাইল ছবি

করোনা মহামারির বিধি-নিষেধ শিথিল করতে যাচ্ছে সৌদি আরব। এতে শতভাগ মুসল্লিতে আবারও মুখরিত হতে যাচ্ছে পবিত্র কাবা শরীফ। ইতিমধ্যে পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদে আগের মতো মুসল্লিদের দিয়ে জমায়তের অনুমোদন দিয়েছে দেশটির সরকার। খবর সৌদি গেজেটের।

গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের নির্দেশক্রমে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, আগামী রবিবার থেকে করোনা টিকার ডোজ সম্পন্ন করা মুসল্লিরা স্বাভাবিক পরিস্থিতির ন্যায় মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববিতে আসতে পারবেন।

তবে মুসল্লিদের ইমিউনিটি পরিস্থিতি নিশ্চিত করে ‘তাওক্কালনা’ অ্যাপের মাধ্যমে অনুমোদন নিতে হবে। তাছাড়া মসজিদের ভেতর মুসল্লি ও কর্মীদের মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা আগের মতোই থাকবে বলে জানা যায়।  করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ক সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন ‍নির্দেশনা নিম্নে উল্লেখ করা হলো :

১. খোলা জায়গায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক নয়। তবে আবদ্ধ স্থানে মাস্ক পরা জরুরি।

২. করোনা টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য করোনা বিষয়ক বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। তা হলো :
ক. মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববির পূর্ণ ধারণক্ষমতা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানকার কর্মী ও দর্শনার্থীদের সব সময় মসজিদের সর্বত্র মাস্ক পরা থাকতে হবে। এদিকে মসজিদুল হারামে ওমরাহ ও নামাজ এবং মসজিদে নববির রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য ‘ইতামারনা’ বা ‘তাওয়াক্কালনা’ অ্যাপের মাধ্যমে আগের মতো নিবন্ধন করতে হবে।

খ. সরকারি অফিস, বিবাহের হল, রেস্তোরাঁ, গণপরিবহন, রেস্টুরেন্ট, বিনোদন কেন্দ্র ও সিনেমা হলে সামাজিক দূরত্ব পালন না করে পূর্ণ ধারণ ক্ষমতা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়।
গ. বিয়ে বা যেকোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিতির সীমাবদ্ধতা তুলে নেওয়া হয়। তবে অবস্থার গুরুত্ব বিবেচনায় সতর্কতামূলক বিধিনিষেধ পালনের অনুরোধ করা হয়।

৩. ২নং ধারায় উল্লিখিত সব সুযোগ-সুবিধা ও কার্যক্রমের অংশ নিতে করোনা টিকার ডোজ সম্পন্ন করতে হবে। আর ‘তাওায়াক্কালনা’ অ্যাপে যাদেরকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি বা বাদ দেওয়া হয়েছে তারা মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এসব কার্যক্রমে অংশ নেবে।

৪. যেসব স্থানে অ্যাপের সাহায্যে যাচাই-বাছাই করা যাবে না সেখানে শারীরিক দূরত্ব ও মাস্ক পরা অব্যাহত থাকবে।

৫. ২নং ধারায় উল্লিখিত সব কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট প্রতিরোধমূলক সব প্রটোকল প্রস্তুত করতে জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর মধ্য দিয়ে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর সতর্কতামূলক কঠোর বিধি-নিষেধ জারির দীর্ঘ দেড় বছর পর তা শিথিল করতে যাচ্ছে সৌদি সরকার।

২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ওমরাহ পালনে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর কারফিউ জারি করে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করার পাশাপাশি সব অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছিল। সূত্র: বিডি প্রতিদিন

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

প্রত্যেকটি মসজিদে ১০টি নির্দেশনা মানতে হবে


এমএস.প্রতিদিন ডেস্ক:
সোমবার, ০৫ এপ্রিল, ২০২১, ০৭:১৮
প্রত্যেকটি মসজিদে ১০টি নির্দেশনা মানতে হবে

ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় প্রত্যেকটি মসজিদে অবশ্য পালনীয় ১০টি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। আজ সোমবার হতে এই নির্দেশনা জারি করে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‌‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সারাদেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৮ দফা এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ৪ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কতিপয় দিক-নির্দেশনা দেয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই ১০টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ 

১০ নির্দেশনা:
১. মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে এবং আগত মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে।
২. প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে, সুন্নত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
৩. মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, মুসল্লিদের নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে।
৪. কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
৫. শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামায়াতে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন।
৬. সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতে মসজিদের ওযুখানায় সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।
৭. সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।
৮. মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা যাবে না।
৯. করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে খতিব ও ইমামরা দোয়া করবেন।
১০. সম্মানিত খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এই নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার অনুরোধ জানানো হলো।’  

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

আরও পড়ুন

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে জড়িত: তদন্ত কমিশন


আরাফাত, বিশেষ প্রতিনিধি, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৪:৪১
বিডিআর হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে জড়িত: তদন্ত কমিশন

ছবি সংগৃহীত


নিউজ ডেস্ক: বিডিআর বিদ্রোহে সংঘটিত বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়।

পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দলগতভাবে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা পেয়েছে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। তারা বলছে, এ ঘটনার মূল সমন্বয়কারী ছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস। পুরো ঘটনাটি সংঘটিত করার ক্ষেত্রে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ ছিল। এছাড়া এই ঘটনায় ভারতেরও সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন।

ঢাকার পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এসব বিষয় উঠে এসেছে। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ—বিজিবি) সদর দপ্তরে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ১১ মাস ধরে তদন্ত করে প্রতিবেদন তৈরি করে এই কমিশন।

তদন্ত কমিশন গতকাল রোববার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। এ সময় সেখানে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ ও স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রতিবেদনের বিষয়ে গণমাধ্যমে জানায়।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সন্ধ্যায় সায়েন্স ল্যাবরেটরির বিআরআইসিএম নতুন ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে তদন্ত কমিশন। কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত প্রতিবেদনের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

কমিশনের সভাপতি বলেন, সেনাবাহিনীকে দুর্বল করতে ও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এছাড়া বিডিআর সদস্যদের মধ্যেও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ক্ষোভ ছিল বলেও কমিশনপ্রধান জানান।

পিলখানায় সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে তখন পিলখানায় নিহত হন ৭৪ জন। সেদিন পিলখানায় থাকা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরাও নৃশংসতার শিকার হন।

আ ল ম ফজলুর রহমান বলেন, এ ঘটনার আদ্যোপান্ত তাঁরা বের করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁদের তদন্তে উঠে এসেছে—বিডিআর হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত, কারা আলামত নষ্ট করেছে, এর স্বরূপ কী, কেন এটা হলো, কারা দায়ী, কীভাবে প্রতিরোধ করা যেত অথবা প্রতিরোধ করা যেত কি যেত না। তিনি বলেন, তদন্তে এটাও উঠে এসেছে—কেন সেনাবাহিনী সামরিক পদক্ষেপ নিল না, কেন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হলো এবং কীভাবে ষড়যন্ত্র দানা বেঁধেছিল? পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িত সামরিক-বেসামরিক ব্যক্তিদের তথ্যও বের হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের প্রধান আ ল ম ফজলুর রহমান এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার নাম জানান। তাঁরা হলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিদেশে পলাতক শেখ ফজলে নূর তাপস, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মির্জা আজম, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন।

এর বাইরে শেখ হাসিনার সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব.) মোল্লা ফজলে আকবর।

কমিশনের প্রধান ফজলুর রহমান বলেন, তদন্তকাজ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ত্রুটিমুক্ত করার স্বার্থে সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব বজায় রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন কাজ শুরু করি, তখন ১৬ বছর আগের এই ঘটনার বহু আলামত ধ্বংস হয়ে গেছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেকে বিদেশে চলে গেছেন। আমরা দুটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছি। সাক্ষীদের ডাকলাম, কারও কারও আট ঘণ্টা পর্যন্ত বক্তব্য শুনেছি। যতক্ষণ তিনি বলতে চেয়েছেন। যাঁরা তদন্তে জড়িত ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের তদন্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করেছি, অন্যান্য উপাদান সংগ্রহ করেছি।’

ফজলুর রহমান বলেন, তদন্তে বিডিআর হত্যাকাণ্ডে বহিঃশক্তির সরাসরি সম্পৃক্ততা ও তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সরাসরি জড়িত থাকার শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া গেছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রোববার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সেখানে কমিশনের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেছেন, এই ঘটনার কিছু বাহ্যিক ও প্রকৃত কারণ বের করেছে কমিশন। এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত এবং এর পেছনে প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের রক্ষা করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সরাসরি ভূমিকা রেখেছে। তারা ২০-২৫ জনের একটি মিছিল নিয়ে পিলখানায় ঢুকেছে এবং বের হওয়ার সময় সেই মিছিলে দুই শতাধিক মানুষ ছিল।

পরে তদন্ত কমিশনের সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হয়—মিছিলকারী এই ব্যক্তিরা কারা ছিলেন? জবাবে কমিশনপ্রধান ফজলুর রহমান বলেন, ‘এরা ছিল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। এরা যে সংখ্যক ঢুকেছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক বের হয়েছিল। আমাদের ধারণা, এদের সঙ্গে অনেক কিলারও (হত্যাকারী) বের হয়ে গেছে।’

হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগের নেতারা কীভাবে সমন্বয় করেছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনপ্রধান বলেন, ‘এটা এক দিনে হয়নি, দীর্ঘ সময় ধরে হয়েছে। যেমন তাপস মসজিদে বসে মিটিং করেছে। বিভিন্ন ট্রেনিং গ্রাউন্ডে বসে মিটিং হয়েছে। একটা দীর্ঘ সময় ধরে ষড়যন্ত্রগুলো হয়েছে। সর্বশেষে গিয়ে এই হত্যাকাণ্ডটা হয়েছে।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেছেন, পুরো ঘটনাটি সংঘটিত করার ক্ষেত্রে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ ছিল। তিনি এ ঘটনার দায় নিরূপণের ক্ষেত্রে বলেন, দায় তৎকালীন সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে সেনাপ্রধানেরও। এই ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে সমাধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোরও রয়েছে চরম ব্যর্থতা।

জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার আরও বলেন, ওই ঘটনার সময় কিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং কয়েকজন সাংবাদিকের ভূমিকা ছিল অপেশাদার। ওই হত্যাকাণ্ডের সময় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় (তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন) যেসব বিডিআর সদস্যের সঙ্গে শেখ হাসিনা বৈঠক করেন, তাঁদের সঠিক নাম-পরিচয় ও তথ্য সংরক্ষণ করা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল এবং বাংলাদেশের অস্থিতিশীলতা থেকে লাভবান হয়েছে।

কমিশনের সভাপতি আ ল ম ফজলুর রহমান বলেন, ওই ঘটনার সময় ৯২১ জনের মতো ভারতীয় বাংলাদেশে এসেছিল। তার মধ্যে ৬৭ জনের মতো লোকের কোনো হিসাব মিলছে না। তারা কোন দিক দিয়ে বের হয়ে গেছে, এটা ঠিক বলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘এই ব্যাপারেও আমরা সরকারকে সুপারিশ করেছি ওই ব্যক্তিরা কোথায়, কেন আসলো; সেটা খুঁজে বের করার জন্য। এ বিষয়ে ভারতের কাছে জানতে চাওয়ার জন্য আমরা সরকারকে পরামর্শ দিয়েছি।’

কেন এই ঘটনা ঘটল, সে প্রসঙ্গ টেনে সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি আ ল ম ফজলুর রহমান বলেন, ‘ওই সময়কার সরকার তার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চেয়েছিল। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল এবং সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে দুর্বল করতে চেয়েছিল।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে, যাতে করে ভবিষ্যতে বাহিনীগুলোয় এ ধরনের ঘটনা এড়ানো যায় এবং এ ঘটনার ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পান।

কমিশনের সদস্যের সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতি দীর্ঘদিন ধরে অন্ধকারে ছিল। আপনারা সত্য উদ্‌ঘাটনে যে ভূমিকা রেখেছেন, জাতি তা স্মরণে রাখবে। জাতির পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ইতিহাসের এই ভয়াবহতম ঘটনা নিয়ে জাতির অনেক প্রশ্ন ছিল, এই কাজের মধ্য দিয়ে সেসব প্রশ্নের অবসান ঘটবে। এই প্রতিবেদনে শিক্ষণীয় বহু বিষয় এসেছে। জাতির জন্য মূল্যবান সম্পদ হয়ে থাকবে এটি।

মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমানের নেতৃত্বাধীন এ কমিশনের সদস্যরা হলেন মেজর জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. সাইদুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি এম আকবর আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।

কমিশনের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তদন্তে দেখা গেছে, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তৎকালীন সেনাপ্রধান সদর দপ্তর ছেড়ে চলে যাওয়ায় সময়মতো সেনা অভিযান পরিচালনা করা হয়নি, যা হত্যাকাণ্ডকে উৎসাহিত করেছিল। ভুক্তভোগী সেনা কর্মকর্তা এবং তাঁদের পরিবারের ওপর শারীরিক নির্যাতন ও লুটপাটের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমন ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে, সেই লক্ষ্যে প্রশাসন ও বাহিনীর সংস্কারের জন্য বিস্তৃত সুপারিশ সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। সূত্র: প্রথম আলো

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর জনপ্রিয়

সর্বশেষ - ধর্ম