a
ফাইল ছবি
বড় লক্ষ্য তাড়া করে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল টাইগাররা। এর মধ্য দিয়ে জিম্বাবুয়েকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতল বাংলাদেশ। হারারেতে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ১৯৪ রানের লক্ষ্যে পৌঁছেছে ৫ উইকেট আর ৪ বল হাতে রেখেই। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিয়েছে ২-১ ব্যবধানে। একই সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই মারমুখী ছিলেন সৌম্য। প্রথম ওভারে একটি করে চার ও ছয় হাঁকান তিনি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই সাফল্য পায় জিম্বাবুয়ে। মুজারাবানির বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৩০ গজে সহজ ক্যাচ তুলে দেন ৩ রান করা নাইম।
অষ্টম ওভারে লুক জঙ্গওয়েকে দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে ঝড় তোলার আভাস দেন সাকিব। কিন্তু একই ওভারে ফের উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে মেয়ার্সের তালুবন্দী হন তিনি। টাইগার অলরাউন্ডার ফেরেন ১৩ বলে ২৫ রান করে।
এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন সৌম্য। তবে দীর্ঘসময় অনেক ধীরে খেলেন তিনি। একসময় এ ওপেনারের নামের পাশে ছিল ৩৬ বলে ৩৭ রান। তবে এরপরই বেরিয়ে আসেন খোলস থেকে।
৪০ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম অর্ধশতকের মাইলফলক স্পর্শ করেন সৌম্য। কিন্তু অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আউট হন তিনি। জঙ্গওয়ের বলে সাজঘরে ফেরার আগে ৪৯ বলে ৬৮ রান করেন এই ওপেনার। ছোট্ট ক্যামিও ইনিংস খেলে আফিফ ফেরেন ১৪ রানে।
এ ম্যাচে অনবদ্য ছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনি যখন মাঠ ছাড়েন তখন দলের জয় অনেকটাই নিশ্চিত। চাকাভার দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ২৮ বলে ৩৪ রান করেন তিনি।
নুরুল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে বাকী পথ সহজেই পাড়ি দেন শামীম পাটোয়ারি। দুজনে ম্যাচ শেষে অপরাজিত থাকেন ১ ও ৩১ রানে। জিম্বাবুয়ের জঙ্গওয়ে ও ব্লেসিং মুজারাবানি দুটি এবং ওয়েলিংটন মাসাকাদজা একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে, এই অলিখিত ফাইনালে টস জিতে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশকে ১৯৪ রানের লক্ষ্য দেয় জিম্বাবুয়ে। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান করে জিম্বাবুয়ে। রবিবার সিরিজের শেষ তথা সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামে বাংলাদেশ।
তবে মোস্তাফিজুর রহমানকে ছাড়া টাইগারদের বোলিং লাইনআপ যে একেবারেই ছন্নছাড়া, তা আরও একবার দেখা গেল। তিন পেসার তাসকিন, সাইফউদ্দিন, শরীফুল এবং মেহেদী হাসানের জায়গায় নামা বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ বেদম মার খেয়েছেন। একমাত্র সাকিবকেই একটু বুঝে শুনে খেলেছে জিম্বাবুয়ে।
এভাবেই শেষ হয় ২২ বলে ৬ ছক্কায় চাকাভার ৪৮ রানের ইনিংস। যিনি নাসুমের এক ওভারে ৩টি সহ সাকিবের ওভারেও ছক্কা মেরেছেন। নাসুমের আগের ওভারে তো রিভার্স সুইপে ছক্কা মারেন তিনি! একই ওভারের পঞ্চম বলে অধিনায়ক সিকান্দার রাজাকে ফেরান সৌম্য। এই তারকা অল-রাউন্ডার দুই বল করে 'ডাক' মারেন। শেষ পর্যন্ত ওয়েসলি মাধেভেরে, রেগিস চাকাভা ও রায়ান বার্লের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানের পাহাড় গড়েছে জিম্বাবুয়ে।
উল্লেখ্য, এর আগের ম্যাচে ১৬৬ রান করেই সহজে জিতে গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। হারারেতে সিরিজ নির্ধারণী টি-টুয়েন্টিতে বাংলাদেশকে আরও বড় লক্ষ্য দিয়েছে স্বাগতিকরা। অলিখিত ফাইনালে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান তুলেছে সিকান্দার রাজার দল। বাংলাদেশের বিপক্ষে যা জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এর আগে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে খুলনায় ১৮৭ রান করেছিল তারা। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ফাইল ছবি
জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর সংবাদ সম্মেলন করেন। প্রসঙ্গ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি। সহকারী নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাককে নিয়ে যথাসময়ে হাজির প্রধান নির্বাচক। কিন্তু ছুটির দিনে মিরপুর স্টেডিয়ামে বিসিবির মিডিয়া বিভাগের কেউ নেই! প্রখর রোদে বিসিবি একাডেমির সামনে, পরে একাডেমি ভবনের ভেতরে দুই দফা সংবাদ সম্মেলনের পরিকল্পনা হয়েছিল। সংবাদকর্মী ও নির্বাচকদের সমন্বিত সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত মিডিয়া সেন্টারের সামনে হয় সংবাদ সম্মেলন।
চলতি বছরের জন্য বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকায় আছেন ২১ ক্রিকেটার। কিন্তু গতকাল সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচকদের দিকে ছুটে যাওয়া সিংহভাগ প্রশ্নই হলো সাকিব আল হাসানকে নিয়ে। জাতীয় দলে অনিয়মিত হলেও সাকিবকে রাখা হয়েছে তিন ফরম্যাটের চুক্তিতে। তা নিয়ে প্রশ্নবাণে পড়তে হয়েছে নির্বাচকদের।
সবগুলো প্রশ্নই ছিল নান্নুকে উদ্দেশ করে। মাঝেমধ্যে কথা বলেছেন রাজ্জাকও। কথার মাঝে মেজাজও হারিয়েছেন সাবেক এই বাঁহাতি স্পিনার। একবার তো প্রশ্ন করা এক সাংবাদিককে উল্টো প্রশ্নই করে বসলেন, ‘আপনি যদি নির্বাচক হতেন কী করতেন? সাকিবকে বাদ দিতেন না রাখতেন।’
যদিও বাঁহাতি এ অলরাউন্ডারকে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে রাখা, না রাখা সাংবাদিকদের কাজ নয়। এটা বেমালুমই ভুলে গেছেন রাজ্জাক। শুধু এটুকুই নয়, গতকাল সাকিব প্রশ্নে নির্বাচকদের অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে রাজ্জাকের কথায়। সাবেক সতীর্থ সাকিবকে নিয়ে প্রশ্নের মিছিল দেখে হয়তো মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘সাকিব কিন্তু এখনো কোনো ফরম্যাট থেকে সরে যায়নি। সাকিব এই মাপের খেলোয়াড় যে নিজে থেকে কোনো ফরম্যাট থেকে সরে না গেলে ক্রিকেট বোর্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া কঠিন।’
আলোচনা ছাড়াই সাকিবকে কেন্দ্রীয় চুক্তির তিন ফরম্যাটে রাখা হয়েছে, তা স্বীকার করে রাজ্জাক বলেন, ‘এখনো সাকিবের সঙ্গে আমাদের ওরকমভাবে কথা হয়নি। যেহেতু হয়নি, ফট করে একটা কথা বলে দেওয়া ঠিক না। কথা হলে জানতে পারবেন।’
বার বারই অগ্রজ নান্নুকে থামিয়ে দিয়ে কথা বলেছেন রাজ্জাক। তবে নান্নু জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় চুক্তির এই তালিকা নির্বাচকরা জমা দিয়েছেন এক মাস আগে। তারপরই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সাকিবের খেলা, না খেলার নাটক মঞ্চস্থ হয়।
নির্বাচকদের কাছে তথ্য আছে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর বছরের বাকি সময়ে সব ম্যাচ খেলবেন সাকিব। নান্নু বলেন, ‘ও (সাকিব) ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্রাম নিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে। তারপর থেকে ও এভেইলেবল। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে সে অনুযায়ী তিন ফরম্যাটের জন্যই ও এভেইলেবল আছে।’ কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা দিলেও ক্রিকেটারদের গ্রেডিং ঘোষণা করা হয়নি। অচিরেই বিসিবির অপারেশন্স বিভাগ গ্রেডিং ঘোষণা করবে বলে জানান নির্বাচকরা। সূত্র: ইত্তেফাক
ফাইল ছবি । হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল
রাজনৈতিক পরিচয়ধারী নেতাদের বাদ দিয়ে খুব শিগগিরিই নতুন কমিটি ঘোষণা করতে যাচ্ছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আগামী দুই একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে।
নতুন কমিটিতে রাজনৈতিক পদে রয়েছেন এমন নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। সংযুক্ত করা হয়েছে সদ্য বিলুপ্ত কমিটি থেকে বাদ পড়া আল্লামা শফীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত কয়েকজন নেতাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেফাজতের শীর্ষ এক নেতা সোমবার গণমাধ্যমকে বলেন, বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরাসরি রাজনৈতিক দলের পদে আছেন এমন কাউকে খসড়া কমিটিতে রাখা হবেনা।
সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক পদে রয়েছেন এমন নেতাদের বাদ দিয়ে খসড়া কমিটি ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন বর্তমান আহ্বায়ক জুনায়েদ বাবুনগরী। দুই একদিনের মধ্যে এ কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়া হবে।
বাবুনগরীর তৈরি করা খসড়া কমিটি নিয়ে প্রকাশ্যে হেফাজত সংশ্লিষ্টরা মুখ খুলতে চাচ্ছেন না। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ওই কমিটিতে ৩০-৩৮ সদস্যবিশিষ্ট হতে পারে।
খসড়া কমিটিতে জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির, মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদীকে মহাসচিব হিসেবে রাখা হয়।
কমিটিতে মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, মাওলানা মুহিব্বুল হক (সিলেট), মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব (বরিশাল) কয়েকজনকে নায়েবে আমির হিসেবে রাখা হয়েছে।
যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে রয়েছেন- মাওলানা সাজিদুর রহমান (বি-বাড়িয়া), মাওলানা আবদুল আউয়াল (নারায়নগঞ্জ) ও মাওলানা আরশাদ রহমানী (বসুন্ধরা)।
কমিটি থেকে বাদ পড়তে যাচ্ছেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, নাছির উদ্দিন মুনির, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কেন্দ্রীয় নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, হাসান জামিল, মুফতি হারুন ইজহারসহ নানা ইস্যুতে বিতর্কে জড়িয়ে পড়া হেফাজতের নেতারা।
একইভাবে আল্লামা আহমদ শফীর হত্যা মামলার অভিযুক্ত নেতাদেরও বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সদ্য বিলুপ্ত কমিটিতে একক আধিপত্য বিস্তারকারী ‘রাবেতা’ ও ‘জমিয়ত’ সিন্ডিকেটও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমনকে কেন্দ্র করে গত মার্চের ২৫, ২৬ ও ২৭ তারিখ দেশজুড়ে যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে, অন্তত ১৭ জন মানুষের প্রাণহানি হয়। এসব নাশকতার পেছনে জড়িত থাকার অভিযোগে অন্তত এক ডজন হেফাজত নেতা গ্রেফতার রয়েছেন।
সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে কোণঠাসা হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা শুরু থেকেই সমঝোতার চেষ্টা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা গোয়েন্দা সংস্থা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকও করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতে ইসলামের এক নেতা বলেন, সর্বশেষ কমিটিতে মামুনুল হক ও জমিয়ত এককভাবে তাদের আধিপত্য বিস্তার করে। যা নিয়ে বাবুনগরীকে বেশ বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। পরে মামুনুর হকের রিসোর্টকাণ্ডের পর একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ওই কমিটি বিলুপ্ত করেন।
নতুন কমিটি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে নানামুখী চাপে রয়েছেন আল্লামা বাবুনগরী। তাই রাজনৈতিক পদধারী নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করছেন তিনি। তথ্যসূত্র: যুগান্তর