a
ফাইল ছবি: মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বৈঠক
কোটাবিরোধী আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধে স্থবির হয়ে পড়ছে পুরো ঢাকা শহর ।
অপরপক্ষে, সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম নিয়ে আন্দোলন করছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। অনুমান করা হয় এসব বিষয় নিয়ে বৈঠক করেছেন সরকারের পাঁচ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সামছুন্নাহার চাঁপা এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
কী বিষয়ে আকস্মিক এই বৈঠক হয়েছে সে সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে কেউ কোনো মন্তব্য করেননি। তবে বৈঠকে কোটা আন্দোলন মূল আলোচ্য বিষয় ছিল বলে জানা গেছে।
বৈঠক শেষে সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় ত্যাগ করেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। প্রথমেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বের হন। তবে তিনি এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পর বেরিয়ে আসেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনিও গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন শিক্ষামন্ত্রী এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী। তারাও বৈঠকের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো বক্তব্য দেননি।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সামগ্রিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। রাজনৈতিক, সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছি৷ এটা রুটিন মাফিক কথাবার্তা।
কোটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচলা হয়েছে। নির্দিষ্ট একটা বা দুইটা বিষয় নিয়ে নয়। আজকের বসার বিষয়টা আপনারা জেনেছেন, এই বসাটা নিয়মিত। আমরা নিয়মিতই বসি। বিভিন্ন জায়গায় বসা হয়।
এরপর শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। যে বিষয়গুলো আলোচনা করেছি, আসলে সেগুলো নিয়ে এই মুহূর্তে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনার মতো বিষয় নয়।
কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আদালতে যে বিষয়টি বিচারাধীন আছে, আমরা এ বিষয়ে এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করব না। সেটা আদালতের বিষয়। আদালত থেকে যেভাবে সিদ্ধান্ত আসবে। আমাদের অবস্থান হচ্ছে, যেহেতু আদালতে যে বিষয়টি বিচারাধীন আছে সে বিষয়ে আমরা মন্তব্য করব না। অপেক্ষা করতে হবে। সরকার তো আপিল করেছে। সুতরাং আমি এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাইনা। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ফাইল ছবি
বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল পরীক্ষায় নতুন ভর্তি পদ্ধতি চালু হওয়ায় সংকটে পড়েছে বেসরকারি খাতের মেডিক্যাল শিক্ষা। জানা গেছে, এবার ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া ৪৯ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৬ হাজার ৬০০ জন মেডিক্যালে পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নতুন ভর্তি পদ্ধতির কারণে অসচ্ছল ও মেধাবীদের জন্য সংরক্ষিত ৮১ আসন এখন শূন্য। অর্থাৎ বিনা খরচায় পড়ার আসনও শূন্য পড়ে আছে।
ডেন্টালের অবস্থা আরও ভয়াবহ, যেখানে ১ হাজার ৫০০ সিটের বিপরীতে পড়ার জন্য মাত্র ৫০০ জন আবেদন করেছেন।
উল্লেখ্য, আগে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো বাছাই করে পছন্দের মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতেন। কিন্তু চলতি বছর এ সুযোগ রহিত করে নতুন অটোমেশন পদ্ধতি চালু করা হয়। এবার প্রথমে শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য পাঁচটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পছন্দক্রম রাখা হয়। পরে এই নিয়মও বদলে ফেলে ছাত্রদের জন্য ৬০টি এবং ছাত্রীদের জন্য ৬৬টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের তালিকা করা হয়। নতুন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী আবেদনের পর একটি নির্দিষ্ট মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি এসএমএসের মাধ্যমে তাকে জানানো হয়। এ কারণে অনেক শিক্ষার্থী পছন্দের প্রতিষ্ঠান পাননি। কারণ ব্যয়ের ব্যাপারটি মেডিক্যাল কলেজ ভেদে তারতম্য থাকায় শিক্ষার্থীরা সামর্থ্য অনুযায়ী কলেজ নির্বাচন করেন। তাই নতুন নিয়মে শিক্ষার্থীদের যে কলেজে সুযোগ দেওয়া হয়েছে সেখানকার শিক্ষাব্যয় শিক্ষার্থীর পরিবারের সামর্থ্যের বাইরে হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ভর্তি হতে পারেননি।
চট্টগ্রাম হালিশহরের মুহাম্মদ আবু সুফিয়ানের মেয়ে সানজিদা আকতারের স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবেন। কিন্তু দূরবর্তী পটুয়াখালী সরকারি মেডিক্যালে চান্স পাওয়ায় মেয়েকে নিজ এলাকার কোনো প্রাইভেট মেডিক্যালে পড়াবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন সুফিয়ান। কিন্তু তিনি জানতে পারলেন এবার ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির নতুন অটোমেশন পদ্ধতি চালুর কারণে তাদের এই সিদ্ধান্ত আর কাজে আসবে না। অধিদপ্তর খুদে বার্তার মাধ্যমে নিশ্চিত করবে তার মেয়ে কোথায় পড়বে।
অনুরূপ ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া কিশোরগঞ্জের এক শিক্ষার্থী বলেন, তার পছন্দ ছিল নিজ জেলার একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ। কিন্তু তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিক্যালে ভর্তির জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। কিন্তু এখানকার ব্যয় বহন করা তাদের পক্ষে কঠিন। এ কারণে তিনি মেডিক্যালে না পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কাঙ্ক্ষিত মেডিক্যাল কলেজ না পেয়ে ভর্তিতে অনীহা, আবার ভর্তি হলেও মাইগ্রেশন পদ্ধতিতে কলেজ বদল করায় আসন পূরণ হয়নি বেশির ভাগ বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের। বেশ কিছু আসন শূন্য রেখে ক্লাসও শুরু করতে হয়েছে কোনো কোনো বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজকে। এমনকি অসচ্ছল ও মেধাবী কোটাও পূরণ হয়নি তড়িঘড়ি করে নেওয়া এই নতুন সিদ্ধান্তের কারণে।
প্রসঙ্গত, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত ১০ মার্চ। ফলাফল প্রকাশিত হয় ১২ মার্চ। সরকারি-বেসরকারি সব মেডিক্যাল কলেজে ক্লাস শুরু হয়েছে ২৪ জুলাই। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেসরকারি বেশ কিছু মেডিক্যাল কলেজে আসন পূরণ হয়নি। ভর্তি কার্যক্রমও শেষ হয়নি। কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দায়ী করছেন বিএমডিসির অদূরদর্শী নীতিমালা ও ডিজি হেলথের সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতি না নিয়েই অটোমেশন পদ্ধতি চালু করাকে।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, গত ২৫ বছরে এই প্রথম বিএমডিসির অদূরদর্শী ও হুট করে চাপিয়ে দেওয়া নতুন অটোমেশন পদ্ধতির ফলে ৭৩১ আসন এখনো পূর্ণ হয়নি। নতুন এই ভর্তি পদ্ধতি যে চরম ভ্রান্ত ও নৈরাজ্যকর তা প্রমাণিত হয়েছে।
এ বছর ৩০০-এর অধিক মেডিক্যাল শিক্ষার্থী বিএমডিসির অনুমোদন নিয়ে বিদেশে পড়তে চলে গেছেন। এত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা চলে গেছে দেশের বাইরে।
ক্লাস শুরুর আগে অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা বলেন, যেসব বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ এখনো নির্ধারিত আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারেনি, সেখানে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এক মাসের মধ্যে সব সমস্যার সমাধান করা হবে। কিন্ত এক মাস পেরিয়ে গেলেও সংকট নিরসনে কার্যত কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উলটো কলেজগুলোকে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে ক্লাস শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মুবিন খান গণমাধ্যমকে বলেছেন, অটোমেশন প্রক্রিয়ায় বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তিতে সংকট তৈরি হয়েছে। কোনো কোনো কলেজ শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। সবার মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। এ জন্য পুরোটাই বিএমডিসি ও ডিজি হেলথ দায়ী। সূত্র: ইত্তেফাক
ফাইল ছবি
হেফাজতের নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন উল্লেখ করে আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, ‘আমিরে হেফাজত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হুজুরের নির্দেশে কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতিনিধিদল আবদুল আউয়াল হুজুরের সঙ্গে দেখা করতে এখানে এসেছি। কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল, আমরা তা মীমাংসা করেছি। আমাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুল আউয়াল হুজুর তার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।’
মাওলানা আবদুল আউয়ালের সঙ্গে দীর্ঘ সাক্ষাৎ শেষে বের হয়ে বুধবার (৩১ মার্চ) বিকেলে একথা জানান হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক আল্লামা মামুনুল হক।
এসময় মামুনুল হক বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম কোনো প্রকার সহিংসতায় বিশ্বাসী নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছি, মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছি। অনেক জায়গায় হেফাজতের দায়িত্বশীলদের রাজপথ থেকে উৎখাত করতে প্রশাসন উদ্যত হয়েছে। সেখান থেকে কোথাও কোথাও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তা হেফাজতের পক্ষ থেকে করা হয়নি।’
এসময় সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে মামুনুল হক বলেন, হেফাজতে ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে সব সময় ভালো সম্পর্ক রাখতে চায় এবং তা অব্যাহত আছে। ব্যক্তি পর্যায়ে কেউ ভুল বুঝে কোনো ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে, তবে তার সঙ্গে দায়িত্বশীলদের কোনো সম্পর্ক নেই।