a
সংগৃহীত ছবি
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজনৈতিক ঐক্য সংকটকালীন সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যে কোনো সংকট মোকাবিলায় এটি একেবারে অপরিহার্য। শেখ হাসিনা-পরবর্তী সময়ে নতুন কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার আশা আমরা এখনো পাইনি। বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি, দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই আরও তীব্র হয়েছে। জাতি তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছে এবং এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
এই সংকটময় সময়ে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। জাতি আশা করে, এই দুই দলের মধ্যে ঐক্য হবে, কারণ এর কোনো বিকল্প নেই।
১৯৭৫ সালের নভেম্বর বিপ্লবের পর যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছিল, তা ছিল দেশের রাজনৈতিক ঐক্যের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। নবগঠিত বিএনপির নেতৃত্বে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক ঐক্য সেই সময়ে নবজাতীয়তাবাদী শক্তি এবং বিদ্যমান ইসলামী রাজনৈতিক শক্তির একটি সফল মেলবন্ধন হিসেবে কাজ করেছিল।
জিয়াউর রহমানের দক্ষ নেতৃত্বে সৃষ্ট রাজনৈতিক ঐক্য অল্প সময়ের মধ্যেই সকল সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছিল। এটি সম্ভব হয়েছিল শুধুমাত্র ঐক্যের কারণেই।
জাতীয় ঐক্যকে জাতীয় শক্তির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জাতি যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তবে কোনো কিছুই তাদের ক্ষতি করতে পারে না। এটি একটি জাতির জন্য সুপার পাওয়ার হিসেবে কাজ করে।
সম্প্রতি রাজধানীতে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মানুষের জমায়েত এবং দুই ছাত্র দলের সংঘর্ষ স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, দেশের শত্রুরা অরাজকতা সৃষ্টি করতে সক্রিয় রয়েছে।
বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির একের পর এক অবনতি সরকার এবং জাতির জন্য কোনো শুভ লক্ষণ বহন করে না। বড় আকারের আইনশৃঙ্খলা সংকট দেখা দেওয়া অসম্ভব নয়, যা বর্তমান সরকারের স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সমর্থন সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শক্তি জোগাতে পারে। তবে সরকারকে তাদের কাজের গতি বাড়াতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
এই মুহূর্তে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর ঐক্য অপরিহার্য, নতুবা অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত শত্রুরা এর সুযোগ নিতে দ্বিধা করবে না। বিপ্লবের সময় কয়েকশো মানুষের জীবন এবং জনগণের অমানবিক কষ্টের মাধ্যমে অর্জিত সুযোগ কোনোভাবেই উপেক্ষা করা উচিত নয়। এই সময়ে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য উভয় দলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
জাতীয় স্বার্থকে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। রাজনৈতিক ঐক্য ছাড়া জাতিকে অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগত হুমকির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।
জাতীয় সংকটকালে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কোনো দলেরই এটি উপেক্ষা করা উচিত নয়। বিএনপি, যেহেতু দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল, তাদের দায়িত্ব অন্যান্য রাজনৈতিক দলের তুলনায় অনেক বেশি। যদি তারা ১৯৭৫ সালের মতো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার গুরুদায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়, তবে ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।
বিএনপিকে বিচক্ষণতার সঙ্গে জাতিকে নেতৃত্ব দিতে হবে এবং তারা কোনোভাবেই ভুল করার সুযোগ নিতে পারবে না। তারা ভুলে গেলে চলবে না যে, পুরো জাতি তাদের যোগ্য নেতৃত্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তাদের অবশ্যই সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে একটি নিরাপদ এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা যায়।
যেমনটি তারা অতীতে প্রমাণ করেছিল, এবারও তাদের সেই সামর্থ্য প্রমাণ করতে হবে, ইনশাআল্লাহ।
লেখক: প্রফেসর ড. এস কে আকরাম আলী
সম্পাদক, মিলিটারি হিস্ট্রি জার্নাল
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সাইফুল আলম , ঢাকা: জীবনব্যাপী শিক্ষা, জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি এবং টেকসই সমাজ বিষয়ক একটি জাতীয় সেমিনার গ্লোবাল নলেজ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, শিক্ষক, গবেষক, নীতিনির্ধারক, ব্যাংকার, লেখক, আইনজীবী ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই সেমিনারে দেশের উন্নয়নযাত্রায় জীবনব্যাপী শিক্ষার গুরুত্ব, জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির সম্ভাবনা এবং একটি টেকসই সমাজ গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতামূলক কাঠামো তুলে ধরা হয়।
সিজিডি'র নির্বাহী পরিচালক সাইদুল ইসলামের পরিচালনায় এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শাহজাহান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন সহকারী অধ্যাপক ও গবেষক মু. আবিদুর রহমান আবেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খ্যাতনামা লেখক ও চিন্তাবিদ গ্লোবাল নলেজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মুহা. ওমর ফারুক। যিনি জীবনব্যাপী শিক্ষা, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ফরিদ এ. সোবহানী বলেন, জীবনব্যাপী শিক্ষা দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির পূর্বশর্ত, যা জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি নীতিমালা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে একটি টেকসই সমাজ গঠন করা সম্ভব।
প্রফেসর ড. শাহজাহান খান বলেন, জীবনব্যাপী শিক্ষা জাতীয় উন্নয়নকে টেকসই করতে অন্যতম চালিকাশক্তি এবং জ্ঞান-প্রযুক্তি-দক্ষতার সমন্বয়ে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী অর্থনীতিতে পরিণত হতে পারে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব বিজনেসের অধ্যাপক এবং IQAC পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহির রায়হান, আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. জাকির হোসেন।
সেমিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন, আইবি এডুকেটর ও গবেষক জনাব জাকির হোসেন, সুইজারল্যান্ড; শিক্ষাবিদ ড. মো. নুরুল ইসলাম, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সহকারী অধ্যাপক ড. কাজী মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল আজিজ ভুইয়া এবং মাল্টিমিডিয়া ও আইটি বিশেষজ্ঞ ফাহিম ফয়সাল।
গ্লোবাল নলেজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রাবেয়া আক্তারের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে এবং অংশগ্রহনকারীদের সনদ প্রদানের মাধ্যমে সেমিনার সমাপ্তি হয়।
প্রতিকী ছবি
সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূলে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের মালিকানাধীন একটি জাহাজে হামলা হয়েছে। হাইপেরিয়ন নামে এ জাহাজটি ইসরায়েল সরকারের পিসিসি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত বলে জানা যায়।
মঙ্গলবার ইসরায়েল ভিত্তিক গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, আরব আমিরাতের ফুজায়রার কাছে জাহাজটি হামলার শিকার হয়। আবার কোনো কোনো গণমাধ্যম জানিয়েছে এই হামলার জন্য ইরানকেই দায়ী করা হচ্ছে। তবে ইসরায়েল এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
গত ফেব্রুয়ারি মাসেও ইসরায়েলের আরেকটি জাহাজে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূলে হামলা হয়েছিল। এসব ঘটনায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উ্দ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বলে জানা যায়।