a
ফাইল ছবি । ডা. দীপু মনি
চলতি মাসের ১২ তারিখ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলে দেয়ার চিন্তা রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বৃহস্পতিবার রাতে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।
ডা. দীপুমণি আরো জানান, গত সপ্তাহে নেয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সিদ্ধান্তানুযায়ী চলমান ছুটি ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। দীর্ঘ ১৭ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কারণে শিশু-কিশোররা স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার সুযোগ বঞ্চিত হচ্ছে বলেও স্বীকার করেন ডা. দীপু মনি।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বিশেষজ্ঞদের সাথে আজকেও (বৃহস্পতিবার) কথা হয়েছে, তারা মনে করছেন আমরা যে সংক্রমণের হার অনেক কম রাখতে পেরেছি, তার অন্যতম কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা। অন্য অনেক কারণের পাশাপাশি এটিও অনেক ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন তারা।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে। আগামী দিনে আরো কমবে। ফলে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে ছুটি রয়েছে তা আর বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে আমরা চাইলে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দিতে পারবো। যদি এর মধ্যে আর বড় কোনো সমস্যা না হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলে সঠিক মনিটরিংও নিশ্চিত করার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।
বড় পাবলিক পরীক্ষাগুলো নেয়া সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী জানান, নভেম্বরের মাঝে এসএসসি এবং ডিসেম্বরের শুরুতে এইচএসসির ঘোষণা আগেই দেয়া হয়েছে। আশা করছি, সে অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া প্রসঙ্গে ডা. দীপুমণি জানান, ১৮ বছর বয়সীরা টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে ১২ বছর বয়সী পর্যন্ত টিকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সাইফুল আলম, ঢাকা: সম্প্রতি ঘোষিত 'ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি' সংক্রান্ত প্রস্তাব ও নীতিগত সিদ্ধান্তের কারনে ইডেন কলেজের সক্ষমতা সংকোচন ও স্বাতন্ত্র্য বিনষ্ট হওয়ার আশংকা প্রবল হয়েছে। ইডেন মহিলা কলেজ প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দের পক্ষ থেকে হেলেন জেরিন খান, প্রফেসর নিশরাত বেগম, সুলতানা রাজিয়া, খন্দকার ফারহানা ইয়াসমীন আতিকা, ডক্টর নাহিদ মনসুর, প্রফেসর শামীমা, প্রফেসর রহিমা সুলতানাসহ অন্যান্যদের নেতৃত্বে আজ তাদের স্পষ্ট অবস্থান প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন।
ইডেন মহিলা কলেজ প্রাক্তন ছাত্রীবৃন্দ আজ ১৮ অক্টোবর, ২০২৫ইং দুপুরে রাজধানী ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন। এখানে লিখিত মূল বক্তব্য পাঠ করেন হেলেন জেরিন খান। তারা বলেন, ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাতটি সরকারী কলেজকে ঘিরে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন ও প্রশাসনিক কাঠামো পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও নাগরিক সমাজে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইডেন মহিলা কলেজ উপমাহাদেশের প্রথম নারী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে প্রায় ২২,০০০ শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত। অসংখ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী দেশ-বিদেশে সুনাম ও কৃতিত্বের সাথে জাতির অগ্রযাত্রায় অবদান রাখছেন ।
আমাদের পর্যবেক্ষন
১। ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা কলেজ দীর্ঘকাল ধরে নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রায় অবিস্মরনীয় ভুমিকা পালন করে আসছে। বিশেষত ধর্মপ্রাণ ও নিম্ন-আয়ের পরিবারের নারী শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলো নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও মর্যাদাপূর্ন শিক্ষাকেন্দ্র। কিন্তু খসড়া অধ্যাদেশের ৬(১)(খ) ধারা অনুযায়ী ইডেন ও বদরুন্নেসা কলেজে সহশিক্ষা চালুর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে যা নারীশিক্ষার নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার পরিপন্থী । এটি নারী শিক্ষার্থীদের পছন্দের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করবে এবং শতবর্ষব্যপী নারী শিক্ষার ঐতিহ্য নষ্ট করবে। প্রস্তাবিত সংকোচন কার্যকর হলে রাজধানীতে নারীদের উচ্চশিক্ষা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে, তাদের প্রবেশাধিকার সংকীর্ন হবে এবং সংবিধান প্রদত্ত সমান সুযোগের নিশ্চয়তা লঙ্ঘিত হবে। সংবিধানে ২৮(১) ও (২) অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং ২৮ (8) অনুচ্ছেদে নারীর জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদানের অনুমোদন রয়েছে। একই সাথে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDG ৪.৩ ও ৪.৪) নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের জন্য সমানভাবে উচ্চশিক্ষা সম্প্রসারনের আহ্বান জানিয়েছেন । সুতারং প্রস্তাবিত সংকোচন কেবল সাংবিধানিক দায়িত্বের পরিপন্থী নয় বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।
২। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ সেশনে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার সময় আসন সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস করা হয়েছে। ফলে দেশের বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা হতে বঞ্চিত হবে এবং তুলনামূলক সামর্থবান অনেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ঝুঁকবে, যা শিক্ষার বানিজ্যিকীকরণ বাড়াবে।
৩ । বিসিএস সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পেশায় ইডেন মহিলা কলেজ ও বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা সফলতার সাথে কর্মরত রয়েছেন । উল্লেখ্য ইডেন মহিলা কলেজের ৫১ জন প্রাক্তন শিক্ষার্থী, বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে নিজ কলেজেই কর্মরত আছেন, আর সারাদেশে এ সংখ্যা আরও বেশি। আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় হলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের পদ সেখানে সংকুচিত হয়ে যাবে। ইতোপূর্বে জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরের ফলে সেখানকার ৪০০+ পদ বিলুপ্ত হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য যে, গত ১০ বছরে এই ক্যাডারে কোনো নতুন পদ সৃষ্টি হয়নি। বর্তমানে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হলে সাত কলেজের ১৪০০+ পদ বিলুপ্ত হলে তা ভবিষ্যত বিসিএস সাধারন শিক্ষা ক্যাডার পদপ্রার্থীদের বিশাল সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে।
৪। ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ প্রস্তাবিত কাঠামোর প্রতি অনাগ্রাহ প্রকাশ করে আন্দোলনে নেমেছে। ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা মানব বন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তাই সকল অংশীজনের মতামত ও পরামর্শ বিবেচনা না করলে ব্যাপক শিক্ষার্থী অস্থিরতা ও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি তৈরি হবে।
আমাদের সুপারিশ:
১। জাতীয় ইতিহাস ও সামাজিক বাস্তবতায় ইডেন মহিলা কলেজকে বিলুপ্ত বা একীভূত করার উদ্যোগ
অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত হবে ।
২। কলেজগুলোর বিদ্যমান অবকাঠামো, সক্ষমতা ও ভৌগলিক অবস্থান বিবেচনা করে ৭ কলেজকে কলেজিয়েট বা অধিভুক্তিমূলক কাঠামোর আওতায় রাখা ।
৩ । শিক্ষকদের পদ সংখ্যা বৃদ্ধি, গবেষণা বাজেট, আধুনিক ল্যাব, সমৃদ্ধ লাইব্রেরি, আবাসন ও বৃত্তি সুবিধা সম্প্রসারনের মাধ্যমে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করা।
৪। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত যৌক্তিকীকরণ করা। পাশাপাশি পাঠদানকৃত বিষয়সমূহ ও সিলেবাস পুনর্বিবেচনা করে যুগোপোযুগী করে তোলা ।
৫ । শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের স্বার্থ সুরক্ষা করে শিক্ষা পরিবেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা ।
৬ । সকল অংশীজনের জানার অধিকার ও তথ্যের স্বচ্ছতা বজায় রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ৷
৭। প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটিকে অন্য কোন পৃথক ক্যাম্পাসে স্থাপন করে ঢাকার সাতটি কলেজসহ বিভাগীয় অন্য আরও শতবর্ষী কলেজকে অন্তর্ভূক্ত করা।
আমরা শান্তি চাই, স্থিতি চাই। ইডেন কলেজসহ সাত কলেজের ঐতিহ্য ও স্বতন্ত্র মর্যাদা যেন বলি না হয়, ইডেন মহিলা কলেজ ও বদরুন্নেসা মহিলা কলেজে যেন সহশিক্ষা চালু না হয়, শিক্ষার বানিজ্যিকীকরণ যেন না হয় - এটাই আমাদের কাম্য।
ফাইল ছবি
রাজধানীর যে এলাকায় গ্যাস থাকবে না মঙ্গলবার গ্যাস পাইপলাইন প্রতিস্থাপন কাজের জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উত্তর যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসা রোড এলাকায় গ্যাস সবরবাহ বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া চাপ কম থাকবে আশপাশের এলাকায়। আজ সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তিতাস গ্যাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্যাস পাইপলাইন প্রতিস্থাপন কাজের জন্য মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উত্তর যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসা রোড এলাকায় গ্যাস সবরবাহ বন্ধ থাকবে। চাপ কম থাকবে আশপাশের এলাকায়। এর আগে শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্যাস পাইপলাইন প্রতিস্থাপন কাজের জন্য রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আওরঙ্গজেব রোড, শের শাহপুরী রোড, তাজমহল রোড এলাকায় আবাসিকসহ সব শ্রেণির গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
এ ছাড়া আশপাশের এলাকায় চাপ কম থাকতে পারে । সাময়িক অসুবিধার জন্য গ্রাহকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। মূলত গ্যাস পাইপলাইন প্রতিস্থাপন কাজের জন্যই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। এদিকে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিদ্যুতের পিক-আওয়ার বিবেচনায় প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত, এ ৬ ঘণ্টা সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হবে। সহকারী সচিব সায়মা আক্তার স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসমূহের গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহের স্বল্প ও দীর্ঘমিয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।