a
সংগৃহীত ছবি
ভারতের উত্তর প্রদেশের হারদুই অঞ্চলে গুলিভর্তি বন্দুক থুতনির সঙ্গে লাগিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে মারা গেছেন এক নারী। নিহত নারীর নাম রাধিকা গুপ্তা (২৬)। ট্রিগারে চাপ পড়ে বন্দুকের গুলিতে তার ঘাড় মাথা-মগজ উড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) স্বামীর বাড়িতে এই দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। এ খবর প্রকাশ করেছে দেশটির শক্তিশালী গণমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে জানা গেছে, বন্দুক দেখার পর রাধিকার শখ চাপে থুতনির সঙ্গে নল লাগিয়ে ছবি তুলবেন। তাও সেলফি। দারুন উৎসাহ নিয়ে প্রস্তুতি নেন তিনি। কিন্তু হায় কে জানতো, এই সেলফি তোলার উৎসবই হতে যাচ্ছে তার শেষযাত্রার শুরু! একহাতে মোবাইল ক্যামেরা অন্যহাতে বন্দুকের ট্রিগারে তার। এই সময় অসতর্কতাবশত ট্রিগারে আঙ্গুলের চাপ লাগায় গুলি বেরিয়ে যায়। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে বেরুনো গুলি তার গলা ও ঘাড় ছিদ্র করে বেরিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাধিকার শ্বশুর রাজেশ গুপ্তা জানান, তার ছেলে আকাশ গুপ্তার সাথে রাধিকার বিয়ে হয় চলতি বছরের মে মাসে। শহরে তাদের ছোটো গহনার দোকান আছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য তাদের ১২-বোর একনলা বন্ধুকটি থানায় জমা রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার আকাশ সেটা বাড়িতে ফেরত আনে। বন্দুকটি বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ছিল। বিকেল ৪টার দিকে আমরা গুলির প্রচণ্ড শব্দ শুনতে পাই। দৌড়ে উপরে যাই। দেখি রাধিকা রক্তে ভাসছে। গুরুতর আহত। বন্দুক হাতে নিয়ে সে মেঝেতে পড়ে আছে। সামনে তার মোবাইল দেখতে পাই যা সেলফি তোলার জন্য রাখা ছিল। আমরা দ্রুতই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই কিন্তু তাকে বাঁচাতে পারিনি।
পুলিশ বন্দুক ও মোবাইল ফোনটি জব্দ করেছে। ইতোমধ্যে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ভিকটিমের ফোন থেকে একটি ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে যা তার মৃত্যুর সম্ভবত কয়েক সেকেন্ড আগে তোলা হয়েছিল। পুলিশ এই ঘটনায় রাধিকার স্বামী আকাশকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আকাশ জানান, তার স্ত্রী বন্দুক দেখার পর থেকেই ব্যাপক উৎসাহ দেখাচ্ছিল। সে বন্দুক পাশে রেখে বেশ কয়েকটি ছবিও তুলেছিল। আরও ছবি তোলার জন্য উদগ্রীব ছিল। কিন্তু সেলফি তোলার একপর্যায়ে অসতর্কতায় ট্রিগারে আঙ্গুলের চাপ পড়ে গুলি বেরিয়ে যায়।
এদিকে রাধিকার বাবা তার মেয়ের আকস্মিক মৃত্যুতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি থানায় অভিযোগ দায়েরে বলেছেন, স্বামীর বাড়ির লোকজনই যৌতুকের জন্য রাধিকাকে খুন করেছে। পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফরেনসিক রির্পোটের পর এই ঘটনার সম্পর্কে তারা আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ফাইল ছবি
গত কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিন্নধর্মী ঘটনা সারাদেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সেটি হলো লিচু গাছে আম ধরার মতো ব্যতিক্রমী ঘটনা। এই আশ্চর্যজনক ঘটনাটি ঘটে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সিঙ্গিয়া কলোনিপাড়া গ্রামের আবদুর রহমানের বাড়ির একটি লিচু গাছে। গত মঙ্গলবার হঠাৎ সেই আমটি ছিঁড়েও ফেলা হয়।
করোনাভাইরাস লকডাউন, আইডি কার্ড-মুভমেন্ট পাস ইত্যাদি বিষয় মাঝে মানুষের মুখে চাউর ছিল লিচু গাছে আমের কাহিনিটি। কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া এ বিরল ঘটনার কোনো বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা দিতে পারেননি উদ্যানতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা। শুরু থেকেই বিষয়টি নিয়ে ধোয়াশা থাকলেও পরবর্তীতে জানা যায় এটা ছিল একটা নিছক তৈরি কাহিনী।
ঘটনাটি ছিল কেউ একজন লিচু গাছে আঠাজাতীয় পদার্থ দিয়ে আমটি ডালে লাগিয়ে রাখে। ঘটনা চারিদিক ছড়িয়ে পড়লে আমটি ছিড়ে ফেলা হয়। আমটি যদি সত্যিকার ভাবেই লিচু গাছে ধরত তাহলে আম ছেঁড়ার একদিন বাদে (বুধবার) সেই আমের বোঁটা শুকিয়ে যেত না , তা স্বাভাবিকভাবে আম ছিঁড়ে নেওয়ার পরে বোঁটার মতো নয় এবং কি আঠাজাতীয় পদার্থের উপস্থিতিও রয়েছে সেখানে।
আম ছিঁড়ার ঘটনা জানার পর (বুধবার) কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ঠাকুরগাঁও কার্যালয় ওই ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছে। এর আগে সোমবার থেকে দুই কর্মকর্তা আম ধরার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছিলে।
ঠাকুরগাঁওয়ের উপ-পরিচালক আবু হোসেন এক বিবৃতিতে বলেন, হয়তো এটি কেউ আঠা দিয়ে ইচ্ছা করে লাগিয়ে দিয়েছিল। অথবা অন্য কোনো কৌশলে করা হয়েছিল। তিনি বলেন, লিচুর বোঁটাটি লম্বা হলেও আমেরটি বোটাটি স্বাভাবিকের তুলনায় খুব খাটো ছিল। এগুলো দেখেই প্রথম থেকেই বিষয়টি অন্যরকম লাগতেছিল। আম ছিঁড়ে ফেলার কারণে সে বিষয় এখন পরিস্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে।
অপরদিকে এ ঘটনার কোনো বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা দিতে অক্ষম হয়েছেন উদ্যানতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা। ফলে প্রথমে এটি একটি অলৌকিক ঘটনা মনে করা হচ্ছিল। তবে প্রথম থেকেই কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলে আসছিলেন, যে কেউ আঠা দিয়ে লিচুর ডালে আমটি লাগিয়েও দিতে পারে। ফলে এটা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। ঘটনাটি পর্যবেক্ষণের জন্য কয়েক দিন অপেক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কারণ আমটি কোনো কৌশলে লাগানো হলে তা ঝরে পড়ে যাবে বা শুকিয়ে যাবে।
এছাড়া কয়েকজন কৃষি কর্মকর্তা বিষয়টিকে এভাবে বলেছেন যদি আমটি আসল হয় তাহলে আসতে আসতে বড় হবে তখন এ নিয়ে গবেষনা করা যাবে। কিন্তু পরদিনই আকস্মিকভাবে আমটি ছিঁড়ে ফেলা হয়।
এদিকে বুধবার বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এক গাছে অন্য ফল শুধু গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে সম্ভব। তবে লিচু ও আমের ক্ষেত্রে এটা করা যাবে না। লিচু ও আমের টিস্যু সিস্টেম এক নয়। এদিকে লিচু গাছটির মালিক আবদুর রহমানের দাবি ছিল, এটা কোনো পদ্ধতি নয়। স্বাভাবিকভাবেই সেখানে আম ধরেছে।
গত শনিবার সকালে তার নাতি হৃদয় ইসলাম এসে তাকে জানায়, লিচুগাছে একটা আম ধরেছে। তৎক্ষনাত সেখান গিয়ে লিচুর একপাশে একটি আম দেখে অবাক হয়ে যাই। এ খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে বহু মানুষ এটি দেখতে ভিড় করেন।
এরপর সোমবার বিষয়টি দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। আবদুর রহমানের অভিযোগ ছিল গত মঙ্গলবার এলাকার সাবেক মেম্বার সিকিম লিচুগাছ থেকে আমটি ছিঁড়ে ফেলেছেন। অভিযুক্ত মেম্বার প্রথমদিকে আমটি ছিঁড়ে ফেলার কথা স্বীকার করলেও পরে বিষয়টি অন্যভাবে উপস্থাপন করেন ।
মেম্বার নিজে বলেন, মিডিয়াতে এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় অনেক দূর থেকে মানুষ এসে এলাকায় ভিড় করছে এবং এ ঘটনা দেখতে আসার প্রাক্কালে সোমবার তার ভাতিজা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হন। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধিও মানা হচ্ছিল না, করোনার ঝুঁকি বেড়ে যাবে এসব কথা গাছের মালিক আবদুর রহমানকে বলতে গিয়েছিলাম তখন হয়ত কেউ আমটি ছিঁড়ে ফেলেছে।
সংগৃহীত ছবি
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়ায় চলমান বিধিনিষেধ আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে আজ বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ বাড়ানো হয়েছে।
এবার বিধিনিষেধে নতুন কিছু শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব সরকারি–বেসরকারি অফিস খোলা থাকবে। আর ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোতে স্থানীয় জেলা প্রশাসক জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মিলে কারিগরি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে লকডাউনসহ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবে।
দেশে এখন করোনাভাইরাসের ‘ডেলটা ভেরিয়েন্টের’ সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়েছে। সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলায় তা ছড়িয়ে পড়েছে। এ জন্য সারা দেশে চলমান বিধিনিষেধের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় বিশেষ ‘লকডাউন’ চলছে।