a
ফাইল ছবি
বিগত সত্তর দশক ধরে ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর সমন্বয় চলে আসছে, সে মোতাবেক দুই দেশ একজোট হয়ে ভবিষ্যতে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুল্লিভান।
সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে ফোনালাপে করোনা পরিস্থিতিতে সমবেদনা জানিয়ে তিনি টিকা তৈরির কাঁচামাল এবং ভেন্টিলেটর পাঠানোর আশ্বাস দেন।
যদিও গত ২দিন আগের খবর যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারত আবেদন করেছিল যাতে করোনা টিকা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের রফতানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে। সেখানে ভারতের আবেদন গ্রহণ না করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসন নিষেধাজ্ঞার পক্ষেই যুক্তি দিয়েছিলেন।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, কভিশিল্ড তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল যত দ্রুত সম্ভব ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সাহায্য পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জো বাইডেন নিজেই। গতকাল রবিবার এক টুইটবার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মহামারীর শুরুতে যখন যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালের ওপর চাপ পড়েছিল, তখন ভারত যেমন আমাদের সাহায্য পাঠিয়েছিল, তেমনই প্রয়োজনের সময় আমরা ভারতকে সাহায্য করতে বদ্ধপরিকর।’
এদিকে, প্রেসিডেন্টের কিছুক্ষণ পরই টুইট করেন ডেপুটি কমলা হ্যারিস। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগজনক কভিড-১৯ মহামারীর মোকাবিলায় বাড়তি সাহায্য এবং সরঞ্জাম প্রদানের জন্য ভারত সরকারের সঙ্গে কাজ করছে আমেরিকা। সাহায্য প্রদানের পাশাপাশি সাহসী স্বাস্থ্যকর্মীসহ ভারতীয়দের জন্য প্রার্থনা করছি।’
অক্সিজেন-চিকিৎসার অভাবে ভারত যখন মৃত্যুপুরী পরিণত হয়েছে, তখন অসহায় দেশটির পাশে দাঁড়াচ্ছে একে একে বিশ্বের সকল দেশ।
ইতিমধ্যে ভারতের এমন মহাবির্যয়ে পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মান ও ফ্রান্সসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এরই মধ্যে অক্সিজেনসহ বিভিন্ন চিকিৎসাসামগ্রী পাঠিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
ভারতের এই চরম বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশ। করোনা সংকট মোকাবেলায় দেশটিকে সব ধরনের সহায়তার কথা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি ও ফ্রান্স।
সংগৃহীত ছবি: টিউলিপ সিদ্দিকি ও আবদুল করিম
চলতি বছরের জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যের নগরমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে একটার পর একটা বিতর্ক লেগেই আছে শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে সম্পত্তিজনিত আয় নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়। তার খালা শেখ হাসিনার অনুচরের সুবিধা নিয়ে নতুন করে খবরের শিরোনাম হয়েছেন তিনি।
গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, নিজের বাসা ভাড়া দিয়ে তার খালা শেখ হাসিনার বিশেষ বন্ধু আবদুল করিমের ২ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বিলাসবহুল বাসায় বর্তমানে অবস্থান করছেন টিউলিপ। এই সম্পত্তি টিউলিপ সিদ্দিকের নিজের কেনা বাড়ির কাছেই অবস্থিত।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আবদুল করিম নামের এই ব্রিটিশ বাংলাদেশিকে বিশেষ মর্যাদায় সিআইপি উপাধি দিয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান পদটিও পেতে সাহায্য করেছিলেন। অভিজ্ঞতা না থাকলেও শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় করিম উক্ত ব্যাংকটিতে তার অবস্থান করে নেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।
আর ধারণা করা হচ্ছে, টিউলিপের খালা শেখ হাসিনার বিশেষ আশীর্বাদপুষ্ট বর্তমানে এই ব্যক্তির কাছ থেকে অন্যায় সুবিধা আদায় করে নিচ্ছেন টিউলিপ। টিউলিপ ওই পাঁচ বেডের বিলাসবহুল বাসা ভাড়ার তথ্যও লুকিয়েছেন জাল জালিয়াতিভাবে।
ডেইলি মেইলের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও ব্যবসায়ী করিমকে কত ভাড়া দেওয়া হচ্ছে, তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন টিউলিপ। ওই ব্যবসায়ী টিউলিপকে তাঁর বাড়িতে বসবাসের অনুমতি দিয়ে লাভবান হয়েছেন কি না, সেই প্রশ্নই বর্তমানে উঠে এসেছে। কারণ, গত দুই বছরে টিউলিপ তাঁর পারিবারিক বাড়ি ভাড়া দিয়ে হাজার হাজার পাউন্ড আয় করেছেন।
যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী, যদি কোনো এমপি কম ভাড়া দিয়ে কোনো আবাসনে বসবাস করেন, তাহলে তা সরকারকে অবহিত করা বাধ্যতামূলক। তা না হলে দেশটির আইনে এটি একটি বড় অন্যায় হিসেবে দেখা হয়।
রিফর্ম দলের চেয়ারম্যান নাইজেল ফারাজ লেবার সরকারের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের এই কার্যক্রমকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।
নাইজেল ফারাজ বলেন, সরকারের একজন মন্ত্রী যদি সঠিক তথ্য প্রদান না করেন এবং ভাড়া কম বা ভাড়া প্রদান না করে ঘরে অবস্থান করেন, তাহলে সেটি বড় অন্যায়। আবদুল করিম নামের ব্যবসায়ী এর বিনিময়ে লেবার পার্টির মন্ত্রীর কাছ থেকে অন্যায্য সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করতে পারেন। লেবার পার্টি এমন লোককে মন্ত্রী বানিয়েছে। তিনি বলেন, এই দল গোলমেলে কাজ করতে পছন্দ করে।
আবদুল করিম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার একজন সদস্য। যুক্তরাজ্যে টিউলিপের নির্বাচনে তার খালার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কাজ করা নিয়ে আগে থেকেই বিতর্ক রয়েছে। ৫ আগস্ট ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে পতন হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের। পদত্যাগী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন সূত্রের খবর, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূত্র: ইত্তেফাক
ফাইল ছবি
ইসরায়েলের পার্লামেন্টে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলো ফিলিস্তিনের গাজায় হামাস যোদ্ধাদের হাতে আটক ইসরায়েলের স্বজনরা।
দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও জিম্মিদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে না পারায় ইসরায়েল সরকারের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিলেন স্বজনরা। আর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জিম্মিদের উদ্ধারের নামে হামাস নির্মূলের অজুহাতে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে অব্যাহতভাবে আগ্রাসন চালিয়ে গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে ইহুদিবাদী দেশটি।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার জেরুজালেমে নেসেটে সংসদীয় একটি কমিটির অধিবেশন চলাকালে জিম্মিদের স্বজনদের একটি দল সেখানে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করেন। এ সময় তারা আইনপ্রণেতাদের প্রতি প্রিয়জনদের মুক্ত করার প্রচেষ্টা জোরদার করার দাবি জানান।
সোমবার সংসদে বিক্ষোভ প্রতিবাদের সময় এক নারীর হাতে গাজায় জিম্মি তার তিন স্বজনের ছবি দেখা যায়। জিম্মি স্বজনদের দ্রুত উদ্ধারের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন তিনি। নভেম্বরে দফায় দফায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়িয়ে কিছু জিম্মিকে মুক্ত করে ইসরায়েল। তবে হামাসের হাতে এখনও গাজায় প্রায় ১৩০ জিম্মি বন্দি রয়েছেন।
নেসেটে ফাইন্যান্স কমিটির আলোচনার সময় সেখানে ঢুকে স্বজনদের মুক্তির ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান ওই নারী। এ সময় কান্না করতে দেখা যায় তাকে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমি কেবল তাদেরকে জীবিত ফিরে পেতে চাই।”
কালো টি-শার্ট পরা অন্য বিক্ষোভকারীদের হাতেও বিভিন্ন দাবি সংবলিত পোস্টার দেখা যায়। একজনের হাতে ‘‘তারা সেখানে মারা গেলে আপনি এখানে বসতে পারবেন না’’ লেখা পোস্টার দেখা যায়। ‘‘তাদের এখনই, এখনই, এখনই মুক্ত করুন’’ স্লোগান দেন তারা। এ সময় কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও আড়াই শতাধিক ব্যক্তিকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রাখে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা।
এদিকে, হামাসের সাথে ইসরায়েলের নতুন জিম্মি মুক্তি নিয়ে চুক্তির ব্যাপারে মিশর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ করা হয়। তবে সেই চুক্তি কতটুকু আলোর মুখ দেখবে তা সন্দিহান। কারণ ইসরায়েল গাজা উপত্যকা থেকে হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প করেছে।
আর হামাস ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি জ্যেষ্ঠ সব ফিলিস্তিনি নাগরিককে মুক্তি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার না করলে জিম্মিদের জীবিত বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা প্রত্যাক্ষান করেছে। এরই মধ্যে হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিদের মধ্যে অন্তত ২৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, স্কাই নিউজ, বিবিসি, রয়টার্স, এনবিসি নিউজ