a
ফাইল ছবি
ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান বন্ধ করার জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে ছয় দফা প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়ার পার্লামেন্ট- দুমা। দুমার ডেপুটি স্পিকার মিখাইল শিরিমিত রবিবার (১৩ মার্চ) বলেন, জেলেনস্কি যদি সত্যিই এখনও ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন তাহলে তাকে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মেনে নিতে হবে।
ছয়টি প্রস্তাব হচ্ছে-
১। নব্য নাৎসিবাদীদের নিরস্ত্র করতে হবে,
২। ইউক্রেনকে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে,
৩। দেশটির সংবিধানে নিরপেক্ষ নীতি গ্রহণ করতে হবে যাতে কোনো আন্তর্জাতিক ব্লকে যোগ দেয়া না যায়,
৪। ইউক্রেনের বেশিরভাগ মানুষের মাতৃভাষা অর্থাৎ রুশ ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে,
৫। ক্রিমিয়া উপত্যকাকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে মেনে নিতে হবে,
৬। লুহানস্ক ও দোনেস্ক অঞ্চলের স্বাধীনতা মেনে নিতে হবে।
দুমার ডেপুটি স্পিকার সাফ জানিয়ে দেন, ইউক্রেনকে রাশিয়া ও এর নাগরিকদের নিরাপত্তা বিপন্নকারী দেশে পরিণতি হতে দেবে না মস্কো। এর আগে রাশিয়া ঘোষণা করেছে, ইউক্রেনে চলমান বিশেষ সামরিক অভিযান দেশটির বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধ নয় বরং বিশ্বব্যাপী একটি বড় ধরনের যুদ্ধ প্রতিহত করার লক্ষ্যে এ অভিযান চালানো হচ্ছে।
কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো এ সামরিক অভিযানকে ‘ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন’ হিসেবে অভিহিত করে মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে আসছে। সূত্র: ইত্তেফাক
ফাইল ছবি: ট্রাম্প ও কমান্ডার সোলায়মান
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যা করতে ছক কষা হচ্ছে বলে জানান ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ‘রেভ্যুলশনারি গার্ডস এরোস্পেস ফোর্সের প্রধান আমিরালি হাজিজাদেহ।
যুক্তরাষ্ট্রের হাতে নিহত ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানির হত্যার বদলা নিতেই ট্রাম্পকে হত্যার ছক কষছেন বলে তিনি দাবি করেন। খবর রয়টার্সের। আমিরালি হাজিজাদেহ দেশটির টেলিভিশনকে সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ট্রাম্পের নির্দেশে কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়েছিল। এর জবাবে তাকে হত্যা করতে চাইছি আমরা।’
ইরান নতুন করে ১ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার রেঞ্জেরের ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে। এমন দাবি করে বিপ্লবী গার্ডের এই কমান্ডার বলেন, এতে পশ্চিমাদের আতঙ্ক আরও বাড়বে।
মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাবশালী সামরিক কমান্ডার ছিলেন কাসেম সোলাইমানি। ইরানের বিশেষ বাহিনী রেভ্যুলশনারি গার্ডের অভিজাত বাহিনী কুদস ফোর্সের প্রধান ছিলেন। ২০২০ সালে ট্রাম্পের নির্দেশে ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে আমিরালি আরও বলেন, সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমরা ট্রাম্পকে হত্যা করতে চাই। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এই তালিকায় আছেন। এছাড়াও যেসব মার্কিন সামরিক কমান্ডাররা সোলেইমানিকে হত্যার আদেশের সঙ্গে জড়িত তাদেরও হত্যা করা উচিত। সূত্র: যুগান্তর
মারুফ কামাল খান সোহেল
নেতৃত্ব নিয়ে কথা উঠেছে। বিশেষ করে মাওলানা মামুনুল হক এপিসোডের পর। আরও বিশেষ করে বলা যায়, কথা উঠেছে ইসলামি সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব নিয়ে। ইসলামি সংগঠনগুলোতে নেতৃত্বের প্রতি কর্মীদের আস্থা, বিশ্বাস ও আনুগত্য অকুণ্ঠ ও অগাধ। নতুন করে ফের তার প্রমাণ মিলেছে।
আমি হেফাজতের কেউ না হলেও হেফাজতের লাখ লাখ কর্মী-সমর্থক এবং তাদের সততা ও নিষ্ঠাকে সম্মান করি। তাদের অনুভূতিকে আহত করতে চাইনা। আমি মনে করি মামুনুল হক হেফাজতের একজন, তবে মামুনুল হক মানেই হেফাজত নয়। কিন্তু হেফাজতের কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরা তাদের 'মামুনুল হুজুর' আর হেফাজতকে একাকার করেই দেখছেন। তার ইজ্জতকে হেফাজতের ইজ্জত হিসেবে দেখেই তারা লড়ে যাচ্ছেন অনলাইন ও অফলাইন, সবখানে। আমি সেই সঙ্গে হেফাজতের কর্মীদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াও লক্ষ্য করেছি গভীর কৌতুহল ও অভিনিবেশ সহকারে। আমার মনে হয়েছে, নেতার প্রতি হেফাজত কর্মীদের যে অচলা ভক্তি ও প্রশ্নাতীত আনুগত্য তা অনেকটাই রেজিমেন্টেড সংগঠনের মতন।
মামুনুল হকের রিসোর্ট সংশ্লিষ্ট অঘটন, এরপর ক্রমাগত উদঘাটিত হতে থাকা তথ্য এবং সরকার ও প্রশাসনের পদক্ষেপ আমি পর্যবেক্ষণ করছিলাম। একজন নাগরিক হিসেবে মামুনুল হকের প্রাইভেসি লঙ্ঘন করে তাকে হেনস্তার প্রতিবাদ আমিও লিখে জানিয়েছি।
একথা সত্য যে, বর্তমানে বাংলাদেশে সরকার, প্রশাসন, আইন-শৃঙখলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার প্রতি সাধারণ মানুষের অনাস্থা ও অবিশ্বাস সীমাহীন। হেফাজতের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আবহের মধ্যেই ঘটে মামুনুল হকের রিসোর্ট কাণ্ড। এ ঘটনা চাউর হলে হেফাজত কর্মীরা দ্রুত বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা পুরো বিষয়টিকেই মামুনুল হককে হেয় করে হেফাজতের আন্দোলন দমাতে সরকারের একটি সাজানো-পাতানো চক্রান্ত বলেই ধরে নেন। কিন্তু পরে যখন আরো অনেক কিছু উদঘাটিত হলো এবং মামুনুল হকের নিজের স্বীকারোক্তিতেই তার নৈতিক মান অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়লো, তখনও তার প্রতি হেফাজত কর্মীদের অন্ধ সমর্থন থেকেই আমাদের অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠলো যে, এই আনুগত্য পুরোপুরি ইসলামসম্মত কিনা? সেক্যুলার, বুর্জোয়া ও গণতান্ত্রিক ধারার নেতৃত্বে নৈতিক প্রসঙ্গটিকে ততোটা গুরুত্ব দেয়া না হলেও ইসলামে নেতৃত্বের নৈতিকতার দিকটিকে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলাম সম্পর্কে আমার জ্ঞান সীমিত। সেই সীমিত জ্ঞান থেকেই আমি জানি ইসলামে নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য নিঃশর্ত নয়। বিদায় হজের অভিভাষণে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ঘোষণা করেন, যদি একজন হাবসি ক্রীতদাসও তোমাদের নেতা হন, তবে তাকেও তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মেনে চলবে যতক্ষণ পর্যন্ত সে সব কিছু আল্লাহ্'র হুকুম ও রাসুলের সুন্নাহ্ অনুযায়ী পরিচালনা করবে।
ইসলামের প্রথম খলিফা আমিরুল মুমেনীন হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) তাঁর অভিষেক উপলক্ষে দেয়া ভাষণে বলেছিলেন- "হে লোকসকল, আমাকে তোমাদের উপর নেতা করে দেওয়া হলেও আমি কিন্তু তোমাদের মধ্যকার শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি নই। সুতরাং যদি আমি সঠিক কাজ করি তবে তোমরা আমাকে সাহায্য করবে, আর যদি ভুল করি তবে আমাকে শুধরে দিবে। সততা একটি পবিত্র আমানত এবং মিথ্যা হচ্ছে বিশ্বাসঘাতকতা। .... যদি কোনো জাতির মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তাহলে আল্লাহ্ অবশ্যই তাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন। তোমরা আমাকে ততক্ষণ মেনে চলবে যতক্ষণ আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে মেনে চলি। যদি আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে মেনে না চলি, তাহলে আমার প্রতি তোমাদের আনুগত্যের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না।"
এই দিক-নির্দেশনা থেকে বুঝা যাচ্ছে- ১. নেতার আনুগত্য করতে হবে, তবে দেখতে হবে তিনি আল্লাহ্'র হুকুম ও রাসুলের সুন্নাহ্ অনুযায়ী নিজে চলছেন কিনা এবং সব কিছু পরিচালনা করছেন কিনা। ২. নেতার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের অহঙ্কার থাকবেনা, তাঁকে বিনয়ী হতে হবে। ৩. নেতাকে সঠিক কাজে সাহায্য করতে হবে। ৪. নেতা ভুল করলে সমালোচনার মাধ্যমে সেই ভুল অনুসারীদেরকেই শোধরাতে হবে। ৫. নেতাকে সততা বজায় রাখতে হবে এবং কখনো মিথ্যার আশ্রয় নেয়া চলবে না। ৬. অশ্লীলতা আল্লাহ্'র পরীক্ষা বা বিপর্যয় নিয়ে আসে। তাই, নেতাকে অশ্লীলতা পরিহার করতে হবে। এবং ৭. নেতা যদি আল্লাহ্ ও রাসুলের (সা.) পথ থেকে বিচ্যুত হন৷ তখন আর তার প্রতি অনুগত থাকার প্রয়োজন নেই।
প্রতিটি নেতা এবং তার অনুসারীদের এইসব বিষয় ও শর্ত খুবই গুরুত্বের সঙ্গে অনুধাবন ও মেনে চলা দরকার। হযরত আবু জর গিফারীর মতন প্রাজ্ঞ, জ্ঞানী ও ত্যাগী সাহাবীরা কিন্তু রাসুল(সা.)-এর কাছ থেকে 'জিন্নুরাইন' বা দু'চোখের মণি খেতাবপ্রাপ্ত আমিরুল মুমেনীন হযরত ওসমান(রা.)-এর পরিচালনা পদ্ধতি ও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
লেখক:মারুফ কামাল খান সোহেল
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)/সূত্র:বিডিপ্রতিদিন