a
ফাইল ছবি
তরুণদের বিয়েতে উদ্বুদ্ধ করতে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান একটি ডেটিং অ্যাপ চালু করেছে। গত সোমবার (১২) দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক সংবাদে এই তথ্য জানানো হয়।
নতুন এই ডেটিং অ্যাপটির নাম ‘হামদাম’। যার বাংলা অর্থ সঙ্গী। এই ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে বিয়ে করতে ইচ্ছুক তরুণ-তরুণীরা পছন্দের সঙ্গী খুঁজে পেতে এবং বাছাই করতে পারবেন। খবর আল-জাজিরা।
সংবাদ মাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের মানুষ দেরিতে বিয়ে করছে। ফলে আশঙ্কাজনকভাবে দেশটিতে জন্মহার কমছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন কর্তৃপক্ষ তরুণ-তরুণীরা যাতে দ্রুত বিয়ে করতে পারে তার জন্য এই ডেটিং অ্যাপ চালু করেছে।
অ্যাপটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তেবইয়ান কালচারাল ইন্সটিটিউট জানিয়েছে, অ্যাপটিতে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার’ (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ব্যবহার করা হয়েছে। হামদামের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, সত্যিকার অবিবাহিত যারা স্থায়ীভাবে বিয়ে ও একমাত্র জীবনসঙ্গীর সন্ধান করছে তাদের সহায়তার জন্যই অ্যাপটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার হয়েছে।
ইরানে ডেটিং অ্যাপ বেশ জনপ্রিয়। তবে দেশটির সাইবারস্পেস পুলিশের প্রধান কর্নেল আলী মোহাম্মদ রাজাবি বলেন, ইরানে এই ধরনের এটিই একমাত্র বৈধ অ্যাপ, বাকি অ্যাপগুলো অবৈধভাবে চলছে।
উল্লেখ্য, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিসহ দেশটির বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকবার দেরি করা বিয়ে করা এবং জন্মহার হ্রাসের জন্য সতর্ক করেছেন।
ফাইল ছবি
আমেরিকা আফগানিস্তানে যেরকম ‘অবমাননাকর পরাজয়ের’ সম্মুখীন হয়েছে সেই একই রকম পরিণতি ইহুদিবাদী ইসরায়েলের জন্যও অপেক্ষা করছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।
ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব আলী শামখানি এক টুইট বার্তায় এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, যে আমেরিকা নিজের পরাজয় ঠেকাতে পারে না তার পক্ষে ইসরায়েলকে নিরাপত্তা দেয়াও সম্ভব নয়।
আফগানিস্তানে আশরাফ গনি সরকারের পতন ও মার্কিন বাহিনীর আফগানিস্তান ত্যাগের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ভিয়েতনাম, আফগানিস্তান ও ইরাকে মার্কিন বাহিনীর পরাজয় প্রমাণ করে ইহুদিবাদী ইসরায়েলসহ যে কোনো দখলদার শক্তিকে একই পরিণতি ভোগ করতে হবে।
প্রায় দুই দশক আগে আফগানিস্তানে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী যুদ্ধ এবং দেশটির সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করার অজুহাতে দেশটি দখল করে মার্কিন বাহিনী। কিন্তু ২০ বছরেও তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি বরং তালেবানের অগ্রাভিযানের মুখে মার্কিন সেনারা অত্যন্ত অপমানজনকভাবে দেশটি ত্যাগ করছে।
গত ১৫ আগস্ট তালেবান রাজধানী কাবুল দখল করার পর আমেরিকা তার অবশিষ্ট সৈন্য ও কূটনীতিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার জন্য নতুন করে কয়েক হাজার সেনা পাঠিয়েছে। এসব সেনা কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আসার সাহস পাচ্ছেনা বরং বিমানবন্দরে চরম বিপর্যয়কর ও গাদাগাদি অবস্থার মধ্যে তাদেরকে কাজ করতে হচ্ছে। সূত্র: পার্সটুডে
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সাইফুল আলম, ঢাকা: পুলিশ কর্তৃক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা, শারীরিক নির্যাতন করে মিথ্যা স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও ধারণ ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন 'মেডিকো’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. মো. জোবায়দুর রহমান জনি।
আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটিতে (ডিআরইউ) নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ‘মেডিকো’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. মো. জোবায়দুর রহমান জনি। তিনি বলেন, পরিবারের ভয় এবং স্ত্রী সন্তানদের ‘ক্রসফায়ারের ভয়’ দেখিয়ে চার কোটি টাকা আদায় করা হয় তার কাছ থেকে।
ডা. মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, শুরুতেই আমি আমার সকল প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ, রাজনৈতিক সহকর্মীবৃন্দ, শুভাকাংখী, আত্মীয়-স্বজনসহ যারা ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত বিষয়ে আমাকে নিয়ে বিব্রত হয়েছিলেন তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আজকে ১৫ এপ্রিল মঙ্গলবার কতিপয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি।
এরপর কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ২ আগস্ট। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর শান্তিনগর চামেলীবাগের গ্রিন পিস অ্যাপার্টমেন্টের একটি ফ্ল্যাটে তৎকালীন সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমার নেতৃত্বে ৭/৮ জন পুলিশ প্রবেশ করেন। ঘুমন্ত অবস্থায় ওই বাসা থেকে দেশের অন্যতম মেডিকেল ভর্তি কোচিং প্রতিষ্ঠান ‘মেডিকো’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. মো. জোবায়দুর রহমান জনিকে তুলে নিয়ে যায় সিআইডির সদস্যরা। সেসময় জনির বিরুদ্ধে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ আনে সিআইডি।
এখানেই শেষ নয়, ডা. মো. জোবায়দুর রহমান জনিকে সিআইডি হেডকোয়ার্টারে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমার নেতৃত্বে বেধড়ক মারধর করা হয়। আটকের ২৯ ঘণ্টা পর আদালতে সোপর্দ করা হয় জনিকে। এরপর রিমান্ডের নামে জনির স্ত্রীকে তার স্বামীকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে সিআইডির কর্মকর্তারা হাতিয়ে নেয় ৪ কোটি টাকা। টাকা পরিশোধ করতে ভুক্তভোগীর পরিবারকে গাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি বিক্রি করতে বাধ্য করেছিলেন সিআইডির কর্মকর্তারা।
কোন ধরনের সঠিক তদন্ত ছাড়াই গ্রেফতারের প্রমাণ :
[১] সম্পূর্ণ ভুল তথ্য নিয়ে বাসা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে : তারা বাসায় এসে বলেছে আমি ডাক্তার না, আমার ওয়াইফ ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করা, এমনকি শুরু দিকে তারা আমার নামটিও সঠিকভাবে যাচাই করে নাই ।
[২] তারা বলেছে ২০০৬ সাল থেকে মেডিকো ফুলে ফেঁপে উঠেছে, অথচ মেডিকো শুরু হয় ২০১১/১২ সাল থেকে । প্রয়োজনে ট্রেড লাইসেন্স চেক করুন।
[৩] আমার নামে কোন জিডি নাই, কোন মামলা নাই, মূল মামলার এজাহারে আমার নাম নাই, কোন নিউজ নাই। হঠাৎ কিভাবে দাগী আসামী হয়ে গেলাম যে বাসায় অভিযান চালাতে হবে? শুধুমাত্র আমার পরিবারকে ভয় দেখানোর জন্য অস্ত্রসহ অভিযানের নাটক করা হয়েছিলো ।
[৪] আমি এভেলেইভেল থাকা সত্যেও আজ পর্যন্ত কোনদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়নি, এমন না যে লুকিয়ে ছিলাম, বাসা থেকে সিআইডি অফিসে যেতে দুই মি. লাগে ৷
শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ :
[১] আমাকে দুই ঘন্টা যাবৎ শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে, ফ্লোরে ফেলে পিটানো হয়েছে, ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে [২] কারাবাসের সম্পূর্ণ সময় ৪৩ দিন কারা হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে, ঠিকভাবে হাঁটতে পারতাম না
[৩] রিমান্ডে থাকা অবস্থায় ৩য় দিনে অসুস্থ অবস্থায় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছি
[৪] জামিনের পরে পপুলার হাসপাতাল ধানমন্ডিতে থেকে চিকিৎসা নিয়েছি
টাকা নেওয়ার প্রমাণ :
[১] রিমান্ডে নিয়ে আরও নির্যাতনের ভয় দেখায়, আরও মামলা দিবে, আমার ওয়াইফকে এরেস্ট করবে, মেডিকো সীলগালা করে দিবে- এগুলো বলে টাকা আদায় করেছে। ৪ আগস্ট ২০২৩ তারিখ শুক্রবার রাত ৮টা থেকে ১০টা মালিবাগের স্কাই সিটি হোটেলের সিসি টিভি ফুটেজ চেক করেন। আগারগাঁও আইসিটি ভবনের পাশের রাস্তার ভিডিও ফুটেজ চেক করেন।
[২] টাকা নেওয়া সংক্রান্ত একাধিক অডিও রেকর্ড আমার কাছে আছে।
[৩] টাকা ব্যবস্থা করতে গিয়ে আমি যা যা বিক্রি করেছি সেগুলোর তথ্য চাইলে দেওয়া যাবে।
টাকা চেয়ে হুমকি ও অব্যাহত চাপ দেওয়ার প্রমাণ :
[১] ব্যাংক একাউন্ট ফ্রিজ রাখা হয়েছে ৬ মাসের অধিক। পেপারস আছে।
[২] নতুন মামলায় মা, বাবা, স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে।
[৩] প্রতি নিয়ত হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এরপর তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে আরো বলেন, আমাকে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার :
[১] বাসা থেকে তুলে নেওয়ার সময় বলেছে পলিটিক্যাল বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিবে।
[২] চোখ বেঁধে টর্চার শুরুতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে এবং গালাগালি করা হয়েছে।
[৩] আমার পরিবারকে বার বার রাজনীতি করা নিয়ে ভয় দেখিয়েছে।
[৪] প্রেস কনফারেন্সে আমার রাজনৈতিক পরিচয় হাইলাইট করে বার বার বলা হয়েছে, প্রেস রিলিজ দেওয়া হয়েছে। ঐ সময়ের ভিডিও ও পত্রিকাগুলো চেক করেন।
[৫] তৎকালীন সিআইডি প্রধান আমার স্ত্রীর সাথে বাজে ব্যবহার করে রুম থেকে বের করে দিয়েছে। তার অভিযোগ যে তোমার হাজবেন্ড রাজনীতি করে, এ বিষয়ে কোন কথা বলা যাবে না ।
নিয়ে নয়? [৬] ২০০৫ সালের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কেন স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হল? কেন অন্য কোন বছরের পরীক্ষা নিয়ে করা হয়নি?
এমন সব প্রশ্ন রেখে সর্বশেষে ডা. জোবায়দুর রহমান বলেন, জীবনের ঝুঁকি বিবেচনায় এতদিন অভিযুক্ত সিআইডির সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারিনি। ১৫ এপ্রিল আদালতে বিভিন্ন অভিযোগে সিআইডির তৎকালীন কর্মকর্তা বর্তমানে র্যাব-১৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা, সাবেক সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া, তৎকালীন সিআইডিতে কর্মরত বর্তমানে বরিশাল মেট্রোপলিটনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেহেদি হাসান এবং সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতিকুর রহমানসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
সূত্র: কালবেলা