a
ফাইল ছবি
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে (ইউএনজিএ) রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিরাপদে, স্বেচ্ছায় এবং সম্মানের সঙ্গে মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার পক্ষে রয়েছে তুরস্ক, যারা বাংলাদেশে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘অতি জরুরি’ ভিত্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জোরদার করার দাবি জানিয়ে বলেছেন, এ সংকট প্রশ্নে প্রধান আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর নিষ্ক্রিয়তা বাংলাদেশকে মর্মাহত করেছে। অথচ, সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ শরনার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিল।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনের ফাঁকে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের উচ্চ পর্যায়ের এক আলোচনায় তিনি বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, তারা (রোহিঙ্গারা) মিয়ানমারের নাগরিক। সুতরাং, তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়ে তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারেই ফিরে যেতে হবে।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র মানবিক সংকট মোকাবেলায় মিয়ানমারের ভেতরে এবং বাইরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ক্ষতিগ্রস্থ রোহিঙ্গাদের জন্য অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে প্রায় ১৮ কোটি মাকিন ডলার প্রদানের ঘোষনা দিয়েছে।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড মঙ্গলবার বলেছেন, ‘এই সহায়তার ১৫ কোটি ৮ লাখ মার্কিন ডলার বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য।’
ফাইল ছবি
চারটি এইচ–৬ বোমারু বিমানসহ তাইওয়ানের আকাশসীমায় চীনের ১৯টি যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রবিবার দেশটির পক্ষ থেকে এই অভিযোগ করা হয়।
তাইওয়ান দাবি করেছে, সেগুলোর মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম বোমারু বিমানও ছিল।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করা যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে চারটি এইচ–৬ বোমারু বিমান ছিল। সেগুলো পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে সক্ষম। এছাড়া, বিমানগুলো সাবমেরিন ধ্বংস করতেও ব্যবহার করা হয়।
চীনা জঙ্গি বিমানগুলো তাইওয়ানের ‘প্রাতাস’ দ্বীপের উত্তর–পূর্ব অঞ্চলের উপর দিয়ে উড়ে যায়। সেগুলোর যাত্রাপথের একটি মানচিত্রও প্রকাশ করেছে তাইওয়ান।
অনুপ্রবেশের পর চীনা যুদ্ধবিমানগুলোকে সতর্ক করতে তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো তৈরি রাখা হয়েছিল বলে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। পাশাপাশি দেশটির কয়েকটি ফাইটার বিমানও পাঠানো হয়।
তবে তাইপের এসব অভিযোগের ব্যাপারে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি চীন। তাইওয়ানকে নিজের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে বেইজিং। এর আগেও জুনে তাইওয়ানের আকাশসীমায় চীনের ২৮টি সামরিক বিমান অনুপ্রবেশ করেছিল।
প্রতিকী ছবি: সংগৃহীত
নিউজ ডেস্ক: রাজনৈতিক যুদ্ধের গুরুত্ব আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায় যখন জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের প্রধান স্থপতি ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এর প্রয়োজনীয়তা প্রকাশ্যে উল্লেখ করেন। তিনি সরাসরি পুরনো প্রথাগত রাজনীতির বিপরীতে নতুন ধাঁচের রাজনীতি স্থাপনের প্রয়াসে একটি রাজনৈতিক যুদ্ধের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেন, যা আগামীতে একটি নতুন বাংলাদেশের পথ তৈরি করতে পারে।
তবে তিনি এই নতুন ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে কিছুই স্পষ্ট করেননি। পুরো জাতি এখন ভবিষ্যৎ রাজনীতির দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে এবং এই সম্ভাব্য রাজনৈতিক যুদ্ধের উদ্দেশ্য সম্পর্কে একেবারে অন্ধকারে রয়েছে।
গত পাঁচ দশকে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক কাঠামো রাতারাতি কোনো যুদ্ধ ঘোষণার মাধ্যমে বদলে দেওয়া সম্ভব নয়, বিশেষত যখন জাতি এমন একটি পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত নয়। এই ধরনের ঘোষণাগুলি সাধারণ মানুষের কাছে একটি উচ্চাভিলাষী ধারণা মনে হতে পারে এবং সমাজে পরিবর্তনের উদ্দেশ্য নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।
বিপ্লবের ইতিহাস আমাদের বলে, পুরনো ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নতুন ব্যবস্থার উত্থান ধাপে ধাপে ঘটে। প্রতিটি বিপ্লব, যা অতীতে ঘটেছে, সামাজিক কাঠামোয় একটি মৌলিক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। সাম্প্রতিক ইরানের ইসলামী বিপ্লব একটি উজ্জ্বল উদাহরণ, যেখানে ১৯৭৯ সালে ইসলামী রাজনীতির মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসনকে উৎখাত করা হয়েছিল। সেই বিপ্লবের পর থেকে নতুন ব্যবস্থাটি পুরনো ব্যবস্থার মানুষদের বিরুদ্ধে এবং বিদেশি আগ্রাসীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক যুদ্ধ চালিয়ে আসছে।
বাংলাদেশের মানুষ এখনো খুব স্পষ্ট নয় যে কী ধরণের নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চাওয়া হচ্ছে, যা পুরনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করবে। জাতিকে এই পরিবর্তনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করা প্রয়োজন; অন্যথায়, এটি উল্টো ফল বয়ে আনতে পারে এবং শত্রুরা এই সুযোগে উভয় পক্ষের মধ্যে ফাটল ধরিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারে।
রাজনীতিতে মাইনাস ফর্মুলা ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে না। বরং, রাজনৈতিক যুদ্ধ দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে এবং সমাজ তার শিকার হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে জাতি মারাত্মক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
তরুণ প্রজন্মের উচিত দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনা করা, বিশেষ করে যখন তারা রাজনীতিতে একটি মৌলিক পরিবর্তনের পথে হাঁটতে চায়। অভিজ্ঞতা এবং পরিপক্কতা নতুন বাংলাদেশ গড়তে অপরিহার্য। শুধুমাত্র তরুণরা সমাজ পরিবর্তনে সক্ষম নয়; তাদের উচিত অভিজ্ঞ ও প্রবীণদের গুরুত্ব উপলব্ধি করা।
আবেগ দিয়ে কোনো জাতি দীর্ঘমেয়াদে চলতে পারে না। বরং এটি জাতির জন্য গভীর সংকট তৈরি করতে পারে। আমরা ভুলে যেতে পারি না যে, প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদ উভয় দিক থেকে আমরা দরিদ্র একটি জাতি। হঠাৎ কোনো পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত জাতিকে বিপদের মুখে ফেলতে পারে, এমনকি যদি তা সমাজের জন্য ভালোও হয়। যে কোনো ভুল পদক্ষেপ জাতির জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
তরুণ প্রজন্ম নিঃসন্দেহে দেশপ্রেমিক এবং প্রতিশ্রুতিশীল, কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে, যা দক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অন্যথায়, দীর্ঘমেয়াদে জনগণই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আমরা কি সঠিক পথে এগোচ্ছি, নাকি ভ্রান্ত পথে, তা জাতির জন্য একটি বড় চিন্তার বিষয়। আমাদের জন্য বিকল্প নেই, কিন্তু পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় কাঠামোগত পরিবর্তন সংলাপের মাধ্যমে হওয়া উচিত, যুদ্ধের মাধ্যমে নয়।
বর্তমানে যদি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার নামে কোনো শত্রুতাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করা হয়, তাহলে তা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত শান্তি ও ঐক্য ধ্বংস করে দেবে।
প্রফেসর ড. এস কে আকরাম আলী
কলামিস্ট ও লেখক, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন