a
সংগৃহীত ছবি
আমেরিকার সীমান্তে মেক্সিকোর শহর রেনোসায় গালি চালিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে রাস্তার ১৮ পথচারীকে হত্যা করে। স্থানীয় সময় শনিবার বিকালে অনেকটা সিনেমার দৃশ্যের মতো ঘটনাটি ঘটে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনো পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আততায়ী পলাতক। বেশকিছু মানুষ আহত অবস্থায় হাসপাতালে। পুলিশ আততায়ীর খোঁজে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে।
স্থানীয় সময় শনিবার বিকালে একটি এসইউভি গাড়ি চড়ে আততায়ী গুলি ছুড়তে ছুড়তে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রেনোসার একাধিক এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ।
পুলিশ গাড়িটিকে ধাওয়া করেও ধরতে পারেনি। তবে সীমান্ত অঞ্চল সিল করে দেওয়া হয়েছে। বর্ডারগার্ড, সেনা ও পুলিশ গোটা এলাকায় চিরুনি অভিযান চালাচ্ছে। এর সঙ্গে ড্রাগ মাফিয়া বা কার্টেলদের সম্পর্ক আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে স্থানীয় পুলিশ।
অন্য আরেক ঘটনায় আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনিও পুলিশের ওপর আক্রমণ চালিয়েছিল বলে প্রশাসনের দাবি। পুলিশের গুলিতেই তার মৃত্যু হয়েছে।
মেক্সিকো প্রশাসন জানিয়েছে, আততায়ীকে ধরার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুতই তাকে গ্রেফতার করা হবে। তবে কেন, কে এভাবে গুলি ছুড়লো, তা এখনো স্পষ্ট নয়। সূত্র:বিডি প্রতিদিন
ফাইল ছবি
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসির নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার একটি প্রতিনিধি দল জাপোরিঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট পরিদর্শনে যায়। রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্তির কাছে রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, যতক্ষণ তার দল প্লান্টে ছিল এই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অসংখ্য তথ্য সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছেন তারা।
তিনি আরও বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ যে জিনিস দেখার দরকার ছিল সেটি তারা দেখেছেন। আরআইএ নভোস্তি জানিয়েছে, পরিদর্শন শেষে প্লান্ট ছেড়ে চলে গেছেন রাফায়েল গ্রোসি। তবে ওই সময় জানা যায়নি তার পুরো দলই প্লান্ট ছেড়ে চলে গেছে কিনা। পরবর্তীতে জানা যায় আণবিক সংস্থার অন্তত পাঁচজন প্লান্টে রয়ে গেছেন। তারা ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবেন।
এদিকে এর আগে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে প্রতিনিধি দলকে নিয়ে প্লান্টের দিকে রওনা দেন গ্রোসি। কিন্তু প্লান্ট থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর একটি চৌকিতে তাদের তিন ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। তাদের বলা হয় জাপোরিঝিয়ায় গোলাবর্ষণ হয়েছে; সেখানে যাওয়া নিরাপদ হবে না।
কিন্তু রাফায়েল গ্রোসি জানান ঝুঁকি থাকলেও তিনি প্লান্টে যাবেনই। সূত্র: সিএনএন, আল জাজিরা
সংগৃহীত ছবি
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজনৈতিক ঐক্য সংকটকালীন সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যে কোনো সংকট মোকাবিলায় এটি একেবারে অপরিহার্য। শেখ হাসিনা-পরবর্তী সময়ে নতুন কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার আশা আমরা এখনো পাইনি। বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি, দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই আরও তীব্র হয়েছে। জাতি তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছে এবং এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
এই সংকটময় সময়ে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। জাতি আশা করে, এই দুই দলের মধ্যে ঐক্য হবে, কারণ এর কোনো বিকল্প নেই।
১৯৭৫ সালের নভেম্বর বিপ্লবের পর যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছিল, তা ছিল দেশের রাজনৈতিক ঐক্যের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। নবগঠিত বিএনপির নেতৃত্বে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক ঐক্য সেই সময়ে নবজাতীয়তাবাদী শক্তি এবং বিদ্যমান ইসলামী রাজনৈতিক শক্তির একটি সফল মেলবন্ধন হিসেবে কাজ করেছিল।
জিয়াউর রহমানের দক্ষ নেতৃত্বে সৃষ্ট রাজনৈতিক ঐক্য অল্প সময়ের মধ্যেই সকল সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছিল। এটি সম্ভব হয়েছিল শুধুমাত্র ঐক্যের কারণেই।
জাতীয় ঐক্যকে জাতীয় শক্তির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জাতি যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তবে কোনো কিছুই তাদের ক্ষতি করতে পারে না। এটি একটি জাতির জন্য সুপার পাওয়ার হিসেবে কাজ করে।
সম্প্রতি রাজধানীতে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মানুষের জমায়েত এবং দুই ছাত্র দলের সংঘর্ষ স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, দেশের শত্রুরা অরাজকতা সৃষ্টি করতে সক্রিয় রয়েছে।
বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির একের পর এক অবনতি সরকার এবং জাতির জন্য কোনো শুভ লক্ষণ বহন করে না। বড় আকারের আইনশৃঙ্খলা সংকট দেখা দেওয়া অসম্ভব নয়, যা বর্তমান সরকারের স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সমর্থন সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শক্তি জোগাতে পারে। তবে সরকারকে তাদের কাজের গতি বাড়াতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
এই মুহূর্তে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর ঐক্য অপরিহার্য, নতুবা অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত শত্রুরা এর সুযোগ নিতে দ্বিধা করবে না। বিপ্লবের সময় কয়েকশো মানুষের জীবন এবং জনগণের অমানবিক কষ্টের মাধ্যমে অর্জিত সুযোগ কোনোভাবেই উপেক্ষা করা উচিত নয়। এই সময়ে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য উভয় দলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
জাতীয় স্বার্থকে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। রাজনৈতিক ঐক্য ছাড়া জাতিকে অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগত হুমকির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।
জাতীয় সংকটকালে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কোনো দলেরই এটি উপেক্ষা করা উচিত নয়। বিএনপি, যেহেতু দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল, তাদের দায়িত্ব অন্যান্য রাজনৈতিক দলের তুলনায় অনেক বেশি। যদি তারা ১৯৭৫ সালের মতো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার গুরুদায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়, তবে ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।
বিএনপিকে বিচক্ষণতার সঙ্গে জাতিকে নেতৃত্ব দিতে হবে এবং তারা কোনোভাবেই ভুল করার সুযোগ নিতে পারবে না। তারা ভুলে গেলে চলবে না যে, পুরো জাতি তাদের যোগ্য নেতৃত্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তাদের অবশ্যই সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে একটি নিরাপদ এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা যায়।
যেমনটি তারা অতীতে প্রমাণ করেছিল, এবারও তাদের সেই সামর্থ্য প্রমাণ করতে হবে, ইনশাআল্লাহ।
লেখক: প্রফেসর ড. এস কে আকরাম আলী
সম্পাদক, মিলিটারি হিস্ট্রি জার্নাল