a
ফাইল ছবি
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত ২১ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডোনেটস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর রুশ ভাষাভাষী অধ্যুষিত দুটি অঞ্চল একত্রে ‘ডোনবাস’ নামে পরিচিত। স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পর অঞ্চল দুটিকে বেসামরিকীকরণের লক্ষ্যে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহর দখলে নিয়েছে রুশ বাহিনী। তবে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী নিজেদের সাধ্যমতো প্রতিরোধী গড়ে তোলারও চেষ্টা করছে। এদিকে, আমেরিকা ও ইউরোপী ইউনিয়নের দেশগুলো এই অভিযানকে ‘পুতিনের ভূমি জবরদখল’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে যারা ভাবছেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাবপুষ্ট যে বিশ্বব্যবস্থা ছিল, তা আবার ফিরে আসবে— তারা ভ্রান্তির মধ্যে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। তার মতে এই যুদ্ধ এক সময় থেমে যাবে ঠিকই, তবে আগের সেই বিশ্বব্যবস্থা আর ফিরে আসবেনা।
রাশিয়ার রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ও বন্দর নগর সেন্ট পিটার্সবার্গে শুরু হয়েছে সেন্ট পিটার্সবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামের (এসপিআইইএফ) সম্মেলন। শুক্রবার সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘পশ্চিমা অভিজাতরা ভাবছে (যুদ্ধের আগ পর্যন্ত) তাদের শাসিত ও প্রভাবপুষ্ট বিশ্ব ব্যবস্থা ছিল, তা চিরস্থায়ী এবং যুদ্ধ শেষ হলে তা ফের ফিরে আসবে; কিন্তু তারা আসলে এখনও অতীতের স্মৃতিতে ঝুলে আছে।’
‘কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। কেউ যদি ভেবে থাকেন যে অশান্ত এই সময়ের শেষে সবকিছু আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে, তাহলে তিনি ভ্রান্তির মধ্যে রয়েছেন; এমন হওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এই মুহূর্তে বিশ্ব যে পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে—তা মৌলিক, গভীর ও অপরিবর্তনীয়।’
‘১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন ও শীতল যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে ঈশ্বরের বার্তাবাহক ভাবা শুরু করল; এমন এক বার্তাবাহক, যার কোনো বাধা নেই, বাধ্যবাধকতা নেই— কেবল আছে স্বার্থ; আর সেসব স্বার্থ তারা উচ্চারণ করত ধর্মীয় শ্লোকের মতো।’
‘কিন্তু তাদের এই উত্থানের ভেতরেই সুপ্ত ছিল ভবিষ্যৎ পতনের সম্ভাবনা। কারণ, আন্তর্জাতিক রাজনীতি কেবল একটি জাতির স্বার্থে পরিচালিত হতে পারে না। এমনকি, সেই দেশ যদি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হয়, তবুও নয়।’
‘গত কয়েক দশকে বিশ্ব জুড়েই শক্তির নতুন নতুন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে এবং নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার পূর্ণ অধিকার তাদের রয়েছে। এটা অবশ্যই স্বীকার করে নিতে হবে।’ সূত্র: আরটি
ফাইল ছবি
শুক্রবার আব্রাহাম অ্যাকর্ড চুক্তির স্মরণে আয়োজিত সভায় এ তথ্য জানানো হয়। খবর মিডল ইস্ট আইয়ের।
খবরে বলা হয়, আরও আরব দেশকে বর্বর ইহুদীবাদি ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে উৎসাহিত করবে বাইডেন প্রশাসন।
আব্রাহাম অ্যাকর্ড হচ্ছে ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) কর্তৃক ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট সই করা একটি সম্মতিপ্রাপ্ত চুক্তি। ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যস্থতায় এ চুক্তি সই হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মরক্কোকে অনুসরণ করার জন্য আমরা আরও দেশকে উৎসাহিত করবো।
ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ বলেন, যে কোনো দেশ আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত গত বছরের সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প প্রশাসনের শেষ মাসে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সম্মত হয়। এরপর বাহরাইন, সুদান এবং মরক্কো আরব আমিরাতের পথ অনুসরণ করে বর্বর ইহুদি রাষ্ট্রটির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে।
বিনিময়ে ট্রাম্প প্রশাসন পশ্চিম সাহারার ওপর মরক্কোর কর্তৃত্বের স্বীকৃতি দেয়, সুদানকে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের তালিকা থেকে বাদ দেয় এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করে।
এদিকে ব্লিঙ্কেন ফিলিস্তিনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে ইচ্ছের কথা জানান, যা ট্রাম্পের প্রশাসনের সময় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং গাজার নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠী হামাস কেউই ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টিকে সেসময় ভালোভাবে নেয়নি। তারা ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টিকে ‘পিঠে ছুরি মারার’ সঙ্গে তুলনা করেছে। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক) প্রায় ৬ হাজার ৬৫১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (০৮ জুন) এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আজকের সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
এম এ মান্নান জানান, এসব প্রকল্পের অর্থায়নে সরকার দেবে ৫ হাজার ২১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৭৯৮ কোটি ৩ লাখ টাকা এবং বিদেশি ঋণ ৬৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
জানা গেছে, একনেকে অনুমোদিত এসব প্রকল্পগুলোর মধ্যে নয়টি প্রকল্পই নতুন এবং বাকি একটি সংশোধিত।
এসব নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘বরিশাল (দিনারেরপুল) লক্ষ্মীপাশা-দুমকি সড়ক (জেড-৮০৪৪) এর ২৭তম কিলোমিটারে পান্ডব-পায়রা নদীর উপর নলুয়া-বাহেরচর সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প। এ প্রকল্পটিতে ১ হাজার ২৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ হবে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত।
এরপর রয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘মধুপুর-ময়মনসিংহ জাতীয় মহাসড়ক (এন-৪০১) যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প। এ প্রকল্পটি ১ হাজার ১০৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা খরচে বাস্তবায়ন করা হবে। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘চিলমারী এলাকায় (রমনা, জোড়গাছ, নয়ারহাট) নদীবন্দর নির্মাণ’ প্রকল্পটি ২৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা খরচে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ‘বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্পটি ২১৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা খরচে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলাধীন ব্রাহ্মণগ্রাম-হাটপাঁচিল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ এবং বেতিল স্পার-১ ও এনায়েতপুর স্পার-২ শক্তিশালীকরণ কাজ’ প্রকল্পটি ৬৪৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা খরচে বাস্তবায়ন করা হবে। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ঠাকুরগাঁও জেলার টাঙ্গন ব্যারেজ, বুড়ি বাঁধ ও ভুল্লি বাঁধ সেচ প্রকল্পসমূহ পুনর্বাসন, নদীতীর সংরক্ষণ ও সম্মিলিত পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণ’ প্রকল্পটির খরচ ২৯৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘জৈব প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষিবীজ উন্নয়ন ও বর্ধিতকরণ’ প্রকল্পটির খরচ ৭২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে ধান শুকানো, সংরক্ষণ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদিসহ আধুনিক ধানের সাইলো নির্মাণ (প্রথম ৩০টি সাইলো নির্মাণ পাইলট প্রকল্প)’ প্রকল্পটির খরচ ১ হাজার ৪০০ কোটি ২২ লাখ টাকা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে
এছাড়া জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ‘বাখরাবাদ-মেঘনাঘাট-হরিপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ’ প্রকল্পটির খরচ অনুমোদন দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৩০৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
সর্বশেষ এবং সংশোধিত প্রকল্পটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ‘বিপিএটিসি’র প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্প। এ প্রকল্পের প্রথম সংশোধন অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে প্রকল্পটির খরচ ৩৪৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ২০৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুনে বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও এর মেয়াদ তিন বছর বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।