a
সংগৃহীত ছবি
সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হাসাকা প্রদেশে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি বহরকে আটকে দিয়েছে সেই এলাকার সাধারণ জনগণ। সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের মোতায়েনের কারণে দেশটির জনগণ যে প্রচণ্ড সংক্ষুব্ধ সামরিক বহর আটকে দেয়ার ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, মার্কিন সামরিক বহরে চারটি গাড়ি ছিল কিন্তু জনতার বাধা ও অনড় অবস্থানের কারণে মার্কিন সেনারা বহর নিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়। এসময় লোকজন মার্কিন সামরিক বহরকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, মার্কিন সামরিক বহরের সঙ্গে কুর্দি গেরিলাদের একটি গাড়িও ছিল। সিরিয়ার কুর্দি গেরিলাদেরকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে আসছে আমেরিকা।
এদিকে, গতকাল (মঙ্গলবার) একটি বিশাল সামরিক বহরে করে সিরিয়ার হাসাকা প্রদেশ থেকে কয়েক টন গম ইরাকের আধা-স্বায়ত্ত্বশাসিত কুর্দিস্তানে নেয়া হয়। ওই বহরে অন্তত তিন ডজন ট্রাক ছিল। কুর্দি প্রভাবিত সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস বা এসডিএফ’র গেরিলারা এসব ট্রাক পাহারা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।
ফাইল ছবি: আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন
ইসরায়েল-আমেরিকার যৌথ সেনাবাহিনী গাজাসহ বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরগুলোতে বোমা মেরে শত শত ফিলিস্তিনি নারী-শিশুকে হত্যা করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোও যখন আমেরিকা থেকে তাদের মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, তখন আমেরিকার কিছুটা বোধোদয় হয়েছে।
ইসরায়েলের যুদ্ধবাজমন্ত্রী বেনিগন্টিজ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে বিরোধের জেরে গত পরশু পদত্যাগ করেন। এরপরই গাজা ডিভিশনের প্রধান কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আভি রোজনফিল্ডও নেতানিয়াহুর উপর অসন্তোষ হয়ে পদত্যাগ করেন। এরপর হামাসের ফাঁদে আরও ৪ ইসরায়েলী সেনা নিহত হওয়ার পর ইসরায়েল সেনাদের মধ্যে দারুণ আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে, জাতিসংঘ কালো তালিকায় ইসরায়েলী সেনাবাহিনীকে অন্তর্ভূক্ত করায় আমেরিকাও এক প্রকার বোবা হয়ে গেছে। ঘনিষ্ট বন্ধু রাষ্ট্রগুলো যখন আমেরিকার দু'মুখো নীতিকে উপেক্ষা করছে, তখন উপয়ান্তর না পেয়ে ইসরায়েলের অনুরোধেই হয়তোবা আমেরিকার প্রস্তাবে সর্বশেষ চতুর্থবারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস করা হয়।
গাজায় জাতিসংঘ কর্তৃক পরিচালিত সেইবাত শরণার্থী শিবিরে শত শত ফিলিস্তিনী শিশুকে ইসরায়েলী সেনারা হত্যা ও আহত করায় জাতিসংঘ সর্বশেষ ক্ষোভের বর্হিপ্রকাশ ঘটায় ইসরায়েল সেনাবাহিনীকে কালো তালিকাভূক্ত করার মাধ্যমে।
রাশিয়াসহ অন্যান্য আরব দেশগুলো বিগত তিনবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করা হয়েছিল, প্রতিবারই যুক্তরাষ্ট্রের ছত্রছায়ায় ইসরায়েল প্রত্যাক্ষান করেছে।
অবশেষে ইসরায়েল সেনাবাহিনী ৮ মাস যুদ্ধ করে কোন সুবিধা করতে না পারায় এবং নিজেদের আভ্যন্তরীন বেসামাল পড়ায় শেষটায় যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারস্থ হলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন পক্ষগুলোর মোড়লদের সাথে বৈঠকের জন্য ছুটাছুটি করছেন।
এখন মুখ রাখার চেষ্টায় আমেরিকা বলছে, যুদ্ধবিরতি কেমন হবে সে বিষয়ে পরিকল্পনার জন্য ইসরাইলে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি নাকি ইসরাইলের বিরোধী দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথেও আলোচনা করবেন। আসলে ইসরায়েলের ভেতরে বহুমুখী সমস্যা মিটাতে অর্থাৎ তীরে যেন তরী না ডুবে, সেই কাজটিই করার চেষ্টা করছেন। কারণ ইসরায়েলের অসম্মানজনক পরাজয় অর্থ আমেরিকারই পরাজয় এবং ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যে যে আমেরিকার একচ্ছত্র অধিকার ছিল তা নিমেষেই নি:শেষ হয়ে যাবে, যেমন হয়েছিল আফগানিস্তানে।
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধেও আমেরিকার নতজানু পরাজয় প্রায় দ্বারপ্রান্তে! এমতাবস্থায় বলা হচ্ছে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে ৮ মাস ধরে চলা যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতেই তার নাকি এই সফর! মঙ্গলবার আরবভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
সর্বশেষ, ৬ সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনাকে সমর্থন করে একটি মার্কিন খসড়া করা হয়েছে, যার অধীনে ইসরাইল গাজার ক্যাম্পগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে এবং হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলার সময় জিম্মি করাদের মুক্ত করে দেবে।
ব্লিঙ্কেন মঙ্গলবার তেল আবিবে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার থেকে পদত্যাগ করা সাবেক সেনাপ্রধান বেনি গ্যান্টজ এবং বিরোধী নেতা ইয়ার ল্যাপিডের সঙ্গে দেখা করবেন।
এদিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেছেন, নিরাপত্তা পরিষদ ‘শান্তির পক্ষে ভোট দিয়েছে’। সোমবার এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জাতিসংঘের ভোটকে ‘সঠিক পথে একটি পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
হামাস ইসরাইল যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই অঞ্চলে অষ্টম বারের মতো সফর করতে যাচ্ছেন ব্লিঙ্কেন। এ সফরে তিনি জর্ডান এবং কাতারেও যাবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় আক্রমণ শুরুর পর থেকে ৮ মাসে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৭ হাজার ১২৪ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ফাইল ছবি: পি কে হালদার
প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) তদন্ত কর্মকর্তাদের জেরার মুখে দফায় দফায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। ভারতের অর্থ-সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি) পি কে হালদারকে জেরা করছে। পি কে হালদারের কান্নার তথ্য ইডি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আজ রোববার দুপুরে এক ইডি কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করার আগে থেকেই জেরা শুরু হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর ২ ঘণ্টা বিরতি দেওয়া হয়। এরপর আবারও ম্যারাথন জেরা শুরু হয়েছে। জেরার মুখে তদন্ত কর্মকর্তাদের সামনে দফায় দফায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পি কে হালদার।
আজ রোববার সকালে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন কলকাতার নগর দায়রা আদালত। এর ফলে তাকে রিমান্ডে নিয়েছে ইডি।
এর আগে গতকাল শনিবার পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হন পি কে হালদার। শনিবার ইডি আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরমধ্যে চারজন বাংলাদেশি। তারা হলেন- প্রীতিশ কুমার হালদার ও তার স্ত্রী (নাম জানা যায়নি), উত্তম মিত্র ও স্বপন মিত্র। এছাড়া প্রণব হালদার নামে এক ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করে ইডি। প্রণব সেখানে সরকারি চাকরি করেন। পরে সঞ্জীব হালদার নামে একজনকে আটক করার কথা জানায় ইডি। সঞ্জীব বাংলাদেশ গ্রেপ্তার সুকুমার মৃধার জামাই।
ইডির অভিযানে পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ২০টি বাড়িসহ পি কের বিপুল সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে। বাড়িগুলো থেকে জমির দলিলসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথি জব্দ করা হয়েছে। সূত্র: সমকাল