a
ফাইল ছবি
বছর তিনেক আগে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোকে 'মৃতপ্রায়' বলে মন্তব্য করেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ওই সময় দ্য ইকোনমিস্ট সাময়িকীকে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ইউরোপ নিজের নিরাপত্তার জন্য আর ন্যাটোর ওপর নির্ভর করে না। তার এ মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে হইচই পড়ে গিয়েছিল।
এরপর একে একে বেশকিছু বৈশ্বিক সংকট দেখা দেয়। এর মধ্যে আছে- করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ ও জ্বালানি সংকট।
বিশেষ করে এক বছর আগে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে রুশ জ্বালানির ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপে জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। মহাদেশটি এ সংকট মোকাবিলায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে দ্রুত ঝুঁকে পড়ে। কিন্তু নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়ে মৌলিক প্রশ্নে ইউরোপ এখনো দ্বিধা-বিভক্ত।
হেলেনিক ফাউন্ডেশন ফর ইউরোপিয়ান অ্যান্ড ফরেন পলিসির পরিচালক জর্জ পাগুলাতোস আলজাজিরাকে বলেন, 'আমি মনে করি, ইউরোপের ঐক্য দুর্বল হয়ে গেছে। ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘির ইতালি মিলে তাদের পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করতেন। তারা ইউরোপের একতা তৈরিতে চালকের ভূমিকা পালন করেছিলেন।'
কিন্তু গত জুলাইয়ে আস্থা ভোটে হেরে যান দ্রাঘি। তার পরিবর্তে ক্ষমতায় আসেন চরম ডানপন্থি ও জর্জিয়া মেলোনি।
গত এপ্রিলের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ফ্রান্সে ম্যাক্রোঁবিরোধীরা জয়লাভ করেন। ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা দিতে অনীহা প্রকাশ করায় জার্মানিকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
জর্জ পাগুলাতোস মনে করেন, ইউরোপের মনোবল এর কেন্দ্র থেকে সরে মহাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলে সরে গেছে। সেখানকার দেশগুলো চায় যেকোনো মূল্যে ইউক্রেন জয়ী হোক এবং রাশিয়া পরাজিত হোক।
ফিনিশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের রিসার্চ ফেলো মিনা অলান্দার আলজাজিরাকে বলেন, 'বাল্টিক, নর্ডিক ও মধ্য ইউরোপের দেশগুলো এখন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে আগের চেয়ে বেশি ন্যাটোমুখী। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তাদের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অংশীদার। ফ্রান্স ও জার্মানি এ বিষয়ে নীরব।'
গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পোল্যান্ডে এসে সেই দেশের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, 'বৈশ্বিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষমতা আমেরিকার আছে।'
প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর থেকে পূর্ব ইউরোপের সদস্য দেশগুলোতে সেনা সংখ্যা ৪ গুণ বাড়িয়েছে। পাশাপাশি আরও ৩ লাখ সেনাকে প্রস্তুত রাখার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
তবে ইউক্রেন যুদ্ধের আগে ইউরোপ নিজেদের প্রতিরক্ষা নিয়ে একতা দেখাতে পারেনি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেফ বোরেল বলেছিলেন, 'যারা আমাদের হুমকি দেয় তাদের ওপর চাপ সৃষ্টির ক্ষমতা আমরা রাখি। আমরা শক্তিশালী হচ্ছি।'
তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সর্বসম্মতভাবে নিষেধাজ্ঞা দিতে ইইউকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। এমনকি ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা পাঠনোর বিষয়েও এই মহাদেশীয় জোটে বিভেদ দেখা গেছে।
গত জানুয়ারিতে জরিপ সংস্থা ইউরোস্কোপিয়া জানিয়েছে, অস্ট্রিয়ায় ৬৪ শতাংশ, জার্মানির ৬০ শতাংশ, গ্রিসের ৫৪ শতাংশ, ইতালি ও স্পেনের ৫০ শতাংশ মানুষ ভূমির বিনিময়ে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিতে পৌঁছানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি
রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ চালালে কী করবে আমেরিকা, তা স্পষ্ট করলো জো বাইডেন। বর্তমানে চরম উত্তেজনা চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। ইউক্রেন সীমান্তে ইতিমধ্যে হাজার হাজার সৈন্য মোতায়েন করেছে রাশিয়া। যেকোনও সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে ভ্লাদিমির পুতিন-এমন আশঙ্কা করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউক্রেনে হামলা চালালে কঠোর নিষেধাজ্ঞার কথা বলেছে।
তবে এর জবাবে রাশিয়াও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানিয়ে দিয়েছে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে যেকোনও পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে দেশটি।
এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেই এবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এসময় তাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করে বসলে আমেরিকা ও তার মিত্ররা নিশ্চিতভাবে কঠোর জবাব দেবে। হোয়াইট হাউস এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনা ছাড়াও দুই নেতার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি। সূত্র: সিএনএন/বিডি প্রতিদিন
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
কামরুল হোসেন, ঢাকা: ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগের মাধ্যমে সম্মাননা এবং পুরস্কার প্রদান করলেন জাতীয় কবিতা পরিষদ। জুলাই-আগস্ট ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার উদ্দেশ্যে এবারের জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ২০২৫ প্ৰদান করা হয় বীর শহীদদের পরিবারের সদস্যদের হাত দিয়ে।
আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাব ‘জহুর হোসেন মিলনায়তন’-এ ‘জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ২০২৫' প্রদান করা হয়। কবিতায় কবি মতিন বৈরাগী, শিশু সাহিত্যে ‘ফয়েজ আহমেদ পুরস্কার' কবি হাসান হাফিজ এবং ‘জাতীয় কবিতা পরিষদ সম্মাননা পুরস্কার' কবি জুলফিকার হোসেন তারা'কে প্রদান করা হয় ।পুরস্কার প্রদান করেন জুলাই-আগস্ট ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ'র বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, শহীদ গোলাম নাফিজের বাবা মোঃ গোলাম রহমান, শহীদ আলভীর বাবা মোঃ আবুল হাসান এবং শহীদ ইয়াসিনের মা শিল্পী আক্তার।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি শাহীন রেজা এবং জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রচার সম্পাদক, কবি আসাদ কাজল। অনুষ্ঠানে দেশ বরেণ্য লেখক, কবি, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণ এবং বিশেষ সম্মাননা প্রদান করার পর জুলাই-আগস্ট ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ'র বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, শহীদ গোলাম নাফিজের বাবা মোঃ গোলাম রহমান, শহীদ আলভীর বাবা মোঃ আবুল হাসান এবং শহীদ ইয়াসিনের মা শিল্পী আক্তার বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এই সময় তারা সবাই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। উপস্থিত সকল সাংবাদিকদেরকে অভ্যুত্থানের সময় যারা নিহত হয়েছেন এবং শহীদ হয়েছেন তাদের বিচার যেন বিলম্বিত না হয় সেই প্রত্যাশা করেন। শহীদদের জন্য কেউ ভুলে না যায় এবং তাদের রক্ত যেন বৃথা না যায় সেই কামনা করেন।