a
ছবি:মুক্ত সংবাদ প্রতিদিন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের-(জবি) ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী নিজ বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে হয়রানি ও মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন। ২০১৭-১৮ সেশনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা এই অভিযোগের বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাড়িয়ে বিচার দাবি করেন।
ফারজানা অভিযোগ, ২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর শিক্ষক জনাব আবু শাহেদ ইমন নিকতনের ব্লক-এ এর দুই নাম্বার রোডের ৮২ নাম্বার বাসায় অবস্থিত ব্যক্তিগত অফিস কার্যালয়ে তাকে ডেকে ফ্রেন্ডশিপের প্রস্তাব দিয়ে শারীরিকভাবে নিগৃহীত করেন।
ফারজানার ভাষায় শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন তার শরীরে হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে বলেন, আমাকে দেখে তোমার কি কখনও কিছু অনুভব হয়নি? এ কথা বলতে বলতে তিনি নিজের চেয়ার থেকে উঠে এসে আমার চেয়ারের পেছনে এসে যৌন অঙ্গভঙ্গিতে আমার ঘাড়ে হাত দিয়ে মেসেজ করতে শুরু করেন। তিনি তার যৌন তাড়না প্রকাশ করে বলতে থাকেন ভয় পেয়ো না। এখানে কেউ দেখতে পাবে না, কেউ শুনতেও পাবে না। উনার আচরণে আমি ভয় পেয়ে যাই এবং তৎক্ষণাৎ আমার চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াতেই আবারও আমাকে জোরপূর্বক শক্ত করে জড়িয়ে ধরেন। আমাকে তার সাথে নোংরা কাজে লিপ্ত হওয়ার জোর করেন। আমাকে নিজেকে রক্ষা করতে চিৎকার করে বলতে থাকি স্যার আপনি যা চাচ্ছেন আমি তা চাচ্ছিনা। আমি পুলিশ ডাকার ভয় দেখালে তিনি আমাকে ছাড়তে বাধ্য হোন।
ফারজানা আরোও বলেন, “আমি তার পরের দিন এক সহপাঠীসহ বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে এই ঘটনা জানাই। তিনি জানান উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া বিচার করা সম্ভব না। উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া উপাচার্য বরাবর অভিযোগ করলে তা প্রমাণ করতে না পারলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে ছাত্রত্ব বাতিল হতে পারে।”
এই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন তার পরবর্তীতে ক্লাসে লাঞ্চনা, এসাইনমেন্ট ও উপস্থিতির বৈষম্যের শিকার এবং পরীক্ষার স্বল্প মার্কসের ঘটনা ঘটলে ফারজানা ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে উপাচার্যের কাছে এই বিষয়ে বিচারের জন্যেক লিখিত অভিযোগ করেন। তার অভিযোগ অন্যান্য সহপাঠীদের প্রলোভন দেখিয়ে এবং কাউকে কাউকে ভয় দেখিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এমনকি যৌন হয়রানির অভিযোগ সেলেও ঘটনার তদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে। সুপরিচিত হিসেবে পরিচিত এই শিক্ষক প্রশাসনের আস্থাভাজন হওয়ায় বিভাগীয় চেয়ারম্যান এই বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদেরকেও সংবাদ না করার চাপ দেয়া হয়। সর্বশেষ বাধ্য হয়ে একাই এই শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করতে দাঁড়ান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানির প্রতিরোধ কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে, তারা ব্যবস্থা নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানির প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লাইসা আহমদ লিসা বলেন, এটি নিয়ে আমাদের সামনের সপ্তাহে মিটিং আছে, তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এর আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।
ছবি:মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি নয়, প্রয়োজনে থানা হবে। রবিবার (২৯ মে) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে বারবার দরকার, শেখ হাসিনার সরকার। আমরা কোনো পেশিশক্তির ভরসা করে রাজনীতি করি না। কোনো বন্দুকের নলের ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন না। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন এ দেশের জনগণের ওপর।
স্মৃতিচারণা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জগন্নাথ কলেজের ছাত্র ছিলাম, এখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। আমার ছাত্ররাজনীতি শুরু হয়েছে এই জগন্নাথ থেকে। আমরা না গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো আন্দোলন হতো না। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতৃত্ব দেবে, আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য কাজ করবে।
আলোচনাসভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজীর সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী নজীবুল্লাহ হিরু ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী আবু সাইদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনাসভাটি সঞ্চালনা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন।
ফাইল ছবি
পীরগঞ্জ উপজেলার মাটি ধান, গম, আলু, বেগুনের পাশাপাশি লেবুজাতীয় ফসল চাষের উপযোগী হওয়ায় মাল্টা ও কমলা চাষে ক্রমেই ঝুঁকছেন কৃষক। এসব ফসল চাষে কৃষকরা গতানুগতিক ফসলের চেয়ে বেশি দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। এখন পর্যন্ত উপজেলায় প্রায় ৫০ একর জমিতে কমলা ও মাল্টা চাষ হচ্ছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রযুক্তিগত সহায়তায় ভেলাতৈড় মহল্লার কৃষক রিপু রানী রায় দুই একর জমিতে ১ হাজার ৫০টি বারি-১ মাল্টা ও চায়না কমলা গাছ লাগিয়েছেন। প্রতিটি গাছ ১৪০ টাকা দরে বগুড়া থেকে চারা সংগ্রহ, পরিবহন, বেড়া, জমি প্রস্তুত ও পরিচর্যায় এযাবৎ তার খরচ হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকা। এরই মধ্যে গাছে প্রথম ফলন এসেছে। তার প্রত্যাশা প্রথম ফলনেই তিনি দেড় শত মণ মাল্টা বিক্রি করতে পারবেন।
প্রতি মণ মাল্টা ৩ হাজার টাকা দরে দেড় শত মণ মাল্টা বিক্রি করে এবারই সাড়ে ৪ লাখ টাকা এবং কমলা বিক্রি করে আরও ১০ হাজার টাকা আয় করবেন বলে এবং আসল টাকা উঠে লাভ করতে পারবেন বলে তিনি দৃঢ়ভাবে আশা করেন।
বৃদ্ধিগাঁও গ্রামের মাল্টাচাষি ওয়াজেদ ইসলাম জানান, দুই বছর আগে ৯ বিঘা জমিতে তিনি ১ হাজার ৮২৫টি গাছের মাল্টা বাগান করেছেন। এ বছর তিনি আশা করছেন, বাগান থেকে ১ হাজার মণ মাল্টা পাবেন। দর কম হলেও ৩ হাজার টাকা মণ দরে ১ হাজার মণ মাল্টার দাম ৩০ লাখ টাকা হবে। এ বাগান তৈরিতে তার খরচ হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। গত বছরও তিনি ১০ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন।
এছাড়া, উপজেলার করনাই গ্রামের তৈমুর রহমান এক একর জমিতে কমলা, ভেলাতৈড় গ্রামের মাসুদ রানা মেনন এক একরে মাল্টা, চন্দরিয়া গ্রামের জবাইদুর রহমান সাড়ে চার একরে মাল্টা, পটুয়াপাড়া গ্রামের নবাব দেড় একরে মাল্টা, রনশিয়া গ্রামের আজাহারুল পৌনে এক একরে মাল্টা, বীরহলী গ্রামের আবু জাহিদ ইবনুল ইকরাম জুয়েল দুই একরে মাল্টা ও কমলাসহ উপজেলায় প্রায় ৫০ একর জমিতে বর্তমানে কমলা ও মাল্টা চাষ হচ্ছে।
পীরগঞ্জের কৃষি কর্মকর্তা রাজেন্দ্র নাথ রায় বলেন, অনুকূল আবহাওয়া ও এলাকার মাটি মাল্টা ও কমলা চাষে উপযোগী। উপজেলায় ১৮ একর জমিতে প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে। কৃষকরা নিজ উদ্যোগে আরও ৫০ একর জমিতে এসব ফলের চাষ করছেন। সূত্র: ইত্তেফাক