a
ফাইল ছবি । স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক
আপাতত গণটিকা কার্যক্রম শুরু হবেনা বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ‘গণটিকা কার্যক্রম আপাতত হচ্ছে না। নিবন্ধন করেই করোনার টিকা নিতে হবে।’
সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশে ফাইজারের ৬০ লাখ টিকা আসবে। যখন যত টিকা আসবে তখন নিবন্ধন অনুযায়ীই টিকা দেওয়া হবে বলে জানান।
ফাইল ছবি: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ হত্যা-খুন-গুমের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বরং আওয়ামী লীগই বার বার হত্যা-ক্যু-খুন-গুম ও ষড়যন্ত্রের অপরাজনীতির নির্মম শিকার হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গুম নিয়ে বিএনপি মিথ্যা বয়ান তৈরির মধ্য দিয়ে সরকারের ওপর দোষ চাপিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার অপতৎপরতা চালাচ্ছে। অথচ তাদের গুমের নাটকের নেপথ্যের আখ্যান আজ দেশবাসীর অজানা নয়।’
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নেতৃবৃন্দ গুম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যে বানোয়াট বক্তব্য প্রদান করছে, তা বাস্তবতাবিবর্জিত ও ভিত্তিহীন। বিদেশি বন্ধু ও প্রতিনিধিদের করুণা লাভের আশায় বিএনপি নেতৃবৃন্দ ধারাবাকিভাবে গুম-খুন নিয়ে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। বিএনপির অর্ন্তদ্বন্দ্ব ও কোন্দলের ফলে যেসব গুম ও খুনের ঘটনা ঘটেছে, সেটার দায় তারা সরকারের উপর চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার পর তার দায় সরকারের উপর চাপানো হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বেই জামাল উদ্দিন নিজ দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা গুমের শিকার হয়েছিল। যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘একইভাবে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার পর তার দায়ভারও সরকারের উপর চাপানোর অপচেষ্টা চালানো হয়। পরবর্তীতে দেখা যায় তিনি ভারতে আত্মগোপনে ছিলেন। এমনকী বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর গুমের ঘটনায় বিএনপির এক সিনিয়র নেতা তার বক্তব্যে বলেছেন, ইলিয়াস আলীকে বিএনপির লোকজনই গুম করেছে। যা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সীমাহীন ত্যাগ ও সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে পাহাড় সমান প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুখি-সমৃদ্ধশালী নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আমরা বদ্ধপরিকর। যেখানে সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী সকল নাগরিকের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত ও সুসংহত হবে। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ছবি সংগৃহীত
নিউজ ডেস্ক: একটি জাতির জন্য রাজনীতি ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ভুল রাজনীতি একটি জাতিকে নিঃসন্দেহে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যায়। ইতিহাসে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে এবং পাকিস্তান আমাদের সামনে একটি স্পষ্ট দৃষ্টান্ত। শুধুমাত্র ভুল রাজনীতির কারণে পাকিস্তান তার জন্মের মাত্র চব্বিশ বছরের মাথায় দেশভাগের সবচেয়ে দুঃখজনক অধ্যায় প্রত্যক্ষ করে। এটি পাকিস্তানের জনগণের প্রত্যাশার বাইরের একটি ঘটনা ছিল। কিন্তু অপবিত্র রাজনীতিই এটি ঘটিয়েছিল।
সম্প্রতি আমরা মিয়ানমারে অপবিত্র রাজনীতির উদাহরণ দেখেছি, যেখানে দেশটি এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে গৃহযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে, সঠিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য ভারত জন্মের পর থেকেই একটি স্থিতিশীল দেশ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। ভারতীয় নেতারা তাদের দেশকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েছে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিজেপি এবং কংগ্রেস একত্রিতভাবে একক সুরে কাজ করেছে, যা একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সংস্কৃতি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে এবং ভারতকে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে ধরে রেখেছে।
এবার আমরা বাংলাদেশের গত পঁঞ্চাশ বছরের রাজনৈতিক সংস্কৃতির দিকে ফিরে তাকাই। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্র চর্চার পরিবর্তে সেই গণতন্ত্রকে হত্যা করেন এবং রাজনীতি শূন্য করার চেষ্টা করেন। তিনি তার শাসন স্থায়ী করতে "রাজনীতির মধ্যে রাজনীতি" এর সূচনা করেন। তার জনপ্রিয়তার সুযোগ নিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ঘোষণা করে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের বীজ বপন করেন। তিনি তার সমস্ত রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে নির্মূল করেন। এটি একটি সফল প্রকল্প হিসেবে গণ্য হলেও, এই "মুজিববাদ" সমাজে একটি অপসংস্কৃতির জন্ম দেয়। এর ফলস্বরূপ, তার নিকট বন্ধু মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, একটি ষড়যন্ত্রমূলক "রাজনীতির মধ্যে রাজনীতি" এর বিকাশ ঘটে। এর পরিণতিতে শেখ মুজিবের মর্মান্তিক পতন ঘটে।
শেখ মুজিবের পতনের পর রাজনৈতিক পরিবর্তন এলেও দেশ আবারও "রাজনীতির মধ্যে রাজনীতি" এর শিকার হয় এবং মোশতাকও পতিত হন। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ যখন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে এবং ভারতীয় হস্তক্ষেপ প্রকাশ্যে আসে, তখন ৭ই নভেম্বর ১৯৭৫ সালে সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন।
একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয় এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন আলোর আবির্ভাব ঘটে। ভারতীয় আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত হয়ে জাতি এবং দেশ স্বাধীন রাজনীতির স্বাদ পেতে শুরু করে। জিয়াউর রহমান সৎ প্রচেষ্টায় সঠিক রাজনীতির সূচনা করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে "রাজনীতির মধ্যে রাজনীতি" তাকে ছাড়েনি, এবং শেষ পর্যন্ত দেশপ্রেমের জন্য তাকে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে হয়।
এরপর বাংলাদেশে সৎ রাজনীতির সমাপ্তি ঘটে, এবং আমরা বহুবার "রাজনীতির মধ্যে রাজনীতি" প্রত্যক্ষ করেছি। এটি চলতে থাকে ফ্যাসিবাদী হাসিনা শাসনের ঐতিহাসিক পতন পর্যন্ত।
তবে, জুলাই-আগস্ট ২০২৪ এর বিপ্লবের পর মানুষ নতুন করে সৎ রাজনীতির আশা দেখতে শুরু করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রবণতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে এই আশা পুরোপুরি দৃঢ় মনে হয় না। দেশের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় দল বিএনপিকে উপেক্ষা করার চেষ্টা স্পষ্ট, যা জাতির জন্য একটি ভালো বার্তা দেয় না। আমরা ভুলে যেতে পারি না, গত পনেরো বছরে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী যে ত্যাগ ও ভোগান্তির শিকার হয়েছে। তাদের ত্যাগের ফলেই সাম্প্রতিক বিপ্লবের মাটি প্রস্তুত হয়েছে।
বিপ্লবের পরবর্তী পরিস্থিতি সৎ রাজনীতির সুযোগ সৃষ্টি করেছে। যদি আমরা এই সুযোগকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হই, জাতি ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রাজনীতিতে কোনো ষড়যন্ত্র মানুষ মেনে নেবে না এবং "রাজনীতির মধ্যে রাজনীতি" কে কোনোভাবেই উৎসাহ দেওয়া উচিত নয়। এধরণের ষড়যন্ত্র সাধারণ জনগন কঠোরভাবে দমন করবে, তাতে সন্দেহ নেই। তবে অনেক রক্ষপাত ঘটার সম্ভাবনা তো থেকেই যায়।
জাতীয়তাবাদী এবং ইসলামী শক্তির ঐক্য একটি নতুন বাংলাদেশের সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার জন্য অপরিহার্য। তাই যেকোনো বিচ্যুতি আবারও "রাজনীতির মধ্যে রাজনীতি" জন্ম দেবে এবং অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত শক্তিগুলি তাদের স্বার্থে এটি ব্যবহার করার সুযোগ পাবে। আমাদের নিজেদের ভুলের মাধ্যমে শত্রুদের এমন সুযোগ দেওয়া যাবে না।
লেখক: সম্পাদক, মিলিটারি হিস্ট্রি জার্নাল এবং আইন ও ইতিহাসের অধ্যাপক।