a
ফাইল ছবি
ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের বিমানবন্দর সড়কটি আগামীকাল থেকে তিন দিন এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দর স্টেশন এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৭ নভেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত সড়কটি না ব্যবহার করার জন্য নির্দেশনা এসেছে।
কাজ চলার সময় বাড়তি যানজটের আশঙ্কায় জনসাধারণের জন্য বিশেষ এই ট্রাফিক নির্দেশনা দিয়েছে বিআরটি।
বিআরটির প্রকল্প পরিচালক এএসএম ইলিয়াস শাহ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ওই সময়ে জনসাধারণ ও পরিবহণকে সম্ভাব্য বিকল্প পথ ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সবার সহানুভূতি ও সহযোগিতাও কামনা করা হয়েছে।
এই সড়কে অনেকদিন যাবত জনদুর্ভোগের শেষ নেই। দীর্ঘদিন ধরে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় সড়কে বেহাল অবস্থার মধ্যে রয়েছে। ফলে উত্তরা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত এলাকার মানুষকে অন্তহীন দুর্গতি পোহাতে হচ্ছে।
তাই সড়কটিতে যান চলাচল স্থায়ীভাবে নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে আগামীকাল থেকে তিন দিন টানা কাজ চলবে। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র জোরদার করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪’র নির্বাচনের আগে চক্রান্ত করেছে, ২০১৮’র নির্বাচনের আগে করেছে আবার এখন নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসছে তখন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বুধবার সকালে গণভবনে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির নবনির্বাচিত বোর্ড সদস্যগণ সৌজন্য সাক্ষাতকালে প্রদত্ত ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দুর্যোগ চতুর্দিক দিয়ে আসবে এবং আসছে। একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অপর দিকে মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ। তাই এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি ফেলে রাখা যাবে না। উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে নিজের ব্যবস্থা নিজেকেই করে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক দুর্যোগও যেমন আসবে পাশাপাশি যেখানে রাসেলকে (১০ বছরের ছোট্ট) পর্যন্ত খুন করলো আর সেই পরিবার থেকে বেঁচে এসে সরকারে এলাম, সাফল্য এনে দিলাম, বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিলাম- এটা অনেকেই পছন্দ করবে না। কাজেই তারা তৎপর আছে সারাক্ষণই। আমি জানি তাদের তৎপরতা অনেক বেশি। তাদের খবরও আমি রাখি, আমার তো অচেনা কেউ নাই। তারা তাদের চক্রান্ত করেই যাচ্ছে।
তিনি করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে স্যাংশন ও পাল্টা স্যাংশনকে কেন্দ্র করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে দেশের প্রতি ইঞ্চি জমিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং কৃচ্ছতা সাধনের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, এই স্যাংশনের ফলেই প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ছে এবং আমি জানি না কারা লাভবান হচ্ছে এই যুদ্ধে। লাভবান হচ্ছে অস্ত্র প্রস্তুত ও সরবরাহকারীরা। আর মরছে সাধারণ মানুষ, ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে সাধারণের আজকে কি মানবেতর জীবন। সেটাই সবথেকে দুঃখজনক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে কার কি লাভ হবে জানি না, তবে বাংলাদেশের মানুষের তো ক্ষতিই হবে। কারণ, আমরা তো এক একটা জিনিস টার্গেট করে কাজ করছি। যেমন বলেছি একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। জাতির পিতা যে পদক্ষেপ শুরু করেছিলেন নোয়াখালি থেকে। আমি সেই দায়িত্বটা পালন করে যাচ্ছি। এখন আরো ৫৬ হাজার ঘর আরো তৈরী হচ্ছে (বিনামূল্যে বিতরণের জন্য)। তাহলে এখানে আর কোনো ভূমিহীন থাকবে না।
দেশে ভূমিহীন-গৃহহীন খুঁজে বের করায় সরকারের পাশাপাশি তিনি তার দলের নেতাকর্মীদেরও দায়িত্ব দিয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, তারপরেও আমি আলাদাভাবে খবর নিচ্ছি। রংপুরসহ বিভিন্ন বিভাগে আমাদের কৃষক লীগ এবং আওয়ামী লীগের যে নেতা-কর্মী রয়েছে তাদেরকে বলেছি- কোথায় কে ভূমিহীন-গৃহহীণ রয়েছে তাদের খোঁজ করে তালিকা করতে হবে। এক একটা এলাকা ধরে আমাকে তালিকা দিতে বলেছি যাতে কেউ বাদ না যায়। আমরা তাদের ঘর করে দেয়ার পাশাপাশি জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেব। কেননা বাংলাদেশে একটা মানুষও আর ভূমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না।
এ সময় তার সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিলেও বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কিছুটা সীমিত করতে বাধ্য হয়েছে বলেও উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, কেবল আমরাই নয় এখন ইউরোপের দেশগুলো থেকে শুরু করে আমেরিকা পর্যন্ত জ্বালানি সাশ্রয় করছে। কাজেই আমরা আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছি ভবিষ্যতে যেন বিপদে না পড়তে হয়। তাছাড়া, ১ কোটি মানুষকে আমরা স্বল্পমূল্যে খাবার দিচ্ছি অর্থাৎ কোনো মানুষ যাতে কষ্টে না থাকে সেটাই আমাদের চেষ্টা। সূত্র : বাসস
ফাইল ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস স্টেটের ডালাস সংলগ্ন এলেন সিটির এক বাংলাদেশি পরিবারের ৬ সদস্যই খুন হয়েছেন। সোমবার ভোর রাতে এলেন সিটির পুলিশ টেলিফোন পেয়ে ঐ বাসায় গেলে নৃশংসভাবে হত্যার শিকারদের লাশ উদ্ধার করে। প্রাথমিক বর্ণনায় পুলিশ জানায়, দু’ভাই মিলে তাদের মা-বাবা, নানি এবং একমাত্র বোনকে হত্যার পর নিজেরাও আত্মহত্যা করেছে।
এলেন সিটি পুলিশের সার্জেন্ট জন ফেলী গণমাধ্যমকে জানান, সম্ভবত, গত শনিবার এমন নৃশংসতার ঘটনা ঘটেছে। ১৯ বছর বয়সী একজনের ফেসবুকের স্ট্যাটাসে এই পরিস্থিতির বর্ণনা করা হয়েছে। পুলিশের মতে ‘আত্মহত্যার প্রসঙ্গ’-তে রয়েছে, হতাশার ধারাবিবরণী।
ক্যারেন ফেল্লা নামের ওই পরিবারের এক প্রতিবেশী বলেন, যথারীতি আমরা রবিবার কাজে গেছি। কিছুই বুঝিনি যে, ওরা কেউ আর বেঁচে নেই। এই পরিবারের ব্যাপারে তাদের বেশি ধারণা নেই। ফেল্লা নিহত পরিবারের একমাত্র তরুণীর ব্যাপারে বলেন, সে খুবই মেধাবী ছাত্রী ছিল। আমার মেয়ের স্কুলেই পড়তো।
কেভিন পাটেল (২৮) নামক আরেক প্রতিবেশী জানান, তাদের বিষয়ে খুব বেশি জানতাম না। তবে তারা সুখী পরিবার ছিল বলেই মনে হতো। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় কাজ থেকে ফিরেই দেখি পুলিশের উপস্থিতি। অবাক হয়েছি ঘটনা জেনে।
বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব নর্থ টেক্সাসের সেক্রেটারি নাহিদা আলী হতাশার সাথে জানান, এমন সংবাদে সকলেই হতভম্ব। শোকাচ্ছন্ন গোটা কমিউনিটি। তৌহিদুল ইসলাম (৫৬) খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। তার স্ত্রী আইরিন ইসলাম নীলাও (৫৫) আসতেন কমিউনিটির অনুষ্ঠানে। সব সময় তারা দুই পুত্র তানভির তৌহিদ (২১) এবং ফারহান তৌহিদ (১৯) কে নিয়ে উচ্ছ্বাস করতেন। একইভাবে মেধাবী কন্যা পারভিন তৌহিদকে (১৯) নিয়েও তার অহংকারের শেষ ছিল না। পারভিন পড়তেন নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে। সপ্তাহখানেক আগে তাকে নিউইয়র্ক থেকে বাসায় নেয়া হয়। ফারহান গত বছর ভর্তি হয়েছিলেন অস্টিনে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে। তানভিরও পড়তেন ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের অস্টিনে। তার এবারই গ্র্যাজুয়েশনের কথা। তবে ফারহান আর পারভিন ছিলো যমজ। এমন একটি পরিবারের সকলেই একইসাথে নিঃশেষ হয়ে যাবে-এটি কল্পনারও অতীত ছিল। সাথে তৌফিকের শাশুড়ি আলতাফুন্নেসাকেও (৭৭) মৃত্যুবরণ করতে হলো।
গত সপ্তাহেই আলতাফুন্নেসার বাংলাদেশে ফেরার কথা ছিল। করোনা জটিলতায় তিনি সফর স্থগিত করেছিলেন। নাহিদা জানান, পুলিশী তদন্ত শেষে লাশগুলো পেলে যদি ঐ হতভাগা পরিবারের কোন স্বজন দায়িত্ব না নেন তাহলে আমরা এসোসিয়েশনের উদ্যোগে দাফনের পদক্ষেপ নেব। এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
জানা গেছে, তৌহিদুল ৮ বছর আগে টেক্সাসের এই সিটিতে বসতি গড়ার আগে নিউইয়র্কে বাস করতেন। তার দেশের বাড়ি ছিল পুরনো ঢাকায়। সর্বশেষ তিনি টেক্সাসে সিটি ব্যাংকে চাকরি করতেন।
পরিবারের প্রধান তৌহিদের পরিচিত ট্র্যাভেল ব্যবসায়ী শাহীন হাসান জানান, কোনো কারণে তৌহিদের দুই পুত্রই বিষন্নতায় আক্রান্ত ছিল। আত্মহত্যার সেই নোটে সে (ফারহান) উল্লেখ করেছে, ২০১৬ সালে নবম গ্রেডে পড়াবস্থায় আমি বিষন্নতায় আক্রান্ত হয়েছি বলে চিকিৎসক জানায়। এজন্যে আমি পরীক্ষায় ফেল করেছি। আজ আমি নিজের শরীর দু’বার কেটেছি। খুবই কষ্ট পেয়েছি। আমার মনে আছে ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট, কাঁচির মত ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরে কেটেছিলাম। অনুভব করেছি কতটা অসহনীয় যন্ত্রণা। এরপর প্রায় দিনই শরীরে রান্নাঘরের চাকু দিয়ে কেটেছি। বিষন্নতার দুঃখবোধ লাঘবের পথ খুঁজেছি। এ অবস্থায় আমার ঘনিষ্ঠ তিন বন্ধু আমাকে ত্যাগ করেছে।
এমনি হতাশার মধ্যেই আমাকে ভর্তি করা হয় ইউনিভার্সিটি অব অস্টিনে কম্পিউটার সায়েন্স ডিপার্টমেন্টে। এরপর আমি ভেবেছি যে, এবার জীবনটা সঠিক ট্র্যাকে উঠেছে। বাস্তবে তা ঘটেনি। বিষন্নতায় জর্জরিত হয়ে পুনরায় আমি নিজের শরীর রক্তাক্ত করি এবং কাঁদতে কাঁদতে বিছানায় ঘুমাতে যাই। সান্ত্বনা খুঁজি যে, আমি সুস্থ হয়েছি। অন্যদের মতই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটি সত্য বলে কখনোই মনে হয়নি।
এক পর্যায়ে সে লিখেছে, আমি যদি আত্মহত্যা করি তাহলে গোটা পরিবার সারাটি জীবন কষ্ট পাবে। সেটি চাই না। সেজন্যে পরিবারের সকলকে নিয়ে মারা যাবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বড়ভাইকে সামিল করলাম। দু’ভাই গেলাম বন্দুক ক্রয় করতে। আমি হত্যা করবো ছোটবোন আর নানীকে। আমার ভাই করবে মা-বাবাকে। এরপর উভয়ে আত্মহত্যা করবো। কেউ থাকবে না কষ্ট পাবার।
আত্মহত্যার প্রাক্কােলে লেখা ওই নোটে সে আরও উল্লেখ করেছে, বন্দুক ক্রয়ের ব্যাপারটি খুবই মামুলি। বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইনের নামে তামাশা চলছে সর্বত্র। বড়ভাই গেলেন দোকানে। বললেন যে, বাড়ির নিরাপত্তার জন্যে বন্দুক দরকার। দোকানি কয়েকটি ফরম ধরিয়ে দিলে সেখানে স্বাক্ষর করলেন ভাই। এরপর হাতে পেলাম কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি, যা দিয়ে নিজের কষ্ট এবং পরিবারের কষ্ট সহজে লাঘব করা যাবে।
এদিকে, ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান ও ক্যানসাসের ডেমোক্র্যাটিক ককাসের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারপার্সন রেহান রেজা এ সংবাদদাতাকে বলেন, এমন নিষ্ঠুর পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি রোধে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া দরকার। সময় মতো যথাযথ চিকিৎসার পদক্ষেপ নিলে হয়তো এমন দুঃখজনক পরিস্থিতির অবতারণা হতো না। তিনি অবিলম্বে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইনের দাবিও জানিয়েছেন। সূত্র:বিডিপ্রতিদিন