a
ফাইল ছবি: তারেক জিয়া
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তার জন্য দলের সব স্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাসে তিনি এই আহ্বান জানান।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিধ্বংসী আকস্মিক বন্যা বাংলাদেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের চারটি জেলায় আঘাত হেনেছে, যার ফলে লক্ষাধিক লোক অসংখ্য গ্রামে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। সরকারকে অনুরোধ করছি- এসব জেলায় পরিবার, জীবিকা ও সম্পত্তি রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে। পাশাপাশি বিএনপি’র সকল স্তরের নেতাকর্মীদেরকে আশ্রয়, খাদ্য ও রসদ, মানবিক ত্রাণসহ ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের সবসময় মানবতাকেই সমুন্নত রাখতে হবে এবং এই সংকটের সময়ে দলমত নির্বিশেষে একে অপরের পাশে দাঁড়াতে হবে। সূত্র: ইত্তেফাক
সময় রাত ২টা ৪৫ মিনিট। ডিউটি ডাক্তার সবে মাত্র বিশ্রা'ম নেয়ার জন্য ঘুম ঘুম চোখে বিছানায়। ইমারজেন্সি থেকে কল আসল। চোখের পাতায় ঘুম ঠেসে, ইমারজেন্সিতে এসে চমকে যাওয়ার মত অবস্থা।
মহিলা রোগী, পরনের চাদর র’ক্তে ভেজা। মুখের রঙ ফ্যাকাসে, সাদা। কাপড় দেখেই বো'ঝা যাচ্ছে নতুন বিয়ে হয়েছে। রোগীর নাম ফুলি (ছদ্ম নাম)। হিষ্ট্রি নেয়ার জন্য ডাক্তার জানতে চাইল, কি হয়েছে?
রোগীর সাথে সদ্য বিবাহিত জামাই, জা এবং আরও ৪/৫ জন এসেছে। ডাক্তারের প্রশ্ন শুনেই রোগীর বর চোরের মত, রুম থেকে বের হয়ে গেল। রোগীর সঙ্গে আসা এক মহিলা তেজের সাথে বলল, ‘ডাক্তার হইছেন, বুঝেন না কেরে, সব বলতে হইবো!’
ওদের গ্রামে গাছের মাথায় বাধা মাইকটিতে একটির পর একটি বিয়ের গান বেজে চলছে। বিয়ে বাড়িতে সবা'ই ব্যস্ত। বর পক্ষের যারা এসেছে, কথা বার্তায় অভিজাত ও ব্যক্তিত্ব দেখানোর চেষ্টায় ব্যস্ত।
দর কষাকষি করার পরে, কনে পক্ষ থেকে যৌতুক হিসেবে যা পাওয়া গেছে, তা নেহাতই কম নয়। কিন্তু কম হয়ে গেছে কনের বয়স। বাচ্চা মেয়ে, নাম ফুলি বেগম, সবে মাত্র ১৪ পেরিয়ে ১৫ বছরে পড়েছে।
মেয়ের বাবাও মোটামুটি ভাবে লাল শাড়ি পড়িয়ে মেয়েকে বিদায় দিতে পেরে খুশি। মেয়ে হলে তো বিদায় দিতেই হবে। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত মেয়েকে পড়িয়েছে। কম কি! তাছাড়া, শোনা যাচ্ছে ছেলেও নাকি ভাল।
বাড়ির উঠোনে বসে মুখে পান চিবোতে চিবোতে ছেলের মামা বলল, ‘এমন ছেলে কো'থায় পাবেন মিয়া। তাছাড়া, ছেলে মানুষের একটু দোষ থাকলেও সমস্যা নেই, বিয়ের পর ঠিক হয়ে যাবে।’
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মেয়েকে নিয়ে আসা হল তার নতুন ঘরে। যে মেয়েটি সবে মাত্র জীবনের সংজ্ঞা শিখতে শুরু করেছে, শৈশব থেকে কৈশোরে পা রাখতে যাচ্ছে, কিছু বুঝে ওঠার আগেই, তার আজ বাসর রাত।
পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে সতীত্ব যাচাই করার উৎসব। আর বিয়ে তো একটি সামাজিক বৈধতা মাত্র। সমাজ অনেক এগিয়েছে ঠিকই, কিন্তু বিয়ের সময় মেয়ের মতামতটা এখনও গৌন।
মেয়ের যদি মতামত না নেওয়া হয় বা পরিবারের কারও ধমকে মতামত দানের পর বিয়ে হয়, তাহলে তাকে ধ’র্ষণ না বলে উপায় নেই। ফুলির ইচ্ছে করছে, চিৎকার করতে, কিন্তু বাসর ঘরে চিৎকার করা যে উচিত নয়, এতটুকু বুঝতে শিখেছে ফুলি।
হাত পা ছুঁড়ে বরের লালসার যজ্ঞ থেকে বেরিয়ে আসার মিথ্যে চেষ্টা। সমাজ বিধীত ‘বর’, যখন আদিম পশুত্ব থেকে বাস্তবে ফিরে আসে, তখন ফুলি র’ক্তে ভেজা। তখনও ফিনকির মত র’ক্ত যাচ্ছে।
ক্রমান্বয়ে সাদা ফ্যাকাসে হয়ে আসছে মুখের রঙ! ফুলি এখন হাসপাতালের বেডে অ’চেতন হয়ে শুয়ে আছে। তাকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে, ফুলির চোখ পড়েছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ওপর।
তারা যে কানাকানি করে কথা বলছিল, ব্যঙ্গাত্মক হাসি তামাশা করছিল। যেন সব দোষ ফুলির। লজ্জায় কারও দিকে তাকাতেও ভ’য় করে। তারপর ইঞ্জিন চালিত গাড়ীর প্রচণ্ড শব্দ।
আরও এলোমেলো কিছু মুহূর্ত। কিছুক্ষণ পর, সাদা এপ্রোন পড়া একজন ডাক্তার এসে তার হাত ধরেছে। মনে আছে শুধু এটুকুই। ডাক্তার নার্সকে সাথে নিয়ে, ফুলি বেগমকে পরীক্ষা করলেন।
ভয়াবহ রকমের পেরিনিয়াল টিয়ার (যৌ’নাঙ্গ ও তার আশপাশ ছিঁড়ে গেছে)। তখনও র’ক্ত যাচ্ছে প্রচুর। হাতে পালস দেখা হল। খুবই কম। জরুরি ভিত্তি'তে রোগীকে র’ক্ত দেয়া দরকার।
জরুরি অবস্থায় অ’পারেশন করে ছিঁড়ে যাওয়া অংশ ঠিক করতে হবে। এই ভয়াবহ সংকটাপন্ন রোগীকে নিয়ে হিমসিম খাওয়ার অবস্থা কর্তব্যরত ডাক্তারের। ম্যাডামকে ফোন করা হল…
প্রাথমিক ভাবে ম্যানেজ করার জন্য র’ক্ত দরকার… রোগীর সাথে যারা এসেছে এতক্ষণ ইমারজেন্সি রুমের সামনে চিল্লা পাল্লা করছিল। ডাক্তার এসে জানালো জরুরি ভিত্তিতে র’ক্ত দরকার।
তখন সবাই চুপ। কেউ কেউ কেটে পড়ার জন্য পাশে সরে গেল। কিছুক্ষণ পর রোগীর লোক জানালো, তারা র’ক্ত জোগাড় করতে পারবে না। যা হয় হবে! ডাক্তার তাদের বুঝানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু লাভ হল না…
রাত সাড়ে তিনটায় ম্যাডাম আসলেন। তার ধমকে শেষ পর্যন্ত তারা র’ক্ত জোগাড় করতে রাজি হল। কিন্তু র’ক্ত আর সেই রা'তে জোগাড় হল না। অ’পারেশন থিয়েটারে ফুলিকে নিয়ে গিয়ে টিয়ার রিপেয়ার করা হল।
সকালে রোগীর শ্বশুরবাড়ির লোক সবাই উধাও। ফুলির বাবা আসলেন সেই ভোরে, র’ক্ত জোগাড় হল কোন রকমে। ছয়দিন পর, রোগীর সেপ্টিসেমিয়া ডেভলপ করলো। ইনফেকশন র’ক্তে ছড়িয়ে গেছে। ভাল অ্যান্টিবায়োটিক দরকার।
রোগীর বাবা এসে বললেন, তারা আর খরচ চালাতে পারবেন না। ডাক্তার পরামর্শ দিলেন, কোন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে, তাহলে ঔষধ কেনার খরচ কিছুটা বাঁচবে।
কিন্তু, হাসপাতাল মানে তো, কাজকর্ম রেখে একজনকে রোগীর পাশে থাকতে হবে। রিলিজ দিয়ে বাসায় নিয়ে যেতে চাচ্ছেন, যা হবার হবে। রিলিজ নিয়ে ফুলিকে বাসায় নেয়া হল।
আরও বেশি অসুস্থ হওয়ায় চারদিন পরে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হল। পরদিন ভোর ভোর সময়। একবার চোখ খুলে আবার বন্ধ করলো ফুলি। সেই বন্ধ শেষ বন্ধ।
এই সমাজের প্রতি ঘৃ’ণায় চোখ জ্বল জ্বল করছিল কি না কেউ দেখতে পারেনি। ভোরের স্বল্প আলোয় বিদায় জানালো জীবনের নিষ্ঠুরতাকে! ফুলি ‘একিউট রেনাল ফেইলরে’ মারা গেছে।
ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে ডায়ালাইসিসের জন্য বলা হয়েছিল, তারা রোগী নিয়ে এত ঝামেলা করতে পারবে না। শ্বশুর'বাড়ি থেকে সেই বাসর রাতের পর, কেউ আসেনি। তাদেরই বা এত চিন্তা কি, একটা বউ মরলে দশটা বউ পাওয়া যায়!
ফুলি একা নয়, এ রকম ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়। এই ঘটনা গুলো চক্ষু লজ্জার ভয়ে প্রকাশ হয় না। কিন্তু সচেতনতা জরুরি। লেখাটি ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।
ফাইল ছবি
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের কাছের একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলসহ সারা দেশে তালিবানের অগ্রগতির প্রেক্ষাপটে সেখানে থাকা আমেরিকানদের যত দ্রুত সম্ভব আফগানিস্তান ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার কাবুলে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে আফগানিস্তানে বসবাসরত আমেরিকানদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, 'যেভাবে সম্ভব দ্রুত আফগানিস্তান ত্যাগ করুন।'
আর্থিক সংকট বা অন্য যেকোনো কারণে কেউ দ্রুত আফগানিস্তান ত্যাগ করতে অসুবিধায় পড়লে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস তাদেরকে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে। তবে বলা হয়েছে, 'নিরাপত্তার অবস্থা ও লোকবলের কমতি থাকায় কাবুলসহ আফগানিস্তানে খুব কম সংখ্যক আমেরিকানকেই সহায়তা করতে পারবে দূতাবাস।'
যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সরিয়ে নেয়ার পর থেকে দেশটিতে ইসলামপন্থী এই গোষ্ঠীর সাথে একাই লড়াই করছে আফগান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী।
কাবুলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করে গত ২৭ এপ্রিল আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মকর্তাদেরকে যতটা সম্ভব দূতাবাসের বাইরে থেকে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস এ সপ্তাহের শুরুর দিকে বলেছিলেন দূতাবাসের কর্মসূচীর কোন পরিবর্তন হয়নি, তবে প্রতিদিন নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা