a
ফাইল ছবি: বিএনপির ৩ অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কমীদের পদযাত্রা ও স্মারকলিপি পেশ
নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে বিএনপির ৩ অঙ্গ-সহযোগীদের পদযাত্রা শুরুর লক্ষ্যে নয়াপল্টনে জড়ো হয়ে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে যাত্রা শুরু করলেও রামপুরা টিভি সেন্টারের সামনে পুলিশের বিশাল বেরিকেড দিয়ে বাধা প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর, জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিএনপির তিন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করে। বিশাল বহরটি রামপুরায় বাধার সম্মুখীন হলেও পুলিশের সহায়তায় স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য ৬ জন প্রতিনিধিকে সেখানে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়।
প্রস্তাবে রাজি হয়ে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিনিধিরা ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্দেশে রওনা দেন।
ছয় প্রতিনিধি হলেন— যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির।
আজ রোববার দুপুর পৌনে ১টার দিকে পুলিশের গুলশান জোনের ডিসি তারেক আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ যে কোনো কর্মসূচিকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে কিছু নিয়ম মানতে হয়। আমরা ভারতীয় হাইকমিশনে কথা বলেছি। কথা অনুযায়ী বিএনপির তিন সংগঠনের ৬ জন প্রতিনিধিকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এ পদযাত্রা উপলক্ষে আজ সকাল থেকে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন নেতাকর্মীরা। সকাল ৯টার আগে থেকেই নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আসতে শুরু করেন তারা। এসময় ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, মিডিয়ায় আমার বক্তব্য কাটপিস করা হয়েছে। ইলিয়াস আলীকে সামনে রেখে হঠাৎ করে কেন আমাকে টার্গেট করা হলো আমি জানি না। আমার নামে যে বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে তা আমার নয়। এর দায়িত্ব আমার এবং আমার দলের নয়।
আজ বিকেল তিনটায় শাহজাহানপুরে নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ১৭ এপ্রিলের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি আমাকে বাধ্য করেছে এই সংবাদ সম্মেলনে ডাকতে। বিএনপির বিরুদ্ধে যত কথা দরকার লেখা যাবে কিন্তু আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লেখা যাবে না। সংবাদপত্রের এমন স্বাধীনতা জিয়াউর রহমান দেননি। আধা ঘণ্টার মধ্যে ছড়িয়ে যাওয়া এটাও একটা ষড়যন্ত্র।
‘বিএনপি নেতারা ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে আমি স্থায়ী কমিটির সদস্য এমন কথা বলতে পারি? আমি এমন কোনো কথা বলিনি। আমার বক্তব্য কাটপিস করে সামনের অংশ পেছনের অংশ বাদ দিয়ে নিজেদের ইচ্ছে মতো লেখা লিখেছে। হঠাৎ মিডিয়া কেন আমাকেই টার্গেট করে এ ধরনের কাজ করলো তা আমি জানি না।’
মারুফ কামাল খান সোহেল
নেতৃত্ব নিয়ে কথা উঠেছে। বিশেষ করে মাওলানা মামুনুল হক এপিসোডের পর। আরও বিশেষ করে বলা যায়, কথা উঠেছে ইসলামি সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব নিয়ে। ইসলামি সংগঠনগুলোতে নেতৃত্বের প্রতি কর্মীদের আস্থা, বিশ্বাস ও আনুগত্য অকুণ্ঠ ও অগাধ। নতুন করে ফের তার প্রমাণ মিলেছে।
আমি হেফাজতের কেউ না হলেও হেফাজতের লাখ লাখ কর্মী-সমর্থক এবং তাদের সততা ও নিষ্ঠাকে সম্মান করি। তাদের অনুভূতিকে আহত করতে চাইনা। আমি মনে করি মামুনুল হক হেফাজতের একজন, তবে মামুনুল হক মানেই হেফাজত নয়। কিন্তু হেফাজতের কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরা তাদের 'মামুনুল হুজুর' আর হেফাজতকে একাকার করেই দেখছেন। তার ইজ্জতকে হেফাজতের ইজ্জত হিসেবে দেখেই তারা লড়ে যাচ্ছেন অনলাইন ও অফলাইন, সবখানে। আমি সেই সঙ্গে হেফাজতের কর্মীদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াও লক্ষ্য করেছি গভীর কৌতুহল ও অভিনিবেশ সহকারে। আমার মনে হয়েছে, নেতার প্রতি হেফাজত কর্মীদের যে অচলা ভক্তি ও প্রশ্নাতীত আনুগত্য তা অনেকটাই রেজিমেন্টেড সংগঠনের মতন।
মামুনুল হকের রিসোর্ট সংশ্লিষ্ট অঘটন, এরপর ক্রমাগত উদঘাটিত হতে থাকা তথ্য এবং সরকার ও প্রশাসনের পদক্ষেপ আমি পর্যবেক্ষণ করছিলাম। একজন নাগরিক হিসেবে মামুনুল হকের প্রাইভেসি লঙ্ঘন করে তাকে হেনস্তার প্রতিবাদ আমিও লিখে জানিয়েছি।
একথা সত্য যে, বর্তমানে বাংলাদেশে সরকার, প্রশাসন, আইন-শৃঙখলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার প্রতি সাধারণ মানুষের অনাস্থা ও অবিশ্বাস সীমাহীন। হেফাজতের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আবহের মধ্যেই ঘটে মামুনুল হকের রিসোর্ট কাণ্ড। এ ঘটনা চাউর হলে হেফাজত কর্মীরা দ্রুত বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা পুরো বিষয়টিকেই মামুনুল হককে হেয় করে হেফাজতের আন্দোলন দমাতে সরকারের একটি সাজানো-পাতানো চক্রান্ত বলেই ধরে নেন। কিন্তু পরে যখন আরো অনেক কিছু উদঘাটিত হলো এবং মামুনুল হকের নিজের স্বীকারোক্তিতেই তার নৈতিক মান অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়লো, তখনও তার প্রতি হেফাজত কর্মীদের অন্ধ সমর্থন থেকেই আমাদের অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠলো যে, এই আনুগত্য পুরোপুরি ইসলামসম্মত কিনা? সেক্যুলার, বুর্জোয়া ও গণতান্ত্রিক ধারার নেতৃত্বে নৈতিক প্রসঙ্গটিকে ততোটা গুরুত্ব দেয়া না হলেও ইসলামে নেতৃত্বের নৈতিকতার দিকটিকে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলাম সম্পর্কে আমার জ্ঞান সীমিত। সেই সীমিত জ্ঞান থেকেই আমি জানি ইসলামে নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্য নিঃশর্ত নয়। বিদায় হজের অভিভাষণে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ঘোষণা করেন, যদি একজন হাবসি ক্রীতদাসও তোমাদের নেতা হন, তবে তাকেও তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মেনে চলবে যতক্ষণ পর্যন্ত সে সব কিছু আল্লাহ্'র হুকুম ও রাসুলের সুন্নাহ্ অনুযায়ী পরিচালনা করবে।
ইসলামের প্রথম খলিফা আমিরুল মুমেনীন হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) তাঁর অভিষেক উপলক্ষে দেয়া ভাষণে বলেছিলেন- "হে লোকসকল, আমাকে তোমাদের উপর নেতা করে দেওয়া হলেও আমি কিন্তু তোমাদের মধ্যকার শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি নই। সুতরাং যদি আমি সঠিক কাজ করি তবে তোমরা আমাকে সাহায্য করবে, আর যদি ভুল করি তবে আমাকে শুধরে দিবে। সততা একটি পবিত্র আমানত এবং মিথ্যা হচ্ছে বিশ্বাসঘাতকতা। .... যদি কোনো জাতির মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তাহলে আল্লাহ্ অবশ্যই তাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন। তোমরা আমাকে ততক্ষণ মেনে চলবে যতক্ষণ আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে মেনে চলি। যদি আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে মেনে না চলি, তাহলে আমার প্রতি তোমাদের আনুগত্যের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না।"
এই দিক-নির্দেশনা থেকে বুঝা যাচ্ছে- ১. নেতার আনুগত্য করতে হবে, তবে দেখতে হবে তিনি আল্লাহ্'র হুকুম ও রাসুলের সুন্নাহ্ অনুযায়ী নিজে চলছেন কিনা এবং সব কিছু পরিচালনা করছেন কিনা। ২. নেতার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের অহঙ্কার থাকবেনা, তাঁকে বিনয়ী হতে হবে। ৩. নেতাকে সঠিক কাজে সাহায্য করতে হবে। ৪. নেতা ভুল করলে সমালোচনার মাধ্যমে সেই ভুল অনুসারীদেরকেই শোধরাতে হবে। ৫. নেতাকে সততা বজায় রাখতে হবে এবং কখনো মিথ্যার আশ্রয় নেয়া চলবে না। ৬. অশ্লীলতা আল্লাহ্'র পরীক্ষা বা বিপর্যয় নিয়ে আসে। তাই, নেতাকে অশ্লীলতা পরিহার করতে হবে। এবং ৭. নেতা যদি আল্লাহ্ ও রাসুলের (সা.) পথ থেকে বিচ্যুত হন৷ তখন আর তার প্রতি অনুগত থাকার প্রয়োজন নেই।
প্রতিটি নেতা এবং তার অনুসারীদের এইসব বিষয় ও শর্ত খুবই গুরুত্বের সঙ্গে অনুধাবন ও মেনে চলা দরকার। হযরত আবু জর গিফারীর মতন প্রাজ্ঞ, জ্ঞানী ও ত্যাগী সাহাবীরা কিন্তু রাসুল(সা.)-এর কাছ থেকে 'জিন্নুরাইন' বা দু'চোখের মণি খেতাবপ্রাপ্ত আমিরুল মুমেনীন হযরত ওসমান(রা.)-এর পরিচালনা পদ্ধতি ও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
লেখক:মারুফ কামাল খান সোহেল
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)/সূত্র:বিডিপ্রতিদিন