a
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
সাইফুল আলম, ঢাকা: অনতিবিলম্বে ৪৩তম বিসিএস এর ২য় গেজেট বঞ্চিত নিরপরাধ ক্যাডার অফিসারদের গেজেটভুক্ত করে চাকরিতে যোগদান নিশ্চিত করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন ৪৩তম বিসিএস এর দ্বিতীয় গেজেট বঞ্চিত ২২৭টি পরিবার এবং ক্যাডার অফিসারবৃন্দ।
আজ ১৬ মার্চ ২০২৫ তারিখে বিকাল ৩ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় মাওলানা আকরাম খা হলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সকল সাংবাদিক ভাই ও বোনদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও সালাম জানিয়ে বলেন, আমরা ৪৩তম বিসিএস এর দ্বিতীয় গেজেট বঞ্চিত ২২৭টি পরিবার আজ আবারও আপনাদের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও দেশবাসীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আপনারা জানেন, মেধাভিত্তিক জাতি গঠনের লক্ষ্যে শতভাগ কোটামুক্ত ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় দীর্ঘ চার বছর ধরে নিজের মেধা, যোগ্যতা, পরিশ্রম, মা বাবার আজীবনের ত্যাগ এবং শিক্ষক-আপনজনদের অশেষ আশীর্বাদে আমরা ২১৬৩ জন বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগের স্বপ্ন দেখেছিলাম। দীর্ঘ দশ মাস ধরে দুই ধাপে পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর ১৭ নভেম্বর ২০২৪ খ্রি. যোগদানের তারিখ নির্ধারণ করে ১৫ অক্টোবর, ২০২৪ আমাদের বহুল কাঙ্খিত গেজেট প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ২৮ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমাদের যোগদান পিছিয়ে ১ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রি. নির্ধারণ করা হয়। আমরা এটিকে নিয়তির অংশ হিসেবে মেনে নিয়েছিলাম। এরই মধ্যে যোগদানের প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের সহকর্মীদের মধ্যে অনেকেই পূর্বের চাকুরী থেকে ইস্তফা দেন। কিন্তু কে জানতো, আমাদের জন্য আরও বড় আঘাত অপেক্ষা করছিল।
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ যোগদানের একদিন পূর্বে প্রকাশিত নতুন গেজেটে আমাদের ২২৭ জনের নিয়োগ স্থগিত করে গেজেট প্রকাশ করা হয় যা আমাদের জীবনকে এক অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। বিসিএস এর ইতিহাসে একবার গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর নিয়োগ স্থগিত করার উদাহরণ আর দ্বিতীয়টি নেই। আমাদের ২২৭ জন সুপারিশপ্রাপ্ত অফিসারবৃন্দের নিয়োগ স্থগিত করে ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ গেজেট প্রকাশিত হলে ৩১ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করে আমাদেরকে ২য় গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার যৌক্তিক কারণ জানতে চাই। তৎপ্রেক্ষিত ২ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমাদের কাছে পুনঃবিবেচনার জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করে। এর প্রেক্ষিতে আমরা সকলেই সেই সুযোগ গ্রহণ করি এবং সুবিচারের আশায় অপেক্ষা করতে থাকি।
এরপর, ৯ জানুয়ারি ২০২৫, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব স্যার উপস্থিত সকল মিডিয়ার সামনে স্পষ্ট ভাষায় জানান যে, যদি কারও বিরুদ্ধে তিনটি গুরুতর অভিযোগ-
(১) ফৌজদারি অপরাধ,
(২) রাষ্ট্রদ্রোহিতা, এবং
(৩) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কারাদেশ
না থাকে, তবে তারা যোগদান করতে পারবেন। তিনি আরও জানান, এই প্রক্রিয়ার সাথে যেহেতু আরো দুটি অফিস অর্থাৎ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির দপ্তর জড়িত, নতুন গেজেট প্রকাশিত হতে দুই থেকে তিন কর্মদিবস প্রয়োজন হতে পারে।
কিন্তু এক গভীর বেদনাবিধুর নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে আজ দুই মাস পেরিয়ে গেলেও সেই গেজেট আলোর মুখ দেখেনি। আমরা এখনো অন্ধকারে, অনিশ্চয়তার অতল গহ্বরে। আমাদের প্রাত্যহিক জীবন বিপন্ন, জীবন যেন থমকে গেছে সেই ৩০ ডিসেম্বরে। আপনারা জানেন, ২৮-৪২তম বিসিএস পর্যন্ত ১৫ বছর ধরে গেজেট বঞ্চিত ২৫৯ জনের সকলকে অন্তর্বর্তী সরকার মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিয়োগ প্রদান করেছেন যা বৈষম্যহীন বাংলাদেশে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। কিন্তু একই সময়ে, ৪৩তম বিসিএস থেকে ২২৭ জনকে বাদ দেয়া স্পষ্টত পূর্বের বৈষম্যেরই ধারাবাহিকতা। এই বৈষম্য শুধু ২২৭ জনের পরিবারের প্রতি অন্যায়ই নয়-নতুন বাংলাদেশের জন্য এটি এক লজ্জাজনক অধ্যায়।
গত ২ ফেব্রুয়ারি বইমেলায় জনপ্রশাসনের স্টল উদ্বোধনের সময়ও সম্মানিত সিনিয়র সচিব স্যার গণমাধ্যমে বলেছেন যে, এই ২২৭ জনের বেশিরভাগই খুব শীঘ্রই চাকরিতে যোগদান করতে পারবে। কিন্তু সেই বক্তব্যের পরও প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেছে, অথচ গেজেট এখনো প্রকাশিত হয়নি।
আমাদের সহকর্মীরা যেখানে আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরে বেতন-বোনাসসহ পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, সেখানে আমরা ২২৭ জন পরিবারকে মুখ দেখানোর অবস্থায়ও নেই। আমাদের অনেকেই তাদের পিতা- মাতার বয়স, অসুস্থতা, আবেগ, স্বপ্ন বিবেচনা করে এত বড় দুঃসংবাদ এখনো পরিবারকে জানাননি, কারণ আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগ পাবো-এই আশ্বাস পেয়েছিলাম।
আপনাদের মাধ্যমে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই- “আগামী ১৭ মার্চ”, রোজ সোমবারের মধ্যে ২২৭ জনের মধ্যে নিরপরাধ সকলের গেজেট প্রকাশ করতে হবে। এটি আমাদের ন্যায্য অধিকার, এটি আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন, এটি আমাদের আত্মসম্মানের প্রশ্ন। যে বৈষম্য ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছিল, সেই বাংলাদেশে আজ ২২৭টি পরিবারের সাথে চরম বৈষম্য করা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি সম্মান জানাবেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। আমরা দেশের প্রতি, জাতির প্রতি এবং সুবিচারের প্রতি অবিচল আস্থাশীল। আমরা আশাবাদী, রাষ্ট্র আমাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে এবং অনতিবিলম্বে আমাদের স্বপ্নের চাকরিতে যোগদানের সুযোগ করে দেবে।
ফাইল ছবি
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, আগামী বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এপ্রিল মাসে নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দিন সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে তেজগাঁও কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদেরকে এ কথা জানান।
দীপু মনি বলেন, এসএসসির সময় আমরা এটা করেছিলাম। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষা দুই বেলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুই বেলা পরীক্ষা থাকলে দেরিতে শুরু করলে সমস্যা হয়ে যায়। আমরা দেখেছি অনেক বেশি ভিড় ও জ্যাম হয়। পরীক্ষার্থীদের অনেক আগে বাসা থেকে বের হতে হয়। দেরি হয়ে গেল কি না, তাদের মধ্যে অ্যানজাইটি কাজ করে। সে জন্য সময়টা অ্যাডজাস্ট করলে ভালো হয়। কিন্তু দুই বেলা পরীক্ষা থাকলে সেটা আর করা সম্ভব হয়না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা খেয়াল করেছি প্রতি কেন্দ্রের বাইরে অনেক ভিড়। পরীক্ষার্থীদের বাবা-মা-অভিভাবক ভিড় করেন। অবশ্য আমরা যখন পরীক্ষা দিয়েছি, তখনও আমাদের বাবা-মায়েরা আসতেন। আমরা কাউকে দোষ দিতে পারি না। বাবা-মা যারা আসেন, তারা যদি একদম গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন, তাহলে অন্য পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হয়। আমি আহ্বান করবো, আপনার সন্তানের মতো অনেকের সন্তান পরীক্ষা দিচ্ছে। তাই একটু দূরে থাকুন।
তিনি বলেন, আগামী বছর চেষ্টা থাকবে এইচএসসি এপ্রিলে করার। এবারও আমরা চেষ্টা করেছিলাম। অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করবে। এসএসসি চেষ্টা করব আগের মতো ফেব্রুয়ারিতে নিতে।
তিনি আরও বলেন, এবার নতুন কিছু সমস্যা হবে না বলে আশা করি। পুরনো যে সমস্যা, তা যাতে না ঘটে, সে জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশা করি কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটবে না। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। পাঁচ বছর ধরে প্রশ্ন ফাঁস নেই। গুজবও কমে এসছে। আশা করি এবারও থাকবে না। সূত্র: যুগান্তর
ছবি: মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
কামরুল হোসেন, ঢাকা: ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগের মাধ্যমে সম্মাননা এবং পুরস্কার প্রদান করলেন জাতীয় কবিতা পরিষদ। জুলাই-আগস্ট ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার উদ্দেশ্যে এবারের জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ২০২৫ প্ৰদান করা হয় বীর শহীদদের পরিবারের সদস্যদের হাত দিয়ে।
আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাব ‘জহুর হোসেন মিলনায়তন’-এ ‘জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ২০২৫' প্রদান করা হয়। কবিতায় কবি মতিন বৈরাগী, শিশু সাহিত্যে ‘ফয়েজ আহমেদ পুরস্কার' কবি হাসান হাফিজ এবং ‘জাতীয় কবিতা পরিষদ সম্মাননা পুরস্কার' কবি জুলফিকার হোসেন তারা'কে প্রদান করা হয় ।পুরস্কার প্রদান করেন জুলাই-আগস্ট ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ'র বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, শহীদ গোলাম নাফিজের বাবা মোঃ গোলাম রহমান, শহীদ আলভীর বাবা মোঃ আবুল হাসান এবং শহীদ ইয়াসিনের মা শিল্পী আক্তার।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি শাহীন রেজা এবং জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রচার সম্পাদক, কবি আসাদ কাজল। অনুষ্ঠানে দেশ বরেণ্য লেখক, কবি, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণ এবং বিশেষ সম্মাননা প্রদান করার পর জুলাই-আগস্ট ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ'র বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, শহীদ গোলাম নাফিজের বাবা মোঃ গোলাম রহমান, শহীদ আলভীর বাবা মোঃ আবুল হাসান এবং শহীদ ইয়াসিনের মা শিল্পী আক্তার বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এই সময় তারা সবাই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। উপস্থিত সকল সাংবাদিকদেরকে অভ্যুত্থানের সময় যারা নিহত হয়েছেন এবং শহীদ হয়েছেন তাদের বিচার যেন বিলম্বিত না হয় সেই প্রত্যাশা করেন। শহীদদের জন্য কেউ ভুলে না যায় এবং তাদের রক্ত যেন বৃথা না যায় সেই কামনা করেন।