a
ফাইল ছবি
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এক ঝটিকা সফরে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসছেন। কোনো রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। প্রায় ২২ ঘণ্টার এই সফরে সের্গেই ল্যাভরভ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করবেন।
তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন।
সূত্র জানায়, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা অনুষ্ঠিত আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন ও পূর্ব এশিয়া সম্মেলনে যোগদান শেষে আজ বিকাল ৪টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছবেন। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। এরপর সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প, জ্বালানি, বাণিজ্য ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হবে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতেও আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
আগামীকাল শুক্রবার সকালে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। শুক্রবার দুপুরেই ভারতের নয়াদিল্লির উদ্দেশ্য তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন। প্রসঙ্গত, নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার পরিবর্তে এবারের সম্মেলনে রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন সের্গেই ল্যাভরভ। সূত্র: বিডি প্রতিদিন
ফাইল ছবি : বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
‘হে নূতন,/ দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ।/ তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদ্ঘাটন সূর্যের মতন/’— নিজের জন্মদিন পঁচিশে বৈশাখকে এভাবেই ডাক দিয়েছিলেন কবিগুরু। মহাকালের বিস্তীর্ণ পটভূমিতে এক ব্যতিক্রমী রবির কিরণে উজ্জ্বল এই পঁচিশে বৈশাখ।
১৮৬১ সালের এদিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন। আজ পঁচিশে বৈশাখ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মবার্ষিকী। দিবসটি উদ্যাপনে ঢাকায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, সংস্থার পক্ষ থেকে আজ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালির চেতনা ও মননের প্রধান প্রতিভূ। বাংলা সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় তিনি সগৌরবে বিচরণ করেছেন এবং রেখেছেন স্বাতন্ত্র্যচিহ্নিত অবদান। তিনি ভারতীয় সংস্কৃতির বহুত্ববাদ, বৌদ্ধধর্মের অহিংস ও ইসলাম ধর্মের সুফিবাদ এবং বাংলার বাউলদের ভাববাদী চেতনার সমন্বয় সাধন করে বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেন। বিশ্বে জঙ্গিবাদ, উগ্রতা, জাতীয়তাবোধের সংকীর্ণতা, শ্রেণিবৈষম্য, জাতিতে জাতিতে ও ধর্মে ধর্মে হানাহানি প্রতিরোধে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিশীল কর্ম আজও মানবজাতিকে আলোর পথ দেখায়। তিনি তত্কালীন পূর্ববঙ্গে অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশে আবির্ভূত হয়েছিলেন একজন সমাজসংস্কারক হিসেবে। তার জমিদারির সময় দরিদ্র প্রজাদের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য সমবায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, সমবায়নীতি ও কল্যাণবৃত্তি চালু এবং ক্ষুদ্রঋণের প্রচলন পরবর্তীকালে গ্রামীণ উন্নয়নে একটি মডেল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালির চেতনা ও মননের প্রধান প্রতিনিধি। তার জীবনাদর্শ ও সৃষ্টিকর্ম শোষণ-বঞ্চনামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে চিরদিন বাঙালিকে অনুপ্রাণিত করবে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের গান হয়ে উঠেছিল প্রেরণার বিশেষ উৎস। শাশ্বত বাংলার মানুষের দুঃখ-কষ্ট, আনন্দ-বেদনা অর্থাৎ সকল অনুভব বিশ্বস্ততার সঙ্গে উঠে এসেছে রবীন্দ্রসাহিত্যে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ইচ্ছাতেই রবীন্দ্রনাথের অনবদ্য সৃষ্টি ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ আমাদের জাতীয় সংগীত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সংকট উত্তরণে প্রেরণা নিতেন রবীন্দ্রসাহিত্য থেকে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ, চিত্রশিল্পী-গল্পকার। তিনি প্রধানত কবি। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। বাঙালি সমাজে তার রচিত সংগীতের জনপ্রিয়তা এত বছর পরেও তুলনাহীনভাবে বাড়ছে। তিনি ২ হাজার গান রচনা করেন। অধিকাংশ গানে সুরারোপ করেন। তার সমগ্র গান ‘গীতবিতান’ গ্রন্থে রয়েছে। কবির লেখা ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। ভারতের জাতীয় সংগীতটিও কবির লেখা। জীবিতকালে তার প্রকাশিত মৌলিক কবিতাগ্রন্থ হচ্ছে ৫২টি, উপন্যাস ১৩, ছোটগল্পের বই ৯৫টি, প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ ৩৬টি, নাটকের বই ৩৮টি। কবির মৃত্যুর পর বিশ্বভারতী থেকে ৩৬ খণ্ডে ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’ প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়া ১৯ খণ্ডের রয়েছে ‘রবীন্দ্র চিঠিপত্র’। ১৯২৮ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত কবির আঁকা চিত্রকর্মের সংখ্যা আড়াই হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৭৪টি চিত্রকর্ম শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত আছে। কবির প্রথম চিত্র প্রদর্শনী দক্ষিণ ফ্রান্সের শিল্পীদের উদ্যোগে ১৯২৬ সালে প্যারিসের পিগাল আর্ট গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এবার রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হবে রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত নওগাঁর পতিসরে। এ ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, সিরাজগঞ্জের শাহ্জাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করা হবে। এ উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কবির চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বাংলা একাডেমিও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সূত্র: ইত্তেফাক
সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশে বর্তমানে করোনায় সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে ৯৮ শতাংশের শরীরে ডেলটা ধরন পাওয়া গেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএসএমএমইউতে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ও জিনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের সুপারভাইজার শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, দেশের ৮ বিভাগ থেকে করোনার ৩০০ নমুনা সংগ্রহ করে জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, ডেলটা অতি সংক্রামক ধরন। এ থেকে সুরক্ষা পেতে টিকা নিতে হবে। টিকার লাভ হলো, জটিলতা কম হয়। এতে মৃত্যুহার কমে যাবে। তবে সুরক্ষার জন্য মাস্ক পরতে হবে।
গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ। ৯ মাস বয়স থেকে ৯০ বছর বয়সী রোগী গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তবে ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী রোগীর সংখ্যা বেশি ছিল। গত ২৯ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে এই গবেষণা করা হয়। এতে দেখা যায়, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ ডেলটা ভেরিয়েন্ট। আর ১ শতাংশ বিটা ভেরিয়েন্ট।
গবেষণার প্রথম ১৫ দিনে এই বিটা ভেরিয়েন্ট ছিল ৩ শতাংশ। এ ছাড়া এক করোনা রোগী পাওয়া গেছে, যিনি মরিসাস ভেরিয়েন্ট অথবা নাইজেরিয়ার ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে।
ভারতে শনাক্ত ভেরিয়েন্টটি ডেলটা ভেরিয়েন্ট এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত ভেরিয়েন্টটি বিটা ভেরিয়েন্ট হিসেবে পরিচিত।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে যুক্তরাজ্যে শনাক্ত আলফা ভেরিয়েন্টে সংক্রমণের হার বেশি ছিল। মার্চ মাসের প্রতিবেদন অনুসারে, ওই সময় বিটা ভেরিয়েন্টের সংক্রমণের হার বেশি ছিল।
করোনার এই জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার প্রধান গবেষক বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান ও জেনেটিকস অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজির অধ্যাপক লায়লা আনজুমান বানু। সহযোগী গবেষক ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ও সহ–উপাচার্য (শিক্ষা) এ কে এম মোসারফ হোসেন। এ ছাড়া ১৪ জন গবেষক এই গবেষণায় অংশ নিয়েছেন। সূত্রঃ প্রথম আলো