a
ফাইল ছবি: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা সফরে আসা সাবেক মার্কিন কূটনীতিক উইলিয়াম মিলাম এবং জন ড্যানিলোভিজদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তারা 'নিরপেক্ষ নন' বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
শনিবার ভিডিওসহ এক টুইটে শাহরিয়ার আলম এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, সবাইকে অবশ্যই জানা উচিত যে, এই সাবেক কূটনীতিকরা নিরপেক্ষ নন। তারা কখনই নিরপেক্ষ ছিলেন না, এমনকি যখন তারা ঢাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। প্রশ্ন হলো তারা কি বিনা পয়সায় এটা (বাংলাদেশে এসে কাজ) করছেন? যদি না হয়, তাহলে কারা তাদের পারিশ্রমিক দিচ্ছে? আমরা সবাই এই 'কেন'র উত্তর জানি।
একজন বাংলাদেশি কূটনীতিক তার এই টুইটটি রিটুইট করে লিখেছেন, 'পশ্চিমা সমাজে কোনো কিছুই বিনামূল্যে পাওয়া যায় না! মজুরি ঘণ্টাভিত্তিক পরিষেবার ভিত্তিতে!'
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এই টুইটের জবাবে জন ড্যানিলোভিজ বলেছেন, এটি দুঃখজনক যে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী চরিত্র হননের সঙ্গে জড়িত। আমি বুঝতে পারি এবং দুঃখ প্রকাশ করছি যে তিনি এই ধরণের একটি মৌলিক বিষয় বেছে নিয়েছেন, যার জন্য তাকে কতটা চাপের মধ্যে থাকতে হবে। বাংলাদেশ এবং এর নাগরিকদের প্রতি আমার অকৃত্রিম ভালোবাসা আছে। আমি এখানে এবং সর্বত্র গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের উন্নয়নে আমার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে চাই।'
শাহরিয়ার আলমের টুইট করা ভিডিও স্টোরিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সেক্রেটারি মুশফিকুল ফজল আনসারির সঙ্গে সাবেক দুই কূটনীতিকদের সম্পর্কের গভীরতা দেখানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাবেক মার্কিন কূটনীতিক উইলিয়াম মিলাম ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৯৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে এবং দক্ষিণ এশিয়া প্রেক্ষিত ম্যাগাজিনের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জন ড্যানিলোভিজ ২০০৭ সাল এবং ২০০৮ সালে সামরিক-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক শাসনামলে ২ বার ঢাকায় রাষ্ট্রদূত ও ম্যাগাজিনটির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি
মুসলিম উম্মাহর বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা আজ। বৈশ্বিক করোনা মহামারির মধ্যে ভিন্ন মাত্রা ও আবহে এ বছর আসছে এই ঈদ। করোনার প্রভাব ঈদ পালনের অনুষঙ্গগুলোর ছন্দপতন ঘটাচ্ছে। উৎসবের সেই রোশনাই, বর্ণচ্ছটা ম্রিয়মাণ হয়ে আছে। মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে কোরবানির রেওয়াজ।
পবিত্র হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে বিশ্ব মুসলিম ময়দানে নামাজ আদায়ের পর যার যা সাধ্য ও পছন্দ অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। আরবি আজহা এবং কোরবান উভয় শব্দের অর্থ হচ্ছে উত্সর্গ। কোরবানি শব্দের উত্পত্তিগত অর্থ হচ্ছে আত্মত্যাগ, আত্মোৎসর্গ, নিজেকে বিসর্জন, নৈকট্য লাভের চেষ্টা, অতিশয় নিকটবর্তী হওয়া প্রভৃতি।
সুরা হাজ্জে বলা হয়েছে, ‘এগুলোর (কোরবানির পশুর) গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, কিন্তু তোমাদের তাকওয়া পৌঁছে যায়।’ আল্লাহর বান্দারা কে কতটুকু ত্যাগ ও খোদাভীতির পরিচয় দিতে প্রস্তুত এবং আল্লাহপাকের নির্দেশ পালন করেন তিনি তা-ই প্রত্যক্ষ করেন কেবল। প্রত্যেক আর্থিক সামর্থ্যবান মুসলমানের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি দিল না, সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে (মুসনাদে আহমদ)। আল কোরআনের সুরা কাউসারে বলা হয়েছে, ‘অতএব, তোমার পালনকর্তার উদ্দেশে নামাজ পড়ো এবং কোরবানি করো।’ সুরা হাজ্জে বলা হয়েছে, ‘কোরবানি করার পশু মানুষের জন্য কল্যাণের নির্দেশনা।’
জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখের যে কোনো এক দিন কোরবানি করা যায়। কোরবানিকৃত পশুর তিন ভাগের এক ভাগ গরিব-মিসকিন, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার বিধান আছে। আবার পুরোটাই বিলিয়ে দেওয়া যায়। এদিকে ৯ জিলহজ ফজরের নামাজের পর থেকে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তালবিয়াহ পাঠ করা ওয়াজিব। তালবিয়াহ হলো, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।’
হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক জাতির বাৎসরিক আনন্দ-ফুর্তির দিন আছে। এই দিনে ধনী-গরিব, বাদশা-ফকিরনির্বিশেষে সব মুসলমান এক কাতারে ঈদের নামাজ আদায় করে, একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে। ঈদ মুসলিম উম্মাহর জাতীয় উত্সব। আজ থেকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে তিন দিনের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে।
দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা এ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ৬৬.৬৬ শতাংশ বা দুই-তৃতীয়াংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এটাই সবচেয়ে লক্ষণীয় মাত্রায় মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তবে আসন্ন বাজেটে এই ভাতার বৃদ্ধির কারণে বরাদ্দ তেমন একটা বাড়ছে না। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের নতুন তালিকায় পূর্বের প্রায় ২৩.২৭ শতাংশ নাম বাতিল হওয়ায় নতুন করে অধিক বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না।
এই খাতে ব্যয়ের লক্ষ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩২’শ কোটি টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ হাজার ৯৯৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে বছর প্রতি ৩ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ফেব্রুয়ারিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদানের এক অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ১২ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন। আসন্ন অর্থবছর থেকেই নতুন ভাতা প্রদান শুরু করা হবে।
ওই সময় পর্যন্ত সরকারের নথিভুক্ত ২ লাখ ৫ হাজার ২০৬ জন মুক্তিযোদ্ধা সরকারি ভাতা পেয়ে আসছিলেন। এর মধ্যে শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো মাসিক ৩০ হাজার টাকা এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মাসিক ২৫ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন।
এদিকে সাত বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারগুলো মাসিক ৩৫ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন। এছাড়া বীর উত্তমদের জন্য ২৫ হাজার টাকা, বীর বিক্রমদের জন্য ২০ হাজার টাকা, বীর প্রতিকদের ১৫ হাজার টাকা এবং অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা ১২ হাজার টাকা করে ভাতা পেয়ে আসছেন।
মাসিক ভাতার পাশাপাশি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা বিনা খরচে চিকিৎসা সেবাসহ সব মুক্তিযোদ্ধারা বছরে পাঁচটি উৎসব ভাতা পেয়ে আসছেন।